নেত্রকোনায় ধর্ষণের পর আত্মহত্যার ঘটনায় তিনজনের মৃত্যুদণ্ড
Published: 28th, July 2025 GMT
নেত্রকোনায় এক কিশোরীকে (১৫) ধর্ষণের দায়ে তিন যুবকের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া আত্মহত্যা প্ররোচনার করা মামলায় তাঁদের প্রত্যেককে ১০ বছর করে কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার বেলা তিনটার দিকে নেত্রকোনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ কে এম এমদাদুল হক এ রায় ঘোষণা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) নুরুল কবীর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, রায় ঘোষণার সময় তিন আসামিই আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন নেত্রকোনা সদর উপজেলার ঠাকুরাকোনা এলাকার কাজল সরকারের ছেলে অপু চন্দ্র সরকার (২০), গফুর মিয়ার ছেলে মামুন আকন্দ (২৫) এবং মৃত চান মিয়ার ছেলে সুলতান মিয়া (২২)। তাঁদের মধ্যে অপু চন্দ্র সরকার জেলা ছাত্রলীগের সাবেক কৃষিবিষয়ক উপসম্পাদক ছিলেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ওই তিন তরুণ স্থানীয় এক দরিদ্র রিকশাচালকের মেয়েকে পাশের একটি মাছের খামারের ঘরে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করেন। ওই দিন দিবাগত রাত আটটার দিকে মেয়েটির মা সেখানে গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন। কিছুক্ষণ পর অভিযুক্ত ব্যক্তিদের একজন মেয়েটির বাড়িতে গিয়ে ঘটনাটি কাউকে না জানানোর জন্য হুমকি দেন। পরদিন ঘটনাটি জানাজানি হলে কিশোরী নিজ ঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে।
এ ঘটনায় প্রথমে নেত্রকোনা মডেল থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়। পরে ওই কিশোরীর মা অভিযোগ করেন, থানায় ধর্ষণ মামলা দিতে গেলে পুলিশ তা গ্রহণ করেনি, বরং গালমন্দ করে তাঁকে তাড়িয়ে দেয়। এ ঘটনায় বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন নেত্রকোনায় মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে। কর্তব্যে অবহেলার অভিযোগে মডেল থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমীর তৈমুরকে প্রত্যাহার করা হয়। পরে ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে ধর্ষণ ও আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে পৃথক দুটি মামলা করেন।
আদালতের নির্দেশে পুনরায় লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে ময়নাতদন্ত করা হয়। এরপর পুলিশ তিন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে এবং তাঁরা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তদন্ত শেষে ২০১৮ সালের ৫ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। ১৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষে আজ এ রায় দেওয়া হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন ত রক ন
এছাড়াও পড়ুন:
প্রতিষ্ঠার দেড় যুগ পর ইতিহাসের সাক্ষী হতে যাচ্ছে বেরোবি
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ব্রাকসু) নিয়ে অপেক্ষার প্রহর শেষ হতে চলেছে শিক্ষার্থীদের। গত ২৮ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের মাধ্যমে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের গেজেট প্রকাশ হয়ছে গঠনতন্ত্র।
এরই মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১৭ বছর পর হতে যাচ্ছে কাঙিক্ষত কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ তথা ব্যাকসু নির্বাচন। তবে এর জন্য আমরণ অনশন থেকে শুরু করে সব ধরনের কর্মসুচিই পালন করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
আরো পড়ুন:
‘আমরা একটা অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন করতে চাই’
বেরোবিতে শহীদ আবু সাঈদ স্মৃতিস্তম্ভের মডেল প্রদর্শন
জুলাই অভ্যুত্থান পর গণরুম ও গেস্ট রুমের যে সাংস্কৃতি ছিল, তা এখন বন্ধ হয়েছে। কোনো রাজনৈতিক দলের কমকাণ্ডে সামিল হওয়াও বাধ্যতামুলক নয়।
তাই শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ ছাত্র সংসদ। যাতে শিক্ষার্থীদের অধিকার ও স্বার্থ সুরক্ষিত হবে।
কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ বেরোবির বিধিমালা অনুযায়ী, ১৩টি পদে সরাসরি নির্বাচন ও হল সংসদে নয়টি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যাতে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিনিধির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে সব ধরনের কথা তুলে ধরতে পারবেন।
পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী শেখর রায় বলেন, “সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও লেজুরবিত্তিক রাজনীতি ব্যতীত একটি নির্বাচন হোক। যোগ্য, আদর্শ, উত্তম চরিত্র ও মনের প্রার্থী বিজয়ী হোক। নির্বাচিত হয়ে তারা হয়ে উঠুক বেরোবির একেকজন যোগ্য প্রতিনিধি। তারা ন্যায়ের পক্ষে থাকুক । তাদের হাত ধরেই এগিয়ে যাক বেরোবি।”
গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী জাওয়াদ সাজিদ বলেন, “ছাত্র সংসদ শিক্ষার্থীদের দাবি, অধিকার ও স্বার্থ রক্ষার প্রধান মঞ্চ। এটি প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে, যাতে প্রতিটি শিক্ষার্থীর কণ্ঠ পৌঁছে যায় সিদ্ধান্ত গ্রহণের টেবিলে। কিন্তু এজন্য সংসদকে দলীয় প্রভাবমুক্ত, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক হতে হবে। প্রকৃত অর্থে ছাত্র সংসদ তখনই সফল, যখন তা শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হয়ে তাদের সমস্যার সমাধান ও কল্যাণে কাজ করে।”
অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান বলেন, “আমরা এমন ছাত্র সংসদ চাই, যেখানে যোগ্য নেতৃত্ব আসবে এবং সব শিক্ষার্থীর সমস্যা সমাধানের হাতিয়ার হয়ে কাজ করবে। সবমিলিয়ে সবার বিশ্বস্ত জায়গা হবে এই ছাত্র সংসদ।”
ঢাকা/সাজ্জাদ/মেহেদী