এবার পুলিশের সংস্কার চাইল এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন
Published: 3rd, July 2025 GMT
এবার পুলিশের সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের নেতা–কর্মীরা। আজ বেলা তিনটায় চট্টগ্রামের ষোলশহরে তিন সংঘঠনের আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সংগঠক জুবাইর হাসান এ লক্ষ্যে আন্দোলনের ঘোষণা দেন। এই দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় নগরের ষোলশহর থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করার কথা জানিয়েছেন তিনি।
পটিয়ায় ছাত্রলীগ কর্মীকে গ্রেপ্তার, সড়ক অবরোধ ও ওসির অপসারণের দাবিসহ সার্বিক বিষয় নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম মুখ্য সংগঠক, ইমন সৈয়দ, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের (বাগছাস) কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক খান তালাত মাহমুদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব নিজাম উদ্দিন, যুগ্ম সদস্যসচিব ইবনে হোসাইন জিয়াদ, মুখ্য সংগঠক তাওসিফ ইমরোজ প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, ‘পুলিশের মধ্যে চলমান অনিয়ম, ক্ষমতার অপব্যবহার, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ও জনভোগান্তি দূর করতে দ্রুত সংস্কার প্রয়োজন। গতকাল ওসি জায়েদ নূরকে অপসারণ না করে রেঞ্জ অফিসে সংযুক্ত করা হয়েছে। এটি তো আমাদের দাবি ছিল না। আমাদের দাবি ছিল তাঁকে স্থায়ীভাবে অপসারণ করে বিচারের আওতায় আনা।’
এর আগে গত মঙ্গলবার রাত ৯টায় পটিয়ার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে থেকে নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের এক কর্মীকে আটক করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা। থানায় নিয়ে গেলে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা না থাকায় পুলিশ গ্রেপ্তার করেনি। এ নিয়ে পুলিশ ও নেতা-কর্মীদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। পরে রাতেই দুই পক্ষের মধ্যে দুই দফা সংঘর্ষ হয়। এতে দুই পক্ষের ১৯ জন আহত হয়েছেন বলে দাবি করে উভয় পক্ষ।
এ ঘটনার জের ধরে গতকাল সকালে পটিয়া থানা ঘেরাও ও ‘পটিয়া ব্লকেড’ কর্মসূচির ডাক দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সংগঠনের নেতা-কর্মীরা গতকাল সকাল ৯টা থেকেই থানা ঘেরাও শুরু করেন। পরে খণ্ড খণ্ড মিছিলে এসে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক অবরোধ করেন তাঁরা। প্রায় ৯ ঘণ্টা পর সড়ক ছাড়েন তাঁরা। একই দাবিতে উপমহাপুলিশ পরিদর্শক (ডিআইজি) কার্যালয়ের সামনের নগরের জাকির হোসেন সড়ক তিন ঘণ্টা অবরোধ করেন নেতা-কর্মীরা।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।
লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড
ঢাকা/লিপি