শ্রমিক দলের বহিষ্কৃত নেতার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি
Published: 4th, July 2025 GMT
ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলায় যুবক স্বামীকে রাতভর নির্যাতনের পর তাঁর স্ত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় করা মামলার ২ নম্বর আসামি শ্রমিক দলের বহিষ্কৃত নেতা মো. ফরিদ উদ্দিন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে ভোলা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. হাসান শাহাদাত তাঁর জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
আদালতের পুলিশ পরিদর্শক মো.
ওসি মহব্বত খান বলেন, মামলার প্রধান আসামি যুবদল কর্মী মো. আলাউদ্দিনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রক্রিয়াধীন। এ ছাড়া গতকাল সন্দেহভাজন হিসেবে আটক সরকারি তজুমদ্দিন ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের বহিষ্কৃত আহ্বায়ক মো. রাসেলকে জিজ্ঞাসাবাদের পর মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এ নিয়ে মামলার পাঁচ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হলো। বাকি আসামিদের ধরতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
গত সোমবার তজুমদ্দিন উপজেলায় শ্রমিক দল, যুবদল, ছাত্রদলের নেতা-কর্মীসহ সাতজনের বিরুদ্ধে এক গৃহবধূকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে একটি মামলা হয়। মামলার এজাহার, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার রাতে এক ব্যক্তিকে (৩০) তজুমদ্দিন উপজেলার একটি গ্রামে ডেকে নেন তাঁর তৃতীয় স্ত্রী (৪০)। পরে আসামিরা ওই ব্যক্তিকে আটকে রেখে চার লাখ টাকা দাবি করেন। একপর্যায়ে ওই ব্যক্তিকে রড দিয়ে পিটিয়ে আহত করা হয়। পরদিন রোববার সকালে তাঁর প্রথম স্ত্রী (৩০) আসামিদের কাছ থেকে স্বামীকে ছাড়িয়ে আনতে গিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন।
এ ঘটনার পর মামলার ২ নম্বর আসামি উপজেলা শ্রমিক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. ফরিদ উদ্দিনকে সংগঠন থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়। পরে সরকারি তজুমদ্দিন ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো. রাসেল ও যুগ্ম আহ্বায়ক জয়নাল আবেদীন ওরফে সজীবকেও বহিষ্কার করা হয়।
গণ অধিকারের বিক্ষোভএদিকে সারা দেশে দলবদ্ধ ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, দখলদারি ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে ভোলা প্রেসক্লাব চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশ ও গণমিছিল করেছেন গণ অধিকার পরিষদের জেলা শাখার নেতা-কর্মীরা। আজ শুক্রবার বিকেলে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন জেলা গণ অধিকার পরিষদের সাবেক সদস্যসচিব আতিকুর রহমান আবু তৈয়ব, সদর উপজেলার সাবেক আহ্বায়ক হাসান মাহমুদ, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সুমন দেওয়ান, লালমোহন উপজেলার আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল মামুন, সদর উপজেলার সাবেক সদস্যসচিব ফিরোজ আহমেদ প্রমুখ। সমাবেশ শেষে তাঁরা গণমিছিল বের করেন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, সারা দেশের মতো তজুমদ্দিনে এক নারী দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। পুলিশ মামলার আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করেছে। এখন মামলাটিকে দ্রুত বিচারের আওতায় এনে আসামিদের মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করতে হবে। আসামিরা শাস্তি না পেলে এ ধরনের ঘটনা ঘটতেই থাকবে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আস ম দ র ন উপজ ল উপজ ল র
এছাড়াও পড়ুন:
অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।
লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড
ঢাকা/লিপি