শিক্ষা সংস্কারে মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ভারত কী করছে; আমরা কী করছি
Published: 18th, June 2025 GMT
সভ্যতার সূচনালগ্ন থেকেই প্রযুক্তি ও নতুন উদ্ভাবন মানুষের সমাজকে সামনে এগিয়ে নিয়েছে। কিন্তু ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, শিল্প-বাণিজ্য, জীবনযাত্রা ও অর্থনীতিতে বিপুল পরিবর্তন এলেও বিশ্বজুড়ে শিক্ষাব্যবস্থা সেই গতির সঙ্গে তাল মেলাতে পারেনি। বাংলাদেশে এই ব্যবধান বিশেষভাবে লক্ষণীয়। আজ আমরা এমন এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছি, যেখানে শিক্ষাব্যবস্থার আধুনিকায়ন সময়ের দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তবে তার আগে বুঝে নিতে হবে, এই বদলে যাওয়া দুনিয়ায় কী কী পরিবর্তনের শক্তি সক্রিয় হয়ে উঠেছে? চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের যুগে প্রযুক্তির অগ্রগতি ঘটছে দুর্বার গতিতে।
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, মেশিন লার্নিং, ইন্টারনেট অব থিংস, ক্লাউড কম্পিউটিং আর ব্লকচেইন—এগুলো আর ভবিষ্যতের স্বপ্ন নয়, বাস্তবের অংশ। এই প্রযুক্তিগুলো একসঙ্গে কাজ করে পৃথিবীকে নতুনভাবে গড়ে তুলছে। বাংলাদেশের সামনে তাই বড় প্রশ্ন, এই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা শিক্ষার্থীদের কেমন করে প্রস্তুত করব?
সমাজের বৈচিত্র্য স্বীকার করে নিয়েও আমাদের একটি একীভূত ও ভবিষ্যৎ-উপযোগী শিক্ষাব্যবস্থা গড়তে হবে, যা হবে আমাদের নিজস্ব সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণবিশ্বজুড়ে শিক্ষা সংস্কার নানা বাধায় পিছিয়ে পড়ে—প্রথাগত ধ্যানধারণা, পরীক্ষানির্ভরতা, প্রতিষ্ঠানগত জড়তা, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ এর কিছু কারণ। বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে এসবের সঙ্গে যোগ হয়েছে ঔপনিবেশিক আমলাতান্ত্রিকতার ছাপ, তিন ধরনের শিক্ষাব্যবস্থার অসামঞ্জস্যতা, অতিরিক্ত দায়িত্ব নিয়ে শিক্ষকদের শঙ্কা, আর্থিক সীমাবদ্ধতা, সংস্কারের গুরুত্ব অনুধাবনে ব্যর্থতা এবং রাজনৈতিক প্রভাব। আমাদের শিক্ষায় সংস্কারপ্রক্রিয়া জটিল হলেও তা আজ অপরিহার্য।
চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের যুগে শিক্ষা সংস্কারে ধীরগতি আর চলবে না। ক্লাসরুমে যা শেখানো হচ্ছে, তার সঙ্গে বাস্তব জীবনের চাহিদার যে বড় ফারাক, তা দ্রুত কমাতে হবে। অনেক এশীয় দেশ, যারা একসময় পরিবর্তনের প্রতি অনাগ্রহী ছিল, এখন তারা সাহসী সংস্কার করে দেখিয়েছে। সিঙ্গাপুরে শিক্ষাব্যবস্থা একসময় পরীক্ষানির্ভর ছিল, এখন গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে দক্ষতা, নমনীয়তা ও জীবনব্যাপী শেখার ওপর। পাঠকেন্দ্রিক শিক্ষা, বহুমাত্রিক সাফল্য ও সমন্বিত মানোন্নয়ন এখন তাদের মূল কৌশল।
মালয়েশিয়া জাতীয় পরিচয়কে অটুট রেখে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার জন্য শিক্ষায় পরিবর্তন এনেছে। মালয় ভাষার সঙ্গে ইংরেজিতে দক্ষতা, এসটিইএম শিক্ষা, ডিজিটাল জ্ঞান ও সৃজনশীলতা—সবকিছুর ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। ২০২১ সালে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা তুলে দেওয়া হয় এবং তার পরিবর্তে ধারাবাহিক ক্লাসরুমভিত্তিক মূল্যায়ন চালু করা হয়। জাপান শিক্ষার্থীদের মানসিক চাপ কমাতে এবং সৃজনশীলতা বাড়াতে পাঠ্যক্রমের ৩০ শতাংশ হ্রাস করেছে, তৃতীয় শ্রেণি থেকে ইংরেজিকে বাধ্যতামূলক করেছে এবং ‘গিগা স্কুল প্রোগ্রাম’-এর মাধ্যমে ডিজিটাল শিক্ষা জোরদার করেছে।
ভারতের ২০২০ সালের জাতীয় শিক্ষানীতি শিক্ষাব্যবস্থায় বড় রকমের পরিবর্তনের ঘোষণা দিয়েছে, যেখানে নমনীয়তা, দক্ষতা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষার দিকে যাত্রা শুরু হয়েছে। ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে কারিগরি প্রশিক্ষণ, কোডিং ও এআই শেখানো শুরু হয়েছে। বোর্ড পরীক্ষাগুলোতে মুখস্থবিদ্যার পরিবর্তে ধারণাগত বোঝাপড়া যাচাইয়ের দিকে যাওয়া হচ্ছে। বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জ থাকলেও দৃষ্টিভঙ্গি ভবিষ্যৎমুখী।
বাংলাদেশে শিক্ষার প্রসার ও ভর্তি বেড়েছে—এটা অবশ্যই অগ্রগতি। কিন্তু মুখস্থনির্ভর পাঠ্যক্রম, কঠোর মূল্যায়নকাঠামো ও দক্ষতাভিত্তিক শিক্ষার অভাব এখনো আমাদের বড় বাধা। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা তিনটি ভিন্ন ধারায় বিভক্ত—বাংলা মাধ্যম, ইংরেজি মাধ্যম ও ধর্মভিত্তিক শিক্ষা। প্রতিটি ধারার নিজস্ব সামাজিক ভিত্তি থাকলেও তাদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। সমাজের বৈচিত্র্যকে স্বীকার করে নিয়েও আমাদের একটি একীভূত ও ভবিষ্যৎ-উপযোগী শিক্ষাব্যবস্থা গড়তে হবে, যা হবে আমাদের নিজস্ব সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
শিল্পবিপ্লবের সময় থেকে শুরু করে উচ্চশিক্ষিত মানুষেরা বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও ব্যবস্থাপনায় দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। এখন চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের যুগে তাঁদের ভূমিকা আরও বদলেছে—তাঁরা শুধু চাকরিজীবী নন, উদ্যোক্তা, উদ্ভাবক ও ডিজিটাল পরিবর্তনের চালক। এমন ভবিষ্যৎ-প্রস্তুত প্রজন্ম গড়ে তুলতে হলে আমাদের উচ্চশিক্ষা নয়, গোটা শিক্ষাব্যবস্থাকেই নতুনভাবে ভাবতে হবে। মুখস্থ আর পরীক্ষানির্ভর শিক্ষা নয়, এখন দরকার নমনীয়, দক্ষতাভিত্তিক ও শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক শিক্ষাব্যবস্থা। পাঠ্যক্রমে থাকতে হবে সৃজনশীলতা, সমালোচনামূলক চিন্তা ও সমস্যা সমাধানের চর্চা। পরীক্ষার চাপ কমিয়ে শেখার গভীরতা ও বাস্তব প্রয়োগে গুরুত্ব দিতে হবে।
প্রাথমিক স্তর থেকেই আধুনিক প্রযুক্তি—কোডিং, এআই, মেশিন লার্নিং ও ইংরেজিতে কার্যকর যোগাযোগ–দক্ষতা শিক্ষার্থীদের শেখাতে হবে। এসব এখন আর বিলাসিতা নয়, বরং বিশ্ব প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার পূর্বশর্ত। কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষাকে আরও গুরুত্ব দিতে হবে। ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে পৃথক কারিগরি ধারার সূচনা হলে শিক্ষার্থীরা ১২ বছরের ধারাবাহিক কারিগরি শিক্ষা শেষে উচ্চশিক্ষায় যেতে পারবে। এতে শ্রমবাজারে তাদের প্রস্তুতি বাড়বে, পাশাপাশি ডিপ্লোমাধারীদের দীর্ঘদিনের ক্ষোভ—স্বীকৃতি ও অগ্রগতির অভাব লাঘব হবে। এমন সাহসী সংস্কার বাস্তবায়নে প্রয়োজন শিক্ষাবিদ, নীতিনির্ধারক, শিল্পপতি ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের সম্মিলিত প্রয়াস।
শিক্ষা সংস্কার যেন কেবল আলোচনার বিষয় হয়েই না থাকে, বরং তা যেন জাতীয় অগ্রাধিকারে পরিণত হয়—এই উপলব্ধি এখন অত্যন্ত জরুরি। আর দেরির সুযোগ নেই। চতুর্থ শিল্পবিপ্লব ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। আমাদের তরুণদের প্রস্তুত করার সময় এখনই। তবে এ সংস্কারে জাতীয় পরিচয় অটুট রাখা এবং ঐতিহ্যকে অক্ষুণ্ন রেখে বিচক্ষণ ও সুপরিকল্পিত অবস্থান গ্রহণই জাতির জন্য কাম্য।
● এম এম শহিদুল হাসান ডিস্টিংগুইশড প্রফেসর, ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ ক ষ ব যবস থ প রস ত ত পর ক ষ আম দ র ন র ভর
এছাড়াও পড়ুন:
নৃশংস হত্যার প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে-ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ
পুরান ঢাকার মিটফোর্ড (স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ) হাসপাতালের সামনে ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে (৩৯) হত্যার ঘটনায় ফুঁসে উঠেছে সারা দেশ। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (১১ জুলাই) রাতে বিভিন্ন ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করা হয়।
বুয়েটে বিক্ষোভ
ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যার ঘটনায় বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা। তারা “আমার সোনার বাংলায়, চাঁদাবাজের ঠাঁই নাই, জুলাইয়ের হাতিয়ার, গর্জে ওঠো আরেকবার। চাঁদাবাজের বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন” এমন স্লোগান দেন।
শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল বুয়েট শহীদ মিনার থেকে শুরু হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে গিয়ে শেষ হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ
সোহাগকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা ছাত্রদল।
শুক্রবার (১১ জুলাই) রাত ১০টার দিকে এ বিক্ষোভ মিছিল করে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। মিছিলটি ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) থেকে শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে ডাস চত্বরের পাশের রাস্তায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
এসময় ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা ‘আমাদের অধিকার, নিরাপদ বাংলাদেশ’, ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরো দেবো রক্ত’, ‘বিচার-বিচার, বিচার চাই, সোহাগ হত্যার বিচার চাই’, ‘মানুষ মেরে উল্লাস করে, ইন্টেরিম কী করে’সহ নানা স্লোগান দেন।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, “৯ জুলাই মিটফোর্ড হাসাপাতালে সামনে যেভাবে হত্যাকণ্ড ঘটিয়ে উল্লাস করা হয়েছে, আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল তার প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা চাই, অনতিবিলম্ব সোহাগ হত্যাকাণ্ডের জড়িতদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে, অনতিবিলম্ব যদি বিচার নিশ্চিত না করা হয়, ছাত্রদল এই হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিতে আরো কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে।”
এদিকে, একই সময়ে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে দেশব্যাপী ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, সহিংসতা ও ঢাকা মিডফোর্ড হাসপাতালের সামনে সংঘটিত নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করে ইসলামি আন্দোলনের ঢাবি শাখা।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ
সোহাগ হত্যার বিচার দাবিতে ও সারা দেশে অব্যাহত চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (১১ জুলাই) রাত সাড়ে ৯টায় 'সন্ত্রাসবিরোধী ঐক্য' ব্যানারে মিছিল্টি অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা থেকে মিছিল শুরু হয়ে নতুন ছাত্র হল সংলগ্ন সড়ক, ট্রান্সপোর্ট, ১০ নম্বর হলের সামনে দিয়ে প্রদক্ষিণ করে বটতলায় এসে শেষ হয়। এসময় একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশও অনুষ্ঠিত হয়।
মিছিল চলাকালে শিক্ষার্থীদের ‘যুবদল খুন করে, তারেক রহমান কী করে, যুবদল খুন করে, ইন্টেরিম কী করে, বিএনপির অনেক গুণ, নয় মাসে দেড়শ খুন, উই ওয়ান্ট জাস্টিস, জ্বালো রে জ্বালো, আগুন জ্বালো, চাঁদা তোলে পল্টনে, চলে যায় লন্ডনে, সন্ত্রাসীদের কালো হাত, ভেঙ্গে দাও, গুড়িয়ে দাও, সন্ত্রাসীদের আস্তানা, ভেঙ্গে দাও গুড়িয়ে দাও, যে হাত চাঁদা তোলে, সে হাত ভেঙ্গে দাও, যুবদলের অনেক গুণ, পাথর দিয়ে মানুষ খুন এমন স্লোগান দেন।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ জাবি শাখার সিনিয়র যুগ্ম সদস্য-সচিব আহসান লাবিবের সঞ্চালনায় বিভিন্ন রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য দেন।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলে অংশগ্রহণ করেন বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আহসান ইমাম। সমাবেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা যদি নিজের দলের নেতাকর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করতে না পারেন, তাহলে এদের থাকার প্রয়োজন কি? এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড কখনোই কাম্য নয়। পরিবর্তনের এখনো সময় আছে। দয়া করে হত্যাকাণ্ড বন্ধ করুন।”
নজরুল বিশ্বিবদ্যালয়ে বিক্ষোভ
ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যার ঘটনার প্রতিবাদে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (১১ জুলাই) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্রোহী হলের নিচ থেকে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। পরে সেখান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে একইস্থানে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে শেষ হয়।
এসময় বিক্ষোভকারীরা আমার ভাই কবরে খুনি কেনো বাহিরে, সন্ত্রাসীরা উল্লাস করে ইন্টেরিম কী করে, জ্বালোরে জ্বালো আগুন জ্বালো, অ্যাকশন টু অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন, চাঁদাবাজের বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন, চাঁদাবাজের আস্তানা ভেঙ্গে দাও, গুড়িয়ে দাও সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব রাজু শেখ বলেন, “বিএনপির মাধ্যমে যে যুগে বাংলাদেশে ফিরে এসেছে তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা বারবার দেখতে পাচ্ছি যে, যখনই চাঁদাবাজ বা সন্ত্রাস বিএনপির দল থেকে আসে দল থেকে বহিষ্কারের নামে এক ধরনের নাটক করা হয়। এই নাটক বাজি আর বাংলাদেশে চলবে না, চলতে পারে না। এই ইন্টিরিম সরকারকে বলতে চাই জুলাই-আগস্টের বিপ্লবের মাধ্যমে আপনারা ক্ষমতা নিয়েছেন হাত ও গাছ লাগানোর জন্য নয়। এই সন্ত্রাসকে উৎখাত করার জন্য। এই সন্ত্রাসীদের যদি বিচার না করতে পারেন ক্ষমতা ছেড়ে চলে যান।”
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ
সোহাগকে নির্মমভাবে হত্যার প্রতিবাদ এবং সারা দেশে অব্যাহত খুন, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা হত্যাকারী যুবদল নেতাদের সর্বোচ্চ বিচার নিশ্চিতের দাবি জানায়।
শুক্রবার (১১ জুলাই) রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সালাম হল বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়। পরে মালেক হল, খাদিজা হল, জুলাই স্মৃতি হল প্রদক্ষিণ করে শহীদ মিনারে এসে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে মিছিলটি শেষ হয়। প্রতিবাদ জানাতে মেয়ে শিক্ষার্থীরাও হল থেকে বেরিয়ে বিক্ষোভ মিছিলে যোগ দেন।
এ সময় শিক্ষার্থীরা আবু সাইদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ, যুবদলের চাঁদাবাজরা, হুঁশিয়ার সাবধান, যুবদলের সন্ত্রাস, রুখে দেবে ছাত্রসমাজ, আমার ভাই মরলো কেন? তারেক রহমান জবাদ দে; মিটফোর্ডে খুন কেন? তারেক রহমান জবাব দে; সারা দেশে সন্ত্রাস কেন? বিএনপি জবাদ দে; জালোরে জালো আগুন জালো এমন নানা স্লোগান দেন।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ
ঢাকায় ব্যবসায়ীকে নৃশংসভাবে হত্যার প্রতিবাদ এবং দেশব্যাপী অব্যাহত চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এ বিক্ষোভ মিছিল করা হয়।
এসময় শিক্ষার্থীরা সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে, আগুন জ্বালো একসাথে, সন্ত্রাসীদের কালো হাত গুঁড়িয়ে দাও, গুঁড়িয়ে দাও, মিটফোর্ডে খুন কেন, ইন্টেরিম জবাব দে, আমার ভাই মরলো কেন, তারেক রহমান জবাব দে, ইনকিলাব ইনকিলাব, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুমিল্লা মহানগর শাখার সদস্য সচিব মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম বলেন, “একজন ব্যবসায়ীকে পাথর দিয়ে হত্যার ঘটনায় আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। যারা এমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে, তারা স্পষ্টভাবে হাসিনার পথেই হাঁটছে। ৫ আগস্টের পর সংস্কারের কথা বলা হলেও বাস্তবে প্রশাসন ও আইনে কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি। ক্ষমতায় যাওয়ার আগেই যারা ক্ষমতার স্বাদ নিতে শুরু করেছে, জনগণ আর কখনো তাদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে না।”
মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ
সোহাগ হত্যার প্রতিবাদে মধ্যেরাতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (১১ জুলাই) রাত ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জননেতা আব্দুল মান্নান হলের সামনে থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রধান ফটক হয়ে আবার মান্নান হলের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে বিক্ষোভ মিছিলটি শেষ হয়।
এসময় শিক্ষার্থীরা যুবদলের অনেক গুণ, পাথর মেরে করে খুন, এক দুই তিন চার, যুবদল বাংলা ছাড়, আমার ভাই কবরে, খুনি কেনো বাহিরে, 'চাঁদাবাজের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না, বিচার বিচার বিচার চাই, সোহাগ হত্যার বিচার চাই, সহ বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেন।
বিক্ষোভ মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী রেজাউল করিম বলেন, “কয়লা ধুইলে যেরকম ময়লা যায়না, ঠিক তেমনি দুই-একজন নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করলে যুবদল পবিত্র হবে না। আগস্টের পর আমরা নতুন করে কোনো দল স্বৈরাচার হয়ে উঠুক তা চাই না।”
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ
নৃশংস এ হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (১১ জুলাই) রাত ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ফটক থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়।
মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে আগারগাঁও হয়ে আবার একই স্থানে এসে শেষ হয়। মিছিলে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে ইসলামী ছাত্রশিবির, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।
বিক্ষোভে শিক্ষার্থীরা চাঁদাবাজদের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না, খুনিদের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না, আমার ভাই মরলো কেন, ইন্টেরিম জবাব দে, মিটফোর্ডে খুন কেন, তারেক রহমান জবাব দে, বিএনপির অনেক গুণ, এক বছরে দেড়শ খুন, যুবদলের অনেক গুণ, পাথর মেরে মানুষ খুন এমন স্লোগান দেন।
ছাত্রশিবির সভাপতি আবুল হাসান বলেন, “২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগের লগি বৈঠার সন্ত্রাসের কথা আমরা ভুলিনি। আজ আবার বিএনপির সন্ত্রাসীরা ক্ষমতায় আসার আগেই দেড় শতাধিক খুন করেছে। মিটফোর্ডের ঘটনায় একজন় ব্যবসায়ীকে চাঁদা না দেওয়ায় পাথর দিয়ে হত্যা করা হয়েছে, যা বর্বরতার চরম উদাহরণ। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”
শিক্ষার্থীরা অবিলম্বে মিটফোর্ডের ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ
মিটফোর্ড ব্যবসায়ীকে পাথর দিয়ে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) শাখা ছাত্রদল।
শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক এই বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
বিক্ষোভ মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আল আমিন বলেন, “আপনারা জানেন এর আগে খুলনায় আমাদের যুবদলের একজনকে হত্যা করা হয়েছে এবং মিটফোর্ডে চাঁদাবাজিরা-সন্ত্রাসীরা একজনকে হত্যা করেছে। এছাড়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের সাম্যকে হত্যা করা হয়েছে। প্রাইম ইউনিভার্সিটিতে পারভেজ হত্যা করা হয়েছে। পাঁচই আগস্টের পরে একটি স্বাধীন দেশে এ ধরনের হত্যাকাণ্ডগুলো কীভাবে হচ্ছে। আমরা বলতে চাই এগুলো হচ্ছে একই সূত্রে গাথা। এগুলোর পিছনে আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী লীগের দোসরা জড়িত। আমরা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সকল হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করে সুষ্ঠু বিচারের দাবি করছি।”
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ
সোহাগ হত্যার বিচারসহ চলমান চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে রায় সাহেব বাজার, তাঁতিবাজার, মিটফোর্ড হাসপাতাল এলাকা ঘুরে আবার ক্যাম্পাসে ফিরে আসে। সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শেষ হয়।
বিক্ষোভকারীরা এ সময় অ্যাকশন অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন, চাঁদাবাজের গদিতে আগুন জ্বালো, বিএনপি চাঁদাবাজ, মিটফোর্ড খুন কেন, ইন্টারিম জবাব দে, যুবদলের অনেক গুণ, পাথর মেরে মানুষ খুন এমন স্লোগান দেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জবি শাখার আহ্বায়ক মাসুদ রানা বলেন, “৫ আগস্টের পর আমরা একটি সাম্যের বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু হাসিনার সরকার যাওয়ার পরপরই বিএনপির লোকজন আবার চাঁদাবাজি শুরু করেছে। আবু সাঈদের ভাইরা, শহীদ সাজিদরা, ওয়াসিমরা আজো মরে যায়নি। প্রয়োজনে আবার জুলাই ফিরে আসবে।”
জবি শাখা শিবিরের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলীম আরিফ প্রশ্ন তোলেন মিডিয়ার ভূমিকা নিয়ে। তিনি বলেন, “৯ জুলাইয়ের ভিডিও ১১ তারিখ কেন প্রচার হলো? মিডিয়া কী লুকাতে চায়? আমরা মুক্তি চাই—শুধু চাঁদাবাজদের হাত থেকে নয়, দুই রাজনৈতিক পরিবারের দুঃশাসন থেকেও।”
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ
ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যান প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এসময়ে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল থেকে শুরু করে পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে গ্রাউন্ড ফ্লোরে গিয়ে অবস্থান নেয় এবং ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়ক ১০ মিনিটের জন্য অবরোধ করে স্লোগান দেয়।
শুক্রবার রাত ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরে বাংলা হল থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা এ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। তারা বলেন, “আমরা এমন বাংলাদেশ চাইনি, যেখানে প্রকাশ্যে এভাবে একজন মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করা হবে। আমরা নৃশংসতা সহ্য করার জন্য জুলাই গণঅভ্যুত্থান করি নাই।” যথাযথ বিচার না হলে এ ধরনের বর্বরতা বারবার ঘটবে উল্লেখ করে দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির দাবি জানান তারা।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ
নৃশংস হত্যার ঘটনায় এবং সারা দেশে চাঁদাবাজির প্রতিবাদে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (১১ জুলাই) রাত সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহপরাণ হলের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে বঙ্গবন্ধু হল ঘুরে পুনরায় শাহপরাণ হলে গিয়ে শেষ হয়। এতে অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ
ঢাকায় ব্যবসায়ী সোহাগকে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা। এসময় সোহাগ হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান তারা।
শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ক্যাম্পাসের জিয়া মোড় থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়।
পরে মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। মিছিলের এক পর্যায়ে বৈষম্যবিরোধীর নেতারা ক্যাম্পাসের ডায়না চত্বরে সমাবেশ শুরু করলে অধিকাংশ শিক্ষার্থী প্রধান ফটকে সমাবেশের জন্য দাবি তোলেন। এসময় বৈষম্যবিরোধীর নেতারা বক্তব্য প্রদান করে সমাবেশ শেষ করলেও এক অংশ শিক্ষার্থী প্রধান ফটকে এসে অবস্থান করেন।
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, স্বাধীন বাংলার একজন নাগরিককে চাঁদা দেয় নাই, সেই অজুহাতে পাথর নিক্ষেপ করে হত্যা করা হয়েছে। কারা করেছে সেটা জাতির কাছে স্পষ্ট হয়েছে। তারা মানুষকে হত্যাই করে নাই লাশের উপর দাঁড়িয়ে নিত্য করেছে। আমরা হুঁশিয়ার করে বলতে চাই চব্বিশের স্বাধীন বাংলাদেশে যারা চাঁদাবাজ কায়েম করতে চাইবে জনগণ তাদেরকে কখনো মেনে নেবে না। যারা একের পর এক ধর্ষণ, চাঁদাবাজি করে যাচ্ছে তাদেরকে বলতে চাই আমরা এই বাংলাদেশ দেখার জন্য আন্দোলন করি নাই। আবু সাঈদরা এই বাংলাদেশ করার জন্য রক্ত দেয় নাই।
(এ প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন রাইজিংবিডির সংশ্লিষ্ট ক্যাম্পস প্রতিনিধি ও সাংবাদদাতারা )
ঢাকা/ইভা