‘নকল’ বিড়ম্বনার পর ফেসবুকে সত্যিকারে ভেরিফায়েড হলেন শাবনূর
Published: 26th, July 2025 GMT
ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শাবনূরের নামে খোলা একটি ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ সম্প্রতি তুমুল আলোচনার জন্ম দিয়েছে। সেই সঙ্গে পেজটি তার নিয়ন্ত্রণে নেই বলে জানিয়েছেন একসময়ের এই ‘স্বপ্নের নায়িকা’। তবে সমস্যাটি নিজে সবার সামনে তুলে ধরার কয়েক ঘণ্টা পর তার ব্যক্তিগত আইডি ভেরিফায়েড করে দিয়েছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ অর্থাৎ মেটা।
শনিবার (২৬ জুলাই) দুপুরে নিজের ফেসবুক আইডি থেকে লাইভে এসে শাবনূর বলেন, “আমার একটাই ফেসবুক আইডি আছে, বাকিগুলো ভুয়া।আমি জানি না কে বা কারা আমার পেছনে লেগেছে। কেন তারা এমন করছে, সেটাও বুঝতে পারছি না।”
“আমি মন থেকে সবাইকে ভালোবাসি, কারও প্রতি কোনো কুটিলতা বা শত্রুতা পোষণ করি না। কিন্তু কিছু মানুষ কেন এমন শত্রুতা করছে, জানি না,” বলেন তিনি।
আরো পড়ুন:
আমার জীবনে মন এবং শরীর, দুটোর ভূমিকাই গুরুত্বপূর্ণ: জয়া
যারা পেলেন মহানায়ক সম্মাননা
সম্প্রতি শাবনূরের নামে যে ভেরিফায়েড পেজটি চালু হয়েছে, সেখানে ব্যবহার করা হয়েছে তার ব্যক্তিগত তথ্য ও ছবি। অনন্য গুণের অধিকার এই অভিনেত্রী বলেছেন, “এই পেজের উদ্দেশ্য মোটেও সৎ নয়। এটি প্রতারণার শামিল।
“এমনকি তারা আমার পাসপোর্ট বা জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য ব্যবহার করে থাকতে পারে, না হলে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ ভেরিফিকেশন দিত না।”
এরই মধ্যে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছেন জানিয়ে শাবনূর বলেন, থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার পাশাপাশি বিষয়টি সাইবার ক্রাইম ইউনিটে জানাব।
দুই বছরর আগেও শাবনূরের নামে ফেক আইডি খুলে মৃত্যুর গুজব ছড়ানো হয়েছিল। সেই সময়ও ভুয়া আইডি থেকে প্রতারণার আশ্রয় নেওয়া হয়। তিনি বারবার সতর্ক করলেও এমন চক্র ঘুরে ফিরে সক্রিয় হয়ে উঠছে। বাংলা ও ইংরেজিতে শাবনূর লিখে সার্চ দিলে অনেক পেজ ও আইডি চলে আসে, যেগুলোর কোনোটি তার নয়।
এসব ভুয়া আইডির বিষয়ে শাবনূর লাইভে এসে বলেন, “অনেকেই বলেছিলেন, আমি যেন পেজ ভেরিফায়েড করে নিই, যাতে মানুষ বুঝতে পারে কে আসল শাবনূর, কে নকল। তখন আমি গুরুত্ব দিইনি। এখন বুঝছি, এটা করাই উচিত ছিল।”
শাবনূর সন্দেহ করছেন, এই পেজটি বাংলাদেশ থেকেই পরিচালিত হচ্ছে এবং এর পেছনে একাধিক ব্যক্তি জড়িত।আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি তার অনুরোধ, প্রতারক এই চক্রকে দ্রুত শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
শাবনূর এখন অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে থাকেন। সেখান থেকে ফেসবুকে লাইভে এসে ফেসবুক আইডি নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়ার বিষয়টি তার ভক্ত-অনুরাগী ও শুভানুধ্যায়ীদের কাছে খুলে বলেন।
শনিবার দুপুর ২টার দিকে ফেসবুকে লাইভে এসে শাবনূর আইডি ও পেজের বিষয়ে সবাইকে তথ্য দেন। অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে ব্যক্তিগত গাড়িতে বসে লাইভে যুক্ত হয়ে তিনি বলেন, “আমার অরিজিনাল ফেসবুক পেজ হলো `Shabnoor' এবং ফেসবুক আইডি হলো `Shabnoor Shabnoor'।
প্লিজ টিউনড উইথ মি।
লাইভের একটি পোস্টে তিনি আলাদা করে ফেসবুক পেজ ও আইডির লিংকও শেয়ার করেন।
ফেসবুক পেজ: Shabnoor
লিঙ্ক: https://www.
ফেসবুক আইডি: Shabnoor Shabnoor
লিঙ্ক: https://www.facebook.com/share/17A7Cnya4p/?mibextid=wwXIfr
লাইভের প্রায় ২ ঘণ্টা পর বিকাল ৪টার দিকে আরেকটি পোস্টে শাবনূর জানান, তার আইডি ভেরিফায়েড হয়ে গেছে।
পোস্টে তিনি লেখেন, “আলহামদুলিল্লাহ, আমার ফেসবুক আইডি ভেরিফাইড হয়ে গেছে। সবার অনুরোধে এটা সত্যায়িত (ভেরিফায়েড) করে নিলাম। আশা করি এখন থেকে আমার অফিসিয়াল আইডি চিনতে কারো অসুবিধা হবে না।
“স্টে টিউনড উইথ মি।”
ফেসবুক আইডি: Shabnoor Shabnoor
লিঙ্ক: https://www.facebook.com/share/17A7Cnya4p/?mibextid=wwXIfr
কাজী শারমীন নাহিদ নূপুর তার আসল নাম হলেও চলচ্চিত্রজগতে তিনি শাবনূর নামেই পরিচিত; তার খ্যাতি রয়েেছে বাঙালির ঘরে ঘরে। গত শতাব্দীর নব্বইয়ের দশকে চলচ্চিত্রে আসেন তিনি। তার প্রথম ছায়াছবি চাঁদনী রাতে', যার পরিচালক ছিলেন প্রখ্যাত পরিচালক এহতেশাম। নব্বইয়ের দশকে সালমান শাহ ও শাবনূর জুটি ভক্তদের হৃদয়ে আলাদা জায়গা দখল করে আছে। তবে শাবনূর এখন চলচ্চিত্রে নিয়মিত নন। এই নন্দিত অভিনেত্রীর একমাত্র পুত্র আইজান নিহান সিডনিতে থাকে, সেখানে লেখাপড়া চলছে তার।
ঢাকা/রাহাত/রাসেল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র ফ সব ক আইড চলচ চ ত র শ বন র
এছাড়াও পড়ুন:
নীতি সুদহার কমাল ফেডারেল রিজার্ভ, কী প্রভাব পড়তে পারে বিশ্ব অর্থনীতিতে
অবশেষে সুদের হার কমিয়েছে ফেডারেল রিজার্ভ। গত বছরের ডিসেম্বর মাসের পর এই প্রথম সুদহার কমাল ফেডারেল রিজার্ভ। যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমবাজারে দুর্বলতার লক্ষণ, আফ্রো-আমেরিকানদের মধ্যে উচ্চ বেকারত্ব, কর্মঘণ্টা কমে যাওয়া ও নতুন চাকরি সৃষ্টির গতি কমে যাওয়ায় ফেড এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীতি সুদহার ২৫ ভিত্তি পয়েন্ট কমিয়ে ৪ থেকে ৪ দশমিক ২৫ শতাংশে নামিয়ে এনেছে। সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়ার পর ফেড চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল বলেন, অক্টোবর ও ডিসেম্বর মাসে সুদহার আরও কমতে পারে। তিনি বলেন, শ্রমবাজারের ক্রমবর্ধমান দুর্বলতা এখন তাঁর ও সহকর্মী নীতিনির্ধারকদের প্রধান উদ্বেগ। খবর রয়টার্স
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অনেক দিন ধরেই ব্যাপক হারে সুদ কমানোর দাবি তুলছিলেন। তাঁর বক্তব্য, এতে অর্থনীতি চাঙা হবে। তবে ফেডের এ সিদ্ধান্ত তাঁর প্রত্যাশার চেয়ে অনেক কম। ফেডের পর্ষদে নতুন গভর্নর স্টিফেন মিরান ছিলেন একমাত্র ভিন্নমতাবলম্বী। তিনি ৫০ ভিত্তি পয়েন্ট হারে সুদহার কমানোর পক্ষে ছিলেন। সেই সঙ্গে ভবিষ্যতে আরও বড় কাটছাঁটের ইঙ্গিত দিয়েছেন।
সুদের হার নির্ধারণে রাজনৈতিক প্রভাবের প্রশ্ন সব সময়ই তোলা হয়। ট্রাম্প সম্প্রতি ফেডের এক গভর্নর লিসা কুককে সরানোর চেষ্টা করেছিলেন। যদিও কুক আদালতের লড়াইয়ে আপাতত নিজের অবস্থান ধরে রেখেছেন এবং বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। পাশাপাশি হোয়াইট হাউসের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পরিষদের প্রধান মিরানকে ফেডের পর্ষদে বসান।
শ্রমবাজারে দুর্বলতাপাওয়েল বলেন, বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে বেকারত্ব বাড়ছে, তরুণেরা আরও ভঙ্গুর হয়ে পড়ছেন। সামগ্রিকভাবে চাকরি সৃষ্টির গতি খুবই কম। শ্রমবাজারকে আর দুর্বল হতে দেওয়া যাবে না।
পাওয়েল আরও সতর্ক করেন, নতুন চাকরির সংখ্যা এখন বেকারত্বের হার স্থিতিশীল রাখার জন্য যথেষ্ট নয়। ফলে সামান্য ছাঁটাইও বেকারত্ব বাড়িয়ে দিতে পারে।
মূল্যস্ফীতি বনাম কর্মসংস্থানমূল্যস্ফীতি এখনো লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি। আশঙ্কা করা হচ্ছে বছরের শেষ নাগাদ মূল্যস্ফীতির হার ৩ শতাংশে উঠবে, যেখানে ফেডের লক্ষ্যমাত্রা হলো ২ শতাংশ। কিন্তু ফেড মনে করছে, কর্মসংস্থানের ঝুঁকি এখন বেশি গুরুত্ব পাওয়ার মতো বিষয়।
ফেডের নতুন পূর্বাভাসে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার কিছুটা বাড়িয়ে ১ দশমিক ৬ শতাংশ করা হতে পারে বলা হয়েছে। বেকারত্বের হার ৪ দশমিক ৫ শতাংশেই স্থির থাকবে বলে তারা অনুমান করছে।
রাজনৈতিক টানাপোড়েনএ সিদ্ধান্তে রাজনৈতিক নাটকও কম ছিল না। ট্রাম্পের হস্তক্ষেপ নিয়ে সমালোচনা থাকলেও ফেডের পর্ষদের অন্য দুই ট্রাম্প-মনোনীত গভর্নর মিশেল বোম্যান ও ক্রিস্টোফার ওয়ালার শেষ পর্যন্ত মূল সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত হয়েছেন। ওয়ালার বরাবরই শ্রমবাজারকে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলে আসছেন।
পাওয়েল অবশ্য পরিষ্কার ভাষায় বলেছেন, ‘আমাদের সংস্কৃতির মূল বিষয় হলো তথ্যভিত্তিক সিদ্ধান্ত। আজকের বৈঠকে সুদহার ব্যাপক হারে কমানোর বিষয়ে বিপুল সমর্থন ছিল না।’
বাজারের প্রতিক্রিয়াসুদহার কমানোর ঘোষণার পর ওয়াল স্ট্রিটে প্রথমে শেয়ারের দাম বাড়লেও পরে ওঠানামা করে। শেষমেশ মিশ্র পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে দিন শেষ হয়। ডলার কিছুটা শক্তিশালী হয়েছে ঠিক, কিন্তু ট্রেজারি বন্ডের সুদ প্রায় অপরিবর্তিত। বাজার এখন প্রায় নিশ্চিত, অক্টোবরের বৈঠকেও সুদ কমানো হবে।
বিশ্লেষকদের মতে, ফেডের সাম্প্রতিক নীতি পরিবর্তনের মানে হলো তারা এখন ধীরে ধীরে ‘নিরপক্ষে’ অবস্থানের দিকে যাচ্ছে। মূল্যস্ফীতি সাময়িকভাবে কিছুটা বাড়লেও ২০২৬ সালের মধ্যে স্থিতিশীল হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
নীতিসুদ কীকেন্দ্রীয় ব্যাংক যে সুদহারে তফসিলি ব্যাংকগুলোকে স্বল্প সময়ের জন্য ঋণ দেয়, সেটাই নীতি সুদহার। ইংরেজিতে একে বলে রেপো রেট। রেপোর বাংলা হচ্ছে পুনঃক্রয় চুক্তি। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে মুদ্রানীতির অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে এটি পরিচিত। অর্থনীতিতে নগদ তারল্যের জোগান দিতে বা অন্যভাবে বলতে গেলে ব্যাংকগুলোর জরুরি প্রয়োজনে অর্থ সরবরাহ করতে মুদ্রানীতির এ হাতিয়ার ব্যবহার করা হয়। বিশ্বের সব দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ হাতিয়ার ব্যবহার করে।
কোভিডের পর রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে বিশ্বজুড়ে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যায়। তখন ফেডারেল রিজার্ভ বাজারে মুদ্রার চাহিদা নিয়ন্ত্রণ করতে দফায় দফায় নীতি সুদহার বৃদ্ধি করে। ফলে নীতি সুদহার গত দুই দশকের বেশি সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ ৫ দশমিক ২৫ থেকে ৫ দশমিক ৫০ শতাংশে উঠে যায়।
যুক্তরাষ্ট্রের নীতি সুদহারের প্রভাববিশ্ব অর্থনীতি যুক্তরাষ্ট্রের নীতিসুদের ওপর অনেকাংশে নির্ভর করে। ফেডের নীতিসুদের হার বাড়লে ট্রেজারি বন্ডের দাম কমে এবং সুদহার কমলে ট্রেজারি বন্ডের দাম বাড়ে। এর কারণ হলো বাজারে নতুন ও অধিক সুদের বন্ড আসার পর পুরোনো বন্ডের কুপন (সুদ) কম মনে হয়, ফলে পুরোনো বন্ডের দাম কমে যায়। আবার যখন সুদের হার কমে, তখন নতুন বন্ডের কুপন কম হওয়ায় পুরোনো বন্ডের উচ্চ কুপনযুক্ত সুদ বেশি আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে, ফলে পুরোনো বন্ডের দাম বেড়ে যায়।
নীতিসুদ কমলেও একই প্রক্রিয়া ঘটে, তবে বিপরীতভাবে। সুদের হার কমলে নতুন বন্ডের কুপনও কমে যায়। এতে আগের উচ্চ সুদের কুপনযুক্ত বন্ডগুলো বেশি আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। বিনিয়োগকারীরা এই পুরোনো বন্ডগুলো কিনতে আগ্রহী হন, ফলে সেগুলোর দাম বেড়ে যায়। বিনিয়োগকারীরা তখন তুলনামূলক ঝুঁকিপূর্ণ বাজারেও বিনিয়োগ আগ্রহী হন। এতে উন্নয়নশীল দেশে বিনিয়োগপ্রবাহ বাড়ে এবং ডলারের চাপ কিছুটা কমে।
সে কারণে বাজার নীতি সুদহারের দিকে তাকিয়ে থাকে, সুদ কমলে উন্নয়নশীল দেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পায়।