Prothomalo:
2025-11-03@02:23:20 GMT

সৌরজগতের শেষ সীমানা কোথায়

Published: 24th, May 2025 GMT

বিভিন্ন দেশের শেষ সীমানা রয়েছে। আমাদের সৌরজগতের শেষ সীমানা কোথায়, তা আমরা অনেকেই জানি না। সৌরজগতের শেষ সীমানা নির্ধারণ করা মোটেও সহজ কাজ নয়। আসলে সৌরজগতের কোনো সুস্পষ্ট প্রাচীর নেই, যা নির্দেশ করে সৌরজগৎ সেখানেই শেষ। তবে বৈজ্ঞানিক গবেষণার জন্য সৌরজগতের শেষ সীমা হিসেবে বেশ কিছু বিষয়কে চিহ্নিত করেছেন বিজ্ঞানীরা।

ঐতিহাসিকভাবে সৌরজগতের শেষ সীমানা ধরা হয় নেপচুন গ্রহের কক্ষপথকে। সূর্য থেকে প্রায় ৩০ জ্যোতির্বিদ্যা একক (এইউ) দূরে অবস্থিত নেপচুন গ্রহের কক্ষপথ। এর পরেই কুইপার বেল্ট শুরু হয়। নেপচুনের কক্ষপথের বাইরে ৩০ থেকে ৫৫ এআই পর্যন্ত বিস্তৃত বরফ ও পাথরের ছোট ছোট বস্তুর একটি চাকতি কুইপার বেল্ট। প্লুটো ও অন্যান্য বামন গ্রহ যেমন হাউমিয়া ও মেকমেক এই অঞ্চলে অবস্থান করছে। অনেক স্বল্প পর্যায়ের ধূমকেতুর বাস এই কুইপার বেল্ট। বিজ্ঞানীদের অনেকেই মনে করেন, এখানেই সৌরজগতের মূল অংশ শেষ হয়েছে।

কুইপার বেল্টের পরের এলাকাকে হেলিয়োপজ বলে। সূর্যের প্রভাব কুইপার বেল্ট থেকে আরও বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত। সূর্য ক্রমাগত চার্জিত কণা, যাকে সৌরবায়ু বলে চারদিকে বিকিরণ করে, যা হেলিয়োস্ফিয়ার নামের একটি বিশাল বুদ্‌বুদের মতো অঞ্চল তৈরি করেছে। এটি সূর্য থেকে প্রায় ১২০ এইউ দূরে অবস্থিত। এই এলাকা সৌরজগতের চুম্বকীয় প্রভাবের শেষ সীমা হিসেবে বিবেচিত হয়। ভয়েজার–১ ও ভয়েজার–২ মহাকাশযান এই সীমা অতিক্রম করে আন্তনাক্ষত্রিক স্থানে প্রবেশ করেছে। হেলিয়োপজের ভেতরের অঞ্চল যেখানে সৌরবায়ু ধীর ও উত্তপ্ত হয়, তাকে হেলিয়োশিথ বলা হয়। এর ভেতরের দিকে রয়েছে টার্মিনেশন শক। যেখানে সৌরবায়ু সুপারসনিক গতি থেকে সাবসনিক গতিতে ধীর হতে শুরু করে।

সৌরজগতের একেবারে বাইরের দিকে এক বিশাল গোলাকার মেঘের মতো অঞ্চল রয়েছে, যা ওর্ট মেঘ নামে পরিচিত। বিজ্ঞানীদের ধারণা, এলাকাটি সূর্য থেকে প্রায় দুই হাজার থেকে দুই লাখ এইউ পর্যন্ত বিস্তৃত। সূর্যের মহাকর্ষীয় প্রভাব এখানে বেশ দুর্বল। নিকটবর্তী নক্ষত্রের মহাকর্ষীয় টানে এখানকার অনেক বস্তুর কক্ষপথ পরিবর্তিত হতে পারে। ওর্ট মেঘকে সৌরজগতের সর্বশেষ মহাকর্ষীয় সীমানা হিসেবে গণ্য করা হয়। এখানকার বস্তু সূর্যের দুর্বল বন্ধন ছেড়ে আন্তনাক্ষত্রিক স্থানে চলে যেতে পারে। কোনো মহাকাশযান যদি আলোর গতিতে ভ্রমণ করে তাহলে হেলিয়োপজে পৌঁছাতে প্রায় ১৭ ঘণ্টা লাগবে। আর ওর্ট মেঘের ভেতরের প্রান্তে পৌঁছাতে কয়েক মাস থেকে কয়েক বছর সময় লাগতে পারে। ওর্ট মেঘের বাইরের প্রান্তে পৌঁছাতে কয়েক হাজার বছর লেগে যাবে।

সূত্র: নাসা

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স রজগত র শ ষ স ম ন ওর ট ম ঘ

এছাড়াও পড়ুন:

সৌরজগতের বাইরে থাকা গ্রহের প্রথম ত্রিমাত্রিক মানচিত্র তৈরি

বৃহস্পতি গ্রহের চেয়ে ১০ গুণ বড় ‘ওয়াস্প-১৮ বি’ নামের দৈত্যকার একটি দূরবর্তী গ্যাসীয় গ্রহের ত্রিমাত্রিক মানচিত্র তৈরি করেছেন বিজ্ঞানীরা। নাসার জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের তথ্য ব্যবহার করে এবারই প্রথম সৌরজগতের বাইরে থাকা কোনো গ্রহের ত্রিমাত্রিক মানচিত্র তৈরি করা সম্ভব হয়েছে বলে দাবি করেছেন তাঁরা।

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, এই যুগান্তকারী মানচিত্র গ্রহ বিজ্ঞানের একটি বড় পদক্ষেপ। সূর্যের বাইরের অন্য কোনো নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করা গ্রহের ত্রিমাত্রিক মানচিত্র এর আগে তৈরি করা হয়নি। মানচিত্র তৈরির এ কৌশল ব্যবহার করে মহাবিশ্বে আবিষ্কৃত ছয় হাজারের বেশি বহির্গ্রহকে আরও ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হবে।

বহির্গ্রহ নিয়ে বিজ্ঞানীদের আগ্রহ অনেক দিনের। সৌরজগতের বাইরের নানা ধরনের গ্রহ দেখা যায়। কিছু গ্রহ আছে যাদের দুষ্টু গ্রহ বলা হয়। এসব গ্রহ কোনো নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করে না। মহাবিশ্বে অনেকটা স্বাধীনভাবে বা বন্ধনহীনভাবে ভেসে বেড়ায়। নাসার এক্সোপ্ল্যানেট সায়েন্স ইনস্টিটিউটের তথ্যমতে, ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ৬ হাজার ২৮টি বহির্গ্রহ শনাক্ত করা হয়েছে। আরও প্রায় আট হাজার বহির্গ্রহ গ্রহের মর্যাদার পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে।

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, থ্রিডি ইক্লিপস ম্যাপিং কৌশল ব্যবহার করে ত্রিমাত্রিক মানচিত্রটি তৈরি করেছেন। এই প্রক্রিয়া স্পেকট্রোস্কোপিক ইক্লিপস ম্যাপিং নামেও পরিচিত। এর আগে বিজ্ঞানীরা ২০২৩ সালে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের তথ্য ব্যবহার করে বহির্গ্রহের টুডি বা দ্বিমাত্রিক মডেল তৈরি করেছিলেন। বিভিন্ন বহির্গ্রহ পৃথিবী থেকে পর্যবেক্ষণ করা বিজ্ঞানীদের জন্য কঠিন বলে নতুন ত্রিমাত্রিক মানচিত্র বেশ উপকারী হবে।

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ২০০৯ সালে আবিষ্কৃত ওয়াস্প-১৮ বি গ্রহের পৃষ্ঠের তাপমাত্রা ৫ হাজার ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত হতে পারে। গ্রহটির বায়ুমণ্ডলে জলীয়বাষ্পের উপস্থিত রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞানী রায়ান চ্যালেঞ্জার বলেন, ‘টেলিস্কোপ ও এই নতুন কৌশলটির মাধ্যমে আমরা আমাদের সৌরজগতের প্রতিবেশীদের মতোই বহির্গ্রহকে বোঝার সুযোগ পাব।’

সূত্র: স্পেস ডট কম

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সৌরজগতের বাইরে থাকা গ্রহের প্রথম ত্রিমাত্রিক মানচিত্র তৈরি