যশোরে শেখ আমির (৬৮) নামে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। আজ বুধবার সকালে যশোর জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
শেখ আমির যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার বাসিন্দা।
হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগের ইনচার্জ জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. মো. রবিউল ইসলাম তুহিন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, কিডনিজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে গত ৫ জুন শেখ আমির সার্জারি বিভাগে ভর্তি হন। করোনার লক্ষণ প্রকাশ পাওয়ায় পরীক্ষা করা হয়। করোনা পজেটিভ শনাক্ত হলে ১৬ জুন বিকেলে তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার সকালে তিনি মারা যান।
তিনি আরও বলেন, আইসিইউতে সন্দেহজনক আরও তিনজন রোগী রয়েছেন। তারা করোনায় আক্রান্ত কিনা তা পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য নমুনা পাঠানো হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: যশ র
এছাড়াও পড়ুন:
২৫০ টাকা আয়ে চারজনের সংসার চালায় কিশোর তোফাজ্জল
একটি ভাঙাচোরা বাইসাইকেলই তার ভরসা। এ সাইকেল চালিয়ে ১৫ কিলোমিটার দূরের খাসিয়াপুঞ্জিতে কাজ করে কিশোর তোফাজ্জল। ১৩ বছর বয়সেই তাকে চারজনের সংসারের হাল ধরতে হয়েছে। প্রতিদিন মাত্র দুই-আড়াইশ টাকা উপার্জনে পরিবারের তিন অসুস্থ সদস্যকে নিয়ে সংসার চালাতে হচ্ছে তোফাজ্জলকে। কমলগঞ্জ উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের কাঁঠালকান্দী গ্রামের আলী আহমেদের (৬৫) ছেলে তোফাজ্জল হোসেন।
সমকালের সঙ্গে আলাপে তোফাজ্জল জানায়, তার পরিবারের তিনজন অসুস্থ। বাবা দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগে আক্রান্ত, বোন আয়েশা খাতুন (২৫) মানসিক ভারসাম্যহীন। এছাড়া বয়োবৃদ্ধ দাদি সমিতা বিবিও (৮২) দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী। স্থানীয় খাসিয়াপুঞ্জিতে কাজ করে প্রতিদিন যা রোজগার হয় তাতে দু’বেলা ঠিকমতো খাবার জোটে না তাদের। মাঝেমধ্যে প্রতিবেশীদের সামান্য সহযোগিতাই তাদের একমাত্র ভরসা।
প্রতিবেশী ফজল মিয়া ও আবু শহীদ জানান, তোফাজ্জলদের পরিবার খুব অসহায় ও মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। পরিবারের তিনজনই অসুস্থ। তাদের সাহায্য করার মতো আত্মীয়স্বজন তেমন কেউ নেই। প্রতিবেশীরা মাঝেমধ্যে তাদের সাহায্য করেন।
মঙ্গলবার তোফাজ্জলদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সরকারি আবাসন প্রকল্পের ছোট্ট একটি ঘরে মেঝেতে জরাজীর্ণ কাঁথায় শুয়ে আছেন সমিতা বিবি। ঠিকমতো কথা বলতে পারছেন না। পা ভেঙে এক বছর ধরে শয্যাশায়ী।
বাবা আলী আহমেদ জানালেন, তিনি হার্টের রোগী। দীর্ঘদিন ধরে কোনো কাজকর্ম করতে পারেন না। ছেলে তোফাজ্জলই তাঁর একমাত্র ভরসা। প্রতিদিন তোফাজ্জল খাসিয়াপুঞ্জিতে (খাসিয়া গ্রাম) কাজ করতে যায়। ছেলের সামান্য আয়ে কোনোভাবে সংসার চলে যাচ্ছে। কখনও কখনও দুই বেলা খাবার জোটানোই কঠিন হয়ে পড়ে।
সমিতা বিবি বলেন, ‘ক্ষুধায় রাতে ঘুম আসে না। ১৩-১৪ বছরের নাতি আর কিইবা করবে। তবু যা করছে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া। চাল-ডাল আনলে ওষুধ আনতে পারে না। প্রায়ই অনাহারে থাকতে হয়। মাঝেমধ্যে প্রতিবেশীরা কেউ খাবার দেয়, কেউ সামান্য টাকা-পয়সা দেয়। এইভাবেই টিকে আছি।’
ইসলামপুর ইউনিয়নের স্থানীয় ইউপি সদস্য ফারুক আহমেদ বলেন, ‘পরিবারটি এতটাই অসহায় যে, একসময় তাদের মাথাগোঁজার ঠাঁই ছিল না। কয়েক বছর আগে সরকারি আবাসন প্রকল্পের মাধ্যমে এ পরিবারের জন্য একটি ঘরের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’ পরিবারটির অসুস্থদের চিকিৎসা ও তাদের আত্মনির্ভরশীল করতে সরকারি সহায়তার দাবি জানান তিনি।