বহু পর্যটকের প্রাণ রক্ষা করলেন কাশ্মীরি দুই বোন রুবিনা ও মুমতাজ
Published: 26th, April 2025 GMT
কাশ্মীরের বৈসরন উপত্যকায় ঘটে যাওয়া এক ভয়াবহ জঙ্গি হামলার মাঝেও নজির গড়লেন দুই কাশ্মীরি বোন—রুবিনা ও মুমতাজ। মঙ্গলবারের ভয়াবহ জঙ্গিহামলার সময়ে নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বহু পর্যটককে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যান। তাদের সাহস মানবিকতার এই অনন্য উদাহরণ ইতিমধ্যেই দেশজুড়ে প্রশংসিত হচ্ছে।
বৈসরন উপত্যকার পাশেই থাকে দুই বোন। পেশায় পর্যটক গাইড রুবিনা ও মুমতাজ প্রতিদিনই দেশ-বিদেশ থেকে আসা ভ্রমণপিপাসুদের নিয়ে ঘোরান, দেখান কাশ্মীরের সৌন্দর্য। রুবিনার একটি পরিচিত নামও রয়েছে—‘কাশ্মীরের খরগোশ কন্যা’, কারণ সে পর্যটকদের হাতে নিজের পোষা খরগোশ তুলে দিয়ে ছবি তোলার সুযোগ করে দেয়।
হামলার দিন অন্যান্য দিনের মতোই, রুবিনা ও মুমতাজ চেন্নাই থেকে আগত একদল পর্যটকের গাইড হিসেবে ইকো পার্ক এলাকায় ছিলেন। দুপুরের দিকে আচমকা জঙ্গিরা হামলা চালালে আশেপাশের পরিবেশে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পর্যটকরা দিশেহারা হয়ে পড়েন। খবর- আনন্দবাজার
যখন জঙ্গিরা আচমকা হামলা চালায়, তখন একাধিক পর্যটক, যার মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধরাও ছিলেন, আতঙ্কে সিঁটিয়ে গিয়েছিলেন। কেউ হাঁটতে পারছিলেন না, কেউ কাঁদছিলেন। সেই সময় দ্রুত সিদ্ধান্ত নেন রুবিনা ও মুমতাজ—প্রত্যেককে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যেতে হবে।
তারা প্রথমে পর্যটকদের আশ্বস্ত করেন এরপর প্রথমে একটি দলকে পাহাড়ি রাস্তা ও জঙ্গলের মধ্য দিয়ে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান, সেখান থেকে যোগাযোগ করে স্থানীয় হোটেলে পৌঁছনোর ব্যবস্থা করেন। এরপর ফিরে এসে আরও কয়েকটি দলকে একইভাবে নিয়ে যান। সেই সময় শুধু পথ দেখানোই নয়, পর্যটকদের মানসিকভাবে শান্ত রাখার কাজটাও তারা করে গিয়েছেন একনাগাড়ে। পর্যটকদের কী করতে হবে, কোথায় যেতে হবে, সেই নির্দেশনা দিয়ে আশার আলো দেখিয়েছেন তারা।
শিশু ও বয়স্ক পর্যটকদের যেন কোনওরকম ক্ষতি না হয়, সেদিকে বিশেষ নজর দেন দুই বোন। আতঙ্কিত পর্যটকদের নিজেদের বাড়িতে অস্থায়ীভাবে আশ্রয় দেন এবং পরবর্তীতে তাদের হোটেলে পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ারও যথাযথ ব্যবস্থা করেন। শুধু শারীরিক সহায়তা নয়, আতঙ্কিত মানসিক অবস্থায় থাকা পর্যটকদের সাহস ও মানসিক শক্তি জোগাতেও তারা ভূমিকা পালন করেন।
সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে রুবিনা বলেন, “সেই মুহূর্তে আমাদের একমাত্র লক্ষ্য ছিল পর্যটকদের প্রাণ রক্ষা করা। আমরা আমাদের নিরাপত্তার কথা ভাবিনি। সবাই কাঁপছিল, শুধু বলছিল, আমাদের বাঁচাও। আমরা সেই ডাকের প্রতিধ্বনি হতে পেরেছি — এটাই আমাদের প্রাপ্তি।”
দেশ জুড়ে এই দুই বোনের সাহসিকতা ও মানবিকতা এখন প্রশংসিত হচ্ছে। সাধারণ গাইডের ভূমিকায় যারা কাজ করছিলেন, তারা এক মুহূর্তে হয়ে উঠলেন রক্ষাকর্তা।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ও ম মত জ আম দ র আতঙ ক
এছাড়াও পড়ুন:
সৈকতে নারী পর্যটকদের গোসলের ভিডিও ধারণ, কন্টেন্ট ক্রিয়েটরের কারাদণ্ড
পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে গোসলরত নারী পর্যটকদের ভিডিও ধারণ করার দায়ে রুবেল (৩০) নামে এক কনটেন্ট ক্রিয়েটরকে এক মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সৈকতের জিরো পয়েন্ট এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসিন সাদীক। এ সময় ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
রুবেল বরগুনা সদর উপজেলার বাসিন্দা। তিনি মুদি দোকানের ব্যবসার পাশাপাশি কনটেন্ট তৈরি করেন।
সৈকতের ফটোগ্রাফার আরিফ মিয়া বলেন, ‘‘রুবেল নারীদের গোসলের ভিডিও করছিলেন। প্রতিবাদ করলে তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। বিষয়টি দেখত পেয়ে তাকে আটক করি।’’
অপর ফটোগ্রাফার রাসেল বলেন, “রুবেলের মোবাইল চেক করে দেখি, অনেক ভিডিও। সঙ্গে সঙ্গে ট্যুরিস্ট পুলিশকে খবর দেই। পরে তাদের কাছে সোপর্দ করি।’’
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইয়াসিন সাদেক বলেন, “অনুমতি ছাড়া নারী পর্যটকদের ভিডিও ধারণের দায়ে রুবেলকে এক মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ধরনের অপরাধে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’’
ঢাকা/ইমরান/রাজীব