৫ ঘণ্টা ২৯ মিনিটের রূপকথা লিখলেন আলকারাজ
Published: 9th, June 2025 GMT
মিউনিখে না হয় ট্রফি স্পর্শ করতে পারেননি ইয়ামালরা, স্পেন হারাতে পারেনি পতুর্গালকে। তবে কাছাকাছি সময়েই এক স্প্যানিশ রূপকথা লিখেছেন প্যারিসের টেনিস কোর্টে। ফ্রেঞ্চ ওপেনের ফাইনালে ইতালির ইয়ানিক সিনারকে ৪–৬, ৬–৭ (৪–৭), ৬–৪, ৭–৬ (৭–৩), ৭–৬ ( ১০–২) ব্যবধানে হারিয়ে যেন স্পেনেরই জয়োধ্বনি তুলে শিরোপা জিতে নিলেন কার্লোস আলকারাজ।
রুদ্ধশ্বাস ফাইনালে ৫ ঘণ্টা ২৯ মিনিট ধরে দুজনে লড়লেন শরীরের শেষ শক্তিটুকু দিয়ে। কোর্টের পাশ বদলের বাড়তি সময় আর বিরতি যোগ করলে এই সময়টিতে ক্রিকেটে অন্তত দু-দুটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ শেষ হয়ে যায়, সেই সময়টুকুতেই টেনিস কোর্টে যেন যুদ্ধে লড়লেন দু’জন।
ইতিহাস বলছে, টেনিসের উন্মুক্ত যুগে এত দীর্ঘতম সময় ধরে কোন ফাইনাল দেখেনি কেউ। তাই রোববারে সিনার আর আলকারাজের ম্যাচটি অনেকেই ‘ব্যাটেল অব ইয়াং জেনারেশন’ বলেও আখ্যায়িত করলেন। আলকারাজ যেন বারবার মনে করিয়ে দিলেন তার স্বদেশী লাল দুর্গের রাজা নাদালকে। যেখানে প্রায় একটি যুগ শাসন করে গেছেন নাদাল। কালতালিয় হলেও একটা অদ্ভুত মিল ছিল এদিন নাদাল আর আলকারাজের মধ্যে। নাদাল তার ক্যারিয়ারের পঞ্চমতম গ্রান্ড স্ল্যাম জিতেছিলেন ২২ বছর ১ মাস ৩ দিনে। ঠিক একই বয়সে একই সময়ে আলকারাজও জিতলেন তার পঞ্চম গ্রান্ড স্ল্যামটি। পার্থক্য শুধু নাদাল জিতেছিলেন উম্বলন্ডন, আলকারাজ ফ্রেঞ্চ ওপেন।
আসলে টেনিসের ‘বিগ থ্রি’ রজার ফেদেরার, রাফায়েল নাদাল আর নোভাক জকোভিচের সময় শেষের পথে। প্রথম দু’জন অবসর নিয়েছেন, জকোভিচ এখনো র্যাকেট নিয়ে ছুটছেন কোর্টে। তবে তারই মধ্যে নতুন প্রজন্মের আগমন হয়েছে সিনার, আলকারাজদের হাত ধরে।
এদিন রোঁলা গারোয় তারুণ্যের সেই দীপ্ততায় মুগ্ধ হয়েছে টেনিসপ্রেমীরা। তেইশের সিনার কিম্বা বাইশের আলকারাজের ফাইনালটি ছিল ‘বিনা যুদ্ধে নাহি দেব সূচ্যগ্র মেদিনী’র মতোই। প্রথম দুই সেট হেরে যাওয়ার পর ভেঙে না পড়ে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছিলেন আলকারাজ। ফিলিপে শঁতিয়ে কোর্টে ইতিহাসের অন্যতম সেরা ফাইনাল উপহার দিলেন।
চতুর্থ সেটে তিনটি চ্যাম্পিয়নশিপ পয়েন্টের সামনে ছিলেন সিনার। একটি পয়েন্ট কাজে লাগাতে পারলেই চ্যাম্পিয়ন। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে ওই সেটটি জিতে নেন আলকারাজ। পঞ্চম সেটে আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন সিনার, সুপার টাইব্রেকারেও নিয়ে গিয়েছিলেন, কিন্তু নূন্যতম রক্ষণ দেখাতে পারেননি তিনি।
টেনিসের ইতিহাসে এখনো পর্যন্ত দীর্ঘতম ম্যাচ ১১ ঘণ্টা ৫ মিনিটের। ২০১০ সালের উম্বলন্ডনে যুক্তরাষ্ট্রের জন ইসনার আর ফ্রান্সের নিকোলাস মাহুতের ওই ম্যাচটি শেষ করতে তিন দিন সময় লেগেছিল। কিন্তু ফাইনালে সিনার আর আলকারাজ নতুন রেকর্ড গড়লেন প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টার লড়াইয়ের মাধ্যমে।
‘জানি না ম্যাচটি ঐতিহাসিক হয়ে থাকল কিনা, তবে এটা যদি ইতিহাস গড়ে থাকে তাহলে ভীষণ খুশি আমি।’ টানা দ্বিতীয়বার ফ্রেঞ্চ ওপেন জেতার পর এটুকুতেই তৃপ্তি আলকারাজের।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ক র ল স আলক র জ র আলক র জ আলক র জ র ফ ইন ল
এছাড়াও পড়ুন:
করোনায় আক্রান্ত নেইমার
সাম্প্রতিক সময়টা একেভারেই ভালো যাচ্ছেন না ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার নেইমার জুনিয়রের। এর মধ্যেই আবার কোভিড-১৯ পজিটিভ হয়েছেন।
রবিবার (৮ জুন) এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে তার ক্লাব সান্তোস।
সান্তোসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার (৫ জুন) থেকে একটি ভাইরাল অসুস্থতায় ভোগার পর, নেইমার জুনিয়রকে ক্লাবের মেডিকেল টিম পর্যবেক্ষণ করে ল্যাব পরীক্ষার নির্দেশ দেয়। পরীক্ষার ফলে কোভিড-১৯ সংক্রমণ ধরা পড়ে।
বিবৃতিতে আরো জানানো হয়, নেইমার বৃহস্পতিবার থেকেই ক্লাবের সব কার্যক্রম থেকে বিরত ছিলেন, যেদিন থেকে তার উপসর্গ দেখা দেয়। বর্তমানে তিনি বাড়িতে বিশ্রামে আছেন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী উপসর্গভিত্তিক চিকিৎসা নিচ্ছেন।
৩৩ বছর বয়সী এই তারকার জন্য এটি আরো একটি ধাক্কা, কারণ তার সান্তোসে ফিরে আসার যাত্রা মোটেই সুখকর হয়নি।
সৌদি ক্লাব আল-হিলালের হয়ে চোটজর্জরিত অধ্যায় শেষে নিজের শৈশবের ক্লাবে ফিরলেও, নেইমারের সময়টা ভালো যাচ্ছে না। এখন পর্যন্ত সান্তোসের হয়ে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে মাত্র ১২টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি—তাও ফিটনেস ও চোট সমস্যা নিয়ে ভুগতে ভুগতে।
এর আগে গত রবিবার বোটাফোগোর বিপক্ষে ইচ্ছাকৃত হ্যান্ডবলের মাধ্যমে গোল করতে গিয়ে লাল কার্ড দেখেন নেইমার। যার ফলে তাকে এক ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়। এখন তার করোনা পজিটিভ হওয়ার খবরে বাড়ল সান্তোস ও সমর্থকদের উদ্বেগ।
ঢাকা/এসবি