নড়াইলে উদ্ধার হওয়া অস্ত্রটি স্নাইপার রাইফেল নাকি এয়ারগান
Published: 10th, June 2025 GMT
নড়াইলের কালিয়ায় কলেজছাত্রের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে একটি স্নাইপার রাইফেল উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী। পরে সেটি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ ও ছবি প্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আলোচনা–সমালোচনা শুরু হয়েছে। অনেকে উদ্ধার করা অস্ত্রটিকে এয়ারগান, কেউবা শুটিং রাইফেল বলছেন।
উদ্ধার করা অস্ত্রটি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ সম্পর্কে কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘সেনাবাহিনী থেকে হস্তান্তরের পর সেটি (অস্ত্র) আমাদের হেফাজতে রয়েছে। আদালতের অনুমতি নিয়ে বিশেষজ্ঞদের দ্বারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখব, এটি ফায়ারিং আর্মস নাকি এয়ারগান। এরপর পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
গত রোববার মধ্যরাতে কালিয়া উপজেলার পুরুলিয়া গ্রামে সোহান মোল্যার (২৬) বাড়িতে অভিযান চালিয়ে একটি অস্ত্র উদ্ধার করে সেনাবাহিনী। সোহান ওই গ্রামের আবুল কালাম মোল্যার ছেলে।
ওই ঘটনায় গতকাল সোমবার সকালে গণমাধ্যমে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠায় নড়াইল সেনা ক্যাম্প। এতে বলা হয়, কালিয়া উপজেলার পুরুলিয়া গ্রামের সোহান মোল্যা নামের এক ব্যক্তি একটি অবৈধ স্নাইপার রাইফেল ব্যবহার করে স্থানীয় বাসিন্দাদের ওপর প্রভাব বিস্তার করছিলেন বলে খবর পায় সেনাবাহিনী। এরপর গতকাল (রোববার) রাতে সোহানের বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে সেনাবাহিনী। এ সময় সোহানের বিছানার নিচে লুকিয়ে রাখা একটি ৪ দশমিক ৫ ক্যালিবারের স্নাইপার নাইট্রো রাইফেল (টেলিস্কোপ ও সাইলেন্সার যুক্ত) উদ্ধার করা হয়। তবে সে সময় সোহান বাড়িতে না থাকায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।
আরও পড়ুননড়াইলে সেনা অভিযানে স্নাইপার রাইফেল উদ্ধার২০ ঘণ্টা আগেগতকাল বিকেলে পুরুলিয়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ঘরে তালা দেওয়া; বাড়িতে কেউ নেই। প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সোহান খুলনায় একটি কলেজে পড়াশোনা করেন। কোন কলেজে পড়াশোনা করেন, তা তাঁরা কেউ জানেন না। সোহানের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া অস্ত্রটি তাঁরা আগেই দেখেছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুই প্রতিবেশী বলেন, ‘সোহানের বাড়ি থেকে সেনাবাহিনী যা উদ্ধার করেছে, তা একটি এয়ারগান। অনেক আগেও একবার সেনাবাহিনী এটি নিয়ে গিয়েছিল। তখন সোহান কাগজপত্র দেখিয়ে এটি ফেরত এনেছিল।’
আরেক প্রতিবেশী বলেন, প্রথমে এয়ারগানটি পার্শ্ববর্তী এলাকার রাতুল নামে একটি ছেলের কাছে ছিল। পরে সোহান এটি কিনেছিল। তাঁদের ঠিকানা অনুযায়ী রাতুলের বাড়িতে গিয়ে তাঁকে পাওয়া যায়নি। পরে পুরুলিয়া মোড়ে রাতুলের বাবা মো.
রোববার রাতে সোহানের বাড়ি থেকে সেনাবাহিনীর উদ্ধার করা অস্ত্রটি সেই এয়ারগান কি না, তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি মো. জাকারিয়া।
এ ঘটনায় আজ মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা হয়নি। এ বিষয়ে ওসি আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, সোহান ও তাঁর বাবার নামে এর আগের কোনো মামলা পাওয়া যায়নি। তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
যাত্রাবাড়ীতে বিদ্যুৎমিস্ত্রিকে পিটিয়ে হত্যা
রাজধানীতে হাত ও পা বেঁধে রড দিয়ে পিটিয়ে আনোয়ার হোসেন (৪৩) নামের এক ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকালে যাত্রাবাড়ীর কাউন্সিল শরিফ পাড়ায় বাসের অবকাঠামো তৈরির একটি কারখানায় এ ঘটনা ঘটে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) বিদ্যুৎমিস্ত্রি ছিলেন আনোয়ার হোসেন। তাঁর কর্মস্থল ছিল পুরান ঢাকার সদরঘাটে। পারিবারিক সূত্র জানায়, আনোয়ার হোসেন স্ত্রী ও দুই মেয়ে নিয়ে রাজধানীর মাতুয়াইলের মৃধাবাড়ি এলাকায় থাকতেন।
আনোয়ারের ভাই দেলোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল ভোরে আনোয়ার বাসা থেকে নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যে বের হন। পরে খবর পান, তাঁর ভাইকে কাউন্সিল উত্তর শরিফ পাড়ায় বাসের অবকাঠামো তৈরির গ্যারেজে নিয়ে হাত–পা বেঁধে রাখা হয়েছে। এরপর সেখানে গিয়ে আনোয়ারের হাত–পা বাঁধা ও রক্তাক্ত মুমূর্ষু অবস্থায় দেখতে পান তাঁর মা।
লোহার রড দিয়ে পেটানো হয়েছে বলে মৃত্যুর আগের তাঁর মাকে জানিয়েছিলেন আনোয়ার। তাঁর ভাই এ কথা জানিয়ে বলেন, এর কিছুক্ষণ পরই ঘটনাস্থলেই আনোয়ারের মৃত্যু হয়। এরপর যাত্রাবাড়ীর থানা-পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠায়।
গতকাল সন্ধ্যায় যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ভোরে সঙ্গী সুমনকে নিয়ে আনোয়ার বাসের কাঠামো তৈরির কারখানায় চুরি করতে যান। এ সময় সেখানে থাকা লোকজন তাঁকে পিটিয়ে হত্যা করে। তাঁর সঙ্গী সুমন পালিয়ে যান।