যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতাবিষয়ক কমিশনের (ইউএসসিআইআরএফ) চেয়ারম্যান স্টিফেন শ্নেক ঢাকায় পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন।

সোমবার (২৬ মে) এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।

সাক্ষাতের সময় শ্নেক তার চলমান সফরের উদ্দেশ্য তুলে ধরেন, যার মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশের সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় প্রেক্ষাপট সম্পর্কে সরাসরি ধারণা নিতে আগ্রহী।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তার এ সফরকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “এ ধরনের সফর পারস্পরিক বোঝাপড়া বাড়াতে, ভুল বা মিথ্যা তথ্য মোকাবেলায় এবং বাস্তব চিত্র তুলে ধরতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।”

শ্নেক পররাষ্ট্র উপদেষ্টার মতের সঙ্গে একমত পোষণ করেন এবং গঠনমূলক সংলাপ ও সহযোগিতার ক্ষেত্রে সরকারের খোলামেলা দৃষ্টিভঙ্গিকে সাধুবাদ জানান।

বৈঠকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক সংস্কার, সমতা, ন্যায়বিচার এবং ধর্ম, বর্ণ, জাতি নির্বিশেষে সব নাগরিকের মানবাধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে সরকারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশ একটি বহুবাচনিক সমাজ, যেখানে সব ধর্মের মানুষ শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছেন।” তিনি ধর্মীয় সহিংসতা ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির কথা তুলে ধরেন এবং এ বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গৃহীত সাম্প্রতিক নিরাপত্তা ও প্রশাসনিক পদক্ষেপগুলো উল্লেখ করেন।

শ্নেক ইউএসসিআইআরএফের কাজের পদ্ধতি, বার্ষিক প্রতিবেদন ও বিশেষ প্রতিবেদনের বিষয়েও আলোচনা করেন। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এই প্রক্রিয়াগুলোর নিরপেক্ষতা প্রশংসা করেন এবং কমিশনের সঙ্গে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আশ্বাস দেন।

তবে তিনি জুলাই পরবর্তী সময়ে কিছু মহলের গুজব প্রচার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এ বিষয়ে ইউএসসিআইআরএফ চেয়ার নির্ভরযোগ্য ও প্রমাণ-ভিত্তিক তথ্যের ওপর গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানান।

বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়েও আলোচনা হয়। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জোর দিয়ে বলেন, “বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের টেকসই প্রত্যাবাসনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সক্রিয় সহায়তা কামনা করে।” ২০২২ সালে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনের অভিজ্ঞতার আলোকে শ্নেকও এ সংকটের একটি স্থায়ী সমাধানের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।

সাক্ষাৎ শেষে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সব সম্প্রদায়ের জন্য একটি নিরাপদ পরিবেশ বজায় রাখতে সরকারের দৃঢ় প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন এবং ইউএসসিআইআরএফের প্রতিবেদন ও সুপারিশ নিয়ে গঠনমূলক আলোচনার মাধ্যমে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যাশা জানান।

ঢাকা/হাসান/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পরর ষ ট র উপদ ষ ট সরক র র

এছাড়াও পড়ুন:

কৃত্রিম নিউরন তৈরি করেছেন বিজ্ঞানীরা

মস্তিষ্কের কোষের জটিল ইলেকট্রোকেমিক্যাল আচরণকে অনুকরণ করতে সক্ষম কৃত্রিম নিউরন তৈরি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইউএসসি ভিটারবি স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিং ও স্কুল অব অ্যাডভান্সড কম্পিউটিংয়ের বিজ্ঞানীরা। নতুন এই উদ্ভাবনের ফলে চিপের আকার বহুগুণে ছোট হওয়ার পাশাপাশি শক্তি খরচও অনেক কমে যাবে। আর তাই এই উদ্ভাবনকে নিউরোমরফিক কম্পিউটিং প্রযুক্তির ক্ষেত্রে একটি বড় অগ্রগতি বলা হচ্ছে।

কৃত্রিম নিউরন দিয়ে তৈরি চিপ প্রচলিত প্রসেসর বা সিলিকনভিত্তিক নিউরোমরফিক চিপের মতো নয়। নিউরনের মতো মস্তিষ্কের নিউরোকেমিক্যালস কাজের পদ্ধতি অনুকরণ করতে পারে বলে চিপটিকে এখনকার প্রচলিত সিলিকনভিত্তিক প্রযুক্তির পরিপূরক বলা হচ্ছে।

সিলিকনভিত্তিক প্রযুক্তি বর্তমানে প্রায় সব আধুনিক ইলেকট্রনিক যন্ত্রে শক্তি জোগায়। এর পরিবর্তে বিজ্ঞানীরা নিউরন তৈরির জন্য একটি ডিফিউসিভ যন্ত্র তৈরি করেছেন। যন্ত্রটি কৃত্রিম নিউরন চিপ তৈরি করতে পারে, যা আমাদের মস্তিষ্কের মতো কাজ করবে।

যন্ত্রটি মানব মস্তিষ্কের মতো শরীরের কার্যকলাপ চালনার জন্য বৈদ্যুতিক ও রাসায়নিক উভয় সংকেত ব্যবহার করে একক ট্রানজিস্টরের মাধ্যমে বৈদ্যুতিক সংকেত তৈরি করতে সহায়তা করে। আমাদের মস্তিষ্কে এই প্রক্রিয়া পটাশিয়াম, সোডিয়াম বা ক্যালসিয়ামের মতো রাসায়নিকের ওপর নির্ভর করে।

বিজ্ঞানীরা নতুন চিপ তৈরির জন্য অক্সাইডে থাকা রৌপ্য আয়ন ব্যবহার করে বৈদ্যুতিক স্পন্দন তৈরি করেছেন। এ বিষয়ে ইউএসসির কম্পিউটার ও ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক জোশুয়া ইয়াং জানান, যদিও কৃত্রিম সিনাপ্স ও নিউরনের আয়ন হুবহু একই নয়। তবে আয়নের গতি ও গতিশীলতা নিয়ন্ত্রণ করার কৌশল খুব কাছাকাছি। রৌপ্য আয়ন সহজে ছড়িয়ে পড়ে ও জৈবব্যবস্থাকে অনুকরণ করার জন্য প্রয়োজনীয় গতিশীলতা দেয়।

সূত্র: টেক এক্সপ্লোর

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কৃত্রিম নিউরন তৈরি করেছেন বিজ্ঞানীরা