সংস্কার, বিচার ও নির্বাচনের বিষয়ে সরকারের স্পষ্ট রোডম্যাপ আবশ্যক: নাগরিক কোয়ালিশন
Published: 2nd, June 2025 GMT
সংস্কার, আওয়ামী লীগের বিচার ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ (রূপরেখা) অত্যাবশ্যক বলে মনে করে নাগরিক কোয়ালিশন।
নাগরিক কোয়ালিশন হলো রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক কাঠামো সংস্কারে একটি নাগরিক উদ্যোগ। এর সঙ্গে নাগরিক সমাজের বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তি যুক্ত রয়েছে। আজ সোমবার নাগরিক কোয়ালিশনের এক বিবৃতিতে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ প্রত্যাশা করা হয়েছে।
সংস্কারের অর্জনযোগ্য লক্ষ্যমাত্রা এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য একটি স্পষ্ট সময়সীমার অনুপস্থিতি রাজনৈতিক অংশীজনদের মধ্যে আস্থার ঘাটতি বাড়িয়ে তুলেছে বলে মনে করছে নাগরিক কোয়ালিশন। তাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নির্বাচনের রোডম্যাপ, রাষ্ট্রব্যবস্থার মৌলিক সংস্কার উদ্যোগে সরকারের অবস্থান, মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্ক, চট্টগ্রাম বন্দরে বিদেশি বিনিয়োগ, আশু প্রশাসনিক ও পুলিশ সংস্কার—এসব সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্রক্রিয়াগত অস্বচ্ছতা বিভিন্ন অংশীজনের মধ্যে অবিশ্বাস সৃষ্টি করেছে এবং সমাজজুড়ে অস্থিরতা সৃষ্টির সুযোগ করে দিচ্ছে।
অন্তর্বর্তী সরকার ঘোষিত তিনটি মূল প্রতিশ্রুতি (সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন) পূরণের একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ অত্যাবশ্যক বলে উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে। এতে বলা হয়, গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলো ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনকে জুলাই মাসের মধ্যে প্রয়োজনীয় সাংবিধানিক সংস্কারের বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে হবে।
বিবৃতিতে নাগরিক কোয়ালিশন আরও বলছে, রাজনৈতিক দলগুলোকে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রণীত জুলাই সনদ বাস্তবায়নের ব্যাপারে সুস্পষ্ট অঙ্গীকার করতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকারকে দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি সুস্পষ্ট নির্বাচনী সময়সূচির ঘোষণা করতে হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সরক র র
এছাড়াও পড়ুন:
ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচন চায় বাসদ
ডিসেম্বরের আগেই জাতীয় নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)। আজ সোমবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের বৈঠকে দলের পক্ষ থেকে এ দাবি জানানো হয়েছে বলে বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ জানিয়েছেন।
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত এ বৈঠক শেষে বেরিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বজলুর রশীদ ফিরোজ। সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন একটি আরেকটির সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয় বলে উল্লেখ করেন তিনি।
নির্বাচন ডিসেম্বর থেকে জুন কেন, এমন প্রশ্ন তুলে বাসদের এই নেতা বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন বলেছে, জুলাই মাসের মধ্যেই তারা প্রস্তুত। আমরা বলেছি, ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচনের তারিখ সুনির্দিষ্টভাবে ঘোষণা করতে হবে এবং নির্বাচনের তারিখ দিয়ে সংস্কার প্রস্তাবকে এগিয়ে নিতে হবে এবং বিচারকে দৃশ্যমান করতে হবে।’
বৈঠকের আলোচনা নিয়ে বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, ‘আমরা বলেছি যে প্রধান উপদেষ্টা জাপান গিয়ে যে বক্তব্য রেখেছে, সেটা একটি পার্টিকে ব্লেম করা হয়েছে। বন্দর ও মানবিক করিডর দেওয়ার যে চক্রান্ত, সেগুলো বন্ধ করতে হবে। এটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব নয়। আমরা বলেছি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের বক্তব্যে বিভাজন তৈরি হয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে নিরপেক্ষ সেটা প্রমাণ করতে হবে।’
এ ছাড়া জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রথম পর্যায়ের আলোচনায় কোন কোন বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলো জাতির সামনে স্পষ্ট করার দাবি জানিয়েছে বাসদ। বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেছেন, ‘তিন মাস ধরে আলোচনা হয়েছে। আমরা বলেছি, সেই তিন মাসের আলোচনার সারসংক্ষেপ কী? কোন কোন বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলো জাতির সামনে পরিষ্কার করতে হবে। আমাদের কাছে পরিষ্কার করতে হবে, সেগুলো বাস্তবায়নের কী কী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ চায় বাংলাদেশ জাসদ
বৈঠক শেষে বেরিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন বাংলাদেশ জাসদের স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. মুশতাক হোসেন। তিনি বলেন, ‘সংস্কারের আলোচনাকে যদি আমাদের অর্থবহ করতে হয়, তাহলে সর্বাগ্রে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করতে হবে, সম্ভব হলে ডিসেম্বরের আগে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা যায়।’
এ ছাড়া উপদেষ্টা পরিষদকে তার নিরপেক্ষতা প্রমাণ করতে হবে উল্লেখ করে বাংলাদেশ জাসদের এই নেতা বলেন, ‘প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, বিশেষ করে মাঠপর্যায়ে যারা নির্বাচনের ডিউটি করবে, তাদেরও নিরপেক্ষতা প্রমাণ করতে হবে। যদি সংস্কারের আলোচনা করতে হয়, তাহলে সন্ত্রাস বন্ধ করতে হবে এবং বিদেশের সঙ্গে কোনো ঝুঁকিপূর্ণ চুক্তি করা যাবে না। এগুলো যদি আমরা নিশ্চয়তা পাই, তাহলে সংস্কারের আলোচনা সফল হতে পারে।’