গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের মতো বিএনপিও দেশে হত্যার রাজত্ব কায়েম করেছে।’

শনিবার চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার আবদুস সোবহান রাহাত আলী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ‘জুলাই বিপ্লব গণসমাবেশে’ এ কথা বলেন তিনি।

নুরুল হক নুর বলেন, ৫ আগস্টের পর বিএনপি নিজ দলের কর্মীসহ হাজারও মানুষকে হত্যা করেছে। ক্ষমতায় আসার আগেই তারা চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস ও লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করেছে। সম্প্রতি মিডফোর্টে যুবদল নেতার হাতে একজন নিরীহ মানুষ নৃশংসভাবে খুন হয়েছেন।’

তিনি হুঁশিয়ার করে বলেন, ‘যদি বিএনপি তাদের এই আচরণ বন্ধ না করে, তাহলে ভবিষ্যতে দেশ আরও ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখে পড়বে। যা আওয়ামী লীগের শাসনকালকেও ছাপিয়ে যেতে পারে।’

নুর অভিযোগ করে বলেন, ‘শেখ হাসিনার আমলে কিছু সুবিধাবাদী মিডিয়াকর্মী ও ব্যবসায়ী তার চাটুকারিতায় দেশের মানুষের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। প্রশাসনের একাংশ এখনও হাসিনার অনুগত। প্রশাসন, মিডিয়া ও ব্যবসায়ীদের এই অংশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।’

কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘জুলাই বিপ্লব কোনো হঠাৎ ঘটনা নয়। কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে গড়ে ওঠা একটি গণজাগরণ। এর মাধ্যমেই দেশের মানুষ শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করে।’

পটিয়ায় ব্যাংকখাতের অবিচারের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘প্রায় ৫ হাজার ব্যাংক কর্মকর্তা বিনা দোষে চাকরিচ্যুত হয়েছেন। এটি অন্যায়। তাদের অবিলম্বে পুনর্বহাল করতে হবে। পাশাপাশি অন্তর্বর্তী সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে যে, ভবিষ্যতে আর কোনো ব্যাংকার যেন এমনভাবে চাকরি না হারান।’

গণসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ডা.

এমদাদুল হাসান। এতে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক কামরুন নাহার, বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক লোকমান হাসান, যুব অধিকার পরিষদের সহ-সভাপতি সৈয়দ প্লাবন আহমদ, ছাত্র অধিকার পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আকতারুজ্জামান, কোটা সংস্কার আন্দোলনের চট্টগ্রাম জেলা সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট আরিফুল হক, জুলাই বিপ্লবের সংগঠক জসিম উদ্দীন আকাশ, ফারুক হাসান, আবু হানিফ, আবু ত্বোহা, আবদুর রহমান, নিজাম উদ্দীন আকাশ, হাসান তারেক, মো. ইউসুফ ও গোলাম ছোবহান প্রমুখ।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন র ল হক ন র আওয় ম ল গ ব এনপ ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে নতুন ফ্যাসিবাদের জন্ম হবে: মামুনুল হক

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, বাংলাদেশের চলমান নির্বাচন ব্যবস্থায় ভয়ানক ‘শুভংকরের ফাঁক’ রয়েছে এবং অতীতের তথাকথিত ফেয়ার ইলেকশন মূল্যায়ন করলে এটি স্পষ্ট হয়। এই অবৈধ নির্বাচনের কারণেই ফ্যাসিবাদ তৈরি হয় এবং চলমান নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে নতুন করে ফ্যাসিবাদের জন্ম হবে। 

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় যশোরের জেলা পরিষদ মিলনায়তনে এক গণসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। ‘শাপলা চত্বরে গণহত্যা, পিলখানা গণহত্যা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গণহত্যার বিচার ও খেলাফত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এ সমাবেশে আয়োজন করে খেলাফত মজলিস যশোর জেলা শাখা। 

মামুনুল হক বলেন, ধর্ম নিরপেক্ষতা নামক ভারতীয় প্রেসক্রিপশন ভারতকে ফেরত দিতে হবে। বাংলাদেশে আর কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের প্রেসক্রিপশন চলবে না। আমরা দিল্লির গোলামি ছিন্ন করেছি ওয়াশিংটনের গোলামি করার জন্য না। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যে কোনো ষড়যন্ত্র, যে কোনো পরিকল্পনা আমরা প্রয়োজনে রাজপথে রক্ত দিয়ে রুখে দেব। 

সব রাজনৈতিক দলকে আরও উদার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যদি ঐক্য বিনষ্টের কারণে আবার সেই স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে ফিরে আসার সুযোগ পায়, তাহলে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ আপনাদের ক্ষমা করবে না। পারস্পরিক প্রতিযোগিতা থাকবে, কিন্তু সেই প্রতিযোগিতা যেন বিদ্বেষ ছড়ানোর হাতিয়ার না হয়।

পিআর পদ্ধতি নিয়ে দুটি পক্ষের অবস্থানকে উদ্বেগজনক উল্লেখ করে মামুনুল হক একটি সুষ্ঠু সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর জন্য সব রাজনৈতিক দলকে ঐকমত্যে পৌঁছানোর আহ্বান জানান। তিনি উভয় পক্ষকে ছাড় দিয়ে মাঝামাঝি পন্থা অবলম্বনের পরামর্শ দেন।

খেলাফত মজলিসের আমির বলেন, দেশ এবং ইসলামবিরোধী কোনো কর্মকাণ্ড করলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে খেলাফত মজলিস কঠোর আন্দোলন ঘোষণা করবে। জুলাই অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্ণ হলেও জুলাই ঘোষণাপত্র আজও ঘোষণা হয়নি, যার দায় বর্তমান সরকারের। তিনি এই জুলাইয়ের মধ্যেই কাঙ্ক্ষিত জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশের দাবি জানান।

মামুনুল হক আর বলেন, স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা খেলাফত মজলিসকে ধ্বংস করার পাঁয়তারা করেছিলেন। আমাদের এমন কোনো নেতা নেই যাদের জেলখানায় নির্যাতন করা হয়নি। এরপরও আমরা কোনো দিন স্বৈরাচারের কাছে মাথানত করেননি। 

খেলাফত মজলিস যশোরের সভাপতি আব্দুল মান্নানের সভাপতিত্বে গণসমাবেশে কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব আতাউল্লা আমিন, সাংগঠনিক সম্পাদক নিয়ামতউল্লাহ, প্রশিক্ষণ সম্পাদক জহিরুল ইসলামসহ খুলনা বিভাগের ১০ জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সংস্কার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়: ফয়জুল করীম 
  • সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে নতুন ফ্যাসিবাদের জন্ম হবে: মামুনুল হক