বিমান দুর্ঘটনা: নিহতদের স্মরণে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিভিন্ন কর্মসূ
Published: 22nd, July 2025 GMT
রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে শিক্ষার্থীসহ নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গায়েবানা জানাজা ও দোয়া মাহফিল করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) বিভিন্ন সময়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে পৃথকভাবে এসব কর্মসূচি পালন করা হয়। রাইজিংবিডির বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদদাতাদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত-
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি)
আরো পড়ুন:
বিমান দুর্ঘটনায় নিহত মাসুকার দাফন সম্পন্ন
মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি: দগ্ধ সায়ান ইউসুফের মৃত্যু, লক্ষ্মীপুরে দাফন
দুপুরে যোহর নামাজের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে যুদ্ধবিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশগ্রহণ করেন।
এ হৃদয়বিদারক ঘটনায় গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা নিহতদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
এদিকে, নিহত শিক্ষার্থীদের মাগফিরাত ও আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনায় দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে রাবি শাখা ইসলামী ছাত্রশিবির। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে এ দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি)
বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণে ও আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনায় দোয়া মাহফিল আয়োজন করেছে জবি মসজিদ কমিটি ও শিক্ষক সমিতি। বাদ জোহর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে এই দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
দোয়া মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন, উপাচার্য অধ্যাপক ড.
এছাড়া নারী শিক্ষার্থীদের জন্য নির্ধারিত নামাজ কক্ষে পৃথকভাবে দোয়া মাহফিলে অংশগ্রহণ করেন জবির নারী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি)
বিকেল সাড়ে ৫টায় বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণে ইবির বটতলায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের খতিব আশরাফ উদ্দীন খানের ইমামতিতে ধর্মতত্ত্ব অনুষদের ডিন ড. আ.ব.ম ছিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফী, আল-কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি নাছির উদ্দিন মিঝি, আল-হাদিস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমানসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, বাদ যোহর নিহতদের রুহের মাগফেরাত ও আহতদের সুস্থতা কামনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
এতে উপাচার্যের রুটিন দায়িত্বে থাকা উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. এয়াকুব আলী, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মনজুরুল হক, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোঃ শাহীনুজ্জামান, ছাত্র-উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। দোয়া পরিচালনা করেন কেন্দ্রীয় মসজিদের পেশ ইমাম আশরাফ উদ্দীন খান।
এদিকে, রাষ্ট্রীয় শোকের অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা কালো ব্যাচ ধারণ করেন। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ভবনের জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়।
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি)
বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় নিহত ও আহতদের স্মরণে যবিপ্রবিতে রাষ্ট্রীয় শোক পালন করার পাশাপাশি জাতীয় পতাকা অর্ধণমিত রাখা হয়েছে। এছাড়া মঙ্গলবার (২২ জুলাই) বাদ জোহর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে নিহতদের মাগফিরাত কামনায় ও আহতদের সুস্থতার জন্য দোয়া ও মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।
দোয়া ও মাহফিলে যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মজিদসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক- শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি)
মঙ্গলবার দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে গায়েবানা জানাজা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেন শিক্ষার্থীরা। জানাজা নামাজ পড়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রিফাতুল ইসলাম।
এছাড়া, রাষ্ট্রিয় শোক পালনের অংশ হিসেবে মঙ্গলবার কুবিতে সব ধরনের ক্লাস বন্ধ রাখা হয়েছে।
সরকারি তিতুমীর কলেজ
বাদ যোহর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ঘটা মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণে গভীর শোক প্রকাশ করে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে কলেজ প্রশাসন।
এতে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. ছদরুদ্দিন আহমদসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি
বাদ জোহর আশুলিয়ায় মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির স্থায়ী ক্যাম্পাসের নামাজের ঘরে দুর্ঘটনায় নিহতদের আত্মার মাগফেরাত ও আহতদের সুস্থতা কামনায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এতে স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিং, সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান, স্কুল অব বিজনেস অ্যান্ড ইকোনোমিকসের ডিন মো. মাহবুব আলম, কন্ট্রোলার অব এক্সামিনিশন্স ও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এ.এইচ.এম. আবু সায়ীদ, আইন বিভাগের প্রধান আব্দুল্লাহ হিল গণি, অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড ফাইন্যান্সের পরিচালক ফরিদ আহমেদ এফসিএ, ছাত্রবিষয়ক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আবদুল মতিন, সিএসই ক্লাবের প্রেসিডেন্ট আনিস উদ্দৌলা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সোমবার (২১ জুলাই) দুপুরে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি এফটি-৭বিজিআই যুদ্ধবিমান যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে রাজধানীর উত্তরায় অবস্থিত মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনের ওপর বিধ্বস্ত হয়। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় পাইলটসহ স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা হতাহত হন।
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩১ জনে দাঁড়িয়েছে। এই ঘটনায় সারাদেশে শোকের ছায়া নেমে আসে এবং সরকার জাতীয় শোক ঘোষণা করে।
ঢাকা/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন হত আহত ব ম ন দ র ঘটন য় ন হতদ র ন হতদ র স মরণ উপস থ ত ছ ল ন ও আহতদ র স ত ও আহতদ র ম ইলস ট ন কর মকর ত উপ চ র য ক মন য় ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রেনের ছাদে ভ্রমণকালে বৈদ্যুতিক লাইনের নেটের আঘাতে নিহত ১, আহত ৫
টাঙ্গাইলে ট্রেনের ছাদে অবৈধভাবে ভ্রমণের সময় বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইনের নেটের সঙ্গে ধাক্কা লেগে একজন নিহত ও পাঁচজন আহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তির নাম রিপন আলী (৩৭)। তিনি রাজশাহীর পবা উপজেলার কালিয়ানপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। আহতদের মধ্যে অজ্ঞাতপরিচয়ের এক ব্যক্তি টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
রেলওয়ে পুলিশের টাঙ্গাইল ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ জানান, ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী আন্তনগর সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনটি বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে টাঙ্গাইল স্টেশনে পৌঁছানোর পর ছাদে রক্তাক্ত অবস্থায় ছয়জনকে পাওয়া যায়। আহত যাত্রীরা পুলিশকে জানান, তাঁরা ঢাকা থেকে ট্রেনের ছাদে উঠেছিলেন। টাঙ্গাইল স্টেশনে পৌঁছানোর ১৫–২০ মিনিট আগে রেলপথের ওপর দিয়ে অতিক্রম করা একটি বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইনের নিচের নেটের সঙ্গে ধাক্কা লেগে তাঁরা আহত হন।
আহত ছয়জনকে পুলিশ উদ্ধার করে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে রিপন আলীর মৃত্যু হয়। আহতদের মধ্যে আশরাফুলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আহত আমিরুল ইসলাম (২৫), আলিম (২৫) ও ফয়সাল (২৭) চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। অজ্ঞাতপরিচয়ের এক কিশোর (১৫–১৬) এখনো টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, তার হাতে ব্যান্ডেজ বাঁধা অবস্থায় শুয়ে আছে। কর্তব্যরত নার্স জানান, ছেলেটি কথা বলতে পারছে না।
এদিকে নিহত রিপন আলীর রাজশাহীর বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে কালিয়ানপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির ভেতরে স্বজন ও প্রতিবেশীরা আহাজারি করছেন। বাইরে রিপনের দাফনের জন্য কবর খোঁড়া হচ্ছে, কেউ বাঁশ কাটছেন।
রিপনের বাবা ইসরাফিল হোসেন জানান, রিপন ঢাকার একটি ইলেকট্রনিকস কোম্পানিতে চাকরি করত। কয়েক মাস আগে চাকরি ছেড়ে দিয়ে নতুন কাজ খুঁজছিল। গত বুধবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে বের হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় টাঙ্গাইল হাসপাতাল থেকে রিপনের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে তার ছোট ছেলের ফোনে যোগাযোগ করা হয়। তখনই তাঁরা জানতে পারেন, রিপন ট্রেন দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন।