দুই সাংবাদিকের বিরোধ থেকে সূত্রপাত, এরপর নবীগঞ্জ শহরে সংঘর্ষ-আগুন, ঝরল প্রাণ
Published: 8th, July 2025 GMT
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলা সদরের মানুষের কাছে আজ সকালটা ছিল বিভীষিকাময়। শহরের প্রধান সড়কজুড়ে ছিল ধ্বংসের স্তূপ। দেখে মনে হয়, শহরটির ওপর দিয়ে বয়ে গেছে বড় ধরনের এক ঝড়। উপজেলা সদরের দুই দল গ্রামবাসীর সংঘর্ষের ঘটনার পর এমন দৃশ্য দেখা গেছে শহরটিতে।
সংঘাতটির সূচনা হয় স্থানীয় দুজন গণমাধ্যমকর্মীর বিরোধ থেকে। পরে তা এলাকাভিত্তিক দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে জড়ানো এ সংঘাতে প্রাণ হারান একজন, আহত হন শতাধিক ব্যক্তি। সংঘর্ষকালে শহরে বেশ কিছু ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেশ কিছু দিন ধরে দৈনিক আলোকিত সকাল পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি আশায়েদ আলী ও হবিগঞ্জের সময় পত্রিকার প্রকাশক ও ব্যবস্থাপনা সম্পাদক সেলিম তালুকদারের মধ্যে পেশাগত ও প্রেসক্লাব নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছে। এ নিয়ে উভয়ই ফেসবুকে পরস্পরের বিরুদ্ধে লেখালেখি করছিলেন। আশায়েদ আলীকে ৪ জুলাই নবীগঞ্জ উপজেলা সদরের মধ্যবাজারে একটি বিপণিবিতানের সামনে পেয়ে তিমিরপুর গ্রামের বাসিন্দা ও গণমাধ্যমকর্মী সেলিম তালুকদার এবং তাঁর লোকজন মারধর করেন বলে অভিযোগ। এ সময় বিপণিবিতানের ব্যবসায়ীরা হামলাকারীদের মধ্য থেকে দুই তরুণকে আটক করে পুলিশে দেন। ওই দুই তরুণের বাড়ি তিমিরপুর গ্রামে।
এ ঘটনায় তিমিরপুর গ্রামের লোকজন উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। তাঁদের অভিযোগ, উপজেলার আনমুন গ্রামের লোকজন তাঁদের দুজনকে ধরে পুলিশে দিয়েছেন। এ নিয়ে দু-তিন দিন ধরে ওই দুই গ্রামের লোকজন মারামারি করেন কয়েক দফা। একপর্যায় এ মারামারি এলাকার মৎস্যজীবী সম্প্রদায় ও অমৎস্যজীবী সম্প্রদায়ে বিভক্ত হয়ে পড়ে। আনমুন গ্রামের অধিকাংশ বাসিন্দা মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের। এ সূত্র ধরে সর্বশেষ গতকাল সোমবার দুপুরে ঘোষণা দিয়ে আনমুন ও তিমিরপুর গ্রামের লোকজন লাঠিসোঁটা, বল্লমসহ দেশি অস্ত্র নিয়ে নিয়ে জড়ো হতে থাকেন নিজ নিজ এলাকায়। তিমিরপুর গ্রামের পক্ষ নেয় পার্শ্ববর্তী পূর্ব তিমিরপুর, পশ্চিম তিমিরপুর, আলিপুর, চড়গাঁও এবং আনমুন গ্রামের পক্ষ নেয় রাজনগর, গন্ধা, রাজাবাদসহ কয়েকটি গ্রাম।
সংঘাতটির সূচনা হয় স্থানীয় দুজন গণমাধ্যমকর্মীর বিরোধ থেকে। পরে তা এলাকাভিত্তিক দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। আজ মঙ্গলবার সকালে শহরের মধ্য বাজার থেকে তোলা.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ র ম র ল কজন আনম ন উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
পরিবারকে না জানিয়ে কুয়াকাটায় ঘুরতে যান ‘নিখোজ’ জনতা ব্যাংকের ডিজিএম: পুলিশ
বাসায় ফিরেছেন রাজধানীর খিলক্ষেত থেকে ‘নিখোঁজ’ জনতা ব্যাংকের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মুশফিকুর রহমান। আজ রোববার সকালে তিনি বাসায় ফেরেন। পরিবারের বরাতে খিলক্ষেত থানার ওসি সাজ্জাদ হোসেন সমকালকে জানান, জনতা ব্যাংকের ডিজিএম মুশফিকুর রহমান আজ রোববার সকালে বাসায় ফিরেছেন। ভুল করে বাসায় মুঠোফোন রেখে বের হয়েছিলেন তিনি। এরপর কুয়াকাটায় ঘুরতে যান।
এর আগে গত শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার পর থেকে মুশফিকুরের কোনো খোঁজ পাচ্ছিল না তার পরিবার। এ ঘটনায় মুশফিকুরের সন্ধান চেয়ে তার পরিবার খিলক্ষেত থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে।
খিলক্ষেত থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজ্জাদ হোসেন বলেন, জনতা ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের ডিজিএম (মানব সম্পদ বিভাগ) মুশফিকুর রহমান নান্নু (৫৮) খিলক্ষেতের বাসা থেকে নিখোঁজ হন। এরপর তার পরিবার গতকাল শনিবার খিলক্ষেত থানায় সাধারণ ডায়েনি (জিডি) করেন।
ওসি সাজ্জাদ হোসেন আরও বলেন, মুশফিকুর বাসা থেকে বের হওয়ার সময় মোবাইল ফোন সঙ্গে করে নিয়ে যাননি। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, বাসার পাশের মসজিদে তিনি প্রবেশ করেননি।
মুশফিকুরের ভাই জিয়াউর রহমান জানান, তার বড় ভাই জনতা ব্যাংকের মতিঝিলে প্রধান কার্যালয়ের ডিজিএম। তাদের বাসা খিলক্ষেত পূর্ব নামাপাড়ায়। টানা তিন দিন (ব্যাংক) বন্ধ থাকায় তিনি (মুশফিকুর) কুয়াকাটায় ঘুরতে গিয়েছিলেন। যাওয়ার সময় ভুল করে মোবাইল ফোন রেখে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফেরার গাড়ি মিস করেছেন, এজন্য পরদিন ফিরতে পারেননি। গতকাল শনিবার বিকেলে আমাদের বিষয়টা জানান। এরপর আজ সকালে তিনি বাসায় ফিরে এসেছেন। একটা ভুল–বোঝাবুঝি হয়েছে।