গ্রেপ্তারের পর পরিবারকে জানাতে ১২ ঘণ্টা কেন লাগবে
Published: 27th, July 2025 GMT
২৪ জুলাই ফৌজদারি কার্যবিধি সংশোধনের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ। এটি কার্যকর হলে কাউকে গ্রেপ্তার করে থানায় নেওয়ার সর্বোচ্চ ১২ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তির পরিবার, বন্ধু বা আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করে তা জানাতে হবে। কোনো অবস্থায় এ সময় ১২ ঘণ্টার বেশি নেওয়া যাবে না। (গ্রেপ্তারের ১২ ঘণ্টার মধ্যে পরিবারকে জানাতে হবে, প্রথম আলো, ২৫ জুলাই ২০২৪)
ফৌজদারি কার্যবিধি সংশোধনের এই উদ্যোগকে ইতিবাচক হিসেবে বিবেচনা করার পরেও কিছু প্রশ্ন থেকে যায়। এই প্রশ্নগুলো হলো, গ্রেপ্তারের পর গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তির পরিবার বা স্বজনদের তা জানানোর জন্য ‘সর্বোচ্চ ১২ ঘণ্টা’ কি অনেক বেশি সময় নয়? এই ১২ ঘণ্টা সময় নির্ধারণ করা হলো কোন যুক্তিতে? সরকার চাইলে এটি আরও কম হতে পারত কি না?
২.বাংলাদেশের সংবিধান ও ফৌজদারি কার্যবিধি অনুসারে কোনো ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিকটস্থ ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু পরিবার ও স্বজনদের তা জানানোর ক্ষেত্রে আইনে কিছু বলা হয়নি। তবে এ বিষয়ে উচ্চ আদালতের একাধিক নির্দেশনা রয়েছে।
২০০৩ সালে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ও ১৬৭ ধারা সংশোধনের জন্য হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ ‘যুগান্তকারী’ রায় ঘোষণা করেছিলেন। রায়ে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার ও রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রচলিত বিধান সংশোধন করার জন্য সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি ওই ধারা সংশোধনের আগে কয়েক দফা নির্দেশনা মেনে চলার জন্য সরকারকে বলা হয়েছিল। সেখানে একটি নির্দেশনা ছিল: বাসা বা কর্মক্ষেত্র ছাড়া অন্য স্থান থেকে গ্রেপ্তার করলে ওই ব্যক্তির নিকটাত্মীয়কে এক ঘণ্টার মধ্যে টেলিফোন বা বিশেষ বার্তাবাহক মারফত বিষয়টি জানাতে হবে।
হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল হয়েছিল। ২০১৬ সালে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায়টি বহাল রাখলেও নির্দেশনায় কিছু পরিবর্তন আনেন। সেই নির্দেশনায় গ্রেপ্তারের বিষয়টি পরিবার ও স্বজনদের জানানোর ক্ষেত্রে ১ ঘণ্টা থেকে বাড়িয়ে ১২ ঘণ্টা করা হয়।
লক্ষণীয় হলো, ফৌজদারি কার্যবিধি সংশোধনের বিষয়বস্তু সাংবাদিকদের জানানোর সময় আদালতের রায় এবং বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের সুপারিশ ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শের কথা উল্লেখ করেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। (প্রথম আলো, ২৫ জুলাই ২০২৫)। এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে অন্তর্বর্তী সরকার ২০১৬ সালে দেওয়া আপিল বিভাগের নির্দেশনাকে আমলে নিয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের চেয়ে আপিল বিভাগ ‘উচ্চতর’; এ কারণে আপিল বিভাগের দেওয়া সর্বশেষ নির্দেশনাই সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশনা হিসেবে গণ্য হয়। তাহলে এ ক্ষেত্রে সমস্যাটা কোথায়?
৩.২০০৩ সালে বাংলাদেশের যোগাযোগব্যবস্থা ২০১৬ সালের তুলনায় অনেক পিছিয়ে ছিল। এ ছাড়া তখন অল্পসংখ্যক মানুষ মুঠোফোন ব্যবহার করতেন। ইন্টারনেট ব্যবহার করে যোগাযোগের সুযোগ ছিল আরও কম। এরপরও হাইকোর্টের নির্দেশনা থেকে বোঝা যায়, গ্রেপ্তার ব্যক্তির পরিবার ও স্বজনদের গ্রেপ্তারের বিষয়টা জানানোর জন্য আদালত তখন এক ঘণ্টা সময়ই যথেষ্ট মনে করেছিলেন।
অন্যদিকে ২০১৬ সালে যোগাযোগব্যবস্থার উন্নতি দৃশ্যমান হয়েছিল; সেই সময় মুঠোফোন ও ইন্টারনেটের মাধ্যমে যোগাযোগও উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। তারপরও কেন আপিল বিভাগের নির্দেশনায় গ্রেপ্তারের বিষয়টা স্বজনদের জানানোর জন্য ১ ঘণ্টাকে বাড়িয়ে ১২ ঘণ্টা করা হলো?
সুনির্দিষ্ট কোন কারণে হাইকোর্ট বিভাগের নির্দেশনায় দেওয়া ১ ঘণ্টার সময়সীমা বাড়িয়ে ১২ ঘণ্টা করা হয়েছিল, সেটার কোনো ব্যাখ্যা আপিল বিভাগের রায়ে নেই। তবে কিছু ইঙ্গিত আমরা রাষ্ট্র, রাজনীতি ও সময়ের প্রেক্ষাপটে খুঁজে পাই।
২০১৬ সালের প্রেক্ষাপটে আদালতের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সম্পর্কের বিষয়টা তাদের বিবেচনায় নেওয়া উচিত ছিল। এ কারণে এখন প্রশ্ন উঠতে পারে, অন্তর্বর্তী সরকার কেন গণতান্ত্রিক আমলে দেওয়া হাইকোর্টের নির্দেশনার চেয়ে ‘ফ্যাসিবাদী’ আমলে দেওয়া আপিল বিভাগের নির্দেশনাকে বেশি গুরুত্ব দিল?লক্ষণীয় হলো, হাইকোর্টের রায় দেওয়া হয়েছিল ২০০৩ সালে। অন্যদিকে আপিল বিভাগের রায় এসেছিল ২০১৬ সালে; শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একটি ফ্যাসিস্ট বা স্বৈরাচারী সরকার তখন ক্ষমতায়।
২০০৩ সালের তুলনায় ২০১৬ সালে বাংলাদেশ অনেক বেশি ‘পুলিশি রাষ্ট্রে’ পরিণত হয়েছিল। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নামে জঙ্গিবাদ নির্মূল এবং বিরোধী দল দমনের প্রেক্ষাপটে রাষ্ট্রের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ‘বার্গেইনিং পাওয়ার’ (দর–কষাকষির ক্ষমতা) তখন অনেক বেড়ে গিয়েছিল। অভিযোগ রয়েছে, সেই সময় উচ্চ আদালতেও এসব বাহিনীর প্রভাব তৈরি হয়েছিল। এ রকম প্রেক্ষাপটেই আপিল বিভাগ হাইকোর্ট বিভাগের নির্দেশনায় দেওয়া ১ ঘণ্টার সময়সীমা বাড়িয়ে ১২ ঘণ্টা করেন।
৪.প্রশ্ন হচ্ছে, কাউকে গ্রেপ্তারের পর সেই খবর তাঁর আত্মীয়স্বজন বা পরিবারকে জানাতে ১২ ঘণ্টা কেন লাগবে? দু–একটা ব্যতিক্রম বাদে এটা তো তাৎক্ষণিকভাবেই জানানো সম্ভব; সে ক্ষেত্রে এক ঘণ্টাই যথেষ্ট। তাহলে ‘সর্বোচ্চ ১২ ঘণ্টা’ কতটা যৌক্তিক?
সরকারের পক্ষ থেকে একটা যুক্তি হতে পারে, সর্বোচ্চ অদালত অর্থাৎ আপিল বিভাগের নির্দেশনা মেনে তারা ফৌজদারি কার্যবিধি সংশোধন করেছে। সাধারণভাবে এই যুক্তি গ্রহণযোগ্য। কিন্তু ২০১৬ সালের প্রেক্ষাপটে আদালতের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সম্পর্কের বিষয়টা তাদের বিবেচনায় নেওয়া উচিত ছিল। এ কারণে এখন প্রশ্ন উঠতে পারে, অন্তর্বর্তী সরকার কেন গণতান্ত্রিক আমলে দেওয়া হাইকোর্টের নির্দেশনার চেয়ে ‘ফ্যাসিবাদী’ আমলে দেওয়া আপিল বিভাগের নির্দেশনাকে বেশি গুরুত্ব দিল?
একটা বিষয় মনে রাখা দরকার, আপিল বিভাগের নির্দেশনা যা–ই থাকুক, আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে সেটা সরকারের জন্য কোনো বাধা নয়। অন্তর্বর্তী সরকার চাইলে এ ক্ষেত্রে সময়সীমা ১২ ঘণ্টা না করে ১ ঘণ্টা করতেই পারত এবং সেটা সব দিক থেকে অনেক বেশি যৌক্তিক হতো।
৫.ফৌজদারি কার্যবিধি সংশোধন নিয়ে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমরা মনে করি, এই আইন যদি সঠিকভাবে প্রতিপালন করা যায়, তাহলে ইচ্ছেমতো মানুষকে গ্রেপ্তার করে হয়রানি, গ্রেপ্তার করে অস্বীকার করা, মানুষকে গুম করা, সেগুলো বন্ধের ক্ষেত্রে এটি যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে।’ (প্রথম আলো, ২৫ জুলাই ২০২৫)
উপদেষ্টার এই ইতিবাচক আকাঙ্ক্ষাকে আমরাও সমর্থন করি। কিন্তু এই আকাঙ্ক্ষা বাস্তবে পরিণত করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। আইনে কোনো ফাঁকফোকর থাকলে সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা আরও কঠিন, অতীত অভিজ্ঞতা আমাদের সে রকম শিক্ষাই দিয়েছে।
মনজুরুল ইসলাম প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ সহসম্পাদক
মতামত লেখকের নিজস্ব
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর ২০০৩ স ল ২০১৬ স ল প রথম আল স বজনদ র ন র জন য র পর ব র উপদ ষ ট র ব ষয়ট র র পর অন ক ব হয় ছ ল সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
সোনার টয়লেট ‘আমেরিকা’ নিলামে উঠছে, সর্বনিম্ন দর কত জানেন
নিলামঘর সদবিস গতকাল শুক্রবার ইতালীয় শিল্পী মরিজিও ক্যাটেলানের তৈরি সম্পূর্ণ সোনার টয়লেটটি নিলামে তোলার কথা ঘোষণা করেছে। এ ভাস্কর্যটির নাম ‘আমেরিকা’।
সদবিস জানিয়েছে, এ শিল্পকর্ম এটাই দেখাতে চায়, কখনো কখনো শিল্পের ‘মূল্য’ আর তার বাজারে বিক্রির ‘মূল্য’ এক নয়। এটি শুধু শিল্পকর্মই নয়, একটি পুরোপুরি ব্যবহারযোগ্য টয়লেটও। এ টয়লেটেরই অনুরূপ একটি সংস্করণ ২০১৯ সালে ইংল্যান্ডের বিখ্যাত ব্লেনহাইম প্রাসাদ থেকে চুরি হয়ে বিশ্বজুড়ে আলোচনায় আসে।
১৮ নভেম্বর নিউইয়র্কে এ নিলাম অনুষ্ঠিত হবে। টয়লেটটির সর্বনিম্ন দর ধরা হয়েছে এর সোনার বর্তমান বাজারমূল্য অনুযায়ী। এতে ব্যবহৃত হয়েছে প্রায় ১০১ দশমিক ২ কিলোগ্রাম (২২৩ পাউন্ড) খাঁটি সোনা, যার দাম এখন প্রায় ১০ মিলিয়ন (১ কোটি) মার্কিন ডলার (প্রায় ১২২ কোটি টাকা)।
সদবিসের নিউইয়র্ক শাখার সমসাময়িক শিল্প বিভাগের প্রধান ডেভিড গ্যালপারিন বলেন, ক্যাটেলান হচ্ছেন এমন একজন শিল্পী, যিনি তাঁর কাজের মাধ্যমে সবাইকে ভাবাতে ও চমক দিতে পছন্দ করেন।
ক্যাটেলান শুধু বিতর্ক সৃষ্টিকারীই নন; বরং অত্যন্ত সফল শিল্পী। তাঁর আরেকটি কাজ, ‘কমেডিয়ান’। অর্থাৎ দেয়ালে টেপ দিয়ে আটকানো একটি কলা। গত বছর নিউইয়র্কের এক নিলামে ৬২ লাখ ডলারে বিক্রি হয়েছিল শিল্পকর্মটি।
‘আমেরিকা’র দুটি সংস্করণ ২০১৬ সালে তৈরি করা হয়েছিল। যেটি এবার নিলামে উঠছে, সেটি ২০১৭ সাল থেকে এক অজ্ঞাত সংগ্রাহকের কাছে রয়েছে। অন্য সংস্করণটি ২০১৬ সালে নিউইয়র্কের গুগেনহাইম জাদুঘরের একটি বাথরুমে প্রদর্শনের জন্য স্থাপন করা হয়। সেখানে ১ লাখের বেশি দর্শক সার বেঁধে এসেছিলেন।এর আগে ২০১৬ সালে ক্রিস্টিস নিলামে ক্যাটেলানের আরেকটি ভাস্কর্য ‘হিম’ ১ কোটি ৭২ লাখ ডলারে বিক্রি হয়। ভাস্কর্যটিতে নাৎসি নেতা অ্যাডলফ হিটলারকে হাঁটু গেড়ে প্রার্থনার ভঙ্গিতে দেখা যায়।
ক্যাটেলান নিজেই বলেছেন, তাঁর ‘আমেরিকা’ ভাস্কর্যটি অতিরিক্ত সম্পদ ও বিলাসিতাকে ব্যঙ্গ করে তৈরি করা হয়েছে। তিনি একবার বলেছিলেন, ‘তুমি ২০০ ডলারের দুপুরের খাবার খাও বা ২ ডলারের হটডগ, শেষ ফলাফল টয়লেটে গিয়ে একই হয়।’
‘আমেরিকা’র দুটি সংস্করণ ২০১৬ সালে তৈরি করা হয়েছিল। যেটি এবার নিলামে উঠছে, সেটি ২০১৭ সাল থেকে এক অজ্ঞাত সংগ্রাহকের কাছে রয়েছে। অন্য সংস্করণটি ২০১৬ সালে নিউইয়র্কের গুগেনহাইম জাদুঘরের একটি বাথরুমে প্রদর্শনের জন্য স্থাপন করা হয়। সেখানে ১ লাখের বেশি দর্শক সার বেঁধে এসেছিলেন।
মরিজিও ক্যাটেলান হচ্ছেন এমন একজন শিল্পী, যিনি তাঁর কাজের মাধ্যমে সবাইকে ভাবাতে ও চমক দিতে পছন্দ করেন।ডেভিড গ্যালপারিন, সদবিস-এর নিউইয়র্ক শাখার সমসাময়িক শিল্প বিভাগের প্রধানওই সময় গুগেনহাইম ভাস্কর্যটি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে তাঁর প্রথম দফায় ক্ষমতায় থাকাকালে ধার দেওয়ার প্রস্তাব দেয়। কারণ তিনি জাদুঘর থেকে একটি ভ্যান গঘ চিত্রকর্ম ধার নিতে চেয়েছিলেন।
২০১৯ সালে ‘আমেরিকা’ প্রদর্শিত হয় উইনস্টন চার্চিলের জন্মস্থান হিসেবে বিখ্যাত ব্লেনহাইম প্রাসাদে। কিন্তু প্রদর্শনীর কয়েক দিনের মধ্যেই একদল চোর ভবনে ঢুকে সেটি পাইপলাইন থেকে খুলে নিয়ে পালিয়ে যায়।
চলতি বছরের শুরুতে দুই ব্যক্তিকে ওই চুরির দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে সোনার টয়লেটটি আজও উদ্ধার করা যায়নি। তদন্তকারীরা ধারণা করছেন, এটি সম্ভবত ভেঙে গলিয়ে ফেলা হয়েছে।
গ্যালপারিন বলেন, তিনি অনুমান করতে চান না ‘আমেরিকা’ শেষ পর্যন্ত কত দামে বিক্রি হতে পারে। তবে তাঁর ভাষায়, ক্যাটেলানের ‘ডাকটেপে আটকানো কলা’ শিল্পকর্মটি যেমন ‘অমূল্য ধারণা থেকে মূল্য তৈরি করা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল, ‘আমেরিকা’ ঠিক তার উল্টো। এখানে মূল উপকরণটিই (সোনা) অত্যন্ত মূল্যবান, যা বেশির ভাগ শিল্পকর্মে থাকে না।
ক্যাটেলান বলেছেন, তাঁর ‘আমেরিকা’ ভাস্কর্যটি অতিরিক্ত সম্পদ ও বিলাসিতাকে ব্যঙ্গ করে তৈরি করা হয়েছে। তিনি একবার বলেছিলেন, ‘তুমি ২০০ ডলারের দুপুরের খাবার খাও বা ২ ডলারের হটডগ, শেষ ফলাফল টয়লেটে গিয়ে একই হয়।’‘আমেরিকা’ প্রদর্শিত হবে সদবিসের নতুন নিউইয়র্ক কার্যালয় ব্রয়্যার বিল্ডিংয়ে, ৮ নভেম্বর নিলাম শুরু হওয়ার আগপর্যন্ত। এটি একটি বাথরুমে স্থাপন করা হবে, যা দর্শকেরা কাছ থেকে দেখতে পাবেন।
তবে গুগেনহাইম ও ব্লেনহাইম প্রাসাদের মতো এবার দর্শকদের টয়লেটটি ব্যবহার করার সুযোগ থাকবে না। তাঁরা শুধু দেখতে পারবেন, কিন্তু ফ্লাশ করতে পারবেন না।
আরও পড়ুনসোনার আস্ত একটি কমোড চুরি করেছিলেন তিনি০৩ এপ্রিল ২০২৪