সড়ক-মহাসড়ক অবরোধ করলে দেশের অর্থনীতিসহ সব সেক্টরে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। সড়ক অবরোধমুক্ত করতে যথাসাধ্য চেষ্টা করে থাকে সেনাবাহিনী। যত কম সময়ের মধ্যে মুক্ত করা যায়– এ লক্ষ্যে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা থাকে।

গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা সেনানিবাসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সেনাসদর মিলিটারি অপারেশনস ডাইরেক্টরেটের স্টাফ কর্নেল মো.

শফিকুল ইসলাম এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, বিগত সময়ে শিল্পাঞ্চলে নিরাপত্তা নিশ্চিতে সেনাবাহিনী ১৩৭টি ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে। ৩১ বার বিভিন্ন মূল সড়ককে অবরোধ থেকে অবমুক্ত করেছে।  

কর্নেল শফিকুল ইসলাম জানান, গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে এখন পর্যন্ত ৭ হাজার ৮২২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে সেনাবাহিনী। গত দুই মাসে নিয়ন্ত্রণ করেছে ২৩২টি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি। এর মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত ৩৭টি, সরকারি সংস্থা ও অফিস-সংক্রান্ত ২৪টি, রাজনৈতিক কোন্দল ৭৬টি এবং অন্য ঘটনা ৯৫টি। 

তিনি বলেন, সেনাবাহিনী দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখাসহ বিদেশি কূটনীতিক ও দূতাবাসগুলোর সামগ্রিক নিরাপত্তা নিশ্চিতের কাজে নিয়োজিত রয়েছে। এ ছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং কক্সবাজার জেলায় এফডিএমএন ক্যাম্প এলাকার নিরাপত্তা বিধান করার দায়িত্বও সুষ্ঠুভাবে পালন করে যাচ্ছে।

এক প্রশ্নের জবাবে এই সেনা কর্মকর্তা বলেন, ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা প্রয়োগে সেনাবাহিনী কোনো বাধা পাচ্ছে না। এই ক্ষমতা যেখানে যতটুকু ব্যবহারের দরকার, সেটা করা হচ্ছে। অপরাধী গ্রেপ্তারের পর অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে হস্তান্তরের পর বিচারকার্যে সেনাবাহিনীর কিছু করার থাকে না। 

গুজবে সেনাবাহিনী বিচলিত নয় জানিয়ে তিনি বলেন, সেনাবাহিনী একতাবদ্ধ হয়ে সরকারের নির্দেশে দেশ-জাতির পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছে। সততা, ন্যায়নীতি, প্রত্যয় ও সহনশীলতার সঙ্গে এটি করা হচ্ছে। 

শফিকুল ইসলাম বলেন, কিছুদিন আগেও দেখেছেন মার্চ ফর গাজা কর্মসূচিতে দীর্ঘ মিছিলে কালো পতাকাধারীদের রহিত করেছে সেনাবাহিনী। কালো পতাকাধারী হলেই জঙ্গি, এর প্রমাণ পাইনি। তবে এ ব্যাপারে সেনাবাহিনী সোচ্চার আছে।  

সেনাপ্রধানের রাশিয়া ও ক্রোয়েশিয়া সফর নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বন্ধুপ্রতিম দেশে সেনাবাহিনী প্রধানের সফর একটি ‘রুটিন অ্যাফেয়ার’। সেখানে বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয়েছে। বেশ কিছু মিলিটারি ইন্ডাস্ট্রি পরিদর্শন করেছেন। এতে আমাদের সামরিক সহযোগিতা ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক প্রগাঢ় হবে বলে বিশ্বাস করি। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম ক ত কর অবর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক

অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।

বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক। 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী

‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত

সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।

প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের  প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।

জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।

আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে  বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।

লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ