পাসপোর্ট নিয়ে ফেরার পথে ট্রাকচাপায় নিহত কলেজছাত্র
Published: 25th, May 2025 GMT
মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য পাসপোর্ট আনতে বন্ধুকে নিয়ে যশোর অফিসে যান কলেজছাত্র আসিফ হোসেন। ফেরার পথে ট্রাকচাপায় তিনি নিহত হন। এ ঘটনায় আহত হন তার বন্ধু রাকিবুল ইসলাম শুভ। তিনি যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
আজ রোববার দুপুর ২টার দিকে যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়কে যশোরের খয়েরতলা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ও নিহতের স্বজনেরা সড়কে গাড়ি আটকে বিক্ষোভ করেন। পরে ফায়ার সার্ভিস ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। নিহতের মরদেহ যশোর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
নিহত আসিফ সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের ঝাউদিয়া গ্রামের মেহের আলীর ছেলে। আসিফ ও রাকিব পালবাড়ির টেকনিক্যাল অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।
নিহতের স্বজনরা ও পুলিশ জানিয়েছে, আগামী জুন মানে আসিফের মালয়েশিয়াতে যাওয়ার কথা ছিল। এজন্য যশোর অফিসে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন তিনি। আজ তার পাসপোর্ট দেওয়ার দিন ছিল। দুপুরে বন্ধু রাকিবকে নিয়ে পাসর্পোট আনতে যান তিনি। ফেরার পথে যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়কে যশোরের খয়েরতলা এলাকায় পৌঁছালে ঝিনাইদহ থেকে আসা একটি ট্রাকের সঙ্গে তাদের মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ হয়। এ সময় আসিফ ছিটকে ট্রাকের নিচে পড়লে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় গুরুতর আহত রাকিবকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ জনতা ও নিহতের স্বজনরা সড়কে গাড়ি আটকে বিক্ষোভ করেন।
নিহত আসিফের বাবা মেহের আলী ভাইকে জড়িয়ে ধরে বলেন, ‘আমার কি হয়ে গেল। আমার তো সব শেষ! ছেলেটারে বিদেশে পাঠাতে চাইছিলাম। কাগজপত্রও এসেছিল। আজ পাসপোর্ট দেবে বলে খুব খুশি ছিল। পাসপোর্ট আনতে গিয়ে ছেলেটার প্রাণটা চলে গেল। আমি কি নিয়ে বাঁচব? বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় সাবধানে গাড়ি চালাতে বলেছিলাম। ছেলেটা ট্রাকের চাকায় চাপা পড়ে গেল। আমার স্বপ্নও শেষ হয়ে গেল।’
যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসনাত বলেন, ট্রাকটি আটক করা হয়েছে। তবে চালক পালিয়েছেন। মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: যশ র সড়ক দ র ঘটন ন হত ন হত র
এছাড়াও পড়ুন:
গাইবান্ধায় চোর সন্দেহে মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় তিস্তা নদীর দুর্গম চরাঞ্চলে গরু চোর সন্দেহে আব্দুস সালাম (৫০) নামে মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করেছে স্থানীয়রা। এ ঘটনায় দুলালী বেগম (৪৩) নামে এক নারীকে আটক করেছে পুলিশ।
শনিবার (১ নভেম্বর) সকালে উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের বেলকা নবাবগঞ্জ গ্রামের তিস্তার চরে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। খবর পেয়ে সুন্দরগঞ্জ থানা পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
আরো পড়ুন:
গাজীপুরে যুবককে কুপিয়ে হত্যা
ঝিনাইদহে কৃষকের হাত-পা ও গলা বাঁধা মরদেহ উদ্ধার
নিহত আব্দুস সালাম একই ইউনিয়নের রামডাকুয়া গ্রামের ওমেদ আলীর ছেলে। স্বজনরা জানান, সালাম দীর্ঘদিন ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছিল।
আটক দুলালী বেগম বেলকা নবাবগঞ্জ গ্রামের আব্দুল গণি মিয়ার স্ত্রী।
সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হাকিম আজাদ বলেন, ‘‘খবর পাওয়ার পর পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার দুলালী বেগম ছাড়াও যারা জড়িত ছিল, তা শনাক্তে তদন্ত চলছে।’’
নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) গভীর রাতে সালাম আব্দুল গণি মিয়ার গোয়ালঘরে প্রবেশ করে। বিষয়টি টের পেয়ে দুলালী বেগম স্বামী ও আশপাশের লোকজনকে খবর দেয়। স্থানীয়রা সালামকে রশি দিয়ে বেঁধে বেধড়ক মারধর করে। একপর্যায়ে তিনি অচেতন হয়ে পড়লে তাকে পুকুরপাড়ে রেখে দেওয়া হয়। ভোরের দিকে আবার তাকে পাশের গোয়ালঘরে নিয়ে নির্যাতন চালানো হয়। এতে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়।
অভিযুক্ত আব্দুল গণি মিয়া বলেন, ‘‘কয়েক দিন আগে শ্যালো মেশিন চুরি হয়ে গেছে। রাতে গোয়ালে সালামকে দেখি। তাই প্রতিবেশীদের খবর দেই। পরে তারা এসে মারধর করে।’’
আটক দুলালী বেগম বলেন, ‘‘এক সপ্তাহ আগে মেশিন হারিয়েছে। রাতে শব্দ শুনে দেখি গোয়ালের বাঁধন খুলছে। পরে লোকজন এসে মারধর করে।’’
নিহতের স্বজনরা জানান, আব্দুস সালাম দীর্ঘদিন ধরে মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন ছিলেন এবং মানুষের সাহায্যে জীবন চলত। তার বিরুদ্ধে আগে কখনো চুরির অভিযোগ ওঠেনি। তারা দাবি করেন, পরিকল্পিতভাবে নির্যাতন করে তাকে হত্যা করা হয়েছে। নিহতের তিনটি ছোট ছেলে রয়েছে, বাবাকে হারিয়ে তারা অসহায় অবস্থায় পড়েছে।
বেলকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইব্রাহিম খলিলুল্যাহ জানান, ঘটনাস্থল দুর্গম চরাঞ্চল হওয়ায় খবর পেতে দেরি হয়। স্বজনদের বক্তব্য অনুযায়ী নিহত ব্যক্তি মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) বিদ্রোহ কুমার কুণ্ডু, সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল হাকিম আজাদ এবং স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ঢাকা/মাসুম/বকুল