৫ আগস্ট সামনে রেখে সারা দেশে পুলিশি অভিযান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও নজরদারি
Published: 2nd, August 2025 GMT
৫ আগস্ট সামনে রেখে সারা দেশে পুলিশি অভিযান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও নজরদারি
বাংলাদেশ
ট্যাগ: পুলিশ, নিরাপত্তা, ফেসবুক
মেটা: ৫ আগস্টকে কেন্দ্র করে দেশের কোথাও যেন নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড হতে না পরে, সে জন্য সারা দেশে অভিযান জোরদার করেছে পুলিশ।
একসার্প্ট: রাজধানীতে যাতে কোনো নাশকতার ঘটনা না ঘটে, সে জন্য ঢাকার প্রবেশমুখগুলোতে তল্লাশিচৌকি বসানো হয়েছে বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
৫ আগস্টকে কেন্দ্র করে দেশের কোথাও যেন নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড হতে না পরে, সে জন্য সারা দেশে অভিযান জোরদার করেছে পুলিশ। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও নজরদারি করা হচ্ছে।
পুলিশ সূত্রগুলো বলছে, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের (নিষিদ্ধ) নেতা-কর্মীরা আগস্ট মাস সামনে রেখে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছেন, এমন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এ অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।
পুলিশের সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, সম্প্রতি ঢাকার বসুন্ধরা এলাকায় গোপন বৈঠক এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও এর নিষিদ্ধ অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। কয়েক দিন আগে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা একটি উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্যের পর থেকে দলটির নেতা-কর্মীদের মধ্যে তৎপরতা বেড়েছে।
রাজধানীতে যাতে কোনো নাশকতার ঘটনা না ঘটে, সে জন্য ঢাকার প্রবেশমুখগুলোতে তল্লাশিচৌকি বসানো হয়েছে বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। এ ছাড়া রাতে আবাসিক হোটেল ও মেসে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করছে তারা।
ডিএমপির একাধিক শীর্ষ কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ঢাকায় নাশকতার পরিকল্পনা করছেন। তাই ঢাকার ১১টি প্রবেশমুখে শতাধিক তল্লাশিচৌকি বসানো হয়েছে। সন্দেহজনক ব্যক্তি ও গাড়ির ওপর নজরদারি করা হচ্ছে। রাজধানীর ভেতরে আড়াই শ তল্লাশিচৌকি বসানো হয়েছে। আগামী দুই দিন ঢাকায় বিশেষ অভিযান চলবে।
একাধিক পুলিশ সুপার প্রথম আলোকে বলেন, সুনির্দিষ্ট কোনো হুমকি নেই। তবে কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা সভা-মিছিল করার চেষ্টা করছেন। কয়েকটি জেলায় পোস্টার টানাচ্ছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা গুজব ছড়াচ্ছেন। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের যেসব স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা গ্রেপ্তার হননি, তাঁরা নেতা-কর্মীদের সংগঠিত করার চেষ্টা করছেন।
পুলিশের এসব কর্মকর্তা বলেন, নজরদারি, অভিযান, তল্লাশি জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও নজরদারি করা হচ্ছে।
পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকাসহ সারা দেশে অভিযানে ১ হাজার ৩৮২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় গ্রেপ্তার ছিল ১ হাজার ২৬১ জন। ৫ আগস্ট সামনে রেখে এ অভিযান আরও জোরদার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ঢাকা রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) রেজাউল করিম মল্লিক প্রথম আলোকে বলেন, ৫ আগস্ট সামনে রেখে কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা দলটির (আওয়ামী লীগ) নেতা-কর্মীরা যাতে সংগঠিত হতে না পারেন, সে জন্য তাঁর আওতাধীন ১৩টি জেলায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: দ র কর কর ম র করছ ন ন শকত আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ট্রাম্পের চুক্তি মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য বিপজ্জনক নজির
যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের মধ্যে ২০ কোটি ডলারের চুক্তির মধ্য দিয়ে কয়েক মাসের টানাপোড়েনের অবসান ঘটেছে। তবে শিক্ষাবিদদের আশঙ্কা, এটি উচ্চশিক্ষার ওপর সরকারের ‘আক্রমণের’ প্রথম দফা মাত্র।
কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও ট্রাম্প প্রশাসনের মধ্যে হওয়া এ চুক্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অনেক বিষয়ে সমঝোতা করতে হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর সরকারের নজরদারিও বেড়েছে।
কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্য অনেক উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষাবিদদের আশঙ্কা, এ চুক্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়টি যেভাবে অনেক ছাড় দিয়েছে ও সরকারের নজরদারি বেড়েছে, তা ভবিষ্যতে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপরও একইভাবে চাপ প্রয়োগের নীলনকশা হয়ে উঠতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের শুরু করা ‘যুদ্ধের’ প্রথম নিশানা হয় নিউইয়র্কের এই বিশ্ববিদ্যালয়। মার্কিন প্রেসিডেন্টের অভিযোগ, ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে যে ইহুদিবিদ্বেষ তৈরি হয়েছে, তা মোকাবিলায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ব্যর্থ হয়েছে।যুক্তরাষ্ট্রের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের শুরু করা ‘যুদ্ধের’ প্রথম নিশানা হয় নিউইয়র্কের এ বিশ্ববিদ্যালয়। মার্কিন প্রেসিডেন্টের অভিযোগ, ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে যে ইহুদিবিদ্বেষ তৈরি হয়েছে, তা মোকাবিলা করতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ব্যর্থ হয়েছে।
এ অভিযোগের পর কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় লাখ লাখ ডলারের ফেডারেল তহবিল হারায়। নতুন গবেষণা অনুদানের জন্য আবেদন করার সুযোগও বন্ধ হয়ে যায়। গবেষণাগারের জরুরি তহবিল স্থগিত হয়ে যায় এবং অনেক গবেষক চাকরি হারান।
তবে গত সপ্তাহে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সরকারকে ২০ কোটি ডলার দেওয়ার (জরিমানা হিসেবে) ও ইহুদিবিদ্বেষ–সংক্রান্ত অভিযোগ নিয়ে সরকারি তদন্ত মীমাংসার জন্য অতিরিক্ত ২ কোটি ১০ লাখ ডলার পরিশোধে রাজি হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপর এত বড় মাত্রায় সরকারি হস্তক্ষেপ আগে হয়নি। সম্ভবত যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এমন ঘটনা আগে ঘটেনি।ব্রেনডন ক্যান্টওয়েল, মিশিগান স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকআমেরিকান কাউন্সিল অন এডুকেশনের সভাপতি টেড মিচেল বলেন, আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরুর আগেই তহবিল কেটে নেওয়ায় কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় একপ্রকার ‘টালমাটাল অবস্থায়’ পড়ে গেছে।
কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ডেভিড পোজেন এতে একমত পোষণ করে বলেন, শুরু থেকেই চুক্তিটি যেভাবে সাজানো হয়েছে, তা বেআইনি ও জোরজবরদস্তিমূলক। তিনি চুক্তিটিকে ‘চাঁদাবাজির বৈধ রূপ’ উল্লেখ করে এর কঠোর সমালোচনা করেন।
এ চুক্তির আওতায় শুধু ইহুদিবিদ্বেষের সমাধানই নয়, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তি, ভর্তির সময় জাতি-বর্ণের বিষয়গুলো খেয়াল রাখা ও ক্যাম্পাসে ছেলে–মেয়েদের আলাদা জায়গাসহ কিছু বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সমঝোতা করতে হয়েছে।
চুক্তির আওতায় কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একজন স্বাধীন পর্যবেক্ষক নিয়োগ দিতে রাজি হয়েছে। তাঁর কাজ হলো চুক্তি কার্যকর করা, জাতিগত পরিচয়ের ভিত্তিতে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের তথ্য সরকারকে দেওয়া ও ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অভিযোগ, ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে যে ইহুদিবিদ্বেষ তৈরি হয়েছে, তা মোকাবিলায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ব্যর্থ হয়েছে