সাভারে স্ত্রীকে ভিডিও কলে রেখে খলিলুর রহমান (৪৫) নামে এক ব্যক্তি সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানা গেছে। সোমবার রাতে সাভার পৌরসভার ব্যাংক কলোনি মহল্লায় ভাড়া বাসায় তিনি ফাঁস দেন। মঙ্গলবার সকালে ওই বাসা থেকে নিহতের ঝুলন্ত মরদেহটি উদ্ধার করেছে সাভার মডেল থানা পুলিশ।

নিহত খলিলুর রহমান ঢাকা জেলার ধামরাই উপজেলার রোয়াইল ইউনিয়নের চরসুঙ্গর এলাকার ডাক্তার জলিলের ছেলে। তিনি রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকার ২৭ নামে একটি বেসরকারি হাসপাতালের পরিচালক (মার্কেটিং) হিসেবে কর্মরত ছিলেন বলে জানিয়েছেন তার স্বজনরা।

পুলিশ ও নিহতের স্বজনরা জানান, পারিবারিক কলহের জেরে ঝগড়া করে খলিলুর রহমানের স্ত্রী জেবা আক্তার সোমবার তার বাবার বাসায় চলে যায়। পরে রাতে খলিলুর রহমান স্ত্রীকে ভিডিও কল দেয়। এসময় স্ত্রীকে ভিডিও কলে রেখেই সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় রশি পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। বিষয়টি তার স্ত্রী সবাইকে জানালে খবর পেয়ে পুলিশ নিহতের ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় খলিলুর রহমানের মরদেহটি উদ্ধার করে।

নিহতের চাচতো ভাই শামীম হোসেন জানান, খলিল ভাই মাঝে মধ্যেই বাসা ছেড়ে বাইরে থাকেন। ঈদের দিনও তিনি বাইরে ছিলেন। এ নিয়ে তার স্ত্রীর সঙ্গে দাম্পত্য কলহের এক পর্যায়ে তার স্ত্রী ৮ বছরের ছেলেকে নিয়ে সোমবার সকালে বাসা ছেড়ে বাবার বাড়ি চলে যায়। এ সময় তার ছোট মেয়ে খুশনোকে বাসায় রেখে যায়।

তিনি আরও জানান, সোমবার খলিল বাসায় এসে স্ত্রীকে না পেয়ে ফোন করে বাসায় ফিরে আসতে বলেন। কিন্তু স্ত্রী না আসায় ওইদিন রাত ৩টার দিকে স্ত্রীকে ভিডিও কল দিয়ে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।

সাভার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ জুয়েল মিঞা জানান, পুলিশ দরজা ভেঙে নিহতের মরদেহটি ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করেছে। এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা শেষে তার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ভ ড ও কল ন হত র স মব র মরদ হ

এছাড়াও পড়ুন:

গাইবান্ধায় চোর সন্দেহে মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় তিস্তা নদীর দুর্গম চরাঞ্চলে গরু চোর সন্দেহে আব্দুস সালাম (৫০) নামে মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করেছে স্থানীয়রা। এ ঘটনায় দুলালী বেগম (৪৩) নামে এক নারীকে আটক করেছে পুলিশ।

শনিবার (১ নভেম্বর) সকালে উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের বেলকা নবাবগঞ্জ গ্রামের তিস্তার চরে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। খবর পেয়ে সুন্দরগঞ্জ থানা পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। 

আরো পড়ুন:

গাজীপুরে যুবককে কুপিয়ে হত্যা

ঝিনাইদহে কৃষকের হাত-পা ও গলা বাঁধা মরদেহ উদ্ধার

নিহত আব্দুস সালাম একই ইউনিয়নের রামডাকুয়া গ্রামের ওমেদ আলীর ছেলে। স্বজনরা জানান, সালাম দীর্ঘদিন ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছিল। 

আটক দুলালী বেগম বেলকা নবাবগঞ্জ গ্রামের আব্দুল গণি মিয়ার স্ত্রী।

সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হাকিম আজাদ বলেন, ‘‘খবর পাওয়ার পর পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার দুলালী বেগম ছাড়াও যারা জড়িত ছিল, তা শনাক্তে তদন্ত চলছে।’’ 

নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) গভীর রাতে সালাম আব্দুল গণি মিয়ার গোয়ালঘরে প্রবেশ করে। বিষয়টি টের পেয়ে দুলালী বেগম স্বামী ও আশপাশের লোকজনকে খবর দেয়। স্থানীয়রা সালামকে রশি দিয়ে বেঁধে বেধড়ক মারধর করে। একপর্যায়ে তিনি অচেতন হয়ে পড়লে তাকে পুকুরপাড়ে রেখে দেওয়া হয়। ভোরের দিকে আবার তাকে পাশের গোয়ালঘরে নিয়ে নির্যাতন চালানো হয়। এতে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়।

অভিযুক্ত আব্দুল গণি মিয়া বলেন, ‘‘কয়েক দিন আগে শ্যালো মেশিন চুরি হয়ে গেছে। রাতে গোয়ালে সালামকে দেখি। তাই প্রতিবেশীদের খবর দেই। পরে তারা এসে মারধর করে।’’ 

আটক দুলালী বেগম বলেন, ‘‘এক সপ্তাহ আগে মেশিন হারিয়েছে। রাতে শব্দ শুনে দেখি গোয়ালের বাঁধন খুলছে। পরে লোকজন এসে মারধর করে।’’ 

নিহতের স্বজনরা জানান, আব্দুস সালাম দীর্ঘদিন ধরে মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন ছিলেন এবং মানুষের সাহায্যে জীবন চলত। তার বিরুদ্ধে আগে কখনো চুরির অভিযোগ ওঠেনি। তারা দাবি করেন, পরিকল্পিতভাবে নির্যাতন করে তাকে হত্যা করা হয়েছে। নিহতের তিনটি ছোট ছেলে রয়েছে, বাবাকে হারিয়ে তারা অসহায় অবস্থায় পড়েছে। 

বেলকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইব্রাহিম খলিলুল্যাহ জানান, ঘটনাস্থল দুর্গম চরাঞ্চল হওয়ায় খবর পেতে দেরি হয়। স্বজনদের বক্তব্য অনুযায়ী নিহত ব্যক্তি মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) বিদ্রোহ কুমার কুণ্ডু, সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল হাকিম আজাদ এবং স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

ঢাকা/মাসুম/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাইবান্ধায় চোর সন্দেহে মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা