চট্টগ্রামে আলোচিত সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদ গ্রেপ্তারের আড়াই মাস পেরিয়ে গেলেও তাঁর বাহিনীর বেশির ভাগ সদস্য এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। দফায় দফায় রিমান্ডে নেওয়ার পরও তাঁর কাছ থেকে উদ্ধার হয়নি একটিও আগ্নেয়াস্ত্র। ফলে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ছোট সাজ্জাদের বাহিনী।

পুলিশের একাধিক তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, সাজ্জাদের পাঁচ সহযোগী—রায়হান, মোবারক হোসেন ওরফে ইমন, বোরহান, খোরশেদ ও ভাতিজা মোহাম্মদের এখনো গ্রেপ্তার না হওয়ায় নগরে বাড়ছে খুনোখুনি ও অস্ত্রের ব্যবহার। সর্বশেষ ২৩ মে নগরের পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে সন্ত্রাসী আলী আকবর ওরফে ঢাকাইয়া আকবরকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায়ও উঠে এসেছে সাজ্জাদের বাহিনীর নাম।

ছোট সাজ্জাদ মূলত চট্টগ্রামের বহুল আলোচিত আট ছাত্রলীগ নেতা খুনের মামলায় অভিযুক্ত (পরে খালাসপ্রাপ্ত) ও বর্তমানে বিদেশে পলাতক শিবির ক্যাডার সাজ্জাদ আলী ওরফে বড় সাজ্জাদের বিশ্বস্ত সহযোগী হিসেবে পরিচিত। তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র ও চাঁদাবাজিসহ ১৭টি মামলা রয়েছে। বড় সাজ্জাদের হয়ে নগরের বায়েজিদ বোস্তামী, পাঁচলাইশ, চান্দগাঁও ও হাটহাজারীতে আধিপত্য বজায় রাখতে অপরাধ সংঘটিত করতেন ছোট সাজ্জাদ।

পুলিশ জানায়, ছোট সাজ্জাদের বাহিনীতে রয়েছেন ২৫ জন সক্রিয় সদস্য। তাঁকে গত ১৫ মার্চ ঢাকার একটি শপিং মল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর বাহিনীর হাল ধরেন পাঁচ সহযোগী।

কারা এই পাঁচ সহযোগী

সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রামে সংঘটিত খুনের ঘটনায় উঠেছে সাজ্জাদের ঘনিষ্ঠ সহচর মোহাম্মদ রায়হানের নাম। তিনি রাউজানের মৃত বদিউল আলমের ছেলে। মাদকের মামলায় একাধিকবার কারাগারে যান। সেখানে ছোট সাজ্জাদের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। গত ৩০ মার্চ বাকলিয়া এক্সেস রোডে জোড়া খুন, ১১ এপ্রিল রাউজানে যুবদল কর্মী ইব্রাহিম হত্যা, ২৩ মে ঢাকাইয়া আকবর খুনসহ আট মামলার আসামি রায়হান।

সাজ্জাদের আরেক সহযোগী মোবারক হোসেন ওরফে ইমন। ফটিকছড়ির কাঞ্চনগরের মো.

মুসার ছেলে। জোড়া খুন ও ঢাকাইয়া আকবর হত্যা মামলাসহ সাত মামলার আসামি। অস্ত্র পরিচালনায় পারদর্শী। পুলিশ জানিয়েছে, তাঁর পুরোনো ছবিতে ১৫–২০টি অস্ত্র বহনের প্রমাণ রয়েছে। জোড়া খুনের ঘটনায় সন্ত্রাসী ও মোটরসাইকেল ভাড়া করে এনেছিলেন তিনিই।

সাজ্জাদের গ্রেপ্তারের পরও মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে নগরে তিনটি খুনের ঘটনা ঘটেছে, যার পেছনে রয়েছে দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, আধিপত্য বিস্তার এবং প্রতিপক্ষকে দমন করার প্রচেষ্টা।

মোহাম্মদ বোরহানও জোড়া খুন ও ঢাকাইয়া আকবর হত্যাসহ আট মামলার আসামি। তিনি বড় সাজ্জাদের নির্দেশে নির্মাণাধীন ভবন ও কারখানা থেকে চাঁদা আদায় করেন। চাঁদা না দিলে অস্ত্র দেখিয়ে ভয় দেখানো এবং গুলি করার কাজ করেন দলের সদস্যরা। বোরহান নগরের ২ নম্বর গেট এলাকার খায়রুল আলমের ছেলে।

অন্যদিকে রাউজানের খোরশেদ এবং বায়েজিদের চালিতাতলির মোহাম্মদ ওরফে ভাতিজা মোহাম্মদের বিরুদ্ধেও হত্যা ও অস্ত্র মামলাসহ পাঁচটি করে মামলা রয়েছে। তাঁরা এখনো পলাতক।

আরও পড়ুনঅস্ত্র উঁচিয়ে চাঁদা দাবি, ছোড়েন গুলি২০ অক্টোবর ২০২৪অস্ত্র হাতে মোবারক হোসেন ওরফে ইমন

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: হ স ন ওরফ ম হ ম মদ নগর র সহয গ

এছাড়াও পড়ুন:

দ্রুত নির্বাচনের গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করুন: আকবর খান

ঢাকা-৮ আসনে দ্রুত নির্বাচনের গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টির আহ্বান জানিয়েছেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খান। তিনি বলেন, “ভোটের অধিকার জনগণের পবিত্র আমানত, এটি সচেতনভাবে প্রয়োগ করতে হবে।”

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) রাজধানীর মতিঝিলের বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতা জননেতা সাইফুল হক-এর ঢাকা-৮ আসনে নির্বাচনী গণসংযোগ ও প্রচারপত্র বিতরণ কর্মসূচিতে তিনি একথা বলেন।

গণসংযোগের শুরুতে ঢাকা মহানগর কমিটির সভাপতি মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাকের সভাপতিত্বে এক সংক্ষিপ্ত পথসভা হয়। 

সেখানে আকবর খান বলেন, “নির্বাচন কমিশন ও সরকারকে অবিলম্বে ভোটের গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরিতে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। গত কয়েকটি জাতীয় নির্বাচনে—২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে—ঢাকা-৮ আসনের বহু নাগরিক ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। যে তরুণের এখন বয়স ২৫ বা ২৬, তারা কখনো ভোট দিতে পারেনি, ভোট কী তা জানে না- এটি গণতন্ত্রের জন্য গভীর উদ্বেগের বিষয়।”

তিনি আরো বলেন, “গত ১৬-১৭ বছর ধরে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি এবং আমাদের নেতা সাইফুল হক জনগণের ভোটাধিকারের আন্দোলনে রাজপথে সংগ্রাম করে আসছেন। এর জন্য জেল-জুলুম, নির্যাতন সহ্য করেও তিনি থেমে থাকেননি। ভোটাধিকার গণমানুষের দীর্ঘ লড়াই ও ত্যাগের ফসল। এই অধিকার ভুল ব্যক্তিকে নির্বাচিত করার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না।”

আকবর খান বলেন, “জননেতা সাইফুল হক গণমানুষের পরীক্ষিত নেতা। আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের জনগণ যেন তাকে ভোট দিয়ে নিজেদের সুখ-দুঃখ, চাওয়া-পাওয়ার কথা ও দীর্ঘ বঞ্চনার ইতিহাস সংসদে তুলে ধরার সুযোগ করে দেন- এটাই আমাদের আহ্বান।”

গণসংযোগ ও প্রচারপত্র বিতরণ কর্মসূচি বাংলাদেশ ব্যাংক এলাকা থেকে শুরু হয়ে মতিঝিল, কমলাপুর, ফকিরাপুল, কালভার্ট রোড হয়ে বিজয়নগরে এসে শেষ হয়। এতে শতাধিক নেতাকর্মী অংশ নেন।

কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা সিকদার হারুন মাহমুদ, মীর রেজাউল আলম, কবি জামাল সিকদার, ফাইজুর রহমান মুনির, বাবর চৌধুরী, মহানগর নেতা যুবরান আলী জুয়েল, সালাউদ্দিন, রিয়েল মাতবর, আরিফুল ইসলাম, মুজিবুল হক চুন্নু, গোলাম রাজিব, মাহমুদুল হাসান খান, ফয়েজ ইবনে জাফর, নান্টু দাস, শিবু মহন্ত ও হুমায়ুন কবির প্রমুখ।

ঢাকা/এএএম/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • খুলনায় ২২ বোতল মাদকসহ যুবক আটক
  • সিদ্ধিরগঞ্জে বিজয় দিবস-৩৬ নাইট ক্রিকেট টূর্নামেন্টের উদ্বোধন
  • দ্রুত নির্বাচনের গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করুন: আকবর খান