Prothomalo:
2025-05-24@10:43:39 GMT

সৌরজগতের শেষ সীমানা কোথায়

Published: 24th, May 2025 GMT

বিভিন্ন দেশের শেষ সীমানা রয়েছে। আমাদের সৌরজগতের শেষ সীমানা কোথায়, তা আমরা অনেকেই জানি না। সৌরজগতের শেষ সীমানা নির্ধারণ করা মোটেও সহজ কাজ নয়। আসলে সৌরজগতের কোনো সুস্পষ্ট প্রাচীর নেই, যা নির্দেশ করে সৌরজগৎ সেখানেই শেষ। তবে বৈজ্ঞানিক গবেষণার জন্য সৌরজগতের শেষ সীমা হিসেবে বেশ কিছু বিষয়কে চিহ্নিত করেছেন বিজ্ঞানীরা।

ঐতিহাসিকভাবে সৌরজগতের শেষ সীমানা ধরা হয় নেপচুন গ্রহের কক্ষপথকে। সূর্য থেকে প্রায় ৩০ জ্যোতির্বিদ্যা একক (এইউ) দূরে অবস্থিত নেপচুন গ্রহের কক্ষপথ। এর পরেই কুইপার বেল্ট শুরু হয়। নেপচুনের কক্ষপথের বাইরে ৩০ থেকে ৫৫ এআই পর্যন্ত বিস্তৃত বরফ ও পাথরের ছোট ছোট বস্তুর একটি চাকতি কুইপার বেল্ট। প্লুটো ও অন্যান্য বামন গ্রহ যেমন হাউমিয়া ও মেকমেক এই অঞ্চলে অবস্থান করছে। অনেক স্বল্প পর্যায়ের ধূমকেতুর বাস এই কুইপার বেল্ট। বিজ্ঞানীদের অনেকেই মনে করেন, এখানেই সৌরজগতের মূল অংশ শেষ হয়েছে।

কুইপার বেল্টের পরের এলাকাকে হেলিয়োপজ বলে। সূর্যের প্রভাব কুইপার বেল্ট থেকে আরও বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত। সূর্য ক্রমাগত চার্জিত কণা, যাকে সৌরবায়ু বলে চারদিকে বিকিরণ করে, যা হেলিয়োস্ফিয়ার নামের একটি বিশাল বুদ্‌বুদের মতো অঞ্চল তৈরি করেছে। এটি সূর্য থেকে প্রায় ১২০ এইউ দূরে অবস্থিত। এই এলাকা সৌরজগতের চুম্বকীয় প্রভাবের শেষ সীমা হিসেবে বিবেচিত হয়। ভয়েজার–১ ও ভয়েজার–২ মহাকাশযান এই সীমা অতিক্রম করে আন্তনাক্ষত্রিক স্থানে প্রবেশ করেছে। হেলিয়োপজের ভেতরের অঞ্চল যেখানে সৌরবায়ু ধীর ও উত্তপ্ত হয়, তাকে হেলিয়োশিথ বলা হয়। এর ভেতরের দিকে রয়েছে টার্মিনেশন শক। যেখানে সৌরবায়ু সুপারসনিক গতি থেকে সাবসনিক গতিতে ধীর হতে শুরু করে।

সৌরজগতের একেবারে বাইরের দিকে এক বিশাল গোলাকার মেঘের মতো অঞ্চল রয়েছে, যা ওর্ট মেঘ নামে পরিচিত। বিজ্ঞানীদের ধারণা, এলাকাটি সূর্য থেকে প্রায় দুই হাজার থেকে দুই লাখ এইউ পর্যন্ত বিস্তৃত। সূর্যের মহাকর্ষীয় প্রভাব এখানে বেশ দুর্বল। নিকটবর্তী নক্ষত্রের মহাকর্ষীয় টানে এখানকার অনেক বস্তুর কক্ষপথ পরিবর্তিত হতে পারে। ওর্ট মেঘকে সৌরজগতের সর্বশেষ মহাকর্ষীয় সীমানা হিসেবে গণ্য করা হয়। এখানকার বস্তু সূর্যের দুর্বল বন্ধন ছেড়ে আন্তনাক্ষত্রিক স্থানে চলে যেতে পারে। কোনো মহাকাশযান যদি আলোর গতিতে ভ্রমণ করে তাহলে হেলিয়োপজে পৌঁছাতে প্রায় ১৭ ঘণ্টা লাগবে। আর ওর্ট মেঘের ভেতরের প্রান্তে পৌঁছাতে কয়েক মাস থেকে কয়েক বছর সময় লাগতে পারে। ওর্ট মেঘের বাইরের প্রান্তে পৌঁছাতে কয়েক হাজার বছর লেগে যাবে।

সূত্র: নাসা

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স রজগত র শ ষ স ম ন ওর ট ম ঘ

এছাড়াও পড়ুন:

সৌরজগতের কোন গ্রহ কীভাবে ঘুরছে

সৌরজগতের বিভিন্ন গ্রহ সূর্যকে কেন্দ্র করে নির্দিষ্ট কক্ষপথে ঘুরছে। একই সঙ্গে এসব গ্রহ নিজ অক্ষের ওপরও ঘূর্ণায়মান। বিভিন্ন গ্রহ ঘূর্ণনের দিক, অক্ষের ওপরে হেলানো অবস্থানসহ বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের কারণে বেশ আলাদা।

ঘূর্ণনের দিক থেকে বুধ গ্রহ খুব ধীরে ঘুরে থাকে। বুধ গ্রহের ঘূর্ণনের দিক অন্যান্য বেশির ভাগ গ্রহের মতোই পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে, যা আসলে ঘড়ির কাঁটার বিপরীত। বুধ গ্রহের একটি দিন পৃথিবীর প্রায় ৫৮ দশমিক ৬ দিনের সমান। গ্রহটির অক্ষ তার কক্ষপথের সঙ্গে প্রায় শূন্য দশমিক শূন্য ৩ ডিগ্রি হেলে থাকায় তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য ঋতু পরিবর্তন হয় না।

বুধের পরেই শুক্র গ্রহের অবস্থান। সৌরজগতের একমাত্র শুক্র গ্রহ, যা পূর্ব থেকে পশ্চিমে বা ঘড়ির কাঁটার দিকে ঘোরে। বিজ্ঞানীরা মনে করেন অতীতে কোনো বড় সংঘর্ষের কারণে শুক্র গ্রহ এমন করে ঘুরছে। শুক্রের একটি দিন পৃথিবীর প্রায় ২৪৩ দিনের সমান, যা সৌরজগতের দীর্ঘতম। শুক্রের অক্ষ তার কক্ষপথের সঙ্গে প্রায় ১৭৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি হেলে আছে।

আমাদের পৃথিবী পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে ঘোরে। পৃথিবীর একটি দিন প্রায় ২৪ ঘণ্টা। পৃথিবীর অক্ষ তার কক্ষপথের সঙ্গে প্রায় ২৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি হেলে আছে। এই হেলানো অবস্থার কারণেই পৃথিবীতে ঋতু পরিবর্তন হয়। পৃথিবীর পরেই মঙ্গল গ্রহের অবস্থান, যা পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে ঘোরে। মঙ্গলের একটি দিন পৃথিবীর প্রায় ২৪ দশমিক ৬ ঘণ্টার সমান। মঙ্গলের অক্ষ তার কক্ষপথের সঙ্গে প্রায় ২৫ দশমিক ২ ডিগ্রি হেলে আছে, যা পৃথিবীর কাছাকাছি। এই কারণে মঙ্গলেও ঋতু পরিবর্তন দেখা যায়, তবে তা পৃথিবীর চেয়ে দীর্ঘস্থায়ী হয়।

সৌরজগতের সবচেয়ে বড় গ্রহ বৃহস্পতি। গ্রহটি পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে খুব দ্রুত ঘোরে। আর তাই বৃহস্পতির একটি দিন পৃথিবীর চেয়ে প্রায় ১০ ঘণ্টা কম হয়ে থাকে। বৃহস্পতির অক্ষ তার কক্ষপথের সঙ্গে মাত্র ৩ দশমিক ১ ডিগ্রি হেলে আছে। এর ফলে এই গ্রহে কোনো উল্লেখযোগ্য ঋতু পরিবর্তন হয় না। আরেকটি বড় গ্রহ শনিও দ্রুত ঘোরে, পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে। শনির একটি দিন পৃথিবীর প্রায় ১০ দশমিক ৭ ঘণ্টা। শনির অক্ষ তার কক্ষপথের সঙ্গে প্রায় ২৬ দশমিক ৭ ডিগ্রি হেলে আছে, যা পৃথিবীর কাছাকাছি। এর ফলে শনিতে সুস্পষ্ট ঋতু পরিবর্তন দেখা যায়।

দূরের গ্রহ ইউরেনাস পূর্ব থেকে পশ্চিমে ঘোরে। এর কারণও সম্ভবত কোনো বড় সংঘর্ষ। ইউরেনাসের একটি দিন পৃথিবীর প্রায় ১৭ ঘণ্টা। ইউরেনাসের অক্ষ তার কক্ষপথের সঙ্গে প্রায় ৯৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি হেলে আছে, যার মানে এটি প্রায় কাত হয়ে ঘোরে। এই চরম হেলানো অবস্থার কারণে এর ঋতু পরিবর্তন খুবই অদ্ভুত। এক মেরু দীর্ঘ সময় ধরে সূর্যের দিকে মুখ করে থাকে এবং অন্য মেরু অন্ধকারে থাকে। আরেক গ্রহ নেপচুন পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে ঘোরে। নেপচুনের একটি দিন পৃথিবীর প্রায় ১৬ ঘণ্টা। নেপচুনের অক্ষ তার কক্ষপথের সঙ্গে প্রায় ২৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি হেলে আছে, যা পৃথিবী ও শনির কাছাকাছি। এর ফলে নেপচুনেও ঋতু পরিবর্তন দেখা যায়।

সূত্র: নাসা ও নোয়া

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মঙ্গল গ্রহের যে স্থানে আগ্নেয়গিরি ও গিরিখাত রয়েছে
  • সৌরজগতের কোন গ্রহ কীভাবে ঘুরছে