চট্টগ্রাম বন্দরের সবচেয়ে বড় ও লাভজনক নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশিদের হাতে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে। সেটা ২০২৩ সালের মার্চে। বন্দরের শ্রমিক-কর্মচারীরা সে সময়ই এর বিরোধিতা করেছিলেন। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগ আমলের সেই সিদ্ধান্তই বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে।

প্রথম আলোয় প্রকাশিত সংবাদ অনুসারে, সংযুক্ত আরব আমিরাতের ডিপি ওয়ার্ল্ডকে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের (পিপিপি) মাধ্যমে জিটুজি ভিত্তিতে টার্মিনালটি পরিচালনার ভার দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। প্রকল্পের পরামর্শক হিসেবে কাজ করছে বিশ্বব্যাংকের প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি)।

সবকিছু পরিকল্পনামতো এগোলে দর-কষাকষি করে নভেম্বরে ডিপি ওয়ার্ল্ডের সঙ্গে কনসেশন চুক্তি হবে। চুক্তির পর টার্মিনালটি পুরোপুরি ডিপি ওয়ার্ল্ডের হাতে চলে যাবে। তারা কনটেইনার ওঠানামার মাশুল আদায় করবে, লোকবল নিয়োগ দেবে এবং বন্দরকে এককালীন, বার্ষিক ও কনটেইনারপ্রতি অর্থ প্রদান করবে।

বন্দরসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এটাকে দেশের স্বার্থবিরোধী বলে মনে করছেন। তাঁদের বক্তব্য হলো টার্মিনালটিতে দেশের টাকায় জেটি নির্মাণ ও যন্ত্রপাতি কেনা হয়েছে। জাহাজ থেকে কনটেইনার ওঠানো-নামানোর অত্যাধুনিক ‘গ্যান্ট্রি ক্রেন’ থেকে শুরু করে কনটেইনার স্থানান্তরে যত ধরনের যন্ত্র দরকার, তার সবই আছে টার্মিনালটিতে। বন্দর কর্তৃপক্ষ দরপত্রের মাধ্যমে দেশীয় প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে টার্মিনাল পরিচালনা করছে। এখানে এক হাজারের মতো শ্রমিক-কর্মচারী কাজ করছেন।

চট্টগ্রাম বন্দরের চারটি কনটেইনার টার্মিনালের মধ্যে সবচেয়ে বড় নিউমুরিং টার্মিনাল, যেখানে একসঙ্গে চারটি সমুদ্রগামী কনটেইনার জাহাজ ও একটি অভ্যন্তরীণ নৌপথের ছোট জাহাজ ভেড়ানো যায়। চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে যত কনটেইনার ওঠানামা করা হয়, তার ৪৪ শতাংশই হয় এই টার্মিনালের মাধ্যমে, বন্দরের সবচেয়ে বেশি আয়ও হয় এই টার্মিনাল থেকে।

১৭ বছর ধরে এ রকম লাভজনকভাবে চলতে থাকা একটি টার্মিনাল কেন বিদেশি কোম্পানির কাছে ইজারা দিতে হবে, তা স্পষ্ট নয়। অনেকে দক্ষতা ও আধুনিক প্রযুক্তির কথা বলছেন। কিন্তু টার্মিনালে ইতিমধ্যে সব প্রয়োজনীয় আধুনিক যন্ত্রপাতি রয়েছে, যা ব্যবহার করে দেশীয় প্রতিষ্ঠান দক্ষতার সঙ্গে কনটেইনার ওঠানামা করছে। এই বিদেশি বিনিয়োগের ফলে নতুন করে কর্মসংস্থান সৃষ্টির বদলে উল্টো বিদ্যমান কর্মসংস্থান ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এ ছাড়া বন্দর পরিচালনার ভার কাকে দেওয়া হবে বা না হবে, তা শুধু কারিগরি ও ব্যবস্থাপনাগত দক্ষতার ওপর নির্ভর করে না। একটি দেশের বন্দর হলো কৌশলগত সম্পদ, যার সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তার সম্পর্ক রয়েছে। যে ডিপি ওয়ার্ল্ডের হাতে অন্তর্বর্তী সরকার চট্টগ্রাম বন্দরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও লাভজনক কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনার ভার তুলে দিতে যাচ্ছে, জাতীয় নিরাপত্তা ও ভূরাজনৈতিক বিবেচনায় সেই ডিপি ওয়ার্ল্ডকে ২০০৬ সালে যুক্তরাষ্ট্র টার্মিনাল পরিচালনার সুযোগ দেয়নি।

আরব আমিরাতের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এই কোম্পানি ২০০৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ছয়টি বন্দরের টার্মিনাল পরিচালনা পিঅ্যান্ডও নামের একটা ব্রিটিশ কোম্পানির কাছ থেকে অধিগ্রহণ করতে চেয়েছিল। কিন্তু জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির মধ্যে পড়বে—এ কারণে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস এর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। ফলে ডিপি ওয়ার্ল্ড ওই বন্দরগুলোর পরিচালনার ভার ‘পোর্ট আমেরিকা’ নামের সদ্য প্রতিষ্ঠিত একটি মার্কিন কোম্পানির কাছে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়, যেটি আজকে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় টার্মিনাল অপারেটর।

নির্বাচনের আগে এ ধরনের একটি কৌশলগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারের আছে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। বন্দর পরিচালনার ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম, দুর্নীতি থাকলে সরকার বরং সেগুলো নিয়ন্ত্রণ করার দিকে গুরুত্ব দিতে পারে। ভুলে গেলে চলবে না, অন্তর্বর্তী সরকারের মূল কাজ হলো জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচারের পাশাপাশি সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য সৃষ্টি ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করা।

২০১৮ সালে চীনের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কসকো শিপিং যখন হংকংভিত্তিক ওরিয়েন্ট ওভারসিজ লিমিটেড অধিগ্রহণ করার আগ্রহ প্রকাশ করে, তখন যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্টের শর্তের কারণে ওরিয়েন্ট ওভারসিজ তাদের মালিকানাধীন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার লং বিচ কনটেইনার টার্মিনাল তৃতীয় পক্ষের কাছে করতে বাধ্য হয়। যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বৃহৎ কনটেইনার টার্মিনালের নিয়ন্ত্রণ যেন চীনের হাতে না যায়, সে জন্যই এই শর্ত।

দেখা যাচ্ছে, বিশ্বজুড়ে বন্দরের ব্যবস্থাপনা ও কর্তৃত্বকে আর দশটা সাধারণ বিনিয়োগের মতো দেখা হয় না। বিদেশি কোম্পানির মালিকানা নানা কারণে পরিবর্তন হতে পারে। মালিকানা পরিবর্তন হলে বন্দর পরিচালনার কর্তৃত্ব কার হাতে গিয়ে পড়ে, তা নিয়েও ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তা থাকে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীন যেভাবে মালিকানা পরিবর্তন প্রভাবিত করতে পারে, অন্য দেশের পক্ষে তা সম্ভব না-ও হতে পারে। বন্দর পরিচালনার ভার বিদেশি কোম্পানিকে দেওয়ার ক্ষেত্রে এসব বিষয়ও বিবেচনার প্রয়োজন।

এ ছাড়া বিগত সরকারের আমলে পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়ার অভিজ্ঞতাও উৎসাহজনক নয়। দেশে প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম বন্দরের একটি টার্মিনাল সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠান রেড সি গেটওয়ে টার্মিনাল ইন্টারন্যাশনালকে (আরএসজিটিআই) পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয় ২০২৪ সালের জুনে। বন্দর কর্তৃপক্ষ ১ হাজার ৮৮৬ কোটি টাকা ব্যয় করে এই টার্মিনাল তৈরি করে। কথা ছিল, ২৪ কোটি মার্কিন ডলার বা ২ হাজার ৬৪০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে আগামী ২২ বছর আরএসজিটিআই টার্মিনালটি পরিচালনা করবে। বিনিময়ে বন্দর কর্তৃপক্ষ রাজস্ব পাবে বছরে ৩০০ কোটি টাকা।

সম্প্রতি সমকাল–এ প্রকাশিত সংবাদ থেকে দেখা যাচ্ছে, ১০ মাসেও প্রতিশ্রুত বিনিয়োগ হয়নি। ফলে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও দক্ষ জনবলের অভাবে টার্মিনালটি পুরোদমে কার্যকর হয়নি। প্রত্যাশার মাত্র ১২ শতাংশ কনটেইনার হ্যান্ডলিং করছে এ টার্মিনাল। দৈনিক ২০ ফুট দীর্ঘ ১ হাজার ৩৬৯ কনটেইনার পরিচালনা করার সক্ষমতা থাকলেও এই টার্মিনালে হ্যান্ডলিং হচ্ছে মাত্র ১৭০-১৮০ কনটেইনার।

শুধু তা-ই নয়, পতেঙ্গা টার্মিনাল থেকে কনটেইনারপ্রতি আয়ও হচ্ছে তুলনামূলক কম। পতেঙ্গা টার্মিনাল থেকে বন্দরের কনটেইনারপ্রতি আয় হচ্ছে ১৮ ডলার, অন্যদিকে নিউমুরিং টার্মিনাল থেকে বন্দরের বিদ্যমান আয় কনটেইনারপ্রতি ৪৭ ডলার। পতেঙ্গা টার্মিনালের জন্য বন্দরের বিনিয়োগ কেবল জেটি নির্মাণে আর নিউমুরিংয়ের জন্য বিনিয়োগ জেটির পাশাপাশি যন্ত্রপাতিতেও।

নিউমুরিং টার্মিনালে যেহেতু বন্দর কর্তৃপক্ষের বিনিয়োগ পতেঙ্গা টার্মিনালের চেয়ে বেশি, তাই সেখান থেকে দর-কষাকষির মাধ্যমে আয় হয়তো পতেঙ্গার তুলনায় বেশি হবে। তারপরও সেটা বিদ্যমান আয়ের চেয়ে কম হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

কাজেই বিদেশি প্রতিষ্ঠানের হাতে বন্দর পরিচালনার ভার তুলে দিলেই যে লাভজনক হবে এবং দেশের স্বার্থ রক্ষা হবে, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। সিঙ্গাপুরের বন্দর পরিচালনার সুনাম সুবিদিত। সেখানকার বন্দরগুলো পরিচালিত হয় রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পিএসএ করপোরেশন ও জুরং পোর্ট কোম্পানির মাধ্যমে। আসলে সবকিছু নির্ভর করে মূলত রাষ্ট্রের গভর্ন্যান্স বা তদারকির ওপর। যথাযথ তদারকি না থাকলে বিদেশি প্রতিষ্ঠান থেকেও কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া যায় না। আবার ঠিকঠাক তদারক করা হলে দেশীয় প্রতিষ্ঠান থেকেও ভালো ফল আদায় করা যায়।

চট্টগ্রাম বন্দরের কৌশলগত গুরুত্ব, ভূরাজনৈতিক ঝুঁকি ও অর্থনৈতিক দিক বিবেচনায় নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালের পরিচালনার ভার বিদেশি কোম্পানিকে দেওয়া কতটা যৌক্তিক।

এ ছাড়া নির্বাচনের আগে এ ধরনের একটি কৌশলগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারের আছে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। বন্দর পরিচালনার ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম, দুর্নীতি থাকলে সরকার বরং সেগুলো নিয়ন্ত্রণ করার দিকে গুরুত্ব দিতে পারে। ভুলে গেলে চলবে না, অন্তর্বর্তী সরকারের মূল কাজ হলো জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচারের পাশাপাশি সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য সৃষ্টি ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করা।

কল্লোল মোস্তফা বিদ্যুৎ, জ্বালানি, পরিবেশ ও উন্নয়ন অর্থনীতিবিষয়ক লেখক

[email protected]

(মতামত লেখকের নিজস্ব)

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এই ট র ম ন ল র র সবচ য় সরক র র ক শলগত র একট

এছাড়াও পড়ুন:

গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে লবণসহিষ্ণু গমের নতুন জাত উদ্ভাবন

গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিতত্ত্ব বিভাগ উচ্চ লবণসহিষ্ণু গমের নতুন জাত ‘জিএইউ গম ১’ উদ্ভাবন করেছে। উচ্চ লবণাক্ততা  সহনশীলতার দিক থেকে দেশে এটিই গমের প্রথম জাত। আজ বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ শাখার সহকারী রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ আকব্বাস উদ্দিন।

কৃষিতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ময়নুল হক ও মসিউল ইসলামের নেতৃত্বে  গবেষণার মাধ্যমে ‘জিএইউ গম ১’–এর উদ্ভাবন হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, উন্নতমানের গমের জাতটি লবণাক্ততা সহনশীল, উচ্চফলনশীল ও অধিক প্রোটিনসমৃদ্ধ। এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট উদ্ভাবিত জাতের সংখ্যা ৯১টিতে পৌঁছাল, যা বাংলাদেশের কৃষিতে এক নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে।

এ সম্পর্কে অধ্যাপক মসিউল ইসলাম বলেন, ‘জিএইউ গম–১ উদ্ভাবন আমাদের দীর্ঘদিনের গবেষণা, পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং মাঠপর্যায়ের অভিজ্ঞতার ফল। দেশের উপকূলীয় অঞ্চল ও লবণাক্ত এলাকায় ফসল উৎপাদনের যে সীমাবদ্ধতা রয়েছে, তা কাটিয়ে ওঠার লক্ষ্যেই আমরা এই গমের জাতটি উদ্ভাবনে কাজ শুরু করি। এটি লবণাক্ত পরিবেশেও টিকে থাকতে পারে এবং তুলনামূলকভাবে অধিক ফলন দেয়, যা কৃষকের জন্য যেমন লাভজনক।’

গবেষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘদিন গবেষণা ও ফলন পরীক্ষার পর ২০২১ থেকে ২০২৩ সালে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে কৃষকের মাঠে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে লবণাক্ততা সহিষ্ণু ও উচ্চ ফলনশীল গম হিসেবে প্রমাণিত হয়। পরে বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সির সার্বিক তত্ত্বাবধানে দেশের ৬টি স্থানে মাঠ মূল্যায়নে প্রস্তাবিত ফলন পরীক্ষায় সন্তোষজনক ফলাফল পাওয়ার যায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় বীজ বোর্ড গত ১৭ জুন জিএইউ গম–১–এর ছাড়পত্র দেয়। এ গমে অধিক প্রোটিন শরীর গঠন ও মেরামত, শক্তি সরবরাহ, ইমিউন সিস্টেমের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে রোগ প্রতিরোধে অধিক সহায়তা করে থাকে। অন্যদিকে পর্যাপ্ত পরিমাণ গ্লটেনিন থাকায় এটি উচ্চ প্রোটিন ও লো ফ্যাট হওয়ায় সহজে শরীরে শোষিত হতে পারে ডিইউএসের ১৩টি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যসম্বলিত ল্যাব টেস্টে প্রমাণিত হয়েছে এটি সাধারণ গম থেকে ভিন্ন গুণসম্পন্ন।

আমন মৌসুমে ধান কাটার পর এই গমের বীজ বপন করলে ৯৫–১০০ দিনে উৎপাদন পাওয়া যায়। অল্প সময়ে অধিক ফলন পেয়ে কৃষকেরা লাভবান হতে পারেন। অন্যদিকে এ গমের গাছের আকার বড়, কাণ্ড মোটা ও গুটির সংখ্যা বেশি হওয়ায় এটি থেকে অধিক পরিমাণ খড় পাওয়া যায়, ফলে গবাদি পশুর খাদ্যের চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। উৎকৃষ্টমানের এ জাতের ফলন হেক্টর প্রতি স্বাভাবিক মাটিতে ৪ দশমিক ৫ টন এবং লবণাক্ত মাটিতে ৩ দশমিক ৭৫ টন ফলন পাওয়া সম্ভব। এটি লবণ সহনশীল হওয়ায় মানব শরীরে সোডিয়াম ক্লোরাইডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে কার্যকরভাবে পানি ও পুষ্টি শোষণ করতে পারে। এ ছাড়া জলবায়ু সহনশীলতা ও রোগ-পোকা প্রতিরোধক্ষমতা থাকায় এটি দেশের বৈচিত্র্যময় পরিবেশে চাষের জন্য উপযোগী ও লাভজনক একটি জাত।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাইপ্রাসে কি ‘মিনি ইসরায়েল’ গড়ে উঠছে
  • গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে লবণ সহিষ্ণু নতুন গমের জাত উদ্ভাবন
  • গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে লবণসহিষ্ণু গমের নতুন জাত উদ্ভাবন