পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে ইউএসসিআইআরএফের চেয়ারম্যানের সাক্ষাৎ
Published: 26th, May 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতাবিষয়ক কমিশনের (ইউএসসিআইআরএফ) চেয়ারম্যান স্টিফেন শ্নেক ঢাকায় পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন।
সোমবার (২৬ মে) এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।
সাক্ষাতের সময় শ্নেক তার চলমান সফরের উদ্দেশ্য তুলে ধরেন, যার মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশের সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় প্রেক্ষাপট সম্পর্কে সরাসরি ধারণা নিতে আগ্রহী।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তার এ সফরকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “এ ধরনের সফর পারস্পরিক বোঝাপড়া বাড়াতে, ভুল বা মিথ্যা তথ্য মোকাবেলায় এবং বাস্তব চিত্র তুলে ধরতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।”
শ্নেক পররাষ্ট্র উপদেষ্টার মতের সঙ্গে একমত পোষণ করেন এবং গঠনমূলক সংলাপ ও সহযোগিতার ক্ষেত্রে সরকারের খোলামেলা দৃষ্টিভঙ্গিকে সাধুবাদ জানান।
বৈঠকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক সংস্কার, সমতা, ন্যায়বিচার এবং ধর্ম, বর্ণ, জাতি নির্বিশেষে সব নাগরিকের মানবাধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে সরকারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশ একটি বহুবাচনিক সমাজ, যেখানে সব ধর্মের মানুষ শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছেন।” তিনি ধর্মীয় সহিংসতা ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির কথা তুলে ধরেন এবং এ বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গৃহীত সাম্প্রতিক নিরাপত্তা ও প্রশাসনিক পদক্ষেপগুলো উল্লেখ করেন।
শ্নেক ইউএসসিআইআরএফের কাজের পদ্ধতি, বার্ষিক প্রতিবেদন ও বিশেষ প্রতিবেদনের বিষয়েও আলোচনা করেন। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এই প্রক্রিয়াগুলোর নিরপেক্ষতা প্রশংসা করেন এবং কমিশনের সঙ্গে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আশ্বাস দেন।
তবে তিনি জুলাই পরবর্তী সময়ে কিছু মহলের গুজব প্রচার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এ বিষয়ে ইউএসসিআইআরএফ চেয়ার নির্ভরযোগ্য ও প্রমাণ-ভিত্তিক তথ্যের ওপর গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানান।
বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়েও আলোচনা হয়। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জোর দিয়ে বলেন, “বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের টেকসই প্রত্যাবাসনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সক্রিয় সহায়তা কামনা করে।” ২০২২ সালে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনের অভিজ্ঞতার আলোকে শ্নেকও এ সংকটের একটি স্থায়ী সমাধানের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
সাক্ষাৎ শেষে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সব সম্প্রদায়ের জন্য একটি নিরাপদ পরিবেশ বজায় রাখতে সরকারের দৃঢ় প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন এবং ইউএসসিআইআরএফের প্রতিবেদন ও সুপারিশ নিয়ে গঠনমূলক আলোচনার মাধ্যমে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যাশা জানান।
ঢাকা/হাসান/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পরর ষ ট র উপদ ষ ট সরক র র
এছাড়াও পড়ুন:
গভীর রাতে লোকালয়ে ফিরে এল হাতির পাল, বাড়িতে হামলায় নারীর মৃত্যু
শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় বন্য হাতির আক্রমণে এক নারী নিহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত তিনটার দিকে উপজেলার বাতকুচি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত বৃদ্ধার নাম সুরতন নেছা (৬০)। তিনি উপজেলার বাতকুচি গ্রামের মৃত রঙ্গু শেখের স্ত্রী।
আরও পড়ুননালিতাবাড়ী সীমান্তে ৬ বসতঘর ভেঙে ধান-চাল খেয়ে গেল বন্য হাতির দল২৭ মে ২০২৫বন বিভাগের মধুটিলা রেঞ্জের কর্মকর্তা ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার দাওধারা-কাটাবাড়ি পাহাড়ের টিলায় ৫-৬ দিন ধরে ৩৫-৪০টি বন্য হাতি অবস্থান করছিল। গত কয়েক দিনে বাতকুচি বিট কার্যালয়, দাওধারা-কাটাবাড়ি এলাকা ও মধুটিলা ইকো পার্কের ক্যানটিনসহ কয়েকটি এলাকায় হাতির পালের আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। এতে সম্পদের বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গতকাল বৃষ্টির মধ্যে রাত সাড়ে ১০টার দিকে বাতকুচি এলাকায় আবার হানা দেয় হাতির দলটি। এ সময় গ্রামবাসী মশাল জ্বালিয়ে ও হইহুল্লোড় করে হাতিগুলোকে বাতকুচি জঙ্গলের দিকে তাড়িয়ে দেয়। পরে রাত তিনটার দিকে দলটি আবার ফিরে এসে সুরতন নেছার ঘরে হানা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুনশেরপুরে বন বিভাগের কার্যালয়ে বন্য হাতির হানা, আসবাব তছনছ২৭ মে ২০২৫এ ঘটনার সময় সুরতন নেছা একাই বাড়িতে ছিলেন বলে জানান বন বিভাগের মধুটিলা রেঞ্জ কর্মকর্তা দেওয়ান আলী। তিনি বলেন, ‘এলাকায় তুমুল বৃষ্টি থাকায় ঘটনাস্থলে যেতে পারছি না। তবে পরিবারটিকে ক্ষতিপূরণের জন্য বন বিভাগের কাছে আবেদন করতে বলা হবে। হাতির পালটি এখনো বাতকুচি এলাকার জঙ্গলে অবস্থান করছে।’
লাশটি উদ্ধারের জন্য ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানোর তথ্য জানিয়েছেন নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সোহেল রানা।
আরও পড়ুনগারো পাহাড়ে হাতির জন্য অভয়ারণ্য গড়ে তোলা হবে: সৈয়দা রিজওয়ানা ২৬ মে ২০২৫