গাজীপুরে এটিএম বুথে ধর্ষণকারী সেই নিরাপত্তাকর্মী গ্রেপ্তার
Published: 17th, June 2025 GMT
গাজীপুরের শ্রীপুরে ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের একটি এটিএম বুথের ভেতরে পোশাক কারখানা শ্রমিক এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে আসামি লিটনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি ওই বুথের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল বারিক।
তিনি জানান, মামলা দায়েরের পর থেকেই লিটনকে গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান শুরু করে। বিভিন্ন সময় স্থান পরিবর্তন করছিলেন তিনি। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় শ্রীপুরের আনসার রোড এলাকা থেকে তাকে গতকাল সোমবার (১৬ জুন) গ্রেপ্তার করা হয়। আজ লিটনকে আদালতে তোলা হবে।
আসামি মো.
ভুক্তভোগী কিশোরীর পরিবার ও পুলিশ জানায়, টাকা উত্তোলনের সূত্র ধরে শ্রীপুরের এমসি বাজার এলাকার তালহা স্পিনিং মিলের সামনে অবস্থিত এটিএম বুথের নিরাপত্তা কর্মী লিটনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। স্থানীয় একটি কারখানায় মাসিক ছয় হাজার টাকা বেতনে কাজ করত ওই কিশোরী। লিটন তাকে দ্বিগুণ অর্থাৎ বারো হাজার টাকা বেতনের চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখায়।
রোববার (১৫ জুন) সকাল ৬টায় মেয়েটিকে তার বাবার মোবাইলে ফোন দিয়ে বুথে ডেকে নেয় লিটন। পরে ‘ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আসবেন’ বলে ভেতরের একটি কক্ষে বসিয়ে রাখে। এর মাঝে ভুক্তভোগীর বাবা মেয়ের চাকরি সংক্রান্ত বিষয়ে জানতে চাইলে লিটন তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেন।
প্রায় চার ঘণ্টা পর, সকাল ১০টার দিকে কক্ষে একা পেয়ে মেয়েটিকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে লিটন। পরে তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দিলে সে রাস্তাতেই বাবাকে ঘটনা জানায়। পরে মামলা দায়ের করা হয়।
ঢাকা/রফিক/এস
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না
মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।
আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।
বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’
এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।
সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।
গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।