ইতিহাসের পাতায় নতুন রাজকন্যা, উইম্বলডনের ঘাসে শিয়নটেকের রাজত্ব
Published: 13th, July 2025 GMT
উইম্বলডনের অভিজাত সবুজ কোর্টে শনিবার (১২ জুলাই) রাতে লেখা হলো নতুন ইতিহাস। যেখানে পোল্যান্ডের ইগা শিয়নটেক নিজের টেনিস ক্যারিয়ারের সবচেয়ে জমকালো পালকটি পরলেন মুকুটে। প্রথমবার উইম্বলডনের ফাইনালে খেলতে নেমেই তিনি দেখালেন কীভাবে শিরোপা জেতা যায় কেবল দক্ষতা দিয়ে নয়, বরং দাপটে, আক্রমণে আর নিখুঁত একচেটিয়া শৈলীতে। আমেরিকার আমান্ডা আনিসিমোভাকে তিনি ৬-০, ৬-০ গেমে হারিয়ে তুলে নিলেন নিজের প্রথম উইম্বলডন ট্রফি।
মাত্র ৫৭ মিনিটে শেষ হয় এই ম্যাচ, যা কেবল একতরফা ছিল না, বরং শতবর্ষের পুরোনো রেকর্ড ভেঙে গড়ে দিলো এক নতুন নজির। ১৯১১ সালের পর এই প্রথম কোনো নারী খেলোয়াড় ফাইনালে প্রতিপক্ষকে একটিও গেম না জিতিয়ে ‘ডাবল বাগেল’ স্কোরে জয় পেলেন। আর সেই কীর্তির মালিক শিয়নটেক।
গ্র্যান্ডস্লাম জয়ের অভিজ্ঞতা তার আগেও ছিল—চারবার ফ্রেঞ্চ ওপেন আর একবার ইউএস ওপেন জিতেছেন আগেই। তবে উইম্বলডনের ট্রফি ছিল এতদিন স্বপ্নের মতো অধরা। এবার সেই স্বপ্নকে রূপ দিলেন বাস্তবে। ম্যাচ শেষে আবেগ আপ্লুত শিয়নটেক জানান, ‘‘আমি কখনো উইম্বলডন জয়ের কল্পনাও করিনি। এটা ছিল অনেক দূরের ভাবনা। তাই এটা যে সত্যি হয়েছে, তা এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না।’’
আরো পড়ুন:
উইম্বলডনে ‘ফেদেরার কুফা’ কাটিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে জকোভিচ
উইম্বলডনে নাটকীয় প্রত্যাবর্তন: কোয়ার্টার ফাইনালে আলকারেজ
প্রথম সেটে মাত্র ২৫ মিনিটেই আনিসিমোভাকে উড়িয়ে দেন শিয়নটেক। আমেরিকান প্রতিপক্ষ পুরো ম্যাচজুড়েই ছিলেন চাপে। প্রথম সেটে মাত্র ৯টি পয়েন্ট তুলতেই পেরেছেন, দ্বিতীয় সেটে অবস্থাটা আরও করুণ—২৮টি আনফোর্সড এরর এবং ৫টি ডাবল ফল্ট তার ব্যর্থতার সাক্ষী। ম্যাচ শেষে কাঁদতে কাঁদতে আনিসিমোভা বলেন, “গত দুই সপ্তাহ ছিল আমার জীবনের অন্যতম সেরা সময়। তবে আজ যা চেয়েছিলাম, তা হলো না।”
বয়সে সমান হলেও অভিজ্ঞতায় শিয়নটেক যোজন যোজন এগিয়ে। এবারের জয়ের মাধ্যমে তিনি সব গ্র্যান্ডস্লাম ফাইনালেই জয়ী থাকার রেকর্ড ধরে রাখলেন। উইম্বলডনের ট্রফি জিতে গ্র্যান্ডস্লাম সংগ্রহে সংখ্যা দাঁড়াল ছয়টিতে।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উইম বলডন র ফ ইন ল প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।
লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড
ঢাকা/লিপি