সোনারগাঁয়ের বারদীতে হিন্দু সম্প্রাদায়ের আধ্যাত্মিক সাধক শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারীর ১৩৫তম তীরোধান উৎসবকে কেন্দ্র করে অবৈধ মেলা বসাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে স্থানীয় বিএনপির।

এঘটনায় গত বৃহস্পতিবার অবৈধ মেলা অপসারণ ও লোকনাথ ভক্ত ও জনসাধারণের চলাচল নির্বিঘ্নে করতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য এলাকাবাসী গণ স্বাক্ষর দিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে স্বারকলিপি দিয়েছেন।

আগামী ৩রা জুন লোকনাথ ব্রহ্মচারীর তীরোধান উৎসব পালিত হবে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন স্থান থেকে লোকনাথ ভক্তরা বারদীতে আসতে শুরু করেছেন।  

রকলিপিতে এলাকাবাসী উল্লেখ করেন, হিন্দু সম্প্রাদায়ের আধ্যাত্মিক সাধক শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারীর তীরোধান উৎসবকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক পরিবেশ উত্তপ্ত। মাঠ দখল, সরকারী রাস্তাঘাট দখল নিয়ে রাজনৈতিক দলের কর্মীরা নিজেদের মধ্যে ঝগড়াঝাটিসহ সামাজিক বিশৃঙ্খল সৃষ্টি করছেন।

যেকোন সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংঙ্কায় সাধারণ মানুষ আতংঙ্কিত হয়ে পেড়েছেন। বিগত বছর গুলোতে তীরেধান উৎসবে বিশৃঙ্খলা পরিবেশ এড়াতে মেলা বন্ধ রাখা হয়েছে। 

বর্তমানে একটি দলের উশৃঙ্খল নেতাকর্মী বিভক্ত হয়ে মেলা নিজেদের নিয়ন্ত্রনে নিতে চেষ্টা করছে। এতে করে ওই এলাকার সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিবেশ নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়ে পড়েছে। মেলায় লোকনাথ ভক্ত ও দর্শনার্থীদের কথা বিবেচনা করে অবৈধভাবে দখল মাঠ উচ্ছেদ করে সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।

সূত্র জানায়, বারদী ইউনিয়ন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আলমীর হোসেন, ইউনিয়ন যুবদলের আহবায়ক আব্দুল আলী ও আব্দুল হালিম, সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির ক্রীড়া সম্পাদক আব্দুল করিম, বারদী ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি ও সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুস সাত্তার বারদী খেলার মাঠ ও আশপাশের জায়গা  দখল করে অবৈধভাবে মেলা বসানোর জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন।

এলাকাবাসীর দাবি, তীরোধান উৎসবে মেলা বন্ধ করে হিন্দু ধর্মালম্বীদের পূর্জা, অর্চনাসহ তাদের ধর্মীয় কার্যক্রম পরিচলনা নির্বিঘ্নে করতে হবে। 

বারদী ইউনিয়নের রিবর গ্রামের প্রদীপ চন্দ্র সরকার বলেন, লোকনাথ ব্রহ্মচারীর তীরেধান উৎসব নির্বিঘ্নে করতে হবে। মেলা হলে যানজট ও কোলাহল তৈরি হয়। ফলে পূর্জা, অর্চনা, রাজভোগ, বাল্যভোগসহ ধর্মীয় কাজে ব্যাঘাত ঘটে। তাই মেলা না বসলেই হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ ভালোভাবে ধর্মীয় কার্যক্রম শেষ করতে পারবেন।

বারদী ইউনিয়নের নাগপাড়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম সুমন বলেন, প্রতিবছর লোকনাথ ব্রহ্মচারীর তীরোধান উৎসবে দেশ বিদেশ থেকে বারদীতে লাখো মানুষের সমগম ঘটে। বারদীতে হিন্দু ও মুসলিমদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব রয়েছে। হিন্দুদের ধর্মীয় উৎসব পালন করার জন্য অবশ্যই মেলা বন্ধ রাখতে হবে। মেলা হলে রাস্তাঘাট বন্ধ হয়ে যায়। তাছাড়া ছিনতাই, চুরি ও ডাকাতির আশংঙ্কা থাকে। 

বারদী ইউনিয়ন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন বলেন, প্রশাসনের মৌখিক অনুমিতে মেলা বসছে। মেলার বিষয়ে কারো অভিযোগ নেই। প্রশাসন ম্যানেজ হয়েই মেলা বসানোর সুযোগ দিয়েছেন। 

সোনারগাঁ থানার ওসি মো.

মফিজুর রহমান বলেন, আমাদের মৌখিকভাবে মেলা বসানোর জন্য অনুমতি দেওয়ার কোন সুযোগ নাই। আমরা আইনশৃঙ্খলার রক্ষায় সকল প্রকার ব্যবস্থা নিবো। 

সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা রহমানের ফোনে একাধিকবার ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেনি। ক্ষুদে বার্তা দিয়ে সাড়া পাওয়া যায়নি।

নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার বলেন,লোকনাথ ভক্তদের চলাচল নির্বিঘ্নে করতে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। তবে মেলা বসানোর কোন অনুমতি দেওয়া হয়নি। 

নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, সোনারগাঁয়ের বিষয়গুলো ইউএনও দেখবেন। তবে হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসবে মেলার অনুমতি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়নি। কেউ মেলা বসালে সেটা অবৈধ হবে।
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: স ন রগ ও ব এনপ ন র য়ণগঞ জ ব এনপ র স ন রগ র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

‎পূজাকে  ঘিরে আইনশৃঙ্খলায় বাহিনী তৎপর : ডিসি

‎নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, আইনসৃঙ্খলা স্বাভাবিক রয়েছে, বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজাকে ঘিরে সকল ধর্মমত, সকল  সম্প্রদায় তারা একত্রিত হয়েছে।

সকলেই সার্বিক সহয়তা করছে যাতে করে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজা উৎসব সুন্দর ভাবে পজলন করতে পারে। পূজাকে ঘিরে  একটি গোষ্ঠি চাইবে পূজা উৎসব নষ্ট করে দেয়ার জন্য। 

সে জন্য আমাদের তৎপরতা রয়েছে। আমাদের  গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে। তার পাশাপাশি র‍্যাব, বিজিবি,  সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশ পুলিশবাহিহনী সবাই কাজ করছে যাতে করে সুন্দর ভাবে পূজা উৎসব শেষ করতে পারি।

‎‎মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর)  শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে ৫নং ঘাটে দূর্গা পূজার প্রতিমা বিসর্জনের স্থান পরিদর্শনকালে তিনি এ নির্দেশনা দেন।

‎দূর্গা পূজা বিজয়া দশমী শেষে প্রতিমা বিসর্জনের সময় যেকোনো অপ্রীতিকর দূর্ঘটনা এড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সুন্দর ভাবে প্রতিমা বিসর্জনের স্থান নিরাপদ রাখতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন জেলা প্রশাসক।

‎‎জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, নারায়ণগঞ্জের ২২৩টি পূজা মণ্ডপে সুষ্ঠুভাবে পূজা উদযাপনে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। শান্তি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে এবং সম্প্রীতি বজায় রেখে বর্তমানে পূজা উদযাপনের প্রস্তুতি চলছে।

‎‎এসময় তিনি প্রতিটি মণ্ডপে সুষ্ঠুভাবে ও নির্বিঘ্নে পূজা অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে যথাযথ সহযোগিতার নির্দেশনা দেন।

‎‎তিনি বলেন, সকলে মিলে সব উৎসব উদযাপন করাই বাংলার ঐতিহ্য ও গৌরব।

‎‎এসময় জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিআইডব্লিউটিএ, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • উৎসব ঘুরে প্রেক্ষাগৃহে ‘বাড়ির নাম শাহানা’
  • কেইনের জোড়া গোলে চেলসিকে হারাল বায়ার্ন, চ্যাম্পিয়ন পিএসজির গোল উৎসব
  • কারও কোনো অপরাধ নাই
  • বিশ্বকর্মা পূজা: গাঙ্গেয় শিল্পের উৎসব
  • আজ থেকে বুসান উৎসব, নানাভাবে রয়েছে বাংলাদেশ
  • ‎সকলে মিলে সব উৎসব উদযাপন করাই বাংলার ঐতিহ্য ও গৌরব : ডিসি
  • ‎পূজাকে  ঘিরে আইনশৃঙ্খলায় বাহিনী তৎপর : ডিসি
  • ঘুম থেকে অনন্ত ঘুমে অস্কারজয়ী রবার্ট রেডফোর্ড
  • ২০০ বছরের ঐতিহ্য নিয়ে ভোলার বৈষা দধি
  • শেষ হলো সপ্তম যোসেফাইট ম্যাথ ম্যানিয়া ২০২৫