ছবি ও আরও পড়ুন: কুমিল্লায় হত্যাসহ ২৩ মামলার আসামিকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা

কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর বাসস্ট্যান্ডে আবদুল্লাহ আল-মামুন ওরফে মামুন সম্রাট (৪৩) নামের এক যুবককে প্রকাশ্যে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের কিছুক্ষণ আগে থেকেই মাস্ক পরা দুজনসহ মোট তিন দুর্বৃত্ত ধারালো অস্ত্র নিয়ে বাসস্ট্যান্ডে মামুনের অপেক্ষায় ছিল।

মামুন বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে টিকিট কেটে বাসে ওঠার আগমুহূর্তে দুর্বৃত্তরা তাঁর ওপর হামলা করে। প্রায় চার মিনিট ধরে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করার পর দুর্বৃত্তরা উপজেলার আমিরাবাদের দিকে চলে যায়।

গতকাল শুক্রবার রাত ১১টার দিকে দাউদকান্দির ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের গৌরীপুর বাসস্ট্যান্ডে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। বাসস্ট্যান্ডের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পুলিশ এসব তথ্য জানিয়েছে।

এ ঘটনায় মামুনের সঙ্গে থাকা চার নারীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে দাউদকান্দি মডেল থানা-পুলিশ। আটক নারীদের বাড়ি জেলার তিতাস উপজেলায়। নিহত মামুন তিতাসের শোলাকান্দি গ্রামের মোশারফ হোসেন ওরফে মকবুল মেম্বারের ছেলে। তিনি গৌরীপুর বাজার এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন।

দাউদকান্দি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুনায়েত চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনাস্থলের কিছু সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়া গেছে। তবে দুর্বৃত্তদের মুখে মাস্ক এবং সিসিটিভির ফুটেজ থেকে দূরে থাকায় শনাক্ত করা যাচ্ছে না। চার নারীকে সঙ্গে নিয়ে মামুনের কক্সবাজার যাওয়ার খবর আগে থেকে দুর্বৃত্তরা কীভাবে জেনেছে, সেই বিষয়টি সামনে রেখে তদন্ত চলছে। হত্যাকাণ্ডটি পরিকল্পিত বলে ধারণা করা হচ্ছে।

পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, নিহত মামুনের বিরুদ্ধে দাউদকান্দি ও তিতাস থানায় হত্যা, ধর্ষণ, মাদক সেবন, মাদক বিক্রি, অপহরণ, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগে ২৩টি মামলা আছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা বলেন, মামুনের প্রকৃত নাম আবদুল্লাহ আল-মামুন হলেও এলাকার মানুষ তাঁকে ‘মামুন সম্রাট’ হিসেবেই চিনতেন। তিতাস ছাড়াও দাউদকান্দির গৌরীপুর এলাকায় মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজিসহ কিশোর গ্যাং চালাতেন তিনি। চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি, ১৩ মে রাতে ইয়াবাসহ যৌথ বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। প্রায় এক মাস কারাগারে থেকে জামিনে মুক্ত হন। কোনো দলের পদে না থাকলেও নেতাদের আশ্রয়ে এলাকায় তিনি ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন। এসব কারণে তাঁর ওপর হামলা হতে পারে।

আরও পড়ুনকুমিল্লায় হত্যাসহ ২৩ মামলার আসামিকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা৬ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ উদক ন দ প রক শ হত য ক

এছাড়াও পড়ুন:

অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক

অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।

বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক। 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী

‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত

সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।

প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের  প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।

জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।

আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে  বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।

লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ