নড়াইলের কালিয়ায় কলেজছাত্রের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে একটি স্নাইপার রাইফেল উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী। পরে সেটি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ ও ছবি প্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আলোচনা–সমালোচনা শুরু হয়েছে। অনেকে উদ্ধার করা অস্ত্রটিকে এয়ারগান, কেউবা শুটিং রাইফেল বলছেন।

উদ্ধার করা অস্ত্রটি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ সম্পর্কে কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘সেনাবাহিনী থেকে হস্তান্তরের পর সেটি (অস্ত্র) আমাদের হেফাজতে রয়েছে। আদালতের অনুমতি নিয়ে বিশেষজ্ঞদের দ্বারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখব, এটি ফায়ারিং আর্মস নাকি এয়ারগান। এরপর পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

গত রোববার মধ্যরাতে কালিয়া উপজেলার পুরুলিয়া গ্রামে সোহান মোল্যার (২৬) বাড়িতে অভিযান চালিয়ে একটি অস্ত্র উদ্ধার করে সেনাবাহিনী। সোহান ওই গ্রামের আবুল কালাম মোল্যার ছেলে।

ওই ঘটনায় গতকাল সোমবার সকালে গণমাধ্যমে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠায় নড়াইল সেনা ক্যাম্প। এতে বলা হয়, কালিয়া উপজেলার পুরুলিয়া গ্রামের সোহান মোল্যা নামের এক ব্যক্তি একটি অবৈধ স্নাইপার রাইফেল ব্যবহার করে স্থানীয় বাসিন্দাদের ওপর প্রভাব বিস্তার করছিলেন বলে খবর পায় সেনাবাহিনী। এরপর গতকাল (রোববার) রাতে সোহানের বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে সেনাবাহিনী। এ সময় সোহানের বিছানার নিচে লুকিয়ে রাখা একটি ৪ দশমিক ৫ ক্যালিবারের স্নাইপার নাইট্রো রাইফেল (টেলিস্কোপ ও সাইলেন্সার যুক্ত) উদ্ধার করা হয়। তবে সে সময় সোহান বাড়িতে না থাকায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।

আরও পড়ুননড়াইলে সেনা অভিযানে স্নাইপার রাইফেল উদ্ধার২০ ঘণ্টা আগে

গতকাল বিকেলে পুরুলিয়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ঘরে তালা দেওয়া; বাড়িতে কেউ নেই। প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সোহান খুলনায় একটি কলেজে পড়াশোনা করেন। কোন কলেজে পড়াশোনা করেন, তা তাঁরা কেউ জানেন না। সোহানের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া অস্ত্রটি তাঁরা আগেই দেখেছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুই প্রতিবেশী বলেন, ‘সোহানের বাড়ি থেকে সেনাবাহিনী যা উদ্ধার করেছে, তা একটি এয়ারগান। অনেক আগেও একবার সেনাবাহিনী এটি নিয়ে গিয়েছিল। তখন সোহান কাগজপত্র দেখিয়ে এটি ফেরত এনেছিল।’

আরেক প্রতিবেশী বলেন, প্রথমে এয়ারগানটি পার্শ্ববর্তী এলাকার রাতুল নামে একটি ছেলের কাছে ছিল। পরে সোহান এটি কিনেছিল। তাঁদের ঠিকানা অনুযায়ী রাতুলের বাড়িতে গিয়ে তাঁকে পাওয়া যায়নি। পরে পুরুলিয়া মোড়ে রাতুলের বাবা মো.

জাকারিয়ার সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, তাঁর ছেলে রাতুল ঢাকার একটি শুটিং ক্লাবের সদস্য ছিলেন। রাতুল খুলনা থেকে একটি এয়ারগান কিনেছিলেন। পরে যেখান থেকে কেনা সেখানেই আবার সেটি ফেরত দিয়েছিলেন। এরপর এয়ারগানটি সোহান কিনেছিলেন।

রোববার রাতে সোহানের বাড়ি থেকে সেনাবাহিনীর উদ্ধার করা অস্ত্রটি সেই এয়ারগান কি না, তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি মো. জাকারিয়া।

এ ঘটনায় আজ মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা হয়নি। এ বিষয়ে ওসি আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, সোহান ও তাঁর বাবার নামে এর আগের কোনো মামলা পাওয়া যায়নি। তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

কালুরঘাট সেতুতে আবার সংকেত অমান্য করলেন ট্রেনচালক

কালুরঘাট সেতুতে আবারও সংকেত মানেননি ট্রেনচালক। গতকাল রোববার বিকেল ৪টা ৫ মিনিটে এ ঘটনা ঘটেছে। চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে যাওয়া প্রবাল এক্সপ্রেসের চালক নির্ধারিত স্থানে না থেমে ও চৌকিদার বইয়ে সই না করেই সেতুতে প্রবেশ করেছেন। ওই সময় সেতুর ওপর কোনো গাড়ি না থাকায় বড় দুর্ঘটনা ঘটেনি।

এর আগে ৫ জুন সংকেত না মেনে কালুরঘাট সেতুতে ট্রেন উঠিয়ে দিয়েছিলেন চালক। এতে ট্রেনের ধাক্কায় শিশুসহ দুজন প্রাণ হারান।

ঘটনাটি রেলওয়ের চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা আনিসুর রহমানকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন জান আলী হাট রেলস্টেশনের রিলিভিং মাস্টার তান্নি বড়ুয়া। তিনি লিখেছেন, ‘কর্তব্যরত গেটকিপার (অস্থায়ী) সাইফুল ইসলামের মাধ্যমে জানতে পারি, ট্রেনটি সেতুর ডেড স্টপে (দাঁড়ানোর নির্ধারিত স্থান) না দাঁড়িয়ে ও চৌকিদার বইয়ে সই না করে ইঞ্জিন ও দুটি বগিসহ সেতুতে প্রবেশ করেছে। এরপর চৌকিদার বইয়ে সই করা হয়েছে, যা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এ ধরনের ঘটনা নিরাপদ ট্রেন পরিচালনার পরিপন্থী।’

পরে এ বিষয়ে জান আলী রেলস্টেশনের স্টেশনমাস্টার নেজাম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, কক্সবাজারগামী ট্রেন শহর থেকে ছেড়ে যাওয়ার পর কালুরঘাট সেতুর পশ্চিম প্রান্তে একটি নির্ধারিত স্থানে দাঁড়াতে হয়। এরপর চৌকিদার বইতে সই করতে হয়। এ নিয়ম মানা হয়নি। ট্রেনের চালককে লাল সংকেত দেখানো হয়েছিল। সেটি উপেক্ষা করা হয়েছে। ঘটনাটি লিখিতভাবে কর্তৃপক্ষের কাছে জানানো হয়েছে।

ঘটনার সময়কার একটি সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ট্রেনটি সেতুর দিকে আসছে। তখন বিকেল ৪টা ৫ মিনিট। গেটম্যান সাইফুল ইসলাম হাতে লাল পতাকা নিয়ে ট্রেন থামার সংকেত দেন। ট্রেনটি আরও কয়েক সেকেন্ড পর সেতুর ওপর গিয়ে থামে।

৫ জুন রাত ১০টার দিকে কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসা পর্যটক এক্সপ্রেসের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটে বলে জানান স্টেশনমাস্টার নেজাম উদ্দিন। তিনি বলেন, ট্রেন কক্সবাজার যাওয়ার সময় সেতুর পশ্চিম প্রান্তে থামতে হয়। আর কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামে আসার পথে থামতে হয় সেতুর পূর্ব প্রান্তে। সেদিন পর্যটক এক্সপ্রেসের চালক সেতুর পূর্ব প্রান্তের নির্ধারিত স্থানে দাঁড়াননি। সই করেননি চৌকিদার বইয়ে। লাল পতাকার সংকেতও মানেননি। এ কারণেই ঘটে দুর্ঘটনা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কলম্বিয়ার বিপক্ষে হার এড়াল ১০ জনের আর্জেন্টিনা
  • তানিন সুবহা আর নেই
  • ঈদুল আজহায় দেশে ৯১ লাখ পশু কোরবানি
  • মানিকগঞ্জে ঢাবি শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার
  • বিসিবি নির্বাচনে সৈয়দ আশরাফুলের ‘আগ্রহ’
  • বাণিজ্যযুদ্ধ নিরসনে এবার লন্ডনে যুক্তরাষ্ট্র-চীন বৈঠক
  • শরীয়তপুরে জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ
  • শিক্ষাবিদ যতীন সরকার পড়ে গিয়ে আহত, হাসপাতালে ভর্তি
  • কালুরঘাট সেতুতে আবার সংকেত অমান্য করলেন ট্রেনচালক