পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আমিনুল ইসলামের অপসারণ দাবিতে শিক্ষার্থীদের সংবাদ সম্মেলনের উপর বহিরাগতরা হামলা করেছে। এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই নারী নেত্রীসহ অন্তত চারজনকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে।

রবিবার (১ জুন) বিকেলে বাউফল উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে হামলা করা হয়।

গত ১৯ মে দৈনিক কালেরকণ্ঠের পটুয়াখালী প্রতিনিধি এমরান হাসান সাহেলের সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ ও জেলে ভরার হুমকি দেন ইউএনও আমিনুল ইসলাম। এ ঘটনায় তার অপসারণের দাবিতে আজ রবিবার (১ জুন) বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এর আগে ইউএনও অফিসের পিয়ন শ্যামল চন্দ্র প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে দেন। সম্মেলন শুরুর ২০ মিনিট পর কয়েকজন বহিরাগত যুবক এসে ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেন ও অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেন। কিছুক্ষণ পর আবারও হামলা চালিয়ে লিখিত বক্তব্য ছিনিয়ে নেয় তারা।

আরো পড়ুন:

জিএম কাদেরসহ ২৮০ জনের বিরুদ্ধে বরিশালে মামলা

এফডিসিতে রামদা নিয়ে এক ব্যক্তির হামলা, ২৪টি গ্লাস ভাঙচুর

পরে ইউএনওর নিরাপত্তায় থাকা ২০-২৫ জন আনসার সদস্য ও ২০-২৫ জন গ্রাম পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আন্দোলনকারীদের গেটের বাইরে চলে যেতে বলেন। এ সময় তাদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে আনসার সদস্যরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেত্রী শাহনাজ, আয়শাতুন্নেছা বর্ষা, সিয়াম আহমেদ ও শুভ চন্দ্রশীলকে ধাক্কা দেন বলে অভিযোগ করেন তারা।

বাউফল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুভ চন্দ্রশীল বলেন, ‘‘সম্প্রতি ইউএনও একজন সাংবাদিকের সঙ্গে অসদাচরণ করেন। তার অপসারণ দাবিতে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সংবাদ সম্মেলন করছিলাম। অথচ ইউএনওর ইন্ধনে বহিরাগতরা আমাদের ওপর হামলা করে এবং সংবাদ সম্মেলন পণ্ড করে দেয়।’’

এ বিষয়ে জানতে বাউফল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘‘এ রকম কিছু ঘটেওনি, এ রকম কিছু জানাও নেই।’’

পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফিন বলেন, ‘‘এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখব।’’
 

ঢাকা/ইমরান/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব উফল

এছাড়াও পড়ুন:

‘লাল পরি’ হয়ে ঘরে ফিরল হারিয়ে যাওয়া শিশুটি

ঠিকমতো চোখে দেখে না আট বছরের শিশু মরিয়ম। মাদ্রাসা থেকে ঘরে ফেরার পথে নিখোঁজ হয় সে। নানা ঘটনাচক্রে একসময় পৌঁছায় কক্সবাজার সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার ( ইউএনও) কার্যালয়ে। পরে ইউএনওর সহায়তায় ঘরে ফিরেছে শিশুটি। ঘরে ফেরার আগে তার ‘লাল পরি’ সাজার ইচ্ছাপূরণও হয়েছে।

শিশু মরিয়মের বাড়ি কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলায় পূর্ব পোকখালী চরপাড়া গ্রামে তার বাড়ি। সেখানেই একটি মাদ্রাসায় পড়ালেখা করে। গত বুধবার মাদ্রাসা ছুটির পর মায়ের জন্য অপেক্ষায় ছিল সে। তবে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে এক ব্যক্তি তাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায় কক্সবাজার সদরে।

ইউএনও কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মরিয়ম কক্সবাজার পৌরসভার কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় চোখেমুখে ভয় আর আতঙ্কের ছাপ নিয়ে হাঁটাহাঁটি করছিল। কৌতূহলী এক পথচারী কথা বলে তার নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি জানতে পারেন। ওই পথচারী মরিয়মকে নিয়ে যান তিন কিলোমিটার দূরে উপজেলা পরিষদের কার্যালয়ে। সেখান থেকে এক আনসার সদস্য মরিয়মকে ইউএনও কার্যালয়ে নিয়ে আসেন।

ইউএনও নিলুফা ইয়াছমিন চৌধুরী এ সময় শিশু মরিয়মের সঙ্গে কথা বলে তার বিস্তারিত ঠিকানা জানার চেষ্টা করেন। শিশুটি কেবল তার বাড়ি ঈদগাঁওয়ের পোকখালী এতটুকুই বলতে পারছিল। পরে ঈদগাঁওয়ের ইউএনওর মাধ্যমে শিশুটির বাড়ির ঠিকানা নিশ্চিত হওয়া যায়।

কাপড় কিনে দেওয়ার সময় মরিয়ম বলল, সে লাল পরি সেজে বাড়ি ফিরবে। তাকে লাল জামা, লাল চুড়ি, লাল লিপস্টিক ও লাল ওড়না দিয়ে লাল পরি সাজানো হয়। নিলুফা ইয়াছমিন চৌধুরী, ইউএনও, কক্সবাজার সদর উপজেলা

শিশুটি প্রথমে পাচারকারীদের খপ্পরে পড়েছিল বলে সন্দেহ ইউএনও নিলুফা ইয়াছমিনের। তিনি বলেন, আলাপে শিশুটি জানায়, সে তার তিন-চার বছর বয়স পর্যন্ত ভালোভাবেই চোখে দেখত। এরপর থেকে ক্রমে তাঁর চোখের আলো ঝাপসা হতে শুরু করে। এখন সে তেমন দেখতে পায় না। তার বাবা মারা গেছেন। মা ও বড় ভাই অন্ধ। পরিবারে অষ্টম শ্রেণিপড়ুয়া একটি বোন আছে, সে–ই কেবল চোখে দেখতে পায়। ঘরের কাজ সব বোনই সামলায়। তাদের পরিবার থাকে সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে।

শিশুটির কাছ থেকে চোখের বিষয়টি জেনে তাকে কক্সবাজার শহরের পানবাজার এলাকার কমিউনিটি চক্ষু হাসপাতালে নেওয়া হয় বলে জানান ইউএনও। তিনি বলেন, ‘শিশুটির সঙ্গে কথা বলে মনে হলো তার চোখের সমস্যা এত জটিল না। হাসপাতালে নেওয়ার পর চক্ষুবিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বিমল চৌধুরী তার চোখের পরীক্ষা করেন। এরপর বিনা মূল্যে শিশু মরিয়মকে চশমা ও এক মাসের ওষুধ কিনে দেওয়া হয়। চশমা চোখে দিয়ে সে জানিয়েছে, আগের চেয়ে অনেক ভালো দেখতে পাচ্ছে।’

শিশুটিকে মায়ের হাতে তুলে দেন কক্সবাজার সদরের ইউএনও নিলুফা ইয়াছমিন চৌধুরী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘লাল পরি’ হয়ে ঘরে ফিরল হারিয়ে যাওয়া শিশুটি