সূর্যবংশীকে প্রশংসা করে আকাশে তুলতে নিষেধ করলেন ভারতীয় কিংবদন্তি
Published: 2nd, May 2025 GMT
বৈভব সূর্যবংশীর ফর্ম পড়ে যাওয়ার কারণ কী, জানতে চেয়ে পোল খুলেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া। পোলে এখন পর্যন্ত ৫৫ শতাংশ ক্রিকেটপ্রেমী মনে করছেন ‘প্রত্যাশার চাপ’, বাকি ৪৫ শতাংশের মতে ‘বাজে শট নির্বাচন’।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার হঠাৎ এমন পোল খোলার কারণ নিশ্চয় জানেন। স্বীকৃত টি–টোয়েন্টিতে সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে সেঞ্চুরি করা সূর্যবংশী যে পরের ম্যাচেই ‘সুপার ফ্লপ’!
জয়পুরের সাওয়াই মান সিং স্টেডিয়ামে সোমবার গুজরাট টাইটানসের বিপক্ষে ৩৮ বলে ১০১ রান করে রাজস্থান রয়্যালসকে জিতিয়েছিলেন সূর্যবংশী। ১৪ বছরের এই প্রতিভাবান কিশোর কাল রাতে একই মাঠে মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের বিপক্ষে মেরেছেন ‘ডাক’। যেন আকাশে উড়াল দিতে না দিতেই ভূপাতিত!
মুম্বাইয়ের করা ২১৭ রানের পাহাড় টপকাতে হলে রাজস্থানকে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং হতো। সূর্যবংশী সেই চেষ্টাই করেছিলেন। ইনিংসের প্রথম ওভারে নিজের মুখোমুখি হওয়া দ্বিতীয় বলে মিড অনের ওপর দিয়ে বাউন্ডারি মারতে চেয়েছিলেন।
কিন্তু ব্যাটে–বলে ঠিকঠাক হয়ে না ওঠায় সরাসরি বল চলে যায় উইল জ্যাকসের হাতে। তাঁর ব্যর্থতার রাতে মুম্বাইয়ে কাছে ১০০ রানে হেরে আইপিএলের প্লে–অফের দৌড় থেকে ছিটকে পড়েছে রাজস্থান।
চার দিনের ব্যবধানে সূর্যবংশীর এমন উত্থান–পতনের কারণ খুঁজতে গিয়েই কেউ প্রত্যাশার চাপ আবার কেউ বাজে শট নির্বাচনের কথা বলছেন। বড় মঞ্চে ক্যারিয়ারের শুরুতেই সূর্যবংশীকে যে মুদ্রার উভয় পিঠ দেখতে হতে পারে—এমন সতর্কবার্তা আগেই দিয়েছেন ভারতের সাবেক ওপেনার বীরেন্দর শেবাগ ও সাবেক প্রধান কোচ রবি শাস্ত্রী।
কাল রাজস্থান–মুম্বাই ম্যাচ চলাকালে কিংবদন্তি সুনীল গাভাস্কারও আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে বিশ্ব রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরির জন্য অতিমাত্রায় প্রশংসা করা হলে সূর্যবংশীর ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করতে পারে, যা তাঁর পারফরম্যান্সে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। শেষ পর্যন্ত সেটাই হয়েছে।
আইপিএলের অন্যতম সম্প্রচারকারী প্ল্যাটফর্ম জিওস্টারকে গাভাস্কার বলেছেন, ‘আমার মনে হয়, সে তার খেলাকে আরও বিকশিত করতে চলেছে। রাহুল দ্রাবিড়ের (রাজস্থান কোচ) পাশে বসলে সে দ্রুতই শিখে ফেলবে কীভাবে ইনিংস গড়ে তুলতে হয়। সে দিনের পর দিন শুধু উন্নতিই করবে। তবে আমি এটাও বিশ্বাস করি, সে এমন একজন, যাকে প্রশংসা করে আকাশে তুলে দেওয়া উচিত হবে না।’
সব ম্যাচেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের চিন্তা থেকে সূর্যবংশীকে বেরিয়ে আসতেও বলেছেন টেস্ট ইতিহাসের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ১০ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করা গাভাস্কার, ‘আইপিএলে নিজের খেলা প্রথম বলেই সে ছক্কা মেরেছে। কিন্তু সব সময় এ ধরনের চিন্তা করা উচিত হবে না। অভিজ্ঞ বোলাররা ওকে থামানোর উপায় খুঁজবে। তারা বলবে, “ওহ, সে তো প্রথম বলেই ছক্কা মারতে চায়। তাহলে শর্ট বল দিয়ে দেখি।” এভাবে (অভিজ্ঞ বোলাররা) তাকে আউট করতে পারে। এমনটা হলে সে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়তে শুরু করবে এবং অতিরিক্ত চাপ নিয়ে ফেলবে।’
আইপিএল শুরুর আগে একটি প্রদর্শনী ম্যাচ খেলতে গিয়ে বাঁ পায়ে গুরুতর চোট পান রাজস্থান কোচ রাহুল দ্রাবিড়। এর পর থেকে তিনি স্ক্রাচে ভর দিয়ে অথবা হুইলচেয়ারের সহায়তা নিয়ে চলছেন।
তবে সোমবার সূর্যবংশীর রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরির হুইলচেয়ার থেকে উঠে তাঁকে অভিনন্দন জানান এবং নিজেও উদ্যাপন করে থাকেন। কিন্তু গত রাতে সূর্যবংশী শূন্য রানে আউট হওয়ার পর দ্রাবিড়ের মুখ একেবারেই মলিন হয়ে যায়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
২০ বছর পর সাংবাদিক মানিক সাহা হত্যা মামলার আসামির আত্মসমর্পণ
দীর্ঘ ২০ বছর পলাতক থাকার পর খুলনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক মানিক চন্দ্র সাহা হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি আব্দুস সাত্তার ওরফে ডিসকো সাত্তার আত্মসমর্পণ করেছেন। সোমবার খুলনা বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন তিনি। ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মঞ্জুরুল ইমাম জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠান।
ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) জিল্লুর রহমান খান সমকালকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সাত্তার ওরফে ডিসকো সাত্তার বাগেরহাট জেলার মোরেলগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা নুর মোহাম্মাদ ওরফে নুরুর ছেলে। হত্যাকাণ্ডের পর দীর্ঘ ২০ বছর ধরে তিনি পলাতক ছিলেন।
জানা যায়, ২০০৪ সালের ১৫ জানুয়ারি খুলনা প্রেসক্লাব অদূরে সন্ত্রাসীদের বোমার আঘাতে খুন হন সাংবাদিক মানিক চন্দ্র সাহা।
ট্রাইব্যুনালের উচ্চমান বেঞ্চ সহকারী মাজাহারুল ইসলাম জানান, সোমবার দুপুরের পর আদালতে উপস্থিত হন ডিসকো সাত্তার। ওকালত নামায় তিনি উল্লেখ করেন, জীবন এবং জীবিকার তাগিদে খুলনার বাইরে থাকায় মামলার রায় প্রচারের সময়ে আদালতে উপস্থিত হতে পারেননি। তিনি রায়ের বিষয়টি অবগত ছিলেন না।
ট্রাইব্যুনাল থেকে জানা গেছে, সাংবাদিক মানিক চন্দ্র সাহা হত্যার দু’দিন পর ২০০৪ সালের ১৭ জানুয়ারি খুলনা সদর থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) রণজিৎ কুমার দাস বাদী হয়ে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে মামলা করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা খুলনা সদর থানার তৎকালীন ওসি মোশাররফ হোসেন ২০০৪ সালের ২০ জুন হত্যা মামলার চার্জশিট দাখিল করেন। চার্জশিট দাখিলের পর থেকে ডিসকো সাত্তার পলাতক ছিলেন।
দীর্ঘ এক যুগ পর বিচারিক প্রক্রিয়া শেষ করে ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর আদালত মানিক চন্দ্র সাহা হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন। মামলায় ৯ জন আসামিকে দোষী সাবস্ত করে যাবজ্জীবন কারদণ্ড প্রদান করেন।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- সুমন ওরফে নুরুজ্জামান, বুলবুল ওরফে বুলু, আকরাম হোসেন ওরফে আকরাম ওরফে বোমরু আকরাম ওরফে বোমা আকরাম ওরফে ফাটা, আলী আকবর সিকদার ওরফে শাওন, ছাত্তার ওরফে ডিসকো সাত্তার, বেল্লাল, মিঠুন ওরফে মিটুল, সাকা ওরফে শওকাত হোসেন, সরো ওরফে সরোয়ার হোসেন।
মামলায় দু’জন খালাস পেয়েছিলেন। তারা হলেন হাই ইসলাম ও কচি ওরফে ওমর ফারুক।