বাংলাদেশকে এড়িয়ে সেভেন সিস্টার্সকে যুক্ত করতে নতুন প্রকল্প ভারতের
Published: 17th, May 2025 GMT
বাংলাদেশকে এড়িয়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাত রাজ্যের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য নতুন পথ বেছে নিয়েছে ভারত। মেঘালয়ের শিলং থেকে আসামের শিলচর পর্যন্ত প্রায় ২৩ হাজার কোটি রুপি ব্যয়ে নতুন মহাসড়ক নির্মাণের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে ভারত সরকার। এই মহাসড়ক মিয়ানমারের গুরুত্বপূর্ণ মাল্টি-মডেল পরিবহন প্রকল্পের সম্প্রসারণ। এর ফলে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো ও পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার মধ্যে সমুদ্রপথে একটি বিকল্প সংযোগ তৈরি হবে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস শুক্রবার এ তথ্য জানিয়েছে।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক বেশ শীতল হয় পড়ে। এর ফলে, বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারতের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর যোগাযোগের ভবিষ্যৎও হুমকির মুখে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে এড়িয়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে যোগাযোগের জন্য বিকল্প পথ অনুসন্ধান শুরু করে ভারত।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, ৩০ এপ্রিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ২২ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা ব্যয়ের এই প্রকল্পে অনুমোদন দেয়। প্রকল্পের মোট দৈর্ঘ্যের মধ্যে মেঘালয়ে ১৪৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার এবং আসামে ২২ কিলোমিটার। চালু হলে এই নতুন পথটি ভ্রমণের সময় সাড়ে আট ঘণ্টা থেকে কমিয়ে মাত্র পাঁচ ঘণ্টা করবে। ১৬৬ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ চার লেনের এক্সপ্রেসওয়েটি শিলং-এর কাছে মাওলিংখুং থেকে শিলচরের কাছে পাঁচগ্রাম পর্যন্ত জাতীয় সড়ক-৬ বরাবর যাবে। জাতীয় মহাসড়ক ও অবকাঠামো উন্নয়ন কর্পোরেশন লিমিটেড (এনএইচআইডিসিএল) গৃহীত এই প্রকল্পটি ২০৩০ সালের মধ্যে সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এই এক্সপ্রেসওয়েটি ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে মিয়ানমারের কালাদান মাল্টি-মডেল ট্রানজিট ট্রান্সপোর্ট প্রকল্পের সাথে সংযুক্ত হবে। কালাদান প্রকল্পটি কলকাতা বন্দরকে সমুদ্রপথে মিয়ানমারের সিত্তে বন্দরের সাথে সংযুক্ত করে। এই রুটটি পালেতোয়ার মধ্য দিয়ে অভ্যন্তরীণভাবে এগিয়ে যায় এবং তারপর মিজোরামের জোরিনপুইতে গিয়ে ভারতকে সংযুক্ত করে। জোরিনপুই থেকে লংটলাই এবং তারপর আইজল পর্যন্ত করিডোরটি সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করছে এনএইচআইডিসিএল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভারতীয় কর্মকর্তা বলেছেন, “কালাদান প্রকল্পের সহায়তায় পণ্যসামগ্রী বাংলাদেশের ওপর নির্ভর না করে (ওডিশার) বিশাখাপত্তনম এবং (পশ্চিমবঙ্গের) কলকাতা থেকে উত্তর-পূর্ব ভারতে পৌঁছাবে। এরপর এই উচ্চগতির করিডর সড়কপথে পণ্য পরিবহনের নিশ্চয়তা দেবে, যা এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে উৎসাহিত করবে।”
বর্তমানে ভারতের অন্যান্য অংশের সঙ্গে সাতটি উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যের যোগাযোগের একমাত্র পথ শিলিগুড়ি করিডর, যা চিকেন’স নেক নামেও পরিচিত। অন্য দুটি প্রবেশ পথ বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্য দিয়ে। তবে বাংলাদেশ বঙ্গোপসাগরের মাধ্যমে উত্তর-পূর্ব ভারতে দিল্লির প্রবেশাধিকার সীমিত করেছে এবং এই অঞ্চলে জলপথের ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছে। তাই বিকল্প হিসেবে ভারত ও মিয়ানমার যৌথভাবে কালাদান প্রকল্প হাতে নিয়েছে।
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রকল প র ন প রকল প
এছাড়াও পড়ুন:
আফগানিস্তানে মধ্যরাতে শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাত
আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় হিন্দুকুশ অঞ্চলে ৬ দশমিক ৩ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। যুক্তরাষ্ট্র ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) এ তথ্য জানিয়েছে। দুই মাস আগেই দেশটিতে এক ভূমিকম্পে কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।
ইউএসজিএস জানায়, রোববার দিবাগত রাতে আফগানিস্তানের হিন্দুকুশ অঞ্চলে মাজার-ই-শরিফ শহরের কাছে খোলম এলাকায় ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। স্থানীয় সময় রাত ১২টা ৫৯ মিনিটে আঘাত হানা এই ভূমিকম্পের গভীরতা প্রথমে ১০ কিলোমিটার বলা হয়। পরে তা সংশোধন করে গভীরতা ২৮ কিলোমিটার বলে জানায় সংস্থাটি।
আফগানিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পরে জানানো হবে।
উল্লেখ্য, গত ৩১ আগস্ট আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্পটি আঘাত হেনেছিল। দেশটির পূর্বাঞ্চলে আঘাত হানা রিখটার স্কেলে ৬ মাত্রার ওই ভূমিকম্পে ২ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারান।
আরও পড়ুনআফগানিস্তানে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ২২০৫, খোলা আকাশের নিচে মানুষ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫আফগানিস্তানে প্রায়শই ভূমিকম্প আঘাত হানে। বিশেষ করে হিন্দুকুশ পর্বতমালা বরাবর, যেখানে ইউরেশীয় এবং ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটগুলো মিলিত হয়েছে।
ব্রিটিশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার ভূমিকম্পবিদ ব্রায়ান ব্যাপটির দেওয়া তথ্য মতে, ১৯০০ সাল থেকে উত্তর-পূর্ব আফগানিস্তানে রিখটার স্কেলে ৭ মাত্রার বেশি ১২টি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
আরও পড়ুন৩৫ বছরে আফগানিস্তানে ভয়াবহ যত ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫