ওয়াশিংটনের পাল্টা শুল্ক কার্যকরের সময় পেছানোয় স্বস্তিতে ঢাকা
Published: 7th, July 2025 GMT
বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের ওপর ওয়াশিংটনের আরোপিত পাল্টা শুল্ক কার্যকর করার সময়সীমা তিন সপ্তাহ পিছিয়ে দেওয়ায় কিছুটা স্বস্তি বোধ করছে ঢাকা। এ শুল্ক প্রত্যাহার বা কমাতে চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য চলমান দরকষাকষিতে বাড়তি সময় পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের কাছে কোন পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা চায় তার তালিকাসহ প্রস্তাবিত চুক্তির 'এনেক্সার ডকুমেন্ট' বাংলাদেশকে দেওয়ার কথা থাকলেও সোমবার বিকেল পর্যন্ত তা পাওয়া যায়নি বলে সমকালকে নিশ্চিত করেছেন বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান। এছাড়া প্রস্তাবিত চুক্তি নিয়ে দরকষাকষির অংশ হিসেবে মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির (ইউএসটিআর) সঙ্গে বাংলাদেশের একটি বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। ইউএসটিআরের পক্ষ থেকে তা স্থগিত করে আগামী বুধবার সভার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তাতে সম্মতি দিয়েছে বাংলাদেশ।
এ প্রসঙ্গে বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান সমকালকে বলেন, ‘চুক্তি নিয়ে ৯ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আরও একটি মিটিং হবে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড.
ইউএসটিআরের সঙ্গে চলমান নেগোসিয়েশনে সরাসরি অংশ নিতে বাণিজ্য সচিবকে যুক্তরাষ্ট্র যাওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। সোমবার বাণিজ্য সচিবের যুক্তরাষ্ট্র যাওয়ার কথা থাকলেও ইউএসটিআর থেকে চুক্তির ডকুমেন্ট না পাওয়ায় যেতে পারেননি তিনি।
সচিব বলেন, ‘৩ জুলাইয়ের বৈঠকে এই ডকুমেন্ট পাঠানোর বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে। বৈঠকে আরও জানানো হয় যে, স্বল্পোন্নত দেশগুলোর (এলডিসি) যুক্তরাষ্ট্র আলাদা কিছু ভাবছে, এ জন্যই হয়তো ডকুমেন্ট পাঠাতে দেরি হচ্ছে। তারা ডকুমেন্ট পাঠানোর পর দুই-একদিনের মধ্যে বাংলাদেশের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করে আমি যুক্তরাষ্ট্রে যাব।’
তিনি বলেন, 'ওখানে যাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র যদি আমাদের কাছে গাড়ির ওপর শুল্কমুক্ত সুবিধা চায়, সেখানে বসে তো আমরা কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারবো না। কারণ জাপানের সঙ্গে আমাদের ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট চুক্তি স্বাক্ষরের নেগোসিয়েশন চলছে। জাপান তাদের গাড়ির ওপর শুল্কমুক্ত সুবিধার ক্ষেত্রেও আমরা রাজি হইনি। যুক্তরাষ্ট্র আমাদের কাছে কী প্রস্তাব দেবে এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের সিদ্ধান্ত নিয়ে যেতে হবে।'
বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে গত ২ এপ্রিল বিভিন্ন দেশের ওপর ‘পাল্টা শুল্ক’ আরোপ করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বাংলাদেশের পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক ঘোষণা করা হয় ৩৭ শতাংশ। তবে ৯ এপ্রিল পাল্টা শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন প্রেসিডেন্ট। গত রোববার মার্কিন প্রশাসন জানিয়েছে, সব দেশের ওপর বাড়তি শুল্ক আগামী ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র প রস ত ব র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
আলোচনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত বাড়তি শুল্ক কার্যকর হবে না
বেশ কিছু বিষয়ে মতপার্থক্য থাকায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের শুল্ক চুক্তির খসড়া চূড়ান্ত হয়নি। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের বাড়তি ৩৭ শতাংশ শুল্ক যাতে আরোপ না হয়, তার জন্য সম্ভাব্য এ চুক্তির বিষয়ে দর-কষাকষি অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ। ৯ জুলাইয়ের মধ্যে সবকিছু চূড়ান্ত করে চুক্তি করা না গেলেও ঢাকার ওপর বাড়তি শুল্ক কার্যকর না করার আশ্বাস দিয়েছে ওয়াশিংটন। গত বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির (ইউএসটিআর) সঙ্গে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের বৈঠকে এ আশ্বাস দেওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। সব দেশের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপের ওপর তিন মাসের স্থগিতাদেশ শেষ হচ্ছে ৯ জুলাই।
ইউএসটিআরের সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, প্রধান উপদেষ্টার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমানসহ ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা। সভায় অনলাইনে যুক্ত ছিলেন বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান।
গত ২ এপ্রিল বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে বিভিন্ন দেশের ওপর ‘পাল্টা শুল্ক’ আরোপ করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বাংলাদেশের পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক ঘোষণা করা হয় ৩৭ শতাংশ। তবে ৯ এপ্রিল পাল্টা শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন প্রেসিডেন্ট। যদিও সব দেশের ওপর ন্যূনতম ১০ শতাংশ বাড়তি শুল্ক কার্যকর করা হয়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, শুল্ক ইস্যুতে চুক্তির খসড়া নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চলছে। যুক্তরাষ্ট্রকে লক্ষ্য করে বাজেটে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে ইউএসটিআরের সঙ্গে বৈঠক হয়। বৈঠকে চুক্তির খসড়া নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। তবে ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে যে উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বাড়তি শুল্ক কার্যকর করা হবে না। এ ছাড়া বৈঠকে ইউএসটিআর আশ্বাস দিয়েছে যে ছাড় পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিযোগীদের চেয়ে পিছিয়ে থাকবে না বাংলাদেশ ।
বৈঠকে জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে কোন কোন পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা চায়, তার একটি তালিকা দেবে। তবে গতকাল এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এ সংক্রান্ত তালিকা পায়নি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সূত্র জানায়, তালিকা হাতে পেলে সেটি সরকারের অন্যান্য অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে চূড়ান্ত করে তা সঙ্গে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যাবেন বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান। ৯ অথবা
১০ জুলাই শুল্ক চুক্তি নিয়ে ইউএসটিআরের সঙ্গে আরও একটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।