শের সব স্তরের ডিপ্লোমা ইন নার্সিং ও ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারি কোর্সকে স্নাতক বা ডিগ্রি সমমানের স্বীকৃতির দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে সড়ক অবরোধ করেছেন নার্সিং শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (১৪ মে) দুপুর থেকে ‘ডিপ্লোমা ইন নার্সিং ও মিডওয়াইফারি ডিগ্রি বাস্তবায়ন কমিটি’র ব্যানারে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় অবস্থান নেন। ফলে শাহবাগ ও আশপাশের এলাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তীব্র যানজটে চরম দুর্ভোগে পরেন যাত্রীরা।

উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) পাসের পর প্রচলিত ডিপ্লোমা ইন নার্সিং সায়েন্স অ্যান্ড মিডওয়াইফারি ও ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারি কোর্স দুটিকে স্নাতক সমমান (ডিগ্রি পাস কোর্স) হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবিতেই এই আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা।

আরো পড়ুন:

কারাগার থেকে হাসপাতালে সাবেক মন্ত্রী ইমরান

স্বামীর ছুরিকাঘাতে আহত মেঘলার মৃত্যু, ২ শিশু আশঙ্কাজনক

দাবি আদায়ের লক্ষ্যে এর আগে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।এরপর মিছিল নিয়ে শাহবাগ মোড়ের দিকে অগ্রসর হলে পুলিশ শাহবাগ থানার সামনে তাদের ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দেয়। তবে শিক্ষার্থীরা ব্যারিকেড সরিয়ে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন।

শিক্ষার্থীরা জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরে মানববন্ধন, স্মারকলিপিসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছেন। তাদের দাবি পূরণ না হওয়ায় বাধ্য হয়ে তারা শাহবাগে অবস্থান নিয়েছেন।

ইসরাত আবেদিন নামে একজন ভুক্তভোগী রাইজিংবিডিকে বলেন,“আমার মা বারডেমে ভর্তি।আমি মোটরসাইকেল নিয়ে আসছি, কিন্তু আন্দোলনকারীরা এখন আমাকে যেতে দিতে চাচ্ছে না। এরকম অবরোধ কর্মসূচি সাধারণ মানুষকে অতিষ্ট করে ফেলছে। সরকারের উচিত পদক্ষেপ নেওয়া। যাতে কিছু হলেই শাহবাগ অবরোধ না করতে পারে।”

মোফাজ্জল হোসেন নামে আরেকজন ভুক্তভোগী রাইজিংবিডিকে বলেন, “শাহবাগ মোড়ে হাজার হাজার গাড়ি আটকে আছে। সবাই তো প্রয়োজনে বাসার বাইরে বের হয়। আমি অফিসে জরুরি কাজে মতিঝিল যাব কিন্তু তারা আমার গাড়ি আটকে দিয়েছে।”

সাধারণ মানুষের ভোগান্তি সম্পর্কে জানতে চাইলে ডিপ্লোমা ইন নার্সিং ও মিডওয়াইফারি ডিগ্রি বাস্তবায়ন কমিটি সদস্য নাজিউর রহমান রাইজিংবিডিকে বলেন,“আমাদের দাবি আদায়ে দীর্ঘদিন ধরে সরকারকে জানাচ্ছি, কিন্তু সরকার দাবির বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়নি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা শাহবাগ ছাড়ব না। জনভোগান্তির জন্য সবার কাছে দুঃখিত। কারণ এছাড়া আমাদের আর কোনো উপায় নেই।”

শাহবাগ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ খালিদ মনসুর রাইজিংবিডিকে বলেন, “ডিপ্লোমা নার্সরা পাঁচ ঘণ্টা ধরে শাহবাগ অবরোধ করে রেখেছে। আমরা তাদের জনগণের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে তাদেরকে অবরোধ তুলে নেওয়ার অনুরোধ করছি। কিন্তু তারা এখনো অবরোধ চলমান রেখেছে।”

ঢাকা/রায়হান/সাইফ 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইন ন র স শ হব গ অবর ধ ম ডওয

এছাড়াও পড়ুন:

চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং টার্মিনাল পরিচালনা করবে নৌবাহিনী 

চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল বা এনসিটি পরিচালনার দায়িত্ব আগামী ছয় মাসের জন্য নৌবাহিনীকে দেওয়া হচ্ছে। গতকাল বুধবার ঢাকার সচিবালয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এক বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এ কথা জানান নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন।

এর আগে গত মঙ্গলবার অর্থনৈতিক বিষয়–সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপরই
বুধবার বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে নৌবাহিনীকে বন্দরের এই টার্মিনাল পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। 

নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালে জাহাজ থেকে গ্যান্ট্রি ক্রেন দিয়ে আমদানি করা কনটেইনার নামানো হয়। আবার রপ্তানি পণ্যবাহী কনটেইনার ক্রেনের সাহায্যে জাহাজে তোলা হয়। এ ছাড়া টার্মিনালের চত্বরে কনটেইনার সংরক্ষণ, স্থানান্তর ও কনটেইনার খুলে পণ্য খালাস দেওয়া হয়। 

সচিবালয়ে গতকাল বৈঠক শেষে নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, বন্দর কর্তৃপক্ষকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিধি অনুসারে আগামী ছয় মাস বা তার বেশি সময়ের জন্য একটা নির্দিষ্ট খরচের মধ্যে এই টার্মিনাল পরিচালনার। এখন বন্দরের সঙ্গে এ বিষয়ে নৌবাহিনীর চুক্তি হবে।

চট্টগ্রাম বন্দরের এই টার্মিনাল ১৭ বছর ধরে দেশীয় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে আসছে। বর্তমানে এনসিটি পরিচালনাকারী দেশীয় প্রতিষ্ঠান সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেডের চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে ৬ জুলাই। এর পরদিন অর্থাৎ ৭ জুলাই থেকে নৌবাহিনী এই টার্মিনাল পরিচালনার জন্য দায়িত্ব পাচ্ছে।

নৌপরিবহন উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, ১৬–১৭ বছর ধরে যে কোম্পানি এই টার্মিনালে কাজ করছে, তারাও নৌবাহিনীকে সহযোগিতা করবে বলে জানিয়েছে। নৌবাহিনী বা যে–ই পরিচালনা করুক, কারও চাকরি যাবে না। কাউকে বাদ দেওয়া হবে না।

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এই টার্মিনালে জেটি আছে পাঁচটি। এই পাঁচ জেটিতে চারটি সমুদ্রগামী জাহাজ ও অভ্যন্তরীণ নৌপথে চলাচলকারী একটি জাহাজ ভিড়তে পারে। এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় টার্মিনাল। জাহাজ থেকে কনটেইনার ওঠানো-নামানো, স্থানান্তরসহ নানা কাজ হয় এই টার্মিনালে।

আওয়ামী লীগের শাসনামলে নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল সংযুক্ত আরব আমিরাতের ডিপি ওয়ার্ল্ডের হাতে ছেড়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সেই প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়েছে। প্রকল্পের সময়সীমা অনুযায়ী, আগামী নভেম্বর মাসে এই চুক্তি হবে।

বিশ্বব্যাংকের সহযোগী ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি) এই টার্মিনালে ট্রানজেকশন অ্যাডভাইজার বা বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করছে। সেই চুক্তির আগপর্যন্ত টার্মিনালের পরিচালনার ভার থাকবে নৌবাহিনীর হাতে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ