কুমিল্লার মুরাদনগরে ধর্ষণের শিকার নারীকে নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার শাহ পরানকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। গতকাল শনিবার দুপুরে কুমিল্লার আদালতের বিচারক মমিনুল হক এ নির্দেশ দেন। শাহ পরান ধর্ষণ মামলায় গ্রেপ্তার ফজর আলীর আপন ভাই।

পুলিশ জানায়, গত ২৬ জুন রাতে মুরাদনগরে ধর্ষণের অভিযোগে ফজর আলী ও এক নারীকে ঘরের ভেতর মারধর করা হয়। এ সময় তাদের ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। পরে এ ঘটনায় ওই নারী মুরাদনগর থানায় প্রথমে ধর্ষণ এবং দু’দিন পর পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করেন। এরই মধ্যে ধর্ষণের মামলায় ফজর আলীকে ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি এখন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ছাড়া পর্নোগ্রাফি আইনের মামলায় গ্রেপ্তার হন সুমন, রমজান, আরিফ ও অনিক। তারা তিন দিনের পুলিশ রিমান্ডে আছেন।

ওই নারী পরে সাংবাদিকদের বলেন, টাকা ধার নেওয়া নিয়ে ফজর আলীর সঙ্গে তাদের পরিবারের পরিচয় হয়। এ সূত্র ধরেই ফজর আলী বাড়িতে ঢুকে তাঁকে ‘ধর্ষণ’ করে। অন্যরা তাঁকে নির্যাতন করে ভিডিও করে।

এর আগে র‍্যাব গত বৃহস্পতিবার বিকেলে শাহ পরানকে বুড়িচং থেকে গ্রেপ্তার করে শুক্রবার মুরাদনগর থানায় হস্তান্তর করে।

মুরাদনগর থানার ওসি বলেন, রোববার শাহ পরানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন করা হবে। শাহ পরান ভিডিও ভাইরাল করার পরিকল্পনাকারী।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম র দনগর শ হ পর ন

এছাড়াও পড়ুন:

মুরাদনগরে মা ও ছেলে-মেয়েকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনার সূত্রপাত যেভাবে

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় ‘মাদক সংশ্লিষ্টতার’ অভিযোগ এনে দুই সন্তানসহ নারীকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে উপজেলার বাংগরা বাজার থানার কড়ইবাড়ী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। তবে স্থানীয়দের দাবি, একটি মোবাইল ছিনতাইয়ের ঘটনা থেকে ৩ জনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পুলিশ সুপার নাজির আহমেদ খাঁন, ডিবি সিআইডি পিবিআই এবং র‍্যাব কর্মকর্তারা।

নিহতরা হলেন- রুবি আক্তার (৫৮), তার মেয়ে জোনাকি আক্তার (৩২) এবং ছেলে মো. রাসেল(৩৫)। এছাড়া রুবি আক্তারের আরেক মেয়ে রুমা আক্তারকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

স্থানীয়রা জানান, বুধবার বিকেলে রুবির মেয়ের জামাই মনির হোসেন স্থানীয় স্কুল শিক্ষক রুহুল আমিনের একটি মোবাইল ছিনতাই করে। এ ঘটনার জেরে বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয় ইউপি সদস্য বাচ্চু মিয়া এবং আকাবপুর ইউপি চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লাল রুবিকে জিজ্ঞাসা করতে গেলে তাদের ওপর হামলা করা হয়। এতে এলাকায় চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এ সময় ইউপি চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লাল এবং ইউপি সদস্য বাচ্চু মিয়া দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। খবর পেয়ে এলাকার শতাধিক লোক ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদেরকে গণপিটুনি দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই রুবি, তার ছেলে রাসেল এবং মেয়ে জোনাকি নিহত হয়। আহত হয় আরেক মেয়ে রুমা আক্তার।  

আকাবপুর ইউপি চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লাল বলেন, মোবাইল ছিনতাইয়ের একটি ঘটনা আমি জিজ্ঞেস করতে গেলে আমাকে এবং ইউপি সদস্য বাচ্চু মিয়াকে মারধর করা হয়। আমরা সম্মান বাঁচাতে ঘটনা এড়িয়ে এলাকায় চলে যাই। পরে গ্রামবাসীর সঙ্গে তারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে গণপিটুনিতে মাদক ব্যবসায়ী রুবি, তার ছেলে এবং মেয়ে নিহত হয়। আসলে এমন হত্যাকাণ্ড কোনভাবেই কাম্য নয়। 

বাঙ্গুরা বাজার থানার ওসি মাহফুজুর রহমান বলেন, নিহত রুবি আক্তার, তার মেয়ে জোনাকি এবং ছেলে রাসেল ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছে। তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে মাদকসহ অন্যান্য অপরাধে মামলা রয়েছে। 

কুমিল্লা পুলিশ সুপার নাজির আহমেদ খান বলেন, যারা হতাহত হয়েছে তারা অপরাধী হয়ে থাকলে তাদেরকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দিতে পারতো। আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে যারা এই হত্যাকাণ্ড করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মুরাদনগরে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব থেকে সামাজিক অস্থিরতা
  • মুরাদনগরে ছেলেমেয়েসহ মাকে হত্যা: ৬৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তা
  • কুমিল্লায় মা ও দুই সন্তানকে পিটিয়ে হত্যা: ২৪ ঘণ্টাতেও মামলা হয়নি 
  • ভাইয়ের ওপর শোধ নিতে নারীকে নির্যাতনের ভিডিও ছড়ান পরান, তিনিই মবের পরিকল্পনাকারী: র‍্যাব
  • মুরাদনগরের ঘটনার ‘পরিকল্পনাকারী’ শাহ পরান গ্রেপ্তার
  • কুমিল্লায় মা-দুই সন্তানকে পিটিয়ে হত্যার ২৪ ঘণ্টায়ও মামলা হয়নি 
  • মুরাদনগরে নারীকে নির্যাতনের ভিডিও ছড়ানোর ‘হোতা’ শাহ পরাণ গ্রেপ্তার
  • মুরাদনগরের নারীকে নির্যাতনের ভিডিও ছড়ানোর ‘হোতা’ শাহ পরাণ
  • মুরাদনগরে মা ও ছেলে-মেয়েকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনার সূত্রপাত যেভাবে