অ্যাশেজে একদিনেই ২ লাখ ২০ হাজার টিকিট বিক্রি
Published: 4th, June 2025 GMT
অ্যাশেজ শুরু হতে বাকি এখনও ৫ মাস। নভেম্বরে শুরু হবে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের মধ্যকার ঐতিহাসিক টেস্ট সিরিজ অ্যাশেজ। সেই সিরিজের টিকিট বিক্রিতে নতুন রেকর্ড হয়েছে।
প্রাক-বিক্রয়ের প্রথম দিনেই ২, ২০,০০০ এরও বেশি টিকিট বিক্রি হয়েছে, যা ২০১৭-১৮ গ্রীষ্মকালীন প্রাক-বিক্রয় সময়ের ১, ১১,৭৪১ টিকিটের আগের রেকর্ডের প্রায় দ্বিগুণ। অ্যাশেজ নিয়ে দর্শকদের উন্মাদনা, উল্লাস, আগ্রহ নতুন কিছু নয়। পরবর্তী আসরের টিকিটি বিক্রিতেই বোঝা যাচ্ছে, পাঁচ ম্যাচের এই সিরিজে প্রতিটি টেস্টে, প্রতিটি দিনে গ্যালারি থাকবে হাউসফুল।
প্রায়োরিটি প্রি-সেল উইন্ডো খোলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই টিকিট বিক্রির রেকর্ড ভেঙে যায়। মূলত মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে (এমসিজি) বক্সিং ডে ম্যাচ এবং গাব্বায় দিবা-রাত্রির অ্যাশেজ টেস্টের প্রথম দুই দিনের বাড়তি চাহিদার কারণেই এই রেকর্ডটি ভেঙে যায়।
নিউ সাউথ ওয়েলস এবং ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ায় বিক্রি শুরু হওয়ার আগে আন্তর্জাতিক মৌসুমের জন্য ১২০,০০০ এরও বেশি টিকিট কেনা হয়েছিল, যার বেশিরভাগই অ্যাশেজ টেস্টের জন্য। গাব্বায় দিবা-রাত্রির টেস্টের প্রথম দুই দিনের জন্য কেবলমাত্র একক টিকিট পাওয়া যাচ্ছে। যেখানে বক্সিং ডে ইভেন্টের জন্য ৫৫,০০০ এরও বেশি টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে।
ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাহী টড গ্রিনবার্গ বলেছেন, ‘‘টিকিটের রেকর্ড চাহিদা দেখে বোঝা যাচ্ছে আসন্ন দুর্দান্ত আন্তর্জাতিক মৌসুম নিয়ে ভক্তরা কতটা উৎসাহী। নিউ সাউথ ওয়েলস ও ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়াতে টিকিট বিক্রি শুরু হওয়ার আগেই আমাদের আগের টিকিট বিক্রির রেকর্ড ছাড়িয়ে যাওয়া একটি অসাধারণ অর্জন এবং অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় খেলা হিসেবে আমাদের অবস্থানকে পুনরায় নিশ্চিত করে। যারা এখনও টিকিট কিনেননি তাদের আমি অনুরোধ করব এখনই টিকিট কিনে ফেলুন কারণ আমরা আশা করছি কিছু দিনের জন্য বরাদ্দ শেষ হয়ে যাবে। আমরা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের একটি অবিস্মরণীয় সামারের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি।’’
আগামী ১২ জুন পর্যন্ত প্রি সেল চলবে। পরদিন অবশিষ্ট কোনো টিকিট থাকলে তা বিক্রি করা হবে।
২১ নভেম্বর শুরু হবে অ্যাশেজ। পার্থে খেলবে দুই দল। পরের ম্যাচ ব্রিসবেনে গাব্বাতে। এরপর অ্যাডিলেড, মেলবোর্ন ও সিডনিতে দুই দল পরের তিন টেস্ট খেলবে।
ঢাকা/ইয়াসিন
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র র কর ড র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
গংগাচড়ায় হিন্দুদের ঘরবাড়ি মেরামতের উদ্যোগ, আতঙ্ক কাটেনি এখনও
রংপুরের গংগাচড়ায় ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ ঘিরে সহিংসতার শিকার হিন্দু পরিবারের ঘরবাড়ি মেরামতের উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। তবে ঘটনার তিন দিন পরেও এলাকায় ফেরেনি অনেক পরিবার। আতঙ্কে এখনো আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে অনেকে।
গত ২৭ জুলাই রাতে ওই গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলার আগে এলাকায় মাইকিং করে লোকজন জড়ো করা হয়।
পুলিশ, প্রশাসন ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন বলছেন, যারা হামলা করেছেন, তাদের মধ্যে অনেকে ছিলেন ‘বহিরাগত’। পাশের নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলা থেকে লোকজন এসে হামলা চালিয়ে চলে যায়। হামলার সময় ২২টি ঘরবাড়ি তছনছ ও লুটপাট করা হয়।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এলাকায় অস্থায়ী সেনা ক্যাম্প বসানো হয়েছে, বাড়ানো হয়েছে পুলিশ টহল। প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ঢেউটিন, কাঠ, চাল-ডাল ও শুকনো খাবার বিতরণ করেছে এবং ঘরবাড়ি মেরামতের কাজও শুরু হয়েছে। তবু আতঙ্কিত পরিবারগুলো।
ক্ষতিগ্রস্তদের একজন অশ্বিনী চন্দ্র মোহান্ত বলেন, “সেদিনের ঘটনা ছিল এক ভয়াবহ। আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে ধর্ম অবমাননাকারী কিশোরকে থানা হেফাজতে দিয়েছি। কিন্তু তারপরও ঘরবাড়ি রক্ষা হয়নি। স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি এবং কিছু মুরুব্বি আমাদেরকে অভয় দিয়েছিলেন, কিন্তু রক্ষা হয়নি।”
তিনি আরো বলেন, “আমরা নিজেরাই অভিযুক্ত কিশোরকে থানায় সোপর্দ করেছি। তারপরও মিছিল নিয়ে এসে দুই দফায় আমাদের ২০ থেকে ২৫টি ঘরবাড়ি তছনছ করে দিয়ে লুটপাট করেছে তারা। এদের মধ্যে অধিকাংশ লোকেই অপরিচিত।”
আরেক ভুক্তভোগী দেবেন্দ্র চন্দ্র বর্মন জানান, “প্রথমে অল্পসংখ্যক কম বয়সী কিছু ছেলে আসে। পরে হাজারো লোকজন এসে আমাদের বাড়িঘরে তাণ্ডব চালায়। অনেকেই এখনো আত্মীয়দের বাড়িতে। আমরা চরম আতঙ্কে আছি।”
রবীন্দ্র চন্দ্রের স্ত্রী রুহিলা রানী বলেন, “ছোট ছেলেটা যদি ভুল করে থাকে, আমরা তাকে থানায় দিয়েছি। কিন্তু তারপরও এমন ধ্বংসযজ্ঞ কেন? আমাদের গরু, সোনা-টাকা সব লুটে নিয়েছে। শুধু চাল-ডাল আর টিনে কি জীবন চলে?”
গতকাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন রংপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম ও সদস্য সচিব আনিসুর রহমান লাকুসহ একটি প্রতিনিধি দল। তারা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে শাড়ি ও লুঙ্গি বিতরণ করেন এবং পাশে থাকার আশ্বাস দেন।
গংগাচড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আল এমরান বলেন, “ঘটনার খবর পেয়ে কিশোরটিকে গ্রেপ্তার করে থানায় আনা হয় এবং পরে আদালতের মাধ্যমে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়। এখন পর্যন্ত কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়নি। তারপরও পুলিশ প্রশাসন সর্বাত্মক নিরাপত্তায় নিয়োজিত।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহামুদ হাসান মৃধা বলেন, “অপরাধীদের ধরতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তদের দেওয়া হচ্ছে সহায়তা। পুলিশ ও সেনাবাহিনী পুরো এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে।”
উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশের তথ্যমতে, হামলায় ১৫টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যাতে ২২টি পরিবার বসবাস করতেন। ঘর মেরামতের পর কিছু পরিবার ফিরলেও অভিযুক্ত কিশোর ও তার চাচার পরিবারের কেউ এখনো ফিরে আসেনি।
ঢাকা/আমিরুল/ইভা