ঈদে ‘তুফান’ জুটিকে দেখা যাবে বিটিভিতে
Published: 30th, May 2025 GMT
ঢাকাই চলচ্চিত্রের রাজপুত্র তিনি। সিনেমায় ২৬ বছরের ক্যারিয়ারের পার করছেন তিনি। আসন্ন ঈদে তার অভিনীত ‘তাণ্ডব’ সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে। অপরদিকে ছোট পর্দার বুদ্ধিদীপ্ত উপস্থিতিতে মন জয় করে নেওয়া অভিনেত্রী নাবিলা। ‘আয়নাবাজি’ সিনেমার পর ‘তুফান’ ছবিতেও ঝলক দেখিয়েছেন। এই ছবিতে প্রথমবার একসঙ্গে কাজ করেছিলেন শাকিব খানের বিপরীতে। ফলে দেশের শীর্ষ নায়কের সঙ্গে তার তৈরি হয়েছে দারুণ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। তুফানের পর আবারও একসঙ্গে দেখা যাবে তাদের, তবে এবার রূপালি পর্দায় নয়-টেলিভিশনের বিশেষ ঈদ আয়োজনে।
জানা গেছে, ‘তুফান’ ছবির সেটেই শাকিব খানের সঙ্গে প্রথম আলাপ হয়েছিল নাবিলার। সেই প্রথম দেখার অভিজ্ঞতা আজও রোমাঞ্চ ছড়ায় তার কণ্ঠে। নাবিলা বলেন, প্রথম দেখাতেই তাঁর মধ্যে এক অন্যরকম আভিজাত্য দেখেছিলাম। তখনই বুঝেছিলাম, তিনি শুধু তারকাই নন, একজন পরিপূর্ণ শিল্পী। অথচ তাঁর আচরণে ছিল না কোনো অহংকার। খুব সাধারণ, সাদামাটা একজন মানুষ। তাঁর সঙ্গে গল্প করা যায়, হাসা যায়, ভাব বিনিময় করা যায়-যেন আমাদেরই একজন।”
অভিনেত্রী আরও যোগ করেন, আমার সঙ্গে প্রথম শুটিং ছিল সিনেমার শেষ দৃশ্যের। একটু নার্ভাস ছিলাম। কিন্তু তিনি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। যদিও একটু অন্তর্মুখী মানুষ, তবে সহশিল্পী হিসেবে দারুণ সহযোগিতাপরায়ণ।”
ঈদ উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশনের এক বিশেষ আয়োজনে শাকিব খানকে দেখা যাবে অতিথি হিসেবে, আর সঞ্চালনার দায়িত্বে থাকবেন নাবিলা। এই অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার পর একসঙ্গে তোলা একটি ছবি নিজের সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করে নাবিলা লিখেছেন, এটা আমার সহকর্মীর সঙ্গে একটি ছবি। আজ ঈদের একটি শোতে আমার অতিথি হয়েছেন মেগাস্টার শাকিব খান।”
ছবিটি প্রকাশের পরপরই শোবিজপ্রেমীদের মধ্যে শুরু হয়েছে আলোচনা। এক ফ্রেমে দুই ভিন্ন ধারার জনপ্রিয় তারকা—দর্শকদের আগ্রহ যেন বাড়ছেই।
রোমাঞ্চ, শ্রদ্ধা ও বিনোদনের এক অনন্য মেলবন্ধন হয়ে উঠতে চলেছে এই ঈদ আয়োজন। শাকিব খান ও নাবিলাকে একসঙ্গে দেখার অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন তাদের ভক্তরা। নিঃসন্দেহে এটি এবারের ঈদ বিনোদনের এক উজ্জ্বল সংযোজন বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
নামতে গেলেই চালক বাস টান দিচ্ছিলেন, পরে লাফিয়ে নামেন
‘“এ সকল নষ্ট মাইয়াদের জন্য বাসের পরিবেশ নষ্ট হয়ে যায়। যা যা বাস থেকে নেমে যা নষ্ট মাইয়াছেলে”—বাস কন্ডাক্টরের এই মন্তব্য শোনার পর নিজের ওপর আর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারিনি।’ কথাগুলো বলছিলেন বাসে হেনস্তার শিকার ওই তরুণী। আজ প্রথম আলোর সঙ্গে মুঠোফোনে দীর্ঘ আলাপে তিনি সেদিনের ঘটনার আদ্যোপান্ত জানান। বললেন, ঘটনার সময় বাসে একজন মানুষও প্রতিবাদ না করায় কষ্ট পেয়েছেন। যিনি এ ঘটনার ভিডিও করেছিলেন, তাঁর কাছ থেকেও কটু কথা শুনতে হয়েছিল। এমনকি তিনি বাস থেকে নামতে গিয়েও পারছিলেন না। যতবার নামার চেষ্টা করেন, চালক বাস টান দিচ্ছিলেন।
তবে দৃঢ়তার সঙ্গে এই তরুণী জানিয়েছেন, এই হেনস্তার ঘটনা তাঁকে দমিয়ে রাখতে পারবে না। তিনি প্রতিবাদ করে যাবেন।
জুতা হাতে বাস কন্ডাক্টরের আচরণের প্রতিবাদ জানানোর ওই ঘটনা ঘটে গত ২৭ অক্টোবর। বাসের এক ব্যক্তি ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করলে তা নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। গত বৃহস্পতিবার রমজান পরিবহন নামের বাসের হেনস্তাকারী কন্ডাক্টর নিজাম উদ্দিনকে (৪৫) গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় তরুণীর এজাহারের পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্র বাদী হয়ে গতকাল শুক্রবার মামলা করে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১০ ধারায় (যৌন নিপীড়নের অভিযোগ) মামলাটি করা হয়েছে।
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছিল, বাসের সামনের আসনে বসা এক ব্যক্তির কোনো একটি মন্তব্য নিয়ে এক তরুণী তীব্র ক্ষোভে ফেটে পড়লেন। তিনি তেড়ে যান লোকটির দিকে। ওই সময় লোকটি আসন ছেড়ে উঠে তরুণীকে চড় মারেন। একপর্যায়ে দুজন জুতা খুলে দুজনের দিকে তুলে ধরেন। সে সময় ওই ব্যক্তি তরুণীকে আঘাত করেন এবং ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। ওই ব্যক্তি এরপর বারবার তরুণীর গায়ে ধাক্কা মারেন ও আঘাত করার চেষ্টা করেন। তরুণী চিৎকার করে বলছিলেন, ‘তুই আমার পোশাক তুলে কেন কথা বলবি?’ এ সময় সামনের দিকে থাকা দুই নারী ও একজন পুরুষ যাত্রী ছাড়া আর কেউ আঘাত করা ব্যক্তিটিকে থামানোর চেষ্টা করেননি, প্রতিবাদ করেননি।
ওই তরুণী প্রথম আলোকে জানান, তাঁর মা–বাবা ও ভাই–বোনরা চাঁদপুরে থাকেন। বাবার দোকান রয়েছে। ভাই–বোনদের মধ্যে তিনি সবার বড়। চাঁদপুর থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পাস করার পর এখন ঢাকায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে পড়ছেন। পড়াশোনার খরচ চালানোর পাশাপাশি বাবাকে সহায়তা করতে নিজেও টুকটাক কাজ করেন। হাতের কাজ, ছবি আঁকার কাজ করেন, টেলিভিশন চ্যানেলে মাঝেমধ্যে কিছু অনুষ্ঠান উপস্থাপনাও করেন। রাজধানীর বছিলা এলাকায় কয়েকজন মিলে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকেন।
‘শুরুতে আমি উত্তেজিত হইনি’
সেদিনের ঘটনা বলতে গিয়ে তরুণী বলেন, তিনি মুঠোফোন ঠিক করতে হাতিরপুলে মোতালিব প্লাজায় গিয়েছিলেন। বাসায় ফেরার জন্য সেখান থেকে ধানমন্ডি–১৫ নম্বর বাসস্ট্যান্ডে আসেন এবং রমজান পরিবহনের ওই বাসটিতে ওঠেন। তখন বেলা দুইটা কি আড়াইটা। তিনি বাসে উঠে মাঝামাঝি জায়গায় একটি আসনে বসেন। বাস কন্ডাক্টর তাঁর কাছে এসে ভাড়া চাইলে ‘স্টুডেন্ট’ (শিক্ষার্থী) জানিয়ে তিনি অর্ধেক ভাড়া দেন। তরুণী দাবি করেন, বাস কন্ডাক্টর তখন বলে ওঠেন, ‘চেহারা আর পোশাক দেখলে তো মনে হয় না স্টুডেন্ট!’ তখন তিনি রাগ হলেও কন্ডাক্টরকে ‘আপনি’ বলে সম্বোধন করে বলেন, ‘স্টুডেন্টের সঙ্গে পোশাকের কী সম্পর্ক? আপনি এসব কী ধরনের কথা বলছেন? ওই সময় কিছুটা কথা-কাটাকাটি হয়। শুরুতে আমি উত্তেজিত হইনি।’
রাজধানীর বছিলায় বাসের মধ্যে পোশাক নিয়ে কটূক্তির সাহসী প্রতিবাদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীর প্রশংসা করে এমন চিত্র ফেসবুকে পোস্ট করা হয়েছে