হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলা সদরের মানুষের কাছে আজ সকালটা ছিল বিভীষিকাময়। শহরের প্রধান সড়কজুড়ে ছিল ধ্বংসের স্তূপ। দেখে মনে হয়, শহরটির ওপর দিয়ে বয়ে গেছে বড় ধরনের এক ঝড়। উপজেলা সদরের দুই দল গ্রামবাসীর সংঘর্ষের ঘটনার পর এমন দৃশ্য দেখা গেছে শহরটিতে।

সংঘাতটির সূচনা হয় স্থানীয় দুজন গণমাধ্যমকর্মীর বিরোধ থেকে। পরে তা এলাকাভিত্তিক দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে জড়ানো এ সংঘাতে প্রাণ হারান একজন, আহত হন শতাধিক ব্যক্তি। সংঘর্ষকালে শহরে বেশ কিছু ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেশ কিছু দিন ধরে দৈনিক আলোকিত সকাল পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি আশায়েদ আলী ও হবিগঞ্জের সময় পত্রিকার প্রকাশক ও ব্যবস্থাপনা সম্পাদক সেলিম তালুকদারের মধ্যে পেশাগত ও প্রেসক্লাব নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছে। এ নিয়ে উভয়ই ফেসবুকে পরস্পরের বিরুদ্ধে লেখালেখি করছিলেন। আশায়েদ আলীকে ৪ জুলাই নবীগঞ্জ উপজেলা সদরের মধ্যবাজারে একটি বিপণিবিতানের সামনে পেয়ে তিমিরপুর গ্রামের বাসিন্দা ও গণমাধ্যমকর্মী সেলিম তালুকদার এবং তাঁর লোকজন মারধর করেন বলে অভিযোগ। এ সময় বিপণিবিতানের ব্যবসায়ীরা হামলাকারীদের মধ্য থেকে দুই তরুণকে আটক করে পুলিশে দেন। ওই দুই তরুণের বাড়ি তিমিরপুর গ্রামে।

এ ঘটনায় তিমিরপুর গ্রামের লোকজন উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। তাঁদের অভিযোগ, উপজেলার আনমুন গ্রামের লোকজন তাঁদের দুজনকে ধরে পুলিশে দিয়েছেন। এ নিয়ে দু-তিন দিন ধরে ওই দুই গ্রামের লোকজন মারামারি করেন কয়েক দফা। একপর্যায় এ মারামারি এলাকার মৎস্যজীবী সম্প্রদায় ও অমৎস্যজীবী সম্প্রদায়ে বিভক্ত হয়ে পড়ে। আনমুন গ্রামের অধিকাংশ বাসিন্দা মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের। এ সূত্র ধরে সর্বশেষ গতকাল সোমবার দুপুরে ঘোষণা দিয়ে আনমুন ও তিমিরপুর গ্রামের লোকজন লাঠিসোঁটা, বল্লমসহ দেশি অস্ত্র নিয়ে নিয়ে জড়ো হতে থাকেন নিজ নিজ এলাকায়। তিমিরপুর গ্রামের পক্ষ নেয় পার্শ্ববর্তী পূর্ব তিমিরপুর, পশ্চিম তিমিরপুর, আলিপুর, চড়গাঁও এবং আনমুন গ্রামের পক্ষ নেয় রাজনগর, গন্ধা, রাজাবাদসহ কয়েকটি গ্রাম।

সংঘাতটির সূচনা হয় স্থানীয় দুজন গণমাধ্যমকর্মীর বিরোধ থেকে। পরে তা এলাকাভিত্তিক দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। আজ মঙ্গলবার সকালে শহরের মধ্য বাজার থেকে তোলা.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ র ম র ল কজন আনম ন উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন

অন্তর্বর্তী সরকার সময়মতো ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের পর তিনি তাঁর আগের কাজে ফিরে যাবেন।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাকে এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন থেকে ভিডিও ফোনকলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেন জর্জিয়েভা।

এ সময় তাঁরা বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার, আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পূর্ববর্তী চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।

আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এই কৃতিত্ব তাঁর নিজের।

অর্থনীতির সংকটকালীন পরিস্থিতি স্মরণ করে আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘আপনার অর্জন আমাকে মুগ্ধ করেছে। অল্প সময়ে আপনি অনেক কিছু করেছেন। যখন অবনতির ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি ছিল, তখন আপনি দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনি সঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তি।’

ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বিশেষভাবে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতা এবং রিজার্ভ পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের সাহসী পদক্ষেপ, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার প্রবর্তনের প্রশংসা করেন।

অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের এক সংকটময় সময়ে আইএমএফ প্রধানের অবিচল সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘চমৎকার সহায়তার জন্য ধন্যবাদ।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত বছর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ সুগম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।

কথোপকথনে আইএমএফ প্রধান অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতে গভীর সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘শক্ত অবস্থানে থাকতে হলে সংস্কার অনিবার্য। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অমূল্য মুহূর্ত।’

অধ্যাপক ইউনূস জানান, তাঁর সরকার ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন এবং রাজস্ব সংগ্রহ জোরদারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এক বিধ্বস্ত ও সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। কিছু ব্যক্তি আক্ষরিক অর্থে ব্যাগভর্তি টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।’

এ ছাড়া আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল নেপালে চলমান যুব আন্দোলন এবং আসিয়ানভুক্তির জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা। অধ্যাপক ইউনূস আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি জোরদারের লক্ষ্যে ঢাকার বৃহৎ অবকাঠামো উদ্যোগ—যেমন নতুন বন্দর ও টার্মিনাল প্রকল্প—সম্পর্কেও অবহিত করেন।

আলোচনাকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফের রিজার্ভ ৩১ বিলিয়ন ডলার 
  • আমার স্বামীর উপরে কু-নজর পড়েছে: অঙ্কিতা
  • সম্পদ বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন করায় সাংবাদিকের ওপর ক্ষেপলেন ট্রাম্প
  • ‘আমি থানার ওসি, আপনার মোবাইল হ্যাকড হয়েছে’
  • অস্ট্রেলীয় সাংবাদিকের প্রশ্নে কেন চটে গেলেন ট্রাম্প, আলবানিজের কাছে নালিশেরও হুমকি দিলেন
  • কালিয়াকৈরে এক মাসে ২০ ডাকাত গ্রেপ্তার 
  • বাঁশির সুরে বিরহের কষ্ট ভুলতে চান রিকশাচালক শফিকুল
  • রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন
  • ট্রেন থেকে পড়ে ৮ দিন ধরে হাসপাতালে ছেলে, ফেসবুকে ছবি দেখে ছুটে এলেন মা
  • ভাড়া বাসায় একা থাকতেন বৃদ্ধা, তার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার