মুরাদনগরে গ্রেপ্তার শাহ পরান কারাগারে
Published: 5th, July 2025 GMT
কুমিল্লার মুরাদনগরে ধর্ষণের শিকার নারীকে নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার শাহ পরানকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। গতকাল শনিবার দুপুরে কুমিল্লার আদালতের বিচারক মমিনুল হক এ নির্দেশ দেন। শাহ পরান ধর্ষণ মামলায় গ্রেপ্তার ফজর আলীর আপন ভাই।
পুলিশ জানায়, গত ২৬ জুন রাতে মুরাদনগরে ধর্ষণের অভিযোগে ফজর আলী ও এক নারীকে ঘরের ভেতর মারধর করা হয়। এ সময় তাদের ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। পরে এ ঘটনায় ওই নারী মুরাদনগর থানায় প্রথমে ধর্ষণ এবং দু’দিন পর পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করেন। এরই মধ্যে ধর্ষণের মামলায় ফজর আলীকে ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি এখন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ছাড়া পর্নোগ্রাফি আইনের মামলায় গ্রেপ্তার হন সুমন, রমজান, আরিফ ও অনিক। তারা তিন দিনের পুলিশ রিমান্ডে আছেন।
ওই নারী পরে সাংবাদিকদের বলেন, টাকা ধার নেওয়া নিয়ে ফজর আলীর সঙ্গে তাদের পরিবারের পরিচয় হয়। এ সূত্র ধরেই ফজর আলী বাড়িতে ঢুকে তাঁকে ‘ধর্ষণ’ করে। অন্যরা তাঁকে নির্যাতন করে ভিডিও করে।
এর আগে র্যাব গত বৃহস্পতিবার বিকেলে শাহ পরানকে বুড়িচং থেকে গ্রেপ্তার করে শুক্রবার মুরাদনগর থানায় হস্তান্তর করে।
মুরাদনগর থানার ওসি বলেন, রোববার শাহ পরানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন করা হবে। শাহ পরান ভিডিও ভাইরাল করার পরিকল্পনাকারী।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
নরসিংদীতে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ, গুলিতে বৃদ্ধ নিহত
নরসিংদীতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন। এ সময় গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন অন্তত পাঁচজন। আজ বৃহস্পতিবার ভোর পাঁচটার দিকে সদর উপজেলার মুরাদনগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তির নাম মো. ইদন মিয়া (৬০)। তিনি মুরাদনগর এলাকার বাসিন্দা। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত ব্যক্তিদের মধ্যে নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে মোস্তাকিম (৩০) ও আবুল হোসেন (৬০) নামের দুজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ, স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা ও হতাহত ব্যক্তিদের স্বজনদের সূত্রে জানা গেছে, ৫ আগস্টের পর আলোকবালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতা-কর্মী আত্মগোপনে গেলে সেখানে বিএনপির দুটি পক্ষকে সক্রিয় হতে দেখা যায়। একটি পক্ষে ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক শাহ আলম চৌধুরী এবং আরেক পক্ষে সদ্য বহিষ্কৃত সদস্যসচিব আবদুল কাইয়ুম মিয়া নেতৃত্ব দেন। মেঘনা নদী থেকে অপরিকল্পিতভাবে বালু তোলাসহ নানা অভিযোগে সম্প্রতি দলীয় পদ থেকে বহিষ্কৃত হন আবদুল কাইয়ুম। স্থানীয় বিএনপির রাজনীতিতে তাঁর সক্রিয় থাকার বিষয়টি মানতে পারছিল না শাহ আলম পক্ষ।
অভিযোগ আছে, আবদুল কাইয়ুমকে ঠেকাতে শাহ আলম চৌধুরীর ইন্ধন ও হস্তক্ষেপে আওয়ামী নেতা-কর্মীদের আবার এলাকায় ফেরানোর পরিকল্পনা করা হয়। এর অংশ হিসেবে আজ ভোর পাঁচটার দিকে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে এলাকায় ফিরতে শুরু করে আত্মগোপনে থাকা স্থানীয় আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী। এ খবর পেয়ে আবদুল কাইয়ুমের সমর্থকেরা বাধা দেয়। এ সময় উভয় পক্ষ টেঁটা, আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে ইদন মিয়াসহ অন্তত ছয়জন গুলিবিদ্ধ হন। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে ইদন মিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নরসিংদী সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ফরিদা গুলশানারা কবীর। তিনি জানান, ইদন মিয়াকে বুকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আনায় হয়। ওই সময় তিনি মৃত ছিলেন। মরদেহ এই হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে শাহ আলম চৌধুরী ও আবদুল কাইয়ুম মিয়ার ব্যবহৃত মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
নরসিংদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমদাদুল হক বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।