৫০০, ২০০, ১০০ ও ১০, ৫ ও ২ টাকার নোটের নকশায় কী থাকছে
Published: 1st, June 2025 GMT
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সব ধরনের মুদ্রার (টাকা ও কয়েন) নকশা পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। সে অনুযায়ী টাকার নতুন নকশার নোট এক এক করে ছাড়া হচ্ছে। ১০০০, ৫০ ও ২০ টাকার নোটের পর অন্যান্য মূল্যমানের নতুন নোটের নকশায় কী থাকছে, তা জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন এসব নোট ছাপানোর কাজ চলছে। ঈদের পর বাজারে আসতে পারে এসব নোট।
আগের সব মুদ্রায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি যুক্ত ছিল। নতুন নকশায় তাঁর ছবি থাকছে না। এবার ৫০০, ২০০, ১০০ ও ১০ টাকার নোটে স্বাক্ষর থাকবে বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান গভর্নর আহসান হাবিব মনসুরের। অন্যদিকে ২ ও ৫ টাকার নোটে স্বাক্ষর থাকবে অর্থসচিব খায়েরুজ্জামান মজুমদারের।
৫০০ টাকার ব্যাংক নোটের সম্মুখভাগে বাঁ পাশে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও মাঝখানে ব্যাকগ্রাউন্ডে পাতা, কলিসহ প্রস্ফুটিত জাতীয় ফুল শাপলার ছবি থাকবে। নোটের পেছনভাগে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের ছবি থাকবে। নোটটিতে সবুজ রঙের আধিক্য থাকবে। জলছাপ হিসেবে নোটে থাকবে জাতীয় পশু বেঙ্গল টাইগারের মুখ।
২০০ টাকার ব্যাংক নোটের সম্মুখভাগে বাঁ পাশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার ছবি ও পেছনভাগে জুলাই-২০২৪ গণ–অভ্যুত্থানের সময় ছাত্রদের আঁকা ‘গ্রাফিতি-২০২৪’ শীর্ষক একটি গ্রাফিতি মুদ্রিত থাকবে। নোটটিতে হলুদ রঙের আধিক্য থাকবে। জলছাপ হিসেবে এ নোটেও বেঙ্গল টাইগারের মুখ থাকবে।
১০০ টাকার ব্যাংক নোটের সম্মুখভাগে বাঁ পাশে বাগেরহাটের ষাটগম্বুজ মসজিদের ছবি ও পেছনে সুন্দরবনের ছবি থাকবে। নোটটিতে নীল রঙের আধিক্য থাকবে। জলছাপ হিসেবে এ নোটে থাকবে বেঙ্গল টাইগারের মুখ।
১০ টাকার ব্যাংক নোটের সম্মুখভাগে বাঁ পাশে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের ছবি এবং পেছনে জুলাই-২০২৪ গণ–অভ্যুত্থানের সময় ছাত্রদের আঁকা ‘গ্রাফিতি-২০২৪’ মুদ্রিত থাকবে। নোটটিতে গোলাপি রঙের আধিক্য থাকবে। জলছাপ হিসেবে এই নোটে বেঙ্গল টাইগারের মুখ থাকবে।
৫ টাকা মূল্যমানের নোটের সম্মুখভাগে বাঁ পাশে ঢাকার তারা মসজিদের ছবি ও পেছনভাগে জুলাই-২০২৪ গণ–অভ্যুত্থানের সময় ছাত্রদের আঁকা ‘গ্রাফিতি-২০২৪’ মুদ্রিত থাকবে। নোটটিতে গোলাপি রঙের আধিক্য থাকবে। জলছাপ হিসেবে থাকবে বেঙ্গল টাইগারের মুখ।
২ টাকা মূল্যমানের নোটের সম্মুখভাগে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধের ছবি ও পেছনভাগে রায়েরবাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধের ছবি থাকবে। নোটটিতে হালকা সবুজ রঙের আধিক্য থাকবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জলছ প হ স ব
এছাড়াও পড়ুন:
১০০ কোটি টাকার পাচারের অভিযোগ, জাহাঙ্গীরের নামে মামলা
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দপ্তরের সাবেক পিয়ন জাহাঙ্গীর আলম ওরফে পানি জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) নোয়াখালীর চাটখিল থানায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে এই মামলা করেছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।
আরো পড়ুন:
নাফিসা কামালসহ ৮ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের মামলা
সাজিদ হত্যার তদন্তে সিআইডিকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমোদন
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান জানান, প্রাথমিক অনুসন্ধানে উল্লেখযোগ্য প্রমাণ পাওয়ায় নোয়াখালীর চাটখিল থানায় জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার এক নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান জাহাঙ্গীর আলম জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন। পরে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর তিনি অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে স্বল্প সময়ের জন্য ‘ব্যক্তিগত সহকারী’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই দায়িত্বই তাকে আর্থিকভাবে লাভবান করেছে মর্মে প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।
জসীম উদ্দিন খান জানান, ২০১০ সালে জাহাঙ্গীর ‘স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানি গঠন করে বিকাশের ডিস্ট্রিবিউশন ব্যবসা নেন। কিন্তু এর আড়ালে তিনি অসংখ্য সন্দেহজনক ব্যাংকিং কার্যক্রম করেন। কোম্পানির নামে একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক অঙ্কের টাকা জমা হয়, যার বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি ও ব্যবসার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।
সিআইডির এই কর্মকর্তা জানান, প্রতিষ্ঠানটির অ্যাকাউন্টগুলোতে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বিভিন্ন ব্যাংকে মোট ৫৬৫ কোটিরও বেশি টাকা লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ নগদে জমা হয়েছে দেশের নানা স্থান থেকে। এসব অর্থের উৎস অজানা এবং হুন্ডি ও মানিলন্ডারিং কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিক প্রমাণ মেলে।
বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দীন জানান, জাহাঙ্গীর আলম তার স্ত্রী কামরুন নাহার ও ভাই মনির হোসেনের সহায়তায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অর্থ লেনদেন করতেন। জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী ২০২৪ সালের জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান এবং বর্তমানে ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করছেন। বিদেশে তাদের বিনিয়োগ বা সম্পদ ক্রয়ের কোনো সরকারি অনুমোদন না পাওয়া গেলেও তারা যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রমাণ মেলে।
অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে, জাহাঙ্গীর আলম, তার স্ত্রী কামরুন নাহার, ভাই মনির হোসেন এবং প্রতিষ্ঠান স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড যৌথভাবে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে প্রায় ১০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন, অপরাপর সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করার স্বার্থে সিআইডির তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ঢাকা/মাকসুদ/সাইফ