অলির এলডিপিতে যোগ দিলেন সাবেক সেনা কর্মকর্তা সারওয়ার্দী
Published: 19th, April 2025 GMT
অলি আহমদের নেতৃত্বাধীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টিতে (এলডিপি) যোগ দিলেন সাবেক সেনা কর্মকর্তা চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী। তাঁকে দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য করা হয়েছে। তাঁর সঙ্গে অবসরপ্রাপ্ত আরও কিছু সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাসহ পাঁচ শতাধিক ব্যক্তি আনুষ্ঠানিকভাবে এলডিপিতে যোগ দিয়েছেন।
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে তাঁরা অলি আহমদের দলে যোগ দেন। এই অনুষ্ঠানে এলডিপির সভাপতি কর্নেল (অব.
অলি আহমদের হাতে ফুল দিয়ে এলডিপিতে যোগ দেওয়ার পর সাবেক সেনা কর্মকর্তা চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী বলেন, ‘এই দলে যুক্ত হয়ে আমি সত্যিকারের সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ নির্মাণে কাজ করতে পারব। আমরা একটি শোষণহীন সুন্দর বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই।’ তিনি বলেন, জনগণের বেঁচে থাকা, ভোট দেওয়ার গণতান্ত্রিক অধিকার সবকিছুর সঙ্গে রাজনীতি জড়িত। সবচেয়ে বড় মানবসেবা করতে পারে রাজনীতিবিদেরা।
পরে অলি আহমদ অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বলেন, ‘আমাদের সন্দেহ হয় আপনারা দেশের জন্য কাজ করছেন না; বরং আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের অপেক্ষায় আছেন। যাঁরা রাজনীতি করেন, যাঁরা জনগণের প্রতিনিধি, তাঁরাই ঠিক করবে অন্তবর্তীকালীন সময় কতটুকু হবে। আপনি বা অন্য কেউ ঠিক করবেন না।’
সংস্কারের নামে জনগণের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকার নাটক করছে উল্লেখ করে অলি আহমদ বলেন, সব রাজনৈতিক দল ঐকমত্য না হলে সংস্কারের নাটক করেও লাভ হবে না। তিনি সরকারকে যথাসময়ে নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, নইলে তাঁদেরকেও আওয়ামী লীগের মতো পালাতে হবে।
এলডিপির মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। দলের প্রেসিডিয়াম সদস্যসহ কেন্দ্রীয় নেতারা এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর মকর ত অন ষ ঠ ন র জন ত এলড প
এছাড়াও পড়ুন:
অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে: ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। আমরা যে বিশ্বাসযোগ্যতা আশা করেছিলাম, তারা তা রাখেনি। তাই, বর্তমান রাজনৈতিক সংকটের দায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের।”
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) ৫৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
ঐক্যের মাধ্যমে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাই: ফখরুল
জনগণ আর সেই পুরোনো রাজনীতির ফাঁদে পা দেবে না: ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব বলেন, “নির্বাচনের আগে গণভোটের কোনো সুযোগ এখন আর নেই। নির্বাচনের দিনই গণভোট হবে। দুটি ব্যালট থাকবে— একটি গণভোটের জন্য, আরেকটি জাতীয় সংসদের জন্য। এই বিষয়ে কারো দ্বিমত থাকার কথা নয়।”
তিনি বলেন, “যেদিন ঐকমত্যের নথি জমা দেওয়া হলো, মনে আছে, সেদিন বৃষ্টি হচ্ছিল, ১৭ তারিখ। তার আগে আবার সবকিছু এলোমেলো হয়ে গিয়েছিল। আমরা আবার ঠিকঠাক করে সব রাজনৈতিক দল একমত হয়ে বৃষ্টির মধ্যে ছাতা ধরে সেখানে স্বাক্ষর করলাম। কিন্তু, যখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে সেটা উপস্থাপন করা হলো, তখন দেখা গেল অনেক পার্থক্য। বিশেষ করে, আমরা যে নোট অব ডিসেন্টগুলো দিয়েছিলাম, সেগুলো উল্লেখ করা হয়নি। আমরা বলছি, ইটস অ্যা ব্রিজ অব ট্রাস্ট। অথচ, তারা সেই আস্থার সেতু ভেঙে দিয়েছে। জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।”
মির্জা ফখরুল বলেন, “আপনারা যে কমিশন তৈরি করেছেন, সেই কমিশন প্রায় এক বছর আট-নয় মাস ধরে ঐকমত্যের নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছে। সংস্কার ও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমরা অনেক ক্ষেত্রে একমত হয়েছিলাম। কয়েকটি বিষয়ে মতভেদ থাকায় আমরা ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিয়েছিলাম। অর্থাৎ, আমাদের মধ্যে মতভেদ থাকলেও মূল বিষয়ে আমরা ঐকমত্যে পৌঁছেছিলাম, এটাই নিয়ম। যখন আমরা নির্বাচনে যাব, তখন ম্যানিফেস্টোতে এই বিষয়গুলো থাকবে। জনগণ যদি আমাদের ভোট দেয়, তাহলে আমরা সেসব বিষয় সামনে আনব, পার্লামেন্টে পাস করে দেশের পরিবর্তন ঘটাব। আর যদি ভোট না দেয়, তাহলে সেটি বাদ পড়বে।”
মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা একটা কথা খুব পরিষ্কার করে বলতে চাই, বিএনপি সংস্কারের দল। বিএনপির জন্মই হয়েছে সংস্কারের মধ্য দিয়ে। ১৯৭৯ সালে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন একদলীয় শাসনব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য। তখন সব পত্রিকা বন্ধ ছিল, তিনি সেগুলো খুলে দিয়েছিলেন। মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।”
নির্বাচন ও গণভোট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা নির্বাচন করব, নির্বাচন করতে চাই। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণার সঙ্গে আমরা একমত। কিন্তু, আজকে সেই নির্বাচন বানচাল করার জন্য একটি মহল উঠে-পড়ে লেগেছে, তারা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।”
জামায়াতে ইসলামীর উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “যারা এই নিয়ে রাস্তায় নেমে গোলমাল করছেন, তাদের অনুরোধ করব, জনগণকে আর বিভ্রান্ত করবেন না। একসময় আপনারা পাকিস্তানের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন, মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিলেন। আজকে জনগণ যে নির্বাচন চায়, তার বিরোধিতা করবেন না। এই দেশের মানুষ দেশ বিক্রির রাজনীতি ক্ষমা করে না।”
তিনি আরো বলেন, “আমরা আমাদের মিত্রদের সঙ্গে নিয়ে সরকার গঠন করতে চাই। যাদের সঙ্গে আমরা দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে লড়েছি, একসঙ্গে কাজ করেছি, তাদের নিয়েই আমরা জাতীয় সরকার গঠন করতে চাই। এক্ষেত্রে আমাদের বক্তব্য খুবই স্পষ্ট—আসুন, সবাই মিলে নির্বাচনের সুযোগকে কাজে লাগাই। সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করে জনগণের পার্লামেন্ট, জনগণের সরকার গঠন করি।”
জেএসডি সিনিয়র সহ-সভাপতি তানিয়া রবের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন— সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম স্বপন, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান মঞ্জু, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুব্রত চৌধুরী প্রমুখ।
ঢাকা/রায়হান/রফিক