এক যুগ আগের ভাঙচুরের মামলা থেকে খালাস পেলেন শহীদ উদ্দিন চৌধুরীসহ বিএনপির ৯ নেতা-কর্মী
Published: 16th, June 2025 GMT
এক যুগ আগে রাজধানীর সূত্রাপুর থানায় করা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরীসহ (এ্যানি) বিএনপির ৯ নেতা-কর্মী। আজ সোমবার ঢাকা মহানগরের বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১৪ এর বিচারক মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক এ রায় দেন। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন শহীদ উদ্দিন চৌধুরীর আইনজীবী মহিউদ্দিন চৌধুরী।
মামলা থেকে খালাস পাওয়া অপর আটজন হলেন, বিএনপি নেতা আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল, হাবিবুর রশিদ হাবিব, ইসহাক সরকার, কাজী আবুল বাশার, নজরুল ইসলাম খান টিপু, আবদুস সাত্তার, এম এ সৈয়দ মন্টু ও মো.
আইনজীবী মহিউদ্দিন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, একটি লেগুনা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে ২০১৩ সালের ১১ নভেম্বর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র বিএনপি নেতা সাদেক হোসেন খোকা, শহীদ উদ্দিন চৌধুরীসহ বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মীকে আসামি করে মামলা করে সূত্রাপুর থানা-পুলিশ। মামলাটি তদন্ত করে ২০১৯ সালের ২১ মে শহিদ উদ্দিন চৌধুরীসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। বিচার চলাকালে সাদেক হোসেন খোকা মারা যান।
আজ সোমবার মামলা থেকে শহীদ উদ্দিন চৌধুরীসহ নয়জনকে আদালত বেকসুর খালাস দিয়েছেন বলে জানান আইনজীবী মহিউদ্দিন চৌধুরী।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব এনপ র
এছাড়াও পড়ুন:
দক্ষিণ ভারতের নিষ্পেষিত মুসলিম নারীদের কণ্ঠস্বর
বানু মুশতাক বললেন, ‘মানুষ ও তার মৌলিক স্বভাব সবখানেই একই ধরনের। এটাই আমার লেখার উদ্দেশ্য। আমার বিষয়বস্তু নারী, প্রান্তিক মানুষ, কণ্ঠহীন সমাজের কণ্ঠস্বর হওয়া।’
বানু মুশতাকের মাধ্যমে এ বছরই প্রথম কোনো ছোটগল্প সংকলন বুকার জিতেছে। আবার কন্নড় ভাষাতেও এসেছে প্রথম বুকার। হার্ট ল্যাম্প ইংরেজি ভাষায় অনূদিত বানু মুশতাকের প্রথম বই। তাঁর বয়স এখন ৭৭ বছর।
বানু মুশতাক একজন আইনজীবী, সমাজকর্মী ও লেখক। ১৯৮১ সাল থেকে তিনি গল্প লিখছেন। হার্ট ল্যাম্প তাঁর বিভিন্ন সময়ে লেখা গল্পের একটি সংকলন। তাঁর গল্পে দক্ষিণ ভারতের কর্ণাটকের মুসলিম নারীদের জীবনের গল্প ফুটে উঠেছে। সেখানে দেখানো হয়েছে, তাঁরা কীভাবে পারিবারিক রীতির জাঁতাকলে পড়েন।
বানু মুশতাক বলেন, ‘হ্যাঁ, মেয়েরা, আজও তারা অবহেলিত। আর ঘর থেকেই এর শুরু।’
তাঁর অনুবাদক দীপা ভাস্তি বলেন, ‘এই গল্পগুলো একটি সুনির্দিষ্ট অঞ্চলের সুনির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের প্রেক্ষাপটে রচিত হলেও একেবারে সর্বজনীন।’
একজন আইনজীবী ও সমাজকর্মী হিসেবে তাঁর কাজ লেখালেখিতে কী প্রভাব ফেলে—এ প্রশ্নের জবাবে বানু মুশতাক বলেন, ‘কেউ যখন কোনো আইনি সমস্যা নিয়ে আমার কাছে আসে, তখন তারা তাদের সব অনুভূতি ভাগ করে নিতে চায়। সেসব তাড়না আমার মধ্যে ক্রমাগত বাড়তে থাকে। তারপর একদিন ছোটগল্পে পরিণত হয়।’
কিন্তু আইনি মামলা নাহয় সমস্যার সমাধান করতে পারে, ছোটগল্প কি পারে? ‘অবশ্যই। কারণ নীরবতা কোনো সমাধান নয়। তারা যে পাল্টা লড়াই করতে পারে, সেই দৃষ্টিভঙ্গি আমি গল্পের মাধ্যমে দিয়েছি।’
বানু মুশতাকের ‘কালো গোখরারা’ গল্পে একজন নারীকে জানানো হয়েছে, ইসলাম নারীদের শিক্ষিত হওয়ার এবং কাজ করার কথা বলেছে। কিন্তু সমাজ সুবিধার জন্য তাদের সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত রাখে। গল্পে আমি বলেছি, নিজের অধিকারের কথা বলো।’ বলেন বানু মুশতাক।
বানু মুশতাকের গল্পে কমেডিও আছে। তাঁর ভাষ্য, ‘এই স্টাইল ব্যবহারের কারণ আমি ক্ষমতাকাঠামোর মুখে সত্য বলছি। পিতৃতন্ত্র, রাজনীতি, ধর্ম—সব একসঙ্গে মিলিয়েই ক্ষমতাকাঠামো। খুব গম্ভীর সুরে কথাটি বললে এর পরিণতি যা–ই হোক না কেন, আমি দায়বদ্ধ থাকব। তাই আমি ব্যঙ্গাত্মক মোচড় দিই। সেলফ সেন্সরশিপের বদলে এই কৌশল ব্যবহার করি।’
অনুবাদক ভাস্তি বলেন, ‘নারীরা যে পুরুষদের দ্বারাই নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে, রসিকতা করে এই গল্পে সেটাই বোঝানো হয়েছে।’
বানু মুশতাক বান্দায়া সাহিত্যের (কন্নড়ের প্রতিবাদী সাহিত্য আন্দোলন) ঐতিহ্যে লিখেছেন। ১৯৭০–এর দশকে লেখকেরা ছিলেন ‘বেশির ভাগ পুরুষ এবং উচ্চবর্ণের’। সে আন্দোলনের স্লোগান ছিল, ‘লেখক হলে আপনিও একজন যোদ্ধা’। এটি নারী ও সংখ্যালঘু লেখকদের নিজস্ব পরিচয়ে লিখতে উত্সাহিত করেছিল।
দ্য গার্ডিয়ান থেকে সংক্ষেপিত অনুবাদ
রবিউল কমল