কুবিতে ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে কর্মচারীকে মারধরের অভিযোগ
Published: 5th, July 2025 GMT
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) রেজিস্ট্রার দপ্তরে কার্য সহকারী পদে সদ্য নিয়োগ পাওয়া এক কর্মচারীকে শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক মো. মেহেদী হাসান সোহাগ মারধর করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযুক্ত মো. মেহেদী হাসান সোহাগ কুবি শাখা ছাত্রদলের ২০২১ সালে ঘোষিত কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক। বর্তমানে তিনি একটি ব্যাংকে কর্মরত আছেন।
অপরদিকে, সদ্য নিয়োগ পাওয়া ভুক্তভোগী কর্মচারীর নাম আজাদ। গত বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) তার কর্মস্থলে যোগদানের দিন ছিল এবং ওইদিনই তিনি মারধরের শিকার হন।
আরো পড়ুন:
র্যাগিংয়ের অভিযোগে কুবির একটি ব্যাচের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ, তদন্ত কমিটি গঠন
নবীন শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত কুবি
শনিবার (৫ জুলাই) বিকেলে মারধরের বিষয়টি মুঠোফোনে প্রতিবেদকের কাছে স্বীকার করেন অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা মেহেদী হাসান বলেন, “যে নিয়োগটি হচ্ছে, সেখানে অন্য একটা পদে আমিও প্রার্থী ছিলাম। ঘটনার দিন সকালে জানতে পারি, ওই নিয়োগ স্বজনপ্রীতি বা অর্থের বিনিময়ে হয়েছে- যা আমি যাচাই করতে চেয়েছিলাম। এজন্য আমি তাকে (আজাদ) ফোন দিয়ে দেখা করার কথা বলি। সে বারবার বলছিল ‘আসছি’। কিন্তু পরে ফোন বন্ধ করে দেয়।”
তিনি বলেন, “পরে বিকেল ৫টার দিকে রেজিস্ট্রার অফিসে তার সঙ্গে দেখা হলে, আমাকে মিথ্যা বলার কারণে রাগের মাথায় আমি তাকে একটি থাপ্পড় দিয়ে ফেলি। পরবর্তীতে অফিস থেকে বের হলে তার সঙ্গে দেখা করে আবার বিষয়টি বুঝিয়ে বলি।”
তবে ভুক্তভোগী আজাদের বলেন, “আমাকে এখানে অনেকদিন চাকরি করতে হবে ভাই। আমি এই এলাকার কারো বিরুদ্ধে এ ঘটনায় বক্তব্য দিতে পারব না।” এটা বলেই তিনি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
এ ঘটনার দিন কুবি ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক আবুল বাশারও ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে। তবে বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি এ ঘটনার কিছুই জানেন না বলে মন্তব্য করেন।
ছাত্রদল নেতা আবুল বাশার বলেন, “ক্যাম্পাস সংলগ্ন এটিএম বুথের সামনে এক কর্মচারী ও এক শিক্ষার্থীর মধ্যে বাকবিতণ্ডা দেখে আমি থামানোর চেষ্টা করি। পাশে একজন দাঁড়িয়ে ছিলেন, পরে শুনলাম তার নাম আজাদ। তবে আমি তাকে চিনি না। তাই কে কাকে মারধর করেছে সেটা সঠিকভাবে শনাক্ত করার সুযোগ আমার ছিল না।”
এ ব্যাপারে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, “মারধরের বিষয়টি আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে, আমরা তদন্ত করছি। দ্রুততম সময়ে ব্যবস্থা নিয়ে নেব।”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড.
তিনি বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতেই আমরা তদন্ত করব। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সব জায়গায় সিসি ক্যামেরা রয়েছে। তাই তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে, তার আগে অবশ্যই কারো না কারো পক্ষ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিতে হবে।”
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল হাকিম বলেন, “এ বিষয়ে আমরা আগামী রবিবার একটি সভা করব। ইতোমধ্যে ভুক্তভোগীকে একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিতে বলা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর সেটি পর্যালোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।”
ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব শ বব দ য ছ ত রদল র ম রধর র তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
‘সাংস্কৃতিক জাগরণেই মুক্তি’
সাপ্তাহিক ‘পঙক্তি’র দ্বিতীয় বর্ষপূর্তিতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে নারীর সমান অধিকার, সাংস্কৃতিক জাগরণ ও মুক্তচিন্তার বিকাশ ছাড়া বৈষম্যহীন সমাজ গঠন সম্ভব নয় এমন মত প্রকাশ করেছেন বক্তারা।
শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে সাপ্তাহিক পঙক্তির দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আরো পড়ুন:
‘নো ওয়েজ বোর্ড, নো মিডিয়া’সহ ৩৮ দাবি সংবাদকর্মীদের
‘সাম্য, মর্যাদা ও আলোকিত সমাজের স্বপ্নে ৭১ ও ২৪ এর তরুণরা’
অনুষ্ঠানে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও কালের কণ্ঠের সম্পাদক হাসান হাফিজ বলেন, “নারীরা অন্যান্য ক্ষেত্রের মতো সাংবাদিকতার ক্ষেত্রেও পুরুষতান্ত্রিক নানা বৈষম্য ও হেনস্তার শিকার হন। আমরা দেখছি, অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ও নারী ও শিশুরা লাঞ্ছিত, নিপীড়িত হচ্ছে, এটি লজ্জার বিষয়। আমরা এমন সমাজ চাই না। আমরা চাই একটি সত্যিকারের বৈষম্যমুক্ত সমাজ, যেখানে নারী–পুরুষের সমান অধিকার নিশ্চিত থাকবে।”
প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভূঁইয়া বলেন, “আমরা বর্তমানে একটি সাংস্কৃতিকভাবে খারাপ সময় পার করছি। একটি নতুন রাজনৈতিক আন্দোলন বারবার ব্যর্থ হয়ে যাচ্ছে। সর্বক্ষেত্রে যে অবক্ষয় দেখা দিয়েছে, তাতে একমাত্র একটি সাংস্কৃতিক বিপ্লবই আমাদের জাতিকে রক্ষা করতে পারে।”
কবি ও কলামিস্ট সোহরাব হাসান বলেন, “ফেসবুক–ইউটিউবের যুগে একটি সাহিত্য পত্রিকা টিকিয়ে রাখা অত্যন্ত কঠিন কাজ। বর্তমানে সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে এক ধরনের বৈরী পরিবেশ তৈরি হয়েছে। আক্রান্ত হচ্ছে মাজার, দরগা, শিল্পী ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক তৎপরতা। এই আক্রমণ জাতিসত্তার উপর আক্রমণ, আমাদের শিল্প–সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সুকুমার ভিত্তির উপর আঘাত। এর বিরুদ্ধে সম্মিলিতভাবে লড়াই করতে হবে।”
সভাপতির বক্তব্যে সাপ্তাহিক পঙ্ক্তির সম্পাদক কবি জান্নাতুল ফেরদৌস পান্না ওরফে পান্না বেগম বলেন, “আজ আমি খুব আনন্দিত, উচ্ছ্বসিত। আমি একজন সফল নারী বলে নিজেকে সম্মান করি। আমি ২৬ বছর ধরে কাজ করি। কারোর মুখাপেক্ষী হইনি। একটি পত্রিকা কারোর সহযোগিতা ছাড়া নিয়মিত প্রকাশ করা এতোটা সহজ নয়। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে আজকের এই জায়গাটি তৈরি হয়েছে।”
বাংলাদেশের আলো পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক মফিজুর রহমান বাবু বলেন, “সাপ্তাহিক পঙ্ক্তি পত্রিকাটি নিয়ে প্রথম থেকেই আমার একটি চিন্তা ছিল। পত্রিকাটির নাম পঙ্ক্তি কেন? খুব চিন্তা করে এর দুইটি কারণ খুঁজে পেলাম। একটি হলো-এই পত্রিকাটির সম্পাদক একজন কবি ও সাংবাদিক। উনার কবিসত্তার চিন্তাধারা থেকে এই নামটি নির্ধারণ করেছেন। কারণ পঙ্ক্তি শব্দের অর্থ কবিতার লাইন বা সারি। আর দ্বিতীয়টি হলো- সম্পাদকের একমাত্র কন্যার নাম পঙ্ক্তি। সন্তানের প্রতি একজন মায়ের যে অসাধারণ ভালোবাসা, তারই বহিঃপ্রকাশ হলো সাপ্তাহিক পঙ্ক্তি।”
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার সিনিয়র সাংবাদিক মানিক মুনতাসির, কবি ও সাংবাদিক বজলুর রহমান, কবি মোশাররফ হোসেন ইউসূফ, বাংলানিউজের সাংবাদিক তুলনা আফরিন প্রমুখ।
ঢাকা/এসবি