ভোলায় সিঁধ কেটে ঘরে ঢুকে এক গৃহবধূকে ধর্ষণ করেছে তাঁরই এক প্রতিবেশী ও তার সহযোগী। নারায়ণগঞ্জে এক কিশোরী স্কুল থেকে ফেরার পথে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে। অভিযুক্তদের হুমকির মুখে এলাকা ছেড়ে গেছে তার পরিবার। কুষ্টিয়ায় সন্তানকে হত্যার ভয় দেখিয়ে মাকে ধর্ষণের ঘটনায় দেবরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ধর্ষণের ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি
ভোলা সদর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নে সিঁধ কেটে ঘরে ঢুকে গৃহবধূকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে এ ঘটনা ঘটে। গতকাল ওই নারীকে ভোলা ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গৃহবধূ জানান, মঙ্গলবার রাতে তিনি তাঁর দুই সন্তানকে নিয়ে ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। মধ্যরাতে প্রতিবেশী কামাল মাঝি ও তার এক সহযোগী সিঁধ কেটে ঘরে ঢুকে তাঁকে ধর্ষণ করে। বিষয়টি প্রকাশ করলে ধারণ করা ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় তারা। স্বামী বাড়ির বাইরে থাকায় সকালে গৃহবধূ তাঁর বাবার বাড়ির লোকজনকে জানান।
হাসপাতালের চিকিৎসক তায়েবুর রহমান জানান, গৃহবধূর মেডিকেল পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। ভোলা সদর মডেল থানার ওসি আবু শাহদৎ মো.
তবে বিষয়টিকে ষড়যন্ত্র দাবি করে অভিযুক্ত কামালের বাবা তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘ওই নারীর পরিবারের সঙ্গে তাদের বিরোধ আছে। আমার ছেলে বিদেশ যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে, এ সময় মামলা দিয়ে তাকে ফাঁসানো হচ্ছে।’
হুমকিতে এলাকাছাড়া স্কুলছাত্রীর পরিবার
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের জামপুর ইউনিয়নে গত সোমবার অষ্টম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে। কিশোরীর মা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযুক্তদের হুমকির মুখে এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছে পরিবারটি।
অভিযুক্তরা হলেন জামপুরের হাতুরাপাড়ার আব্দুল্লাহ, লাল চান মিয়া ও ফয়েজ ভূঁইয়া। এলাকাবাসী জানান, ধর্ষণের ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে কিশোরীর মাকে ভয় দেখাচ্ছে সাত্তার ও আক্কাস আলীর নেতৃত্বে একটি দল। পরিবারটিকে এক লাখ টাকা দিয়ে ঘটনাটি মীমাংসার চেষ্টা করছেন তারা। তবে আক্কাস আলী এই অভিযোগ অস্বীকার করেন।
স্কুলছাত্রীর ভগ্নিপতি অভিযোগ করেন, তালতলা পুলিশ ফাঁড়িতে অভিযোগ করার তিন দিন হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। মীমাংসার চেষ্টার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এমন কিছু হলে অবশ্যই তিনি জানতেন। এটি অপপ্রচার।
তালতলা তদন্ত কেন্দ্রের এসআই মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, তিনি সকালে (বুধবার) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। বাদী ও তার পরিবারের কাউকে তিনি পাননি। টাকার বিনিময়ে মীমাংসার বিষয়ে তিনি বলেন, এ সম্পর্কে জানা নেই।
সোনারগাঁ থানার ওসি ইসমাইল হোসেন বলেন, তদন্তের দায়িত্বে থাকা এসআইকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ভাবিকে ধর্ষণে দেবর কারাগারে
কুষ্টিয়ার কুমারখালীর শিলাইদহে দেড় বছরের শিশুকে হত্যার হুমকি দিয়ে তার মাকে ধর্ষণের অভিযোগে দেবরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এছাড়া পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ভিকটিমকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোলাইমান শেখ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বড় ভাই বাড়ির বাইরে থাকার সুযোগে গত সোমবার রাতে ছোট ভাই তার ভাবির কক্ষে ঢুকে তাঁকে ধর্ষণ করে। গৃহবধূর বাবা মঙ্গলবার কুমারখালী থানায় মামলা করেন। এ বিষয়ে প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি গৃহবধূর স্বামী।
৭ বছরের শিশুকে ধর্ষণ
শেরপুরে প্রথম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে প্রতিবেশী দাদা শমেজ উদ্দিন বইট্টাকে (৬৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত ৬ জুলাই অভিযুক্ত শমেজ উদ্দিন শিশুটিকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করে।
[প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রতিনিধিরা]
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র পর ব র র কর ছ গ হবধ
এছাড়াও পড়ুন:
ফতুল্লায় নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারের নিচে অবৈধ পাকিংয়ে তীব্র যানজট, জনদুর্ভোগ চরমে
বর্তমানে নারায়ণগঞ্জের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো যানজট। এ যানজটের কারণে মাত্র ৫ মিনিটের রাস্তা পেরুতে সময় লেগে যায় ঘন্টার পর ঘন্টা। ফলে প্রতিনিয়ত চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে নারায়ণগঞ্জবাসীকে।
নারায়ণগঞ্জ ট্রাফিক বিভাগ কিংবা সিটি কর্পোরেশন এ যানজট থেকে জেলাবাসীকে পরিত্রাণ দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। ফলে দিন যতই বড়ছে ততই বাড়ছে নারায়ণগঞ্জবাসীর দুর্ভোগ।
নারায়ণগঞ্জে এমন কোন সড়ক নাই সেই সড়কে যানজট নাই। মূল সড়ক থেকে শুরু করে অলি-গলি সব জায়গায়ই যানজট আর যানজট। তবে এ যানজটের পেছনে মূল সড়কের যানজটকেই দায়ি করছেন অনেকে।
তারা বলছেন, মূল সড়ক যদি যানজট মুক্ত থাকতো তাহলে এর আশেপাশের সড়কগুলো যানজটের সুষ্টি হতো না। মূল সড়কে তীব্র যানজটের কারণেই এর প্রভাব পড়ছে অন্য সড়কগুলোতেও।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বর্তমানে শহরের চাইতে চাষাঢ়া-পঞ্চবটি সড়কে যানজট ভয়াবহ আকার ধারণে করেছে। এ সড়ক দিয়ে চলাচলের কথা শুনলেই মানুষ আতকে উঠে। কারণ, যানজটের মাত্র পনেরো মিনিটের রাস্তা পাড় হতে সময় লাগে ঘন্টার পর ঘন্টা।
এ রাস্তায় এ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিসের গাড়ীকেও যানজটে আটতে থাকতে দেখা যায় ঘন্টার পর ঘন্টা। একবার যানজটে আটকা পড়লেই দিন শেষ। কখন বাড়ী কিংবা অফিসে যাবেন তার কোন ঠিক নেই।
অনুসন্ধানে জানাগেছে, এ যানজটের প্রধান কারণ হচ্ছে পঞ্চবটি-মুক্তারপুর ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ। ফ্লাইওভারের কর্মযজ্ঞের ফলে যানবাহনগুলোকে একটু ধীর গতিতে যেতে হয়। ফলে যানজটের সৃষ্টি হয়।
তবে এ যানজটের আরও একটি বড় কারণ চোঁখে পড়ে, আর তা হলো পঞ্চবটি এলাকায় ফ্লাইওভারের নিচে এবং চাষাঢ়া-পঞ্চবটি সড়কের দু’পাশে ট্রাক ও কভার্ডভ্যানগুলো অবৈধভাবে পাকিং করে রাখা।
এসব যানবাহনগুলো সড়কের দু’পাশে পার্কিং করে রাখার কারণে মূল সড়ক অনেকটাই সরো হয়ে যায়। ফলে এ সড়ক দিয়ে অন্যসব যানবাহনগুলো ঠিকমত চলাচল করতে পারে না। ফলে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
অথচ, পঞ্চবটির খুব কাছেই রয়েছে ট্রাক ও কভার্ডভ্যান স্ট্যান্ড। যানবাহনের চালকরা ওই স্ট্যান্ডে গাড়ী না রেখে সড়কের পাশে অবৈধভাবে বাঁকাত্যাঁড়া গাড়ীগুলো রাখছেন। এর ফলে যে, ওই সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে এবং যানজটের কবলে পড়ে মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে, এ বিষয়ে যেন তাদের কোন মাথা ব্যথা নেই।
তাদের ভাব-নমুনা দেখা মনে হয় যে, তারাই যেন এ সড়কটির মূল মালিক। না পুলিশে তাদের কিছু বলে, না তারা জনগণের কোন কথা শোনে। তারা তাদের ইচ্ছেমত গাড়ীগুলো রেখে যানজটের সৃষ্টি করছেন।
চাষাঢ়া-পঞ্চবটি সড়কে চলাচল করা ভুক্তভোগী পথচারিরা বলছেন, এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করাটা বর্তমানে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এত ভয়াবহ যানজট আমরা কখনোই চোঁখে দেখিনি। পঞ্চবটি ফ্লাইওভারের নিচে যেভাবে ট্রাক-কভার্ডভ্যানগুলো রাখা হয় পুরো সড়কটা তারা কিনে নিয়েছে। পুলিশও কিছু বলে না।
এছাড়া চাষাঢ়া থকে পঞ্চবটি পর্যন্ত পুরো সড়কে দু’পাশেই তারা গাড়ীগুলো রাখছেন। রাস্তাটি পাশে এমনিতেই জায়গা কম, আবার যদি তারা এভাবে গাড়ী রাখেন তাহলে যানজটের সৃষ্টিতো হবেই। এ বিষয়ে পুলিশ প্রশাসনকে কঠোর হতে হবে।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের সচেতন মহল বলেন, আসলে নিতাইগঞ্জ এলাকা থেকে ট্রাক স্ট্যান্ডটি সরিয়ে নেয়ার জন্য সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আইভী একটি উদ্যোগ গ্রহণ করে। তিনি শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে পঞ্চবটি এলাকাতে সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নে একটি ট্রাক স্ট্যান্ড গড়ে তোলেন এবং সেখানে এ স্ট্যান্ডকে স্থানান্তর করেন। কিন্তু কোন লাভ হয়নি।
এখন তারা কিছু গাড়ী ওই স্ট্যান্ডে রাখে বাকি গাড়ীগুলো সড়ক দখল করে এলোপাথারিভাবে রাখে। এতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হলেও যেন কারো কোন কিছু বলার নেই। কারণ, এ সমস্যা নিয়ে বহুবার ডিসি-এসপির সাথে বসা হয়েছে, আলোচনা হয়েছে কিন্তু সুরাহা হয় নাই।
তবে, ৫ আগস্টে দেশে একটি বড় পরিবর্তনের পর আশা করছিলাম এবার হয়তো এর একটা সুরাহা হবে। কিন্তু না। সড়ক দখল করে রাখা ট্রাক-কভার্ডভ্যানগুলো বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত তেমন কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ফলে মানুষকে বাধ্য হয়েই যানজটের মত দুর্ভোগ দুর্দশাময় পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে পথ চলতে হচ্ছে।
তারা বলেন, আসলে দেশে শান্তি শৃঙ্খলা ফেরানোর জন্য সেদিন ছাত্র-জনতা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে এতবড় একটা পরিবর্তন নিয়ে এসেছিলো। কিন্তু দেশের মানুষ যদি সেই শান্তি শৃঙ্খলা ভোগই করতে না পারে, তাহলে এত প্রাণ দিয়ে কি লাভ হলো?
আমরা জানিন না, প্রশাসন আসলে কাদেরকে খুশি করাতে চাচ্ছেন? মুষ্টিম কিছু চালকদের জন্য হাজার হাজার মানুষের এ কষ্ট কোন ভাবেই মেনে নেয়া যায় না। আমরা প্রশাসনের কাছে দাবি করবো, তারা যেন খুব শীঘ্রই এ সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেয়। নারায়ণগঞ্জবাসীকে যেন কিছুটা স্বস্তি দেয়।
এ বিষয়ে টিআই করিম বলেন, ৫ আগস্টের পর নারায়ণগঞ্জে যানজটের যে ভয়াবহতা সৃষ্টি হয়েছিলো বর্তমানে তা কমে আসছে। আশাকরছি, আগামীতে পরিস্থিতি আরও ভালো হবে। পঞ্চবটি সড়কে ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। এজন্য এ রুটে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
এমতাবস্তায় যদি কোন চালক রাস্তা দখল করে অবৈধভাবে গাড়ী পার্কিং করে তাহলে তার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেবো।