গাজায় একটি বাড়িতে ইসরায়েলের বিমান হামলায় একজন নারী চিকিৎসকের ১০ শিশু সন্তানের মধ্যে ৯ জনই মারা গেছে। ওই চিকিৎসক খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে কাজ করতেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ডা. আলা আল-নাজ্জারের স্বামী ও তাদের এক সন্তান আহত অবস্থায় বেঁচে গেছে। হাসপাতালের চিকিৎসক ব্রিটিশ সার্জন গ্রায়েমে গ্রুম বলেছেন, এটি অসহনীয় নিষ্ঠুরতা। বহু বছর ধরে শিশুদের জন্য কাজ করা একজন চিকিৎসক তার প্রায় সব সন্তান হারিয়েছেন। খবর-বিবিসি

এদিকে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা শুক্রবার খান ইউনিসে সন্দেহভাজন কিছু জায়গায় বিমান হামলা চালিয়েছে। একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, ধ্বংসস্তূপ থেকে পোড়া দেহ উদ্ধার করা হচ্ছে। বিবিসি ছবিটির সত্যতা যাচাই করেছে।

আইডিএফ বলছে, খান ইউনিস একটি বিপজ্জনক যুদ্ধ এলাকা। অভিযান শুরুর আগে ওই এলাকা থেকে বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছে তারা।

শনিবার এক বিবৃতিতে আইডিএফ বলেছে, গাজায় একশরও বেশি টার্গেটে তারা হামলা করেছে। এতে ৭৪ জন নিহত হয়েছে বলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দাবি করেছে।

মন্ত্রণালয়ের ডিরেক্টর ডা.

 মুনির আলবোরশ সামাজিক মাধ্যম এক্স এ জানিয়েছেন, আল-নাজ্জারের স্বামী তাকে কর্মস্থলে নামিয়ে বাসায় ফেরার পরপরই হামলাটি হয়। তাদের সবচেয়ে বড় সন্তানের বয়স ছিল ১২ বছর। শিশুদের বাবা নিজেও একজন চিকিৎসক, যিনি মারাত্মক আহত হয়েছেন। তিনি বলেন, শিশুদের বাবার কোন রাজনৈতিক বা সামরিক যোগসূত্র তো নয়ই, এমনকি তিনি সামাজিক মাধ্যমেও খুব একটা পরিচিত নন।

গ্রায়েমে গ্রুম বিবিসিকে বলেন, ওই দম্পতির যে সন্তানটি বেঁচে আছে তার বয়স ১১। তার বাঁ হাত প্রায় ঝুলে ছিল। ছোট ছেলেটি হয়তো বাঁচবে কিন্তু তার বাবার অবস্থা আমরা জানি না। গাজার সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল শুক্রবার টেলিগ্রামে জানিয়েছেন, হামলার পর আল-নাজ্জারের বাসা থেকে তারা আটটি মৃতদেহ ও আহত কয়েকজনকে উদ্ধার করেছেন।

প্রাথমিকভাবে হাসপাতাল থেকে আট শিশুর মৃত্যুর খবর দেওয়া হয়েছিল। দুই ঘণ্টা পর জানানো হয় যে, মোট নয়টি শিশু মারা গেছে সেখানে। আরেকজন চিকিৎসক ইউসেফ আবু আল-রিশ জানিয়েছেন, আল-নাজ্জারের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে তিনিও অপারেশন রুমে এসেছিলেন। তাদের মধ্যে আত্মীয়তার সম্পর্ক রয়েছে।

বার্তা সংস্থা এএফপিকে তিনি বলেছেন: যথেষ্ট হয়েছে। আমাদের দয়া করুন। আমরা সব দেশ, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, জনগণ, হামাস এবং অন্য সবাইকে অনুরোধ করছি আমাদের ক্ষমা করুন। ঘরবাড়ি হারিয়ে, ক্ষুধায় আমরা বিপর্যস্ত।

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস শুক্রবার বলেছেন, গাজা যুদ্ধ 'সবচেয়ে নিষ্ঠুর অধ্যায়ে' আছে এখন। ত্রাণ কার্যক্রমের ওপর ইসরায়েলের অবরোধের নিন্দা করেছেন তিনি। ইসরায়েল চলতি সপ্তাহে অবরোধ কিছুটা তুলে নিয়েছে। দেশটির একটি সামরিক সংস্থা বলছে শুক্রবার ৮৩টি ট্রাকে করে খাবার ও ঔষধসহ জরুরি পণ্য গাজায় গেছে। জাতিসংঘ বারবার বলছে, যে পরিমাণ ত্রাণ যাচ্ছে তা ওই ভূখণ্ডের ২১ লাখ মানুষের প্রয়োজনের তুলনায় কিছুই নয়। তাদের মধ্যে প্রতিদিন ৫-৬শ ট্রাকের ত্রাণ নিয়ে যাওয়া দরকার।

অল্প পরিমাণ খাদ্যের কারণে গাজায় নৈরাজ্যময় পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে। ত্রাণবহরে সশস্ত্র হামলা হচ্ছে এবং রুটির জন্য দোকানে হামলে পড়ছে মানুষ। জাতিসংঘ চলতি মাসেই একটি দুর্ভিক্ষের ঝুঁকির কথা জানিয়েছে। সেখানকার অনেক মানুষ বিবিসিকে বলেছে, তাদের খাবার নেই এবং ক্ষুধাক্রান্ত অপুষ্ট মায়েরা তাদের শিশু সন্তানদের মাতৃদুগ্ধ পান করাতে পারছেন না। পানির সংকট তীব্রতর হয়েছে। আবার অভিযান অব্যাহত খাকায় বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যাও বাড়ছে। ইসরায়েলের দাবি হলো, হামাসের ওপর চাপ বাড়াতে তারা এ হামলা করছে। এছাড়া হামাস মানবিক সহায়তা চুরি করছে এমন অভিযোগও করেছে ইসরায়েল।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল ন হত আল ন জ জ র র ইসর য় ল র শ ক রব র চ ক ৎসক

এছাড়াও পড়ুন:

ডেমরার আওয়ামীলীগ নেত্রী ইয়াবাসহ ফতুল্লায় আটক

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার কাশিপুর থেকে রজনী আক্তার তুশি নামে এক আওয়ামী লীগ নেত্রীকে গ্রেফতার করেছে সদর মডেল থানার পুলিশ।

শনিবার (২৪ মে) রাত আনুমানিক ৮ ঘটিকার সময় তুশিকে ইয়াবা সহ আটক করে ফতুল্লার কাশিপুর ফরাজীকান্দার স্থানীয় এলাকাবাসী। 
আটক করার সময় স্থানীয় এলাকাবাসী আওয়ামীলীগ নেত্রীর কাছে ইয়াবা সহ ইয়াবা সেবনের সামগ্রী উদ্ধার করে বলে জানা যায়।
পরে নারায়ণগঞ্জ মডেল থানায় বিষয়টি জানালে রাত সাড়ে ৯টায় পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তুশিকে হেফাজতে নেয়। 
 
রজনী আক্তার তুশি ডেমরা থানার একজন সক্রিয় আওয়ামী লীগ নেত্রী ছিলেন বলে সূত্র  জানায়। 
পুলিশ আটক করার সময় তুশি "জয় বাংলা" স্লোগান দিলে এলাকাবাসীর তোপের মুখে পড়েন। এ সময় পরিস্থিতি শান্ত করতে পুলিশের বেগ পেতে হয় এবং পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলে তুশিকে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
ফরাজীকান্দার রুবেল মিয়ার বাড়িতে গত তিন মাস ধরে পরিচয় গোপন রেখে টুসি আক্তার রজনী বাসা ভাড়া নিয়ে ছিলেন। শুক্রবার (২৩ মে) স্থানীয়দের কাছে সন্দেহ লাগলে তুশিকে নজরে রাখেন এলাকাবাসী। আজ আওয়ামীলীগের একজন দোসর নেত্রীকে ইয়াবা সহ আটক করতে পেরে নিজেদের উচ্ছাস প্রকাশ করতে দেখা যায় স্থানীয়দের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আমাকে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট বানানো হয়েছে: বাঁধন
  • এক নায়িকাও আমার ভিসা জটিলতায় জড়িত ছিলেন: বাঁধন
  • শরীয়তপুরে সরকারি স্কুলে শিক্ষক সংকট, ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান
  • গাজায় চিকিৎসক মায়ের ৯ শিশু সন্তান নিহত
  • ইব্রাহিমের হার না মানা ২৬ বছরের সংগ্রাম
  • পাকিস্তানে তীব্র ঝড়ে ১৩ জনের মৃত্যু
  • পরিস্থিতি মোকাবিলার পক্ষে উপদেষ্টারা
  • মার্কিন হামলায় ইয়েমেনে আল-কায়েদার ৫ সদস্য নিহত
  • ডেমরার আওয়ামীলীগ নেত্রী ইয়াবাসহ ফতুল্লায় আটক