এইচপি স্কোয়াডে মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের ছেলে সানদিদ
Published: 11th, June 2025 GMT
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের হাই পারফরম্যান্স কোর স্কোয়াডে ডাক পেয়েছেন জাতীয় দলের সিনিয়র সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের ছেলে নুহায়েল সানদিদ। প্রথমবার বিসিবির তত্ত্বাবধান ও পরিচালনায় বিশেষায়িত কোনো স্কোয়াডে ডাক পেলেন সতের পেরোনো এই কিশোর।
চায়নাম্যান সানদিদের এরই মধ্যে প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে যাত্রা শুরু হয়েছে। সবশেষ ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে রূপগঞ্জ টাইগার্স ক্রিকেট একাডেমির হয়ে ৪ ম্যাচ ও আগের বছর গাজী টায়ার্স ক্রিকেট একাডিমির হয়ে ১ ম্যাচ খেলেছেন। ৫ ম্যাচে পেয়েছেন ৭ উইকেট।
এছাড়া বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের অধীনে বয়সভিত্তিক কোনো দলে খেলেননি। তবে বিসিবির বিশেষ স্পিন ক্যাম্পে ছিলেন প্রতিশ্রুতিশীল এই ক্রিকেটার।
আরো পড়ুন:
ছন্দে ফিরে ইবাদতের মুখে হাসি, উদযাপনে স্যালুট
বিসিবি নির্বাচনে সৈয়দ আশরাফুলের ‘আগ্রহ’
২০২৫-২৬ সেশনের এইচপির কোর স্কোয়াডের জন্য ২৮ ক্রিকেটারকে বেছে নিয়েছে বিসিবি। আগামীকাল ১২ জুন ক্রিকেটারদের রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে। শুরুতে ১৩-১৫ জুন পর্যন্ত তাদের স্ক্রিনিং টেস্ট হবে। পরদিন তারা চট্টগ্রাম যাবেন।
১৭ জুন থেকে ১৪ জুলাই পর্যন্ত প্রথম পর্বের ট্রেনিং ক্যাম্প হবে চট্টগ্রামে। ১৫ জুলাই ক্রিকেটাররা রাজশাহী সফরে যাবেন। ১৬ থেকে ১৩ আগস্ট পর্যন্ত রাজশাহীতে চলবে দ্বিতীয় পর্বের ট্রেনিং ক্যাম্প।
এইচপি কোর স্কোয়াড ২০২৪-২৬:
টপ অর্ডার:
মাহফিজুল ইসলাম রবিন, জিসান আলম, ইফতেখার ইফতি, আশিকুর রহমান শিবলি, হাবিবুর রহমান সোহান, আইচ মোল্লা।
মিডল অর্ডার:
আরিফুল ইসলাম, প্রীতম কুমার ও আহরার আমিন।
স্পিন অলরাউন্ডার:
রাকিবুল হাসান, শেখ পারভেজ জীবন, মাহফুজুর রহমান রাব্বী, আশরাফুল হাসান, ওয়াসি সিদ্দিকী।
পেস অলরাউন্ডার:
তোফায়েল আহমেদ, চৌধুরী রেজওয়ান, আহমেদ শরিফ ও আব্দুল্লাহ আল মামুন।
স্পিনার:
নাঈম আহমেদ, নুহায়েল সানদিদ, স্বাধীন ইসলা, নাঈম হোসেন সাকিব।
পেসার:
রিপন মন্ডল, মারুফ মৃধা, মেহেদী হাসান, শফিকুল ইসলাম, আসাদুজ্জামান পায়েল ও আব্দুল গাফ্ফার।
ঢাকা/ইয়াসিন
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
‘আমার সোনার বাংলা’ গাওয়ায় রাষ্ট্রদ্রোহী মামলার তীব্র সমালোচনা
‘আমার সোনার বাংলা...’ গাওয়ায় রাষ্ট্রদ্রোহী মামলার নির্দেশ দিয়েছেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। রাজ্যের এক সিনিয়র কংগ্রেস নেতার বিরুদ্ধে এই মামলা করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এ ঘটনায় তীব্র সমালোচনা করেছেন রবীন্দ্রপ্রেমীরা। রবিবার আসমের এই ঘটনার প্রতিবাদে পথে নেমেছে বিশ্বভারতীর এসএফআই ইউনিটের সদস্যরা।
গত সোমবার আসামের শ্রীভূমি জেলার ইন্দিরা ভবনে কংগ্রেস সেবা দলের বৈঠকের সময় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালবাসি’ গানটি গেয়েছিলেন বিধুভূষণ দাস নামে এক সিনিয়র কংগ্রেস কর্মী। এরপরই বিতর্ক ছড়ায়।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি’ গানটি বিভিন্ন সময় গেয়েছেন প্রখ্যাত শিল্পী সুচিত্রা মিত্র, মান্না দে, শান্তিদেব ঘোষ, কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, লতা মঙ্গেশকর, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, লোপামুদ্রা মিত্র, নচিকেতাসহ আরো অনেক প্রথিতযশা শিল্পীরা। কিন্তু সেই গান নিয়েই এত বিতর্ক মেনে নিতে পারছেন না শান্তিনিকেতনের আশ্রমিক, শিক্ষার্থী থেকে বিদ্বজনেরা।
রাজ্যটির বীরভূম জেলার শান্তিনিকেতনে সিনিয়র আশ্রমিকেরা বলছেন এ তো একেবারে ‘হাস্যকর’! রবি ঠাকুরের পরিবারের সদস্য সুপ্রিয় ঠাকুরের প্রশ্ন ‘আমরাও কি তাহলে রাষ্ট্রদ্রোহী?’
১৯০৫ সালে লর্ড কার্জনের ‘বঙ্গভঙ্গ’ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ। এর প্রতিবাদে রাখিবন্ধন করে পথে নেমেছিলেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। সেই সময় ‘আমার সোনার বাংলা’ গানটি রচনা করেছিলেন তিনি। ১৯৭২ সালের ১৩ জানুয়ারি স্বাধীন বাংলাদেশ সরকার এই গানটিকে ‘জাতীয় সঙ্গীত’ হিসাবে গ্রহণ করে।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পরিবারের সদস্য সুপ্রিয় ঠাকুর বলেন, “এক্কেবারে হাস্যকর ব্যাপার। রবীন্দ্রনাথের গান সবার জন্যই, সবাই গেয়ে থাকেন। আমরাও এখনো গেয়ে থাকি। এটা যদি দেশদ্রোহীতা হয়, তাহলে আমরা দেশদ্রোহী। একজন মুখ্যমন্ত্রী (হিমন্ত বিশ্ব শর্মা) যদি এধরনের কথা বলেন, তাকে তাহলে ‘মুখ্য’ বলা যাবে না, অন্য কিছু বলতে হবে।”
বিশ্বভারতীর পাঠভবনের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর ও সিনিয়র আশ্রমিক সুব্রত সেন মজুমদার বলেন, “ব্যাপারটা আমার কাছে অত্যন্ত হাস্যকর ও লঘু মনে হয়। রবীন্দ্রনাথ বিশ্ববন্দিত, তাই তার গান সব জায়গায় গাওয়া যায়। কিন্তু, একথা স্বীকার করি ‘আমার সোনার বাংলা’ বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত এবং তারা গুরুদেবের এই গানটিকে জাতীয় সঙ্গীত হিসাবে গ্রহণ করেছেন বলে আমরা সম্মান করি। এই গান কোথাও গাওয়া যাবে না এমন বিধিনিষেধ থাকা ভালো নয়। এটা অত্যন্ত ছোট মনের পরিচয়। তাই এই ধরনের ঘটনা দেখে আমরা অত্যন্ত মর্মাহত। তাদের কাছে আমার অনুরোধ থাকবে তারা যেন আকাশের মত মন নিয়ে বিষয়গুলি দেখেন। মুখ্যমন্ত্রীকে সবাইকে নিয়ে রাজ্য চালাতে হয়, তাই তার অনেক উদার হওয়া উচিত।”
আরেক সিনিয়র আশ্রমিক অপর্ণা দাস মহাপাত্র বলেন, “জিনিসটা খুব হাস্যকর। রবীন্দ্র সঙ্গীত যে কোনো জায়গায়, যে কোনো পরিস্থিতিতে গাওয়া যায়। তার সঙ্গে দেশদ্রোহীতার সম্পর্ক খুঁজতে যাওয়া অত্যন্ত হাস্যকর। ‘আমার সোনার বাংলা’ এত সুন্দর একটি গান, যা যে-কোন উপযুক্ত পরিস্থিতিতেই গাওয়া যায়। আসামের মুখ্যমন্ত্রীর যদি এইটুকু জ্ঞান না থাকে বা রবীন্দ্রসঙ্গীতের প্রতি ভালোবাসা না থাকে সেটা আমাদের কাছে খুব দুঃখের।”
আশ্রমিক সুলগ্না মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমার সোনার বাংলা গানটি একটা জাতীয় সঙ্গীতের ঊর্ধ্বে গিয়ে এটা রবীন্দ্র সঙ্গীত। আর কি বলবো, কিছু বলারই নেই।”
আসামের ঘটনার নিন্দায় সরব হয়েছে বিশ্বভারতীর বাম ছাত্র সংগঠন ‘স্টুডেন্টস ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া’ (এসএফআই)। তাদের সদস্যরাও পথে নেমে স্লোগান দিয়ে প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন।
আসমের এই ঘটনার প্রতিবাদে রবিবার পথে নেমেছে বিশ্বভারতীর এসএফআই ইউনিটের সদস্যরা। এসএফআই ইউনিটের সম্পাদক বান্ধুলি কারার বলেন, “আমরা একটা বড় সমস্যার মধ্যে দাঁড়িয়ে আছি। রবীন্দ্রনাথের লেখা গান গাওয়ায় আসামে একজনের বিরুদ্ধে এফআইআর হয়েছে। এই গানটা শুধু একটা দেশের জাতীয় সংগীত নয়। এই গানটা মাটির গান, ভালোভাসার গান, মানবতার গান, একতার গান। এই গান গাওয়ায় যারা রাষ্ট্রদ্রোহী বলছেন, আসলে তারা মানবতাবিরোধী। রবীন্দ্রনাথের গান, তার লেখা, তার মুক্ত চিন্তা এগুলো বাঙালির চেতনার একটা অংশ। রবীন্দ্রনাথকে যদি অপমান করা হয় তার অর্থ বাঙালির শিক্ষা, সংস্কৃতির অপমান করা। রবীন্দ্রনাথ কেবলমাত্র বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীতের রচয়িতা নন, তিনি আমাদের বাংলার গর্ব, ভারতের গর্ব। যারা বাংলার শিক্ষা, সংস্কৃতিকে মুছে ফেলতে চাইছে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিবাদ চলবে।”
সুচরিতা/শাহেদ