‘নতুন কৌশলে’ ইসরায়েলের তেল আবিব ও বন্দরনগরী হাইফায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় চালিয়েছে ইরান। স্থানীয় সময় আজ সোমবার ভোররাতে তেল আবিবের আকাশে একাধিক ক্ষেপণাস্ত্রের দৃশ্য দেখা যায়। একই সময় জেরুজালেমেও শোনা যায় বিস্ফোরণের শব্দ। হামলায় পাঁচ ইসরায়েলি নিহত হয়েছে। খবর রয়টার্সের।

ইসরায়েলের পারমাণবিক ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি লক্ষ্য করে চালানো আগাম হামলার পাল্টা জবাব হিসেবেই তেহরান এই আঘাত হানে।

জাতীয় জরুরি সেবা বিভাগ জানিয়েছে, সর্বশেষ ইরানি হামলায় অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছে। শুক্রবার থেকে এ পর্যন্ত ইরানি হামলায় অন্তত ১৯ জন নিহত হয়েছে। হামলায় আরও অন্তত ১০০ জন আহত হয়েছে।

হাইফায় ধ্বংসস্তূপে উদ্ধার অভিযান চলছে। জরুরি বিভাগ জানিয়েছে, সেখানে প্রায় ৩০ জন আহত হয়েছে। বন্দরের কাছে একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যম।

তেল আবিবের একটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় কয়েকটি আবাসিক ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে। এই এলাকার মাত্র কয়েকশ মিটার দূরেই মার্কিন দূতাবাসের একটি শাখা অবস্থিত। দূতাবাস ভবনে কিছু ক্ষতি হলেও কেউ আহত হয়নি বলে জানান মার্কিন রাষ্ট্রদূত।

এদিকে ইরানের বিপ্লবী গার্ড (আইআরজিসি) জানিয়েছে, সর্বশেষ হামলায় তারা এমন একটি ‘নতুন কৌশল’ ব্যবহার করেছে। এর ফলে ইসরায়েলের বহুস্তরবিশিষ্ট প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্বে লিপ্ত হয়েছে।

আইআরজিসির এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই অভিযানে ব্যবহৃত উদ্যোগ ও সক্ষমতাগুলো যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা শক্তির সর্বোচ্চ সমর্থন এবং আধুনিকতম প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি সত্ত্বেও, ইসরায়েলের অধিকৃত ভূখণ্ডের লক্ষ্যবস্তুতে সফলভাবে আঘাত হানতে সক্ষম হয়েছে।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এই হামলা সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি । তবে তারা বারবার বলে আসছে, তাদের ‘আয়রন ডোম’ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শতভাগ সুরক্ষিত নয় এবং সামনে আরও কঠিন সময় আসছে।

ইরানে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে অন্তত ২২৪ জন। নিহতদের ৯০ শতাংশই বেসামরিক নাগরিক বলে জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

সোমবার সকালে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা আবারও ইরানের বিপ্লবী গার্ড ও সামরিক বাহিনীর কমান্ড সেন্টারগুলোতে হামলা চালিয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল ইসর য

এছাড়াও পড়ুন:

ইরানে নতুন করে ইসরায়েলের হামলা, তেহরানে বিস্ফোরণ

ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনা লক্ষ্য করে নতুন হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। ইরানের ইসলামি রেভল্যুশনারি গার্ড কোর (আইআরজিসি) সংশ্লিষ্ট বার্তা সংস্থা ফার্স নিউজ এজেন্সি একটি পারমাণবিক স্থাপনার কাছে বিস্ফোরণ হওয়ার কথা নিশ্চিত করেছে। অপর দিকে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী বলেছে, তারা এখনো ইরানের ড্রোন অবকাঠামো ও ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণব্যবস্থা লক্ষ্য করে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।

ফার্স নিউজের খবরে বলা হয়েছে, কিছুক্ষণ আগে ফোর্দো পারমাণবিক কেন্দ্রের কাছে দুটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। ফোর্দো পারমাণবিক কেন্দ্রটি তেহরানের দক্ষিণে এবং কেন্দ্রীয় শহর কোম থেকে প্রায় ৩২ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত। এটি ভূগর্ভের প্রায় গভীরে ১০০ মিটার অবস্থিত। এর আগে এলাকাটিতে বিস্ফোরণের শব্দ শোনার খবর জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

ইসরায়েলের সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল এয়াল জামির এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমরা পূর্ণ শক্তি এবং সর্বোচ্চ গতিতে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি, যাতে আমাদের নির্ধারিত লক্ষ্য পূরণ করা সম্ভব হয়।’

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তেহরানের পশ্চিমাঞ্চলসহ একাধিক এলাকায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, আজ শুক্রবার দ্বিতীয়বারের মতো তেহরানে হামলা হয়েছে।

শুক্রবার ভোররাতে ইরানে প্রথম দফা হামলার প্রায় ১২ ঘণ্টা পর ইসরায়েল নতুন করে হামলা চালিয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে।

তবে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এসব ভিডিও বা বিস্ফোরণের সংবাদ প্রচার করছে না; বরং টিভি চ্যানেলগুলোতে একের পর এক সরকারি কর্মকর্তাকে আমন্ত্রণ জানিয়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা প্রচার করা হচ্ছে।

তেহরানের কাছে নতুন বিমান হামলার একটি ভিডিও যাচাই করেছে বিবিসি। এতে বলা হয়েছে, ‘আমরা এমন একটি ভিডিও যাচাই করেছি, যাতে ইরানের রাজধানী তেহরানের কাছে নতুন এক বিমান হামলার দৃশ্য দেখা যাচ্ছে।’

ভিডিওটি শহরের পশ্চিম দিক থেকে ধারণ করা হয়েছে। দূরে ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখা যাচ্ছে এবং সূর্য পশ্চিমে, এর অর্থ হলো এটি সন্ধ্যায় ধারণ করা।

বিবিসির একজন কর্মী ভিডিওর অডিও অনুবাদ করেছেন। এতে এক ব্যক্তিকে বলতে শোনা গেছে, ‘এই মুহূর্তে স্থানীয় সময় ৬টা ৩২ মিনিটে। এটি গার্মদারেহ...এখন আমি বিস্ফোরণের শব্দ শুনছি এবং ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে।’

আজ ভোররাতে ইরানের পরমাণু স্থাপনা, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির কারখানা ও আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থায় বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাদের আবাসস্থলও হামলায় নিশানা করা হয়েছিল।

ইসরায়েলের ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামের এই অভিযানে ইরানের সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরি, আইআরজিসির প্রধান কমান্ডার মেজর জেনারেল হোসেইন সালামি, আইআরজিসির বিমানবাহিনীর কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমির আলী হাজিজাদেহসহ অন্তত ২০ জন কমান্ডার নিহত হয়েছেন। এ হামলায় সব মিলিয়ে অন্তত ৭৮ জনের প্রাণহানি এবং তিন শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন।

ইসরায়েল জানিয়েছে, ২০০ যুদ্ধবিমান দিয়ে ইরানের বিভিন্ন শহরের শতাধিক স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে।

হামলার জবাবে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ইরান ১০০টির মতো ড্রোন নিক্ষেপ করে। ধারণা করা হচ্ছে, প্রায় সব ড্রোনই ইসরায়েলে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার আগে ধ্বংস করা হয়েছে। ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি শক্ত জবাব দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। দেশটির প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান নিহত প্রত্যেক নাগরিকের রক্তের প্রতিশোধ নেওয়ার দৃঢ়প্রত্যয় ঘোষণা করেছেন।

ইসরায়েলের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, আকাশ ও নৌবাহিনীর সমন্বয়ে তারা ইরান থেকে উৎক্ষেপণ করা ড্রোন মাঝপথেই ধ্বংস করতে সক্ষম হয়েছে।

ইয়েমেন থেকে ইসরায়েলের দিকে নিক্ষেপ করা একটি ক্ষেপণাস্ত্র মাঝপথে লক্ষ্যভ্রষ্ট করা হয়েছে হয়েছে বলেও ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘নতুন কৌশলে’ তেল আবিব ও হাইফায় ইরানের হামলা, নিহত ৫
  • ইসরায়েলি হামলায় নিহত আইআরজিসি গোয়েন্দাপ্রধান কাজেমি কে ছিলেন
  • ইসরায়েলি হামলায় আইআরজিসির গোয়েন্দাপ্রধানসহ ৩ ইরানি জেনারেল নিহত
  • ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ইসরায়েলের হামলা
  • ইসরায়েলের নতুন হামলায় ইরানের আইআরজিসির গোয়েন্দা প্রধান নিহত
  • খামেনি ও পেজেশকিয়ানকে লক্ষ্য করে হামলার চেষ্টা
  • নিহত সেনাপ্রধান কে এই বাঘেরি
  • তেল আবিবে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পাশে আগুন
  • ইরানে নতুন করে ইসরায়েলের হামলা, তেহরানে বিস্ফোরণ