দীর্ঘ ২২ বছর ধরে বন্ধ থাকা রাজশাহী টেক্সটাইল মিল ‘বরেন্দ্র রাজশাহী টেক্সটাইল লিমিটেড’ হিসেবে পুনরায় যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে। দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শিল্প গ্রুপ প্রাণ-আরএফএল কোম্পানিটি চালু করতে যাচ্ছে। বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিল করপোরেশনের (বিটিএমসি) সঙ্গে প্রাইভেট-পাবলিক পার্টনারশিপের (পিপিপি) আওতায় মিলটি চালু করতে যাচ্ছে প্রাণ-আরএফএল। ইতোমধ্যে এর পরীক্ষামূলকভাবে উৎপাদন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। শিগগিরই আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করে পুরোদমে উৎপাদন শুরু হবে।

সোমবার রাজশাহীর একটি হোটেলে আয়োজিত ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের বিপণন পরিচালক কামরুজ্জামান কামাল। প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (জনসংযোগ) তৌহিদুজ্জামান ও বরেন্দ্র রাজশাহী টেক্সটাইল কারখানার অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার শরীফ উদ্দিন আহমেদসহ গ্রুপটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, রাজশাহী টেক্সটাইল মিল ১৯৭৫ সালে চালু হয়। লোকসানের কারণে ২০০৩ সালে বন্ধ হয়। পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপে (পিপিপি) সরকারি এই কারখানা ৩০ বছরের জন্য লিজ নিয়েছে প্রাণ-আরএফএল। সরকারকে প্রতিবছর ভাড়া হিসেবে অর্থ দেবে প্রাণ-আরএফএল। তবে এতে সরকারের কোনো অংশীদারিত্ব থাকবে না।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, প্রায় ২৬ একর আয়তনের এই কারখানাকে প্রাণ-আরএফএল পরিণত করতে চায় উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ পরিবেশবান্ধব শিল্পপ্রতিষ্ঠানে। শতভাগ রপ্তানিমুখী এ কারখানায় তৈরি করা হবে বিভিন্ন ব্যাগ, জুতা ও তৈরি পোশাক। তা ছাড়া এখানে একটি আধুনিক কল সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হবে। দুই বছরের মধ্যে ১২ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে প্রায় ৩৫০ কোটি টাকার বিনিয়োগ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
গত বছরের অক্টোবরে চুক্তি স্বাক্ষরের পর ডিসেম্বরেই কারখানার দায়িত্ব বুঝে নেয় প্রাণ-আরএফএল। দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার তিন মাসের মাথায় কারখানায় পরীক্ষামূলক উৎপাদন কার্যক্রম শুরু হয়। আগামী দুই বছরের মধ্যে কারখানাটি পুরোদমে চালু হবে।

মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে কামরুজ্জামান কামাল বলেন, ‘আমরা মনে করি, দেশের উন্নয়নের জন্য ঢাকাকেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বের হয়ে আসতে হবে। তাই আমরা উত্তরবঙ্গে এই বৃহৎ শিল্প প্রকল্প শুরু করেছি। এর মাধ্যমে রাজশাহীর হাজার হাজার মানুষ কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবেন এবং স্থানীয় অর্থনীতি গতিশীল হবে।’ 
তিনি আরও বলেন, ‘কারখানাটি হবে সম্পূর্ণ সাসটেইনেবল গ্রিন ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক, যেখানে থাকবে সোলার এনার্জি, গ্রিন জোন ও ওয়াটার রিসাইক্লিং ব্যবস্থা। কারখানাটি শতভাগ রপ্তানিমুখী হবে।’
প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান মাল্টি লাইন ইন্ডাস্ট্রিজের নির্বাহী পরিচালক আনিসুর রহমান বলেন, এরই মধ্যে কারখানাতে থাকা পরিত্যক্ত একমাত্র শেড মেরামত করে স্বল্প আকারে জুতা ও ব্যাগ উৎপাদন প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। এখানে রাজশাহী অঞ্চলের প্রায় এক হাজার লোক কাজের সুযোগ পেয়েছেন। এ ছাড়া আরও এক হাজার লোক নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে।
তিনি বলেন, ‘স্থানীয় কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য এখানে একটি ‘স্কিলস ডেভেলপমেন্ট সেন্টার’ স্থাপন করা হবে। রাজশাহীর শ্রমবাজারকে কাজে লাগিয়ে রাজধানীমুখী প্রবণতা রোধ করাই এ বিনিয়োগের অন্যতম উদ্দেশ্য। আমরা আশাবাদী প্রকল্পটি সফলতা পেলে ভবিষ্যতে রাজশাহী অঞ্চলে আরও বড় পরিসরে বিনিয়োগ ও সম্প্রসারণের পথে এগোতে পারব।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প র ণ আরএফএল বছর র

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকামুখী যাত্রায় যমুনা সেতুর পশ্চিমে ১০ কিলোমিটার যানজট

ঈদের ছুটি শেষে কর্মস্থলে ফেরার পথে আবারও ঢাকামুখী মানুষের ঢল নেমেছে। এ কারণে যমুনা সেতুর পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কের প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকায় তীব্র যানজট দেখা দিয়েছে।

যমুনা সেতু সাইট কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সেতু দিয়ে ৪৯ হাজার ১৮২টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এর মধ্যে উত্তরবঙ্গ থেকে ঢাকামুখী লেনে চলেছে ৩০ হাজার ৮১৭টি এবং ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গগামী লেনে ১৮ হাজার ৩৬৫টি যানবাহন। এ সময় টোল আদায় হয়েছে ৩ কোটি ৪৩ লাখ ১৩ হাজার ২০০ টাকা।

আজ শনিবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত সরেজমিন যমুনা সেতুর পশ্চিমের কড্ডার মোড় এলাকায় দেখা গেছে, ঢাকামুখী লেনে তীব্র যানজট চলছে। নলকা সেতু থেকে ঝাঐল উড়ালসড়ক হয়ে যমুনা সেতুর পশ্চিম টোল প্লাজা পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটারজুড়ে এই যানজট দেখা গেছে। এ কারণে প্রচণ্ড গরমে দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা। অন্যদিকে ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গগামী লেনে থেমে থেমে ধীরগতিতে যানবাহন চলাচল করছে।

রংপুর থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী সেতু পরিবহনের সুপারভাইজার আবদুল আল মামুন বলেন, ‘দিবাগত রাত ১টার দিকে পীরগাছা থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছি। এখন সকাল সাড়ে ১০টায় সিরাজগঞ্জের কড্ডার মোড়ে উড়ালসড়কে যানজটে আটকে আছি। কখন ঢাকায় পৌঁছাব, তা বলা যাচ্ছে না।’ তিনি আরও বলেন, অতিরিক্ত যানবাহনের কারণে বগুড়া থেকেই গাড়ি ধীরগতিতে চলছে। সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল থেকে যানজটের তীব্রতা বেড়ে নলকা সেতু পার হওয়ার পর তা প্রকট আকার ধারণ করে।

ঢাকার উদ্দেশে কড্ডার মোড় থেকে রওনা হওয়া পোশাকশ্রমিক আলী হাসান বলেন, ‘আজই ছুটির শেষ দিন। তাই পরিবার নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছি। কিন্তু যানজটে সেতু পার হতে পারছি না। তার ওপর গরমে ভোগান্তি আরও বেড়েছে।’

যমুনা সেতু পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘ঈদের ছুটির শেষ দিনে যানবাহনের অতিরিক্ত চাপ থাকায় মহাসড়কে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তবে দুপুর নাগাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে আশা করছি।’

হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রউফ বলেন, সড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। এতে কিছুটা ধীরগতি দেখা দিলেও কোথাও কোথাও সাময়িক যানজট তৈরি হচ্ছে, যা আবার স্বাভাবিক হয়ে যাচ্ছে। জেলা পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশ যৌথভাবে যানজট নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজীপুরে মহাসড়কে কর্মস্থলে ফেরা মানুষের চাপ
  • যমুনা সেতুতে গাড়ি বিকল হয়ে টাঙ্গাইলে ১৪ কিলোমিটারে যানজট
  • ঢাকামুখী যাত্রায় যমুনা সেতুর পশ্চিমে ১০ কিলোমিটার যানজট