সীমান্তে অব্যাহত বাংলাদেশি হত্যায় এনসিপির উদ্বেগ
Published: 17th, April 2025 GMT
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) লাগাতার বাংলাদেশি নাগরিক হত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। বৃহস্পতিবার এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাত স্বাক্ষরিত এক প্রতিবাদলিপিতে এই নিন্দা জানানো হয়।
প্রতিবাদলিপিতে এনসিপি বলেছে, বুধবার দুপুরে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় হাসিবুল আলম নামের একজন বাংলাদেশি যুবককে গুলি করে বিএসএফ। পরে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ওই যুবককে তারা তুলে নিয়ে যায়। রাতে ভারতের কোচবিহারের একটি হাসপাতালে তিনি মারা যান। এর আগে ১১ এপ্রিল ঝিনাইদহের পলিয়ানপুর সীমান্তে ওয়াসিম হোসেন নামের এক বাংলাদেশি নাগরিককে পিটিয়ে হত্যা করে তাঁর লাশ নদীতে ফেলে দেন বিএসএফ সদস্যরা।
প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, ‘আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ করছি, আন্তর্জাতিক আইন ও দ্বিপক্ষীয় সমঝোতাকে সরাসরি ভঙ্গ করে অভ্যুত্থান–পরবর্তী সময়ে সীমান্তে অব্যাহতভাবে বাংলাদেশি যুবকদের গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে এবং তাদের লাশের সাথেও অমানবিক আচরণ করা হচ্ছে। চলতি মাসেই অন্তত তিনজন বাংলাদেশি নাগরিক বিএসএফের হাতে শহীদ হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং পররাষ্ট্রনীতি এখন পর্যন্ত সীমান্ত হত্যা বন্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে।’
রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সীমান্তবর্তী সব জেলার নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানানো হয়েছে প্রতিবাদলিপিতে। এতে বলা হয়, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারসহ আগামীর সব সরকারকে আহ্বান জানাই, ঢাকাকেন্দ্রিকতার বাইরে গিয়ে সীমান্তবর্তী এলাকার নাগরিকদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন এবং সক্ষমতা বৃদ্ধিতে কর্মসূচি হাতে নিন।’ সীমান্ত হত্যার মতো গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাকে আন্তর্জাতিক আদালতে উত্থাপন করার দাবিও জানিয়েছে এনসিপি।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কড়া নজরদারি সুন্দরবন সীমান্তে
দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবন জলসীমানা প্রায় দেড়শো কিলোমিটার। ভারতীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এ সীমানা দিয়ে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বাড়তি তৎপরতা নেওয়া হচ্ছে। খবর আনন্দবাজারের।
খবরে বলা হয়েছে, নদী ও বনভূমি এলাকায় সীমান্ত বরাবর বিএসএফ মোতায়েন আছে। ভাসমান বর্ডার আউটপোস্ট, বঙ্গোপসাগর অংশে কোস্ট গার্ডের নজরদারি চলছে। ড্রোন, সেন্সর ও ক্যামেরা, কিছু জায়গায় নাইট ভিশন ক্যামেরা ব্যবহার করা হচ্ছে। পাশাপাশি, পুলিশের তরফেও উপকূল এলাকায় দিনরাত নজরদারি চলছে।
উপকূল থানাগুলোর পক্ষ থেকে নদীপথে নিয়মিত টহল দেওয়া হচ্ছে। রাতেও উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে নজর রাখা হচ্ছে। নদীপথে কোনো জলযান দেখলেই তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। মৎস্যজীবীদের পরিচয়পত্রও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নদী বা সমুদ্রে এখন মাছ ধরার উপরে নিষেধাজ্ঞা চলছে। মৎস্যজীবীদের জলযান চলাচল করার কথা নয়। তাই জলযান দেখলেই তল্লাশি চলছে। বাংলাদেশি জাহাজগুলোতেও পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে।
সুন্দরবন পুলিশ জেলার সুপার কোটেশ্বর রাও নালাভাট বলেন, আগেও উপকূলবর্তী এলাকায় পুলিশের নজরদারি চলত। এখন বাড়তি জোর দেওয়া হচ্ছে। দু’বেলা নদী ও স্থলপথে পুলিশের টহল বৃদ্ধি পেয়েছে। নাকা চেকিং হচ্ছে। চলছে তল্লাশিও।
উত্তর ২৪ পরগনাতেও উপকূল এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। নিরাপত্তা বেড়েছে জল ও স্থলসীমান্তে। জল, ভূমি ও আকাশে অত্যাধুনিক ইজ়রাইল রাডারের মাধ্যমে নজরদারি চালাচ্ছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী।
ইতোমধ্যে ভারতীয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দফতর জানিয়েছে, বাংলাদেশের আকাশ ব্যবহার করে ভারতকে আক্রমণ করতে পারে সশস্ত্র সংগঠনগুলো। ফলে সুরক্ষা বাড়াতে বিএসএফের তৎপরতা শুরু হয়েছে। বসিরহাট মহকুমার স্বরূপনগর থেকে হিঙ্গলগঞ্জের হেমনগর কোস্টাল থানা পর্যন্ত ৯৪ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। তার মধ্যে ৫০ কিলোমিটার জলসীমান্ত। স্থলসীমান্ত ৪৪ কিলোমিটার। সীমান্ত সুরক্ষায় অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।