বাংলাদেশ ফুটবলের ইতিহাসে নজিরবিহীন এক ঘটনা ঘটল আজ। বাফুফের নিজস্ব সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় দলের কোচ হাভিয়ের কাবরেরার পদত্যাগের দাবি তুললেন এই সংস্থার সদস্য সাখাওয়াত হোসেন। উপস্থিত নির্বাহী কমিটির ১৪ সদস্যের সামনে সাখাওয়াত দাবি তোলেন, ‘আমার একটাই এজেন্ডা, কাবরেরার পদত্যাগ চাই।’

সাখাওয়াত হোসেন শুধু বাফুফের নির্বাহী কমিটির সদস্যই নন, বাফুফের জাতীয় দল কমিটিরও সদস্য। তাঁর এই প্রকাশ্য অবস্থান স্পষ্ট করে দিল, এটা শুধু ব্যক্তিগত ক্ষোভ নয়। বাংলাদেশ জাতীয় দলের কোচ নিয়ে শুধু ফুটবলপ্রেমী বা সাবেক ফুটবলারদের মধ্যেই নয়, মতবিরোধ আছে বাফুফের অভ্যন্তরেও।

আরও পড়ুনবাংলাদেশ কেন পেনাল্টি পায়নি, রেফারিং নিয়ে যা বললেন কাবরেরা১১ জুন ২০২৫

১০ জুন জাতীয় স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর ম্যাচে হামজা চৌধুরীদের হারের পর কোচের সমালোচনা হয়েছে অনেক। এই হারের জন্য সাবেক ফুটবলারদের অনেকে দায়ী করছেন কাবরেরার কৌশলকে।

বাফুফে আজ ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে মহাখালীর রাওয়া কমপ্লেক্সে। মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশনের নির্বাহী কমিটির ১৪ সদস্য। এই আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য ছিল, আগামী ছয় মাসের পরিকল্পনা ও কার্যক্রম সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরা।

বিভিন্ন কমিটির প্রধানেরা (কয়েকটি বাদে) নিজেদের দায়িত্বসংক্রান্ত পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন। তবে আয়োজনজুড়েই ছিল একধরনের পূর্বপরিচিত ছকের পুনরাবৃত্তি। সিঙ্গাপুর ম্যাচে টিকিট এবং দর্শক অব্যস্থাপনাসহ বিভিন্ন অব্যবস্থাপনা থেকে শিক্ষা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সভাপতি তাবিথ আউয়াল। তবে বাফুফের আগামী ছয় মাসের কার্যক্রমে কোনো উল্লেখযোগ্য নতুন ঘোষণা বা ভিন্নমাত্রার উদ্যোগ তেমনভাবে উঠে আসেনি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক বর র র কম ট র সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মারাত্মক সংকটে তিস্তা নদী

আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। আর প্রস্তাবিত তিস্তা প্রকল্প নিয়েও কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না।

রোববার রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে (পিআইবি) ‘সংকটে তিস্তা নদী: সমাধানের পথ কী?’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) যৌথভাবে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।

মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপার সহসভাপতি অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জমান। প্রবন্ধে তিনি উল্লেখ করেন, ভারতের সঙ্গে কোনো পানিবণ্টন চুক্তি না থাকায় এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে আর বর্ষাকালে নিয়ন্ত্রণহীন পানিনির্গমনের ফলে বাংলাদেশ অংশে বন্যা ও ভাঙনের ঝুঁকি বাড়ছে।

মতবিনিময় সভায় বিশেষজ্ঞরা তিস্তা সমস্যার সমাধানে ভারতের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পৃক্ততা, আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োগ এবং প্রকল্পে স্থানীয় জনগণের মতামত গ্রহণের ওপর জোর দেন। তাঁরা তিস্তা মহাপরিকল্পনা সম্পর্কে স্বচ্ছতা ও পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানান।

অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘সরকারের কাছে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কোনো তথ্য নেই। বিগত বছরগুলোতে উন্নয়নের নামে দেশের নদীগুলোকে সংকুচিত করা হয়েছে। আমরা আর সংকুচিত করার উন্নয়ন চাই না। নদীকে নদীর মতোই রাখতে হবে।’

আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিস্বার্থকে উপেক্ষা করে দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখতে হবে। যেসব প্রকল্প দীর্ঘমেয়াদি, সেসব প্রকল্প গ্রহণের আগে অবশ্যই জনগণের মতামত নিতে হবে।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব সামর্থ্য অনুযায়ী প্রকল্প নেওয়া উচিত। নদীকে রক্ষা করতে হবে কিন্তু তাকে খালে পরিণত করে নয়। এই প্রকল্প পুনর্মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।

বাপার প্রতিষ্ঠাতা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বাপা কখনো উন্নয়নবিরোধী নয়। আমরাও চাই দেশের উন্নয়ন হোক। কিন্তু সেই উন্নয়ন হতে হবে দেশের প্রাণপ্রকৃতি, পরিবেশ ও নদীকে ঠিক রেখে। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না। সরকার ও বিরোধী দল উভয়ই চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে সংবেদনশীল হওয়ায় এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে।’

বাপার সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, পরিবেশবিদ, গবেষক ও তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা অংশ নেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ