একসময় আমাদের দেশে ‘কফি’ শব্দটি ছিল শুধু একটি বিদেশি অভ্যস্ততা, কিন্তু সময়ের সঙ্গে সেই ধারণা বদলেছে। এখন কফি শুধুই একটি পানীয় নয়, এটি হয়ে উঠেছে জীবনযাপনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। যার সঙ্গে জড়িয়ে আছে বন্ধুত্ব, কাজের ফোকাস, আড্ডা, মানসিক প্রশান্তি এবং স্টাইল।

বর্তমানে বাংলাদেশের শহুরে সমাজে কফির জনপ্রিয়তা অভাবনীয়। ঢাকার অভিজাত এলাকা থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, কর্পোরেট অফিস, এমনকি মোবাইল কফি ভ্যানেও কফির চাহিদা ব্যাপক। এক জরিপ অনুসারে, ঢাকায় প্রতিদিন গড়ে ৩ লাখ কাপেরও বেশি কফি বিক্রি হয়। বাংলাদেশে বাৎসরিক কফির চাহিদা ৭ থেকে ৮ হাজার টন, যার অধিকাংশই আমদানি করা হয় ভিয়েতনাম, ব্রাজিল, ইন্দোনেশিয়া ও ভারত থেকে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সঠিক পরিকল্পনা ও বিনিয়োগ পেলে আগামী ১০ বছরে এই চাহিদা ১৫ হাজার টন ছাড়িয়ে যেতে পারে।

করোনা-পরবর্তী সময়ে ঘরে বসে কফি খাওয়ার প্রবণতা বাড়ায় হোম ব্রিউ কফি মেশিন এবং ইন্সট্যান্ট প্রিমিয়াম কফির বাজারও দ্রুত প্রসারিত হচ্ছে। বাংলাদেশে কফির বাজার দ্রুত বিকাশমান। আন্তর্জাতিক বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান Statista অনুযায়ী, ২০২৫ সালে বাংলাদেশে কফির বাৎসরিক চাহিদা হবে প্রায় ৪৮ হাজার ৬০ টন। এই পরিসংখ্যান প্রমাণ করে, কফি এখন  শুধু বিলাসিতা নয়, এটি হয়ে উঠেছে একটি প্রয়োজন।

বাংলাদেশে কফি চাষ মূলত সীমিত পরিসরে চালু আছে পার্বত্য চট্টগ্রাম, বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি এবং সিলেট অঞ্চলে। এরাবিকা ও রোবাস্টা—দুই ধরনের কফিরই পরীক্ষামূলক চাষ হচ্ছে, যেখানে সিলেট অঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়া বিশেষ উপযোগী প্রমাণিত হয়েছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট কফি নিয়ে গবেষণাও চালাচ্ছে। ২০২৩ সালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বান্দরবানে এক হেক্টর জমিতে বছরে গড়ে আটশ থেকে ১ হাজার কেজি কফি উৎপন্ন সম্ভব। এতে বাংলাদেশের চাহিদা অনেকটাই পূরণ করা সম্ভব হবে। এছাড়া, এই উৎপাদন যদি বাণিজ্যিকভাবে বাড়ানো যায়, তাহলে বাংলাদেশের স্পেশাল টি-কফি বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতা করতে সক্ষম হবে।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের তথ্যানুযায়ী, দেশে ২০১৯–২০ সালে কফি উৎপাদনের পরিমাণ ছিল মাত্র ৫৫.

৭৫ টন। চট্টগ্রাম, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, সিলেট ও মৌলভীবাজার এই অঞ্চলগুলোতে পরীক্ষামূলকভাবে এরাবিকা ও রোবাস্টা কফি চাষ হচ্ছে। সরকারের লক্ষ্য, ভবিষ্যতে কফি চাষ ১ থেকে ২ লক্ষ হেক্টরে সম্প্রসারণ করা, যা স্থানীয় ও বৈশ্বিক চাহিদা পূরণে সহায়ক হতে পারে।

কফি আমদানি: দেশের নির্ভরতা ও বাস্তবতা

বাংলাদেশে স্থানীয় উৎপাদন খুবই সীমিত হওয়ায় অধিকাংশ কফি আমদানিনির্ভর। প্রথম আলো এবং The Business Standard এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে: ২০১২ সালে কফি আমদানি ছিল মাত্র ২৬৪ টন এবং ২০২২ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১,৭৪৫ টন।
বাংলাদেশের ক্যাফে সংস্কৃতিতে “ওয়েলনেস” ধারণা এখন নতুন মাত্রা যোগ করেছে। ওয়েলনেস ক্যাফে একটি ইউনিক হেলদি-লিভিং ও লাইফ স্টাইল কনসেপ্ট যেখানে কফির সাথে স্বাস্থ্যকর খাবার, শান্ত পরিবেশ, এবং মানসিক প্রশান্তির সমন্বয় রয়েছে।
বর্তমানে বাংলাদেশে ১৭টিরও বেশি ওয়েলনেস ক্যাফে আউটলেট চালু রয়েছে, যেগুলোতে গড়ে প্রতিদিন ১০০০-১২০০ কাপ কফি বিক্রি হয়। এসব ক্যাফেতে সুগার-ফ্রি ল্যাটে, প্ল্যান্ট বেইজড মিল্ক কফি, ডিক্যাফ এবং অর্গানিক বীন্স ব্যবহার করা হচ্ছে, যা স্বাস্থ্যসচেতন গ্রাহকদের আকৃষ্ট করছে। ওয়েলনেস ক্যাফে শুধু কফি ব্যবসা নয়, বরং এটি নতুন এক জীবনধারার প্রতিনিধিত্ব করছে—যেখানে প্রতিটি কাপের ভেতর থাকে স্বাস্থ্য, সচেতনতা, এবং জীবনকে উপভোগ করার বার্তা।

কফির স্বাস্থ্য উপকারিতা

একাধিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, প্রতিদিন ১–২ কাপ কফি খাওয়ার মাধ্যমে অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়া যায়:
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে। টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি ২৫–৩০ শতাংশ হ্রাস করে। পারকিনসনস ও অ্যালঝেইমার রোগ প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়। বিষণ্নতা হ্রাস করে। 

দেশে ব্যবসায়িক অবস্থান

বাংলাদেশে কফিকে কেন্দ্র করে একটি নতুন অর্থনৈতিক ইকোসিস্টেম গড়ে উঠেছে। কফি ব্যবসায় বিনিয়োগ করছে দেশীয় উদ্যোক্তা, কর্পোরেট হাউজ এবং তরুণ স্টার্টআপ ফাউন্ডাররা। ঢাকায় বর্তমানে ৫০০-রও বেশি ছোট-বড় ক্যাফে রয়েছে। শুধু বসার জায়গার ক্যাফে নয়—ক্লাউড কিচেন কনসেপ্ট, কফি ট্র্যাক, রোস্টিং হাউজ এবং সাবস্ক্রিপশন বেসড কফি ডেলিভারিও চালু হয়েছে। বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড যেমন Starbucks, Tim Hortons এখনও বাংলাদেশে না এলেও, দেশীয় ব্র্যান্ডগুলো এখন নিজস্ব স্টাইলে Premium Experience দিচ্ছে—যেমন: North End, Crimson Cup, Wellness café। 

বাংলাদেশে কফির উপর মোট আমদানি শুল্ক ও ভ্যাটসহ করহার প্রায় ৮৯.৩২ শতাংশ, যা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি। তুলনামূলকভাবে ভারতের কফির উপর কর ৫৪ শতাংশ, শ্রীলঙ্কায় ৪৫ শতাংশ আর পাকিস্তানে ৩০ শতাংশ। এই উচ্চ ট্যাক্স কফির দাম বাড়ায়, উদ্যোক্তাদের নিরুৎসাহিত করে এবং ভোক্তাদের জন্য এটি ব্যয়বহুল করে তোলে। যদি ট্যাক্স হার যৌক্তিক পর্যায়ে কমানো হয় তাহলে স্থানীয় উদ্যোক্তারা বেশি বিনিয়োগে আগ্রহী হবেন। কফি হবে আরও সহজলভ্য হবে। নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হবে। রোস্টিং ও প্যাকেজিং ইন্ডাস্ট্রি গড়ে উঠবে।

বাংলাদেশের কফির বিশ্ববাজার

বিশ্বে কফি শিল্পের বাজার প্রায় ৫০০ বিলিয়ন ডলার, যার সবচেয়ে বড় অংশটি দখলে রেখেছে ল্যাটিন আমেরিকা ও আফ্রিকা। তবে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যেও ভারত ও ভিয়েতনাম ইতোমধ্যে রপ্তানিকারক হিসেবে সফল হয়েছে। বাংলাদেশের জন্য বিশ্ববাজারে প্রবেশের জন্য যা প্রয়োজন: সরকারি সহায়তায় জাতীয় কফি নীতি ও চাষ প্রসার। কফি রিসার্চ সেন্টার ও এক্সপোর্ট কোয়ালিটি কন্ট্রোল ইউনিট। কফি ফার্মার ট্রেনিং, রোস্টার ট্রেইনিং এবং কিউ গ্রেডার তৈরি। দেশীয় ব্র্যান্ডকে ই-কমার্স ও আন্তর্জাতিক ফুড ফেস্টিভ্যালে প্রমোট করা। বিশ্বের বাজারে 'বাংলাদেশি হিল কফি' একদিন 'স্পেশালিটি সিগনেচার' হতে পারে, যদি আমরা এখন থেকেই প্রাতিষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করি।
কফি আমাদের কাছে এখন আর বিলাসিতা নয়—এটি হয়ে উঠছে প্রতিদিনের লাইফস্টাইলের অবিচ্ছেদ্য অংশ, সংস্কৃতি, এবং সম্ভাবনার কেন্দ্রবিন্দু। প্রতিটি কাপ কফি শুধু ঘ্রাণ নয়, বহন করে নতুন দিনের গল্প, নতুন স্বপ্ন।

বাংলাদেশের কফি যদি বিশ্বমঞ্চে পা রাখতে পারে, তাহলে তাতে শুধুই একটি পণ্য নয়, বরং আমাদের দেশের সৌন্দর্য, সংস্কৃতি, এবং সক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ ঘটবে। আমি স্বপ্ন দেখি, একদিন "Coffee - Made in Bangladesh" বিশ্বজয় করবে—ভাষা, স্বাদ এবং আপন ঘ্রাণে।

তারা//

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আমদ ন

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রাম্পকে ইউক্রেনের পাশে থাকার আহ্বান রাজা চার্লসের

বিশ্বের সবচেয়ে জটিল কিছু সংকট সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যক্তিগত প্রতিশ্রুতির প্রশংসা করেছেন ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লস। একই সঙ্গে তিনি ‘স্বৈরাচারের (রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন) বিরুদ্ধে ইউক্রেনের প্রতি মার্কিন সমর্থন’ দেওয়ার জন্য ট্রাম্পের প্রতি আহ্বান জানান। খবর বিবিসির।

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) মার্কিন প্রেসিডেন্টের সফরের প্রথম দিনে উইন্ডসর ক্যাসলে আয়োজিত রাষ্ট্রীয় নৈশভোজে দেওয়া বক্তৃতায় এ কথা বলেন রাজা।

আরো পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলায় ৩ পুলিশ নিহত

সম্পদ বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন করায় সাংবাদিকের ওপর ক্ষেপলেন ট্রাম্প

জবাবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ সম্পর্কের প্রশংসা করে বলেন, এ সম্পর্ককে ‘বিশেষ’ শব্দ দিয়ে যথাযথভাবে বোঝানো যায় না।

উইন্ডসর ক্যাসলে ১৬০ জন অতিথির জন্য আয়োজিত জাঁকজমকপূর্ণ এই নৈশভোজে রাজার বক্তৃতায় দুই দেশের গভীর বন্ধন এবং সাংস্কৃতিক, বাণিজ্যিক ও সামরিক সম্পর্ক ধরে রাখার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেওয়া হয়।

ট্রাম্পের রাষ্ট্রীয় এ সফর চলবে আজ বৃহস্পতিবারও। এদিন নানা অনুষ্ঠানে মার্কিন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পের সঙ্গে অংশ নেবেন ব্রিটিশ রানি ক্যামিলা ও প্রিন্সেস অব ওয়েলস।

রাজকীয় অ্যাপায়ন শেষে ট্রাম্পের আজকের কর্মসূচি রাজনৈতিক আলোচনায় রূপ নেবে। আজ বৃহস্পতিবার ট্রাম্প ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে তার সরকারি বাড়ি চেকার্সে বৈঠক করবেন। বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনও হবে। 

বুধবারের (১৭ সেপ্টেম্বর) রাষ্ট্রীয় ভোজ ছিল আড়ম্বর ও রাজনীতির সমন্বয়ে সাজানো এক বিশেষ আয়োজন। ভোজে রাজা, রানি ও রাজপরিবারের জ্যেষ্ঠ সদস্যদের উপস্থিতিতে ট্রাম্পকে স্বাগত জানানো হয় উইন্ডসরে।

উইন্ডসর ক্যাসলের মনোরম প্রাঙ্গণে পৌঁছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও মেলানিয়া রাজকীয় ঘোড়ার গাড়ি থেকে নামেন। সেখানে সুশৃঙ্খলভাবে সাজানো সেনাদলের অভিবাদন গ্রহণ করেন তারা। 

যুক্তরাজ্যের কর্মকর্তাদের মতে, বিদেশি কোনো রাষ্ট্রপ্রধানকে স্বাগত জানানোর জন্য দেশটিতে আয়োজিত স্মরণকালের সবচেয়ে বড় সামরিক সংবর্ধনা ছিল এটি।

যুক্তরাষ্ট্রের অতিথিকে স্বাগত জানাতে প্রিন্স ও প্রিন্সেস অব ওয়েলসও উপস্থিত ছিলেন। তারা প্রেসিডেন্ট ও মেলানিয়ার সঙ্গে উষ্ণ ও বন্ধুত্বপূর্ণ এক বৈঠকও করেন।

ভোজসভায় বক্তৃতা করতে গিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রিন্স উইলিয়ামের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে তিনি হবেন ‘অসাধারণ সফল নেতা’। প্রিন্সেস অব ওয়েলস ক্যাথরিনকে তিনি আখ্যা দেন ‘উজ্জ্বল, সুস্বাস্থ্যের অধিকারী ও সুন্দরী’ হিসেবে।

ট্রাম্পের ঐতিহাসিক এ দ্বিতীয় রাষ্ট্রীয় সফর প্রমাণ করেছে রাজা ও তাঁর মধ্যে সম্পর্ক বেশ ভালো। সফরে আনুষ্ঠানিক কুচকাওয়াজে তাঁদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের মুহূর্তও দেখা গেছে।

এরপর রাজপ্রাসাদে ট্রাম্প দম্পতিকে স্বাগত জানান রাজা তৃতীয় চার্লস ও রানি ক্যামিলা। ট্রাম্প যখন রাজার সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করছিলেন, তখন প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ের ছয়টি কামান থেকে একযোগে ৪১ বার তোপধ্বনি করা হয়। একই সময়ে টাওয়ার অব লন্ডন থেকে একই রকম তোপধ্বনি হয়।

ট্রাম্প দম্পতিকে স্বাগত জানানোর এ আয়োজনে অংশ নেন ব্রিটিশ সামরিক বাহিনীর ১ হাজার ৩০০ সদস্য। ছিল শতাধিক ঘোড়া।

যুক্তরাজ্যের কর্মকর্তাদের মতে, বিদেশি কোনো রাষ্ট্রপ্রধানকে স্বাগত জানানোর জন্য দেশটিতে আয়োজিত স্মরণকালের সবচেয়ে বড় সামরিক সংবর্ধনা ছিল এটি।

বিবিসি বলছে, রাজকীয় অনুষ্ঠানের পাশাপাশি, বাণিজ্য ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে প্রভাবিত করার প্রচেষ্টা থাকবে।

যুক্তরাজ্যে রাষ্ট্রীয় সফর হলো একধরনের নরম শক্তির কূটনীতি, যা গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য রাজকীয় আকর্ষণ ব্যবহার করে, যার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আর কেউ নেই।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্টারমার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আর্থিক সেবা, প্রযুক্তি এবং জ্বালানি খাতে ঘনিষ্ঠ সমন্বয় গড়ে তুলে যুক্তরাজ্যকে আমেরিকান বিনিয়োগের প্রধান গন্তব্য হিসেবে উপস্থাপন করতে চেষ্টা করছেন। এর মাধ্যমে তিনি নিজ দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি করতে চাইছেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্টের সফর শুরু হওয়ার সাথে সাথে, মার্কিন প্রযুক্তি সংস্থাগুলোর সঙ্গে যুক্তরাজ্যে ৩১ বিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগের একটি বড় প্রযুক্তি চুক্তি ঘোষণা করা হয়েছে। যার মধ্যে মাইক্রোসফট থেকে ২২ বিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং এবং পারমাণবিক শক্তিতে সহযোগিতা দেখা যাবে। 

ট্রাম্পের সফরের আগে গুগলের মূল প্রতিষ্ঠান অ্যালফাবেট যুক্তরাজ্যের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা গবেষণায় ৫ বিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার ট্রাম্প-স্টারমারের বৈঠক থেকে কয়েক বিলিয়ন ডলারের ব্যবসায়িক চুক্তির ঘোষণাও আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ