সরাসরি: পাকিস্তানের সেনাপ্রধানের ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক ঘিরে ‘অস্বস্তি’
Published: 20th, June 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির বৈঠককে কূটনৈতিক সফলতা হিসেবে উপস্থাপন করার কথা থাকলেও বাস্তবে তা হচ্ছে না। কিন্তু এমন এক সময় এই বৈঠক হলো, যখন ট্রাম্প ইরানের সঙ্গে যুদ্ধে যাওয়ার কথা ভাবছেন এবং যা পাকিস্তান শুরু থেকেই সমর্থন করেনি।
ইসরায়েলকে সমর্থন করছেন ট্রাম্প। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বারবার বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমন্বয় করে হামলা চালাচ্ছেন তারা। এই হামলাকে ‘বর্বরোচিত’ বলে বর্ণনা করেছে পাকিস্তান।
ইরানের সঙ্গে ইসরায়েলের সংঘাতের কারণে ইরান থেকে প্রায় তিন হাজার নাগরিককে ফিরিয়ে আনতে একটি বড় উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করতে হচ্ছে পাকিস্তানকে। পাকিস্তান ও ইরান সীমান্তবর্তী দেশ।
আরো পড়ুন:
রহস্যজনক বার্তা দিলেন ট্রাম্প
খামেনির ‘যুদ্ধ’ ঘোষণার পর ইসরায়েলে ব্যাপক হামলা ইরানের
অবশ্য ভারতের সঙ্গে সাম্প্রতিক উত্তেজনার পর যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক কিছুটা ঘনিষ্ঠ হয়েছে।
ট্রাম্পের পূর্বসূরি জো বাইডেনের আমলে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট যেখানে একটি ফোন কলও পাননি, সেখানে এখন হোয়াইট হাউজে সরাসরি বৈঠক হচ্ছে, এটা স্পষ্টভাবেই একটা অগ্রগতি।
পাকিস্তানের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ইরান নিয়ে আলোচনা হয়েছে, তবে কী আলোচনা হয়েছে, তা পরিষ্কার নয়। তাই পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্রিফিংয়ে কিছু অস্বস্তিকর প্রশ্ন উঠেছে।
এর মধ্যে সবচেয়ে স্পষ্ট প্রশ্ন ছিল, “ওই কক্ষে কি কোনো বেসামরিক রাজনীতিক ছিলেন?” এরপর প্রশ্ন ছিল, “তাহলে আমরা কি গণতান্ত্রিক দেশ?”
হালকা হাস্যরসের মধ্যে মুখপাত্র জবাব দেন, “পাকিস্তান নিঃসন্দেহে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র।”
এরপর ফিল্ড মার্শালের বৈঠক সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে বিদেশি সাংবাদিকদের সেনাবাহিনীর কাছে যেতে বলেন তিনি।
পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ থিঙ্ক ট্যাংক, কৌশলগত প্রতিষ্ঠান এবং নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন।
এ বিষয়ে দেশটির আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ দপ্তর-আইএসপিআর এক বিবৃতিতে বলেছে, “এই আলোচনা ছিল খোলামেলা এবং ব্যাপক। এতে অংশ নেন জ্যেষ্ঠ গবেষক, বিশ্লেষক, নীতি-নির্ধারক এবং প্রভাবশালী আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা।”
উচ্চপর্যায়ের এই বৈঠকে পাকিস্তান-যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, আঞ্চলিক নিরাপত্তা, কৌশলগত সহযোগিতা এবং মধ্যপ্রাচ্যসহ দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।
পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির বর্তমানে পাঁচ দিনের সরকারি সফরে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। সফরের অংশ হিসেবে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজের সময় সরাসরি বৈঠক করেছেন। এটি ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একজন কর্মরত পাকিস্তানি সেনাপ্রধানের সঙ্গে একজন ক্ষমতাসীন মার্কিন প্রেসিডেন্টের মুখোমুখি বৈঠক।
সেনাপ্রধানের সফরসঙ্গী হিসেবে রয়েছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল মুহাম্মদ আসিম মালিক। এই যুগল অংশগ্রহণ কূটনৈতিকভাবে একটি শক্ত বার্তা বহন করে; পাকিস্তান চাচ্ছে নিরাপত্তা, গোয়েন্দা সহযোগিতা এবং কৌশলগত সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই বৈঠক দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
অন্যদিকে, এই সফর রাজনৈতিকভাবেও অনেক প্রশ্ন উত্থাপন করেছে, বিশেষ করে নির্বাচনের আগে আগে ট্রাম্পের সঙ্গে এমন এক উচ্চপর্যায়ের সামরিক বৈঠক ঘিরে। বেসামরিক নেতৃত্বকে পাশ কাটিয়ে ট্রাম্প কেন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের আমন্ত্রণ জানালেন, তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে পাকিস্তানের রাজনৈতিক পর্যায়ে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে।
ঢাকা/রাসেল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র য ক তর ষ ট র র র জন ত ক ইসর য় ল আস ম ম
এছাড়াও পড়ুন:
নেত্রকোনায় আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল
কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ব্যানারে নেত্রকোনায় ঝটিকা মিছিল হয়েছে। আজ শুক্রবার দুপুর থেকে মিছিল ও সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের পৃথক দুটি ভিডিও ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্ন গ্রুপে দেখা যাচ্ছে। মিছিল ও বক্তব্যের স্থান জেলা শহরের বড়বাজার এলাকা ও ছোটবাজার এলাকায় আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে নিশ্চিত হলেও সময় বলতে পারছে না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
মিছিলটির নেতৃত্ব দিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি, জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক পৌর মেয়র প্রশান্ত কুমার রায়।
পুলিশ ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নেত্রকোনা জেলা শহরসহ বিভিন্ন উপজেলায় নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের বেশ কয়েকটি ঝটিকা মিছিল হয়। অবশ্য এসব ঘটনায় মামলাসহ মিছিলে অংশ নেওয়া কিছু নেতা-কর্মীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। এরপর গত ১০ মে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল হাফিজ ও জেলা আওয়ামী লীগের নাম লেখা ব্যানার নিয়ে কয়েকজন যুবক একটি ঝটিকা মিছিল করেন। পরে সে মিছিলের একটি ভিডিও ফেসবুকে দেওয়া হয়। তবে ওই মিছিলের স্থান সম্পর্কে এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ। আজ শুক্রবার দুপুর থেকে প্রশান্ত কুমারের নেতৃত্বে বেশ বড় একটি ঝটিকা মিছিলের ভিডিও ফেসবুকে দেখা যাচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মিছিলটি সকাল ৬টার দিকে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এরপর প্রশান্ত কুমার দলীয় কার্যালয়ের সামনে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন।
প্রায় দেড় মিনিটের ভিডিওতে দেখা গেছে, লাল গেঞ্জি পরা প্রশান্ত কুমার রায় শারীরিক অসুস্থতার জন্য টেনে টেনে হাঁটছেন। তিনি ও তাঁর সঙ্গে থাকা নেতা-কর্মীরা স্লোগান দিচ্ছেন। মিছিলে ৩৫ থেকে ৪০ জন ছিলেন। তাঁদের বেশির ভাগের মুখে কালো কাপড় ও মাস্ক ছিল।
এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে প্রশান্ত কুমারের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আজ সকালে বড় বাজার এলাকায় হঠাৎ করে প্রশান্ত কুমারের নেতৃত্বে বেশ কিছু কর্মী-সমর্থক একত্র হয়ে জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে মিছিল শুরু করেন। পরে দলীয় কার্যালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সমালোচনা করে প্রায় তিন মিনিট বক্তব্য দেন। শেষে যে যাঁর মতো করে চলে যান।’
নেত্রকোনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাহ নেওয়াজ মুঠোফোনে বলেন, মিছিল ও বক্তব্য দেওয়ার দুটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি দেখেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, এটি ভোরের দিকে হয়েছে। আজ জেলা মোটরযান শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচন চলছে। পুলিশের অনেক সদস্য ওই নির্বাচনের দায়িত্বে আছেন। এ সুযোগে তাঁরা ঝটিকা মিছিল করে থাকতে পারেন। যেহেতু আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, কাজেই এ ধরনের মিছিল ও বক্তব্য বেআইনি। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।