খেলার মাঠে খেলা তো হয়ই, এর বাইরে হয় বিচিত্র অনেক কিছুই। মাঠে ও মাঠের বাইরের বিচিত্র সব ঘটনা নিয়েই এ আয়োজন।
হার দিয়ে শুরু, চ্যাম্পিয়ন হয়ে শেষ—ইংল্যান্ডের নারী ইউরো জয়ের পথটা মোটেই মসৃণ ছিল না এবার। নকআউট পর্বে তো প্রতিটি ম্যাচেই শুরুতে পিছিয়ে পড়েছিল দলটি। আর তাতে বিরল কীর্তিতেও নাম উঠে গেছে দলটির। ফুটবল ইতিহাসে মাত্র দ্বিতীয় দল ইংল্যান্ড, যারা নকআউট পর্বের প্রতিটি ম্যাচেই পিছিয়ে পড়ার পর শেষ পর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।
প্রথম দলটিও একটি নারী দল, আর সেই টুর্নামেন্টও ছিল মহাদেশীয়। ২০২২ সালে নারী এশিয়ান কাপে চীনের শিরোপা জয়ের পথটাই যেন ছিল একটানা নাটকীয়তা আর অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তনের গল্প। কোয়ার্টার ফাইনালে ভিয়েতনামের বিপক্ষে প্রথমে গোল খেয়ে বসেছিল তারা, এরপর ঘুরে দাঁড়িয়ে জেতে ৩-১ ব্যবধানে। সেমিফাইনালে জাপানের বিপক্ষে দুবার পিছিয়ে পড়ে দুবারই সমতায় ফেরে চীন, দ্বিতীয় গোলটি আসে ১১৯তম মিনিটে। টাইব্রেকারে গিয়েও দশম ও শেষ শটের আগে তারা একবারের জন্যও এগিয়ে ছিল না।
তবে ফাইনালে সবকিছুর মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে প্রথমার্ধ শেষে ২-০ গোলে পিছিয়ে ছিল চীন। দ্বিতীয়ার্ধের মাঝপথেও একই স্কোরলাইন। এরপর ট্যাং জিয়ালির পেনাল্টি থেকে আসে এক গোল, ৭২তম মিনিটে ঝাং লিনইয়ান সমতায় ফেরান দলকে। আর অতিরিক্ত সময়ের তৃতীয় মিনিটে বদলি খেলোয়াড় শিয়াও ইউইয়ের গোলে লেখা হয় আন্তর্জাতিক ফুটবলের সবচেয়ে রোমাঞ্চকর প্রত্যাবর্তনের অন্যতম সেরা গল্প।
২০২২ সালে মেয়েদের এশিয়ান কাপজয়ী চীন.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়েস্ট ইন্ডিজকে আবারও হতাশায় ডুবিয়ে এগিয়ে গেল পাকিস্তান
নিজেদের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার কাছে বারবার হেরে হতাশ ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবার ভিন্ন দেশে, ভিন্ন প্রতিপক্ষের বিপক্ষেও ঘুরে দাঁড়াতে পারল না। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে ১৪ রানে জয় তুলে নিয়ে ক্যারিবিয়ানদের জয়হীন ধারা অব্যাহত রাখল পাকিস্তান।
লডারহিলের সেন্ট্রাল ব্রোয়ার্ড রিজিওনাল পার্ক স্টেডিয়ামে টস জিতে পাকিস্তানকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে সেই সিদ্ধান্ত ব্যুমেরাং হয়ে ফেরে হোপের দলের ঘাড়ে। প্রথমে সাইম আইয়ুবের ব্যাটে ঝড়, পরে বল হাতে মোহাম্মদ নেওয়াজের নিখুঁত স্পিন; সব মিলিয়ে জমজমাট শুরু পেয়ে গেল পাকিস্তান।
পাওয়ার প্লে’তে পাকিস্তান পড়ে প্রথম ধাক্কায়। সাহিবজাদা ফারহানকে এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলেন শামার জোসেফ। কিন্তু এরপর সাইম আইয়ুব এবং অভিজ্ঞ ফখর জামান গড়ে তোলেন ৮১ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি। সাইমের ব্যাট থেকে আসে ৫৮ রানের দুর্দান্ত ইনিংস, যা তার টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটি। শেষদিকে সালমান আগা, ফাহিম আশরাফ ও হাসান নওয়াজদের ছোট ছোট কার্যকর ইনিংসের কল্যাণে স্কোরবোর্ডে ১৭৮ রানের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয় পাকিস্তান।
আরো পড়ুন:
পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্নের ঘোষণা ট্রাম্পের
‘পরীক্ষা-নিরীক্ষা’ পছন্দ হয়নি মিনহাজুলের
জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে দারুণ শুরু এনে দেন জনসন চার্লস ও অভিষিক্ত জুয়েল অ্যান্ড্রু। উদ্বোধনী জুটিতে তারা তোলে ৭২ রান। কিন্তু সেটা করতে খরচ করেন ৬৭ বল, যা টি-টোয়েন্টিতে ছন্দ হারানোর ইঙ্গিতই দেয়। এরপর দ্রুত উইকেট হারিয়ে ৭ উইকেটে ১১০ রানে দাঁড়িয়ে যায় ক্যারিবিয়ানরা। শেষদিকে জেসন হোল্ডার ও শামার জোসেফ মিলে ঝড় তুলে ৫৪ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়লেও ম্যাচ থেকে আর ফিরে আসা সম্ভব হয়নি।
পাকিস্তানের হয়ে মোহাম্মদ নেওয়াজ নেন ৩টি উইকেট, সাইম আইয়ুব ২টি। ব্যাটে-বলে অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের জন্য ম্যাচসেরা নির্বাচিত হন সাইম আইয়ুব।
এ জয়ের ফলে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে পাকিস্তান। সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে একই ভেন্যুতে, বাংলাদেশ সময় রোববার সকালে।
সংক্ষেপে স্কোরকার্ড:
পাকিস্তান– ১৭৮/৬ (আইয়ুব ৫৮, ফখর ২৮; শামার ৩/৩০)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ– ১৬৪/৭ (অ্যান্ড্রু ৩৫, হোল্ডার ৩০\*; নেওয়াজ ৩/২৩, আইয়ুব ২/২০)
ফল: পাকিস্তান ১৪ রানে জয়ী
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: সাইম আইয়ুব
সিরিজ অবস্থা: পাকিস্তান ১–০ এগিয়ে।
ঢাকা/আমিনুল