দায়িত্ব নিয়ে নতুন চ্যালেঞ্জের কথা বললেন বিজিএমইএ সভাপতি
Published: 16th, June 2025 GMT
ইসরায়েল ও ইরানের পাল্টাপাল্টি হামলা রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাকশিল্পের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ বলে মন্তব্য করেছেন বিজিএমইএর নতুন সভাপতি মাহমুদ হাসান খান। তিনি বলেন, ‘ইসরায়েল ও ইরানের পাল্টাপাল্টি হামলা আমাদের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ। তেলের মূল্য বৃদ্ধি পেলে তার প্রভাব সবার ওপর পড়বে। তৈরি পোশাকশিল্পও বাদ যাবে না। এ অবস্থায় তৈরি পোশাকশিল্পের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা ধরে রাখতে আমাদের অনেকগুলো কাজ করতে হবে।’
রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে আজ সোমবার বিকেলে সংগঠনটির ২০২৫-২৭ মেয়াদের পরিচালনা পর্ষদের দায়িত্ব গ্রহণ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন সভাপতি মাহমুদ হাসান খান। রাইজিং গ্রুপের এই ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) বিজিএমইএর ২২তম সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন। গত মাসে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে মাহমুদ হাসান খানের নেতৃত্বাধীন ফোরামের প্যানেল ৩৫ পদের ৩১টিতে জয়ী হয়।
বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বলেন, ‘নতুন পরিচালনা পর্ষদের অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে কার্যকর ও জবাবদিহিমূলক বিজিএমইএ গড়ে তোলা। এই পর্ষদ একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম চালু করবে। যেখানে সদস্যদের আবেদন, অভিযোগ ও তথ্য জমা দেওয়া যাবে। আমরা সব সময় ব্যবসার খরচ কমানোর কথা বলি। বিজিএমইএর সদস্যদের যাবতীয় সেবা-মাশুল পয়লা জুলাই থেকে ২৫ শতাংশ কমানো হবে।’
মাহমুদ হাসান খান আরও বলেন, ‘নির্বাচনের আগে আমরা ফোরাম, সম্মিলিত পরিষদ বা ঐক্য পরিষদ ছিলাম। নির্বাচনের পর আমরা এখন সবাই বিজিএমইএ পরিবার। এখান আর ফোরাম নেই, সম্মিলিত পরিষদ নেই, সবাই তৈরি পোশাকশিল্প পরিবার। আমরা সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করতে চাই।’
বিজিএমইএর প্রশাসক মো.
নতুন পর্ষদের দায়িত্ব গ্রহণ অনুষ্ঠানে বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আনিসুর রহমান সিনহা, কাজী মনিরুজ্জামান, এস এম ফজলুল হক, রুবানা হক, ফারুক হাসান, খন্দকার রফিকুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সভার শেষে সম্মিলিত পরিষদের সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান ও সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম এবং ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে রোমো গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মহসিন নতুন পর্ষদকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের
ভোলা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইফুল্লাহ আরিফকে (৩০) হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বাবা বশির উদ্দিন (মাস্টার) এই অভিযোগ করেন।
এ সময় বশির উদ্দিন বলেন, পুলিশ দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ার কোনো সুযোগ নেই; সেখানে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক।
এর আগে গত শনিবার পুলিশ সুপার শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক তদন্তের তথ্য অনুযায়ী অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে সাইফুল্লাহ আরিফ মারা গেছেন।
সাইফুল্লাহ আরিফ ভোলা পৌরসভার কালীবাড়ি রোডে নবী মসজিদ গলি এলাকার বশির উদ্দিনের ছেলে। গত ৩১ আগস্ট ভোরে নিজ বাড়ির সামনে থেকে সাইফুল্লাহ আরিফের লাশ উদ্ধার করা হয়।
আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে বশির উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে দুর্ঘটনায় নয়, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এর কিছু প্রমাণ আছে। আরিফের শরীরে একাধিক কাটা ও ভাঙা জখম ছিল, এমনকি হাতের রগ কাটা ছিল। পুলিশের দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যুর সুযোগ নেই, কারণ, ছাদে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশ সুপার আমার ছেলেকে নেশাগ্রস্ত আখ্যা দিলেও তাঁর কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া পুলিশ কীভাবে এমন কথা বলতে পারে। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
বশির উদ্দিন আরও বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফ কোনো ধরনের মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সে ছাত্রলীগের সহসভাপতি হলেও কখনো ক্ষমতার অপব্যবহার করেনি। হত্যাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ সত্য গোপন করছে। সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে মামলাটি সিআইডি বা পিবিআইয়ের কাছে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বশির উদ্দিন বলেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে অনেকের বিরোধ ছিল। তবে জমিজমার বিরোধ ও মাদক ব্যবসার বিরোধ নিয়ে তাঁর ছেলে খুন হয়নি। এগুলোর সঙ্গে সে জড়িত ছিল না।
শনিবার পুলিশ শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফের মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটনে প্রাথমিক তদন্ত শেষে জানা যায়, তিনি অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন। ৩০ আগস্ট দিবাগত রাত অনুমান ১২টা ১৫ মিনিটে রাতের খাবার শেষে সাইফুল্লাহসহ পরিবারের সবাই নিজ নিজ ঘরে ঘুমাতে যান। ভোর ৫টা ১০ মিনিটে ফজরের নামাজের জন্য বের হওয়ার সময় তাঁর বাবা বশির উদ্দীন (৭০) বাড়ির সামনে গেটের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় ছেলের মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সুরতহালে দেখা যায়, আরিফের মাথা ও হাতে গুরুতর আঘাত ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, আরিফ দীর্ঘদিন ধরে নেশায় আসক্ত ছিলেন এবং হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রায়ই ছাদে যেতেন। ঘটনার দিন রাতেও তিনি ছাদে ওঠেন এবং অসতর্কতাবশত রেলিংবিহীন অংশ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়ে মারা যান।
পরিবারের অভিযোগ সম্পর্কে আজ দুপুরে পুলিশ সুপার শরীফুল হক মুঠোফোনে বলেন, ‘ওই ঘটনায় তদন্ত চলমান। সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক তদন্তের কথা জানানো হয়েছে। তদন্তে তথ্য সংযোগ-বিয়োগের সুযোগ রয়েছে।’