হৃদয়ের নিষেধাজ্ঞা বহালেও ফিরছেন না আম্পায়ার সৈকত
Published: 25th, April 2025 GMT
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের টেকনিক্যাল কমিটির আহ্বায়কের দায়িত্ব নিয়েই মোহামেডানের ক্রিকেটার তাওহিদ হৃদয়ের ওপর দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞার শাস্তি বহাল করেছেন বিসিবি পরিচালক নাজমুল আবেদিন ফাহিম। মোহামেডানের পরবর্তী ম্যাচ ২৬ এপ্রিল। গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের বিপক্ষে সেই ম্যাচে নিষিদ্ধ থাকবেন তিনি।
শাস্তি কমিয়ে হৃদয় যে ম্যাচটি খেলেছেন, সেটির বৈধতা দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিসিবি কার্যালয়ে নাজমুল আবেদীন সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘শাস্তি মওকুফের সিদ্ধান্তটি বাতিল করে আগের মতো দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞাই বহাল থাকছে। আমরা মনে করি, তাওহিদ হৃদয়ের শাস্তি মওকুফের সিদ্ধান্ত আমরা প্রক্রিয়ার বাইরে চলে গিয়েছিলাম।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘এক ম্যাচ শেষে হৃদয়কে ফের মাঠে নামার অনুমতি দেওয়া হয়, যা আমরা এখন আর ফিরিয়ে আনতে পারব না। সেটিকে আমরা বৈধ হিসেবেই বিবেচনা করছি। তবে সম্প্রতি পরিবর্তিত বাইলজটি অকার্যকর ঘোষণা করা হবে এবং পূর্বের নিয়ম বলবৎ থাকবে। সেই ধারাবাহিকতায় হৃদয় পরবর্তী ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবেন না।’
হৃদয়কে পরের ম্যাচে নিষিদ্ধ করলেও বিসিবির চাকরিতে আপাতত ফিরে আসছেন না আইসিসির এলিট আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকত। এর আগে আম্পায়ার্স বিভাগের চেয়ারম্যান ইফতেখার রহমান মিঠু জানিয়েছিলেন, সৈকত পদত্যাগ করছেন না। তবে ঢাকা লিগে ক্লাব কর্মকর্তার অবৈধ প্রভাবের প্রতিবাদস্বরূপ সৈকত পদত্যাগের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা থেকে তিনি সরে আসবেন না।
সৈকত-ঘনিষ্ঠ এক সূত্র সমকালকে নিশ্চিত করছে তা। ‘যে কারণে সৈকত পদত্যাগ করেছে, সেটা পুরো বিশ্বক্রিকেট জেনে গেছে। এখন তা থেকে সরে আসার পথ নেই। এটা ঠিক যে বিসিবি থেকে তাকে ফিরে আসার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, কিন্তু সৈকত কাউকে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত জানায়নি।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই সূত্রটি আরও জানায়, অভিমান নয়, এটা এক রকম বাস্তবতা মেনে সরে আসা। বিসিবি যাতে ভবিষ্যতে এসব অনিয়ম থেকে দূরে থাকে, সেই লক্ষ্যেই সৈকত এমন কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যে চুক্তি থেকে তিনি বেরিয়ে এসেছেন, তাতে আর ফিরবেন না। হয়তো নতুন কোনো চুক্তিতে ভবিষ্যতে ফিরতে পারেন।
দিন তিনেক আগে পদত্যাগের চিঠি পাঠানোর পর আর স্টেডিয়ামমুখী হননি সৈকত। আইসিসি ও বিসিবির এলিট আম্পায়ার সৈকতের মাসিক বেতন ছিল দুই লাখ টাকা। ম্যাচ ফিতেও শীর্ষে ছিলেন তিনি। দেশের ক্রিকেট বোর্ড সর্বোচ্চ সম্মান দিলেও আম্পায়ার্স বিভাগের একটি অনৈতিক সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেননি তিনি। ১১ এপ্রিল আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচে তাওহিদ হৃদয়ের শৃঙ্খলা পরিপন্থি আচরণে ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকত।
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের টেকনিক্যাল কমিটি দুই ম্যাচ নিষেধাজ্ঞা দেয় হৃদয়কে। টেকনিক্যাল কমিটিকে উপেক্ষা করে মোহামেডানের চাপের কথা বলে আম্পায়ার্স বিভাগের চেয়ারম্যান ইফতেখার রহমান মিঠু এক ম্যাচ শাস্তি স্থগিত করেন। যেটা মারাত্মকভাবে সম্মানহানি করেছে বলে মনে করেন এলিট আম্পায়ার সৈকত ও ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের টেকনিক্যালি কমিটির চেয়ারম্যান এনামুল হক মনি। প্রতিবাদে সৈকত বিসিবির চুক্তি থেকে পদত্যাগ করেন। আর মনিও টেকনিক্যাল কমিটি ছেড়ে দেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ড প এল আম প য় র স পদত য গ য গ কর
এছাড়াও পড়ুন:
‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনের পরবর্তী শুনানি বুধবার
রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের (রিভিউ) ওপর পরবর্তী শুনানির জন্য আগামীকাল বুধবার দিন রেখেছেন আপিল বিভাগ। আজ মঙ্গলবার শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের বেঞ্চ পরবর্তী ওই দিন ধার্য করেন।
এর আগে গত ১৮ মে শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ শুনানির জন্য ১ জুলাই দিন ধার্য করেছিলেন। ধার্য তারিখে বিষয়টি শুনানির জন্য রিভিউ আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবীর সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ ১৫ জুলাই পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন। আজ বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকার ৭ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।
ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স সংশোধন করে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। পরে ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। রায়ে রাষ্ট্রের সাংবিধানিক পদধারীদের পদক্রম ওপরের দিকে রাখা ও অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়। পাশাপাশি জেলা জজদের পদক্রম আট ধাপ উন্নীত করে সচিবদের সমান করা হয়।
আপিল বিভাগের রায়ের পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতির পদক্রম এক ধাপ উন্নীত করে জাতীয় সংসদের স্পিকারের সমান এবং রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের (স্বাধীনতা পুরস্কার, একুশে পদক ও মহান স্বাধীনতাসংগ্রামে অংশগ্রহণ করে যে মুক্তিযোদ্ধারা বীর উত্তম খেতাব পেয়েছেন) পদক্রমে যথাযথভাবে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত বলে উল্লেখ করা হয়।
ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) তৎকালীন চেয়ারম্যান ২০১৭ সালে পৃথক আবেদন করেন। রিভিউ আবেদনে রাষ্ট্রের ৯০ জন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল পক্ষভুক্ত হন। পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের ওপর গত ২৭ এপ্রিল শুনানি শুরু হয়।
আজ আদালতে রিভিউ আবেদনকারী মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন শুনানি করেন। রিট আবেদনকারী পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম শুনানিতে অংশ নেন।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী, ১৯৮৬ সালে ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরি করে। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর একই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর তা জারি করা হয়। পরে বিভিন্ন সময়ে তা সংশোধন করা হয়।
সর্বশেষ সংশোধন করা হয় ২০০৩ সালের ডিসেম্বরে। সংশোধিত এই ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরির ক্ষেত্রে সাংবিধানিক পদ, সংবিধান কর্তৃক স্বীকৃত ও সংজ্ঞায়িত পদগুলো প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিচের ক্রমিকে রাখা হয়েছে—এমন উল্লেখ করে এর বৈধতা নিয়ে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের তৎকালীন মহাসচিব মো. আতাউর রহমান ২০০৬ সালে রিট করেন।
রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট আট দফা নির্দেশনাসহ ১৯৮৬ সালের ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স (সংশোধিত) অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ২০১১ সালে আপিল করে। এ আপিলের ওপর শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ২০১৭ সালে করা আবেদনের ওপর শুনানি চলছে।